একজন মুসলিম কি নির্দিষ্ট কোনো মাযহাব মানতে বাধ্য?

মূলঃ শাইখ আবু আব্দুর রহমান মুক্ববিল বিন হাদি আল ওয়াদি’ঈ

ভাষান্তরঃ আবু হিশাম মুহাম্মাদ ফুয়াদ

 

শাইখ আবু আব্দুর রহমান মুক্ববিল বিন হাদি আল ওয়াদি’ঈ বলেনঃ

একজন মুসলিম কখনোই নির্দিষ্ট কোনো মাযহাব মানতে বাধ্য নয় বরং নির্দিষ্ট করে কোনো মাযহাবের অনুসরণ একটি বিদ’আহ।

 

আল্লাহ কুর’আনে বলেনঃ

 

اتَّبِعُوا مَآ أُنزِلَ إِلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ وَلَا تَتَّبِعُوا مِن دُونِهِۦٓ أَوْلِيَآءَ ۗ قَلِيلًا مَّا تَذَكَّرُونَ

 

তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের প্রতি পালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য সাথীদের অনুসরণ করো না।

[সুরাহ আরাফ ৭ঃ৩]

 

তিনি বলেনঃ

 

يٰٓأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُوٓا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِى الْأَمْرِ مِنكُمْ ۖ فَإِن تَنٰزَعْتُمْ فِى شَىْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْءَاخِرِ ۚ ذٰلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا

 

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম।

[সুরাহ আননিসা ৪ঃ৫৯]

 

তিনি আরো বলেছেনঃ

 

وَمَا اخْتَلَفْتُمْ فِيهِ مِن شَىْءٍ فَحُكْمُهُۥٓ إِلَى اللَّهِ ۚ ذٰلِكُمُ اللَّهُ رَبِّى عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ أُنِيبُ

 

তোমরা যে বিষয়েই মতভেদ কর, তার ফয়সালা আল্লাহর কাছে সোপর্দ। ইনিই আল্লাহ আমার পালনকর্তা আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তাঁরই অভিমুখী হই।

[সুরাহ আশ শুরা ৪২ঃ১০]

 

আমি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি  কারণ এখনো আমাদের মাঝে এমন অনেক যুবক আছে যারা ক্বুর’আন-সুন্নাহ ব্যতিত অন্য কোনো কিছুর দিকেই ভ্রূ-ক্ষেপ করে না।  আরো শুকরিয়া আদা করছি কারণ তিনি আমাদেরো সে পথেই রেখেছেন। অতীতে একজন মানুষের জন্য এটা বলা অসম্ভব ছিলো যে সে কোনো মাযহাব আঁকড়ে ধরে নি।

 

কিন্তু এই মাযহাবগুলো মানুষের মধ্যে বিভেদ ও ঘৃণা-ই সৃষ্টি করেছে। যদি আপনি ‘আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ’ পড়েন তবে হাম্বালি ও শাফে’ঈ দের মাঝে দ্বন্দ্ব দেখতে পাবেন। হানাফি ও হাম্বালিদের মাঝে বা হানাফি ও শাফে’ঈ দের মাঝে ও অন্যান্যদের মাঝে অনেক বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব, মারামারি এমনকি খুনোখুনিও হয়েছে শুধুই এই মাযহাবিজম বা মাযহাবি গোঁড়ামির ফলশ্রূতিতে।

 

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেনঃ

 

ۚ وَمَآ ءَاتٰىكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهٰىكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ

 

রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।

[সুরাহ আল হাশর ৫৯ঃ৭]

 

মাযহাবিদের একজন, আস সাওয়ী, ক্বুরয়ানের এই আয়াত উল্লেখ করেনঃ

 

وَلَا تَقُولَنَّ لِشَاىْءٍ إِنِّى فَاعِلٌ ذٰلِكَ غَدً إِلَّآ أَن يَشَآءَ اللَّهُا

 

আপনি কোন কাজের বিষয়ে বলবেন না যে, সেটি আমি আগামী কাল করব, ‘আল্লাহ ইচ্ছা করলে’ বলা ব্যতিরেকে।

 

[সুরা কাহফ ১৮ঃ২৩-২৪]

 

ইসলামি বিধান ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে ছাড় দেয়া বৈধতার ব্যাপারে ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি কথা উল্লেখ করার পর আস সাওয়ী বলেনঃ ক্বুর’আনের আয়াত বা সুন্নাহ পেয়ে চার মাযহাব ছেড়ে দেয়া বৈধ নয় এবং সেক্ষেত্রে সে আয়াত বা সুন্নাহ গ্রহণ করা কুফরের বৈশিষ্ট্যসমূহের একটি।

 

কিন্তু, উল্টো বাতিল সুফি, আস সাওয়ীর এই কথাটিই কুফরের বৈশিষ্ট্যসমূহের একটি। কেননা আল্লাহ ক্বুরয়ানে বলেনঃ

 

اتَّبِعُوا مَآ أُنزِلَ إِلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ وَلَا تَتَّبِعُوا مِن دُونِهِۦٓ أَوْلِيَآءَ ۗ قَلِيلًا مَّا تَذَكَّرُونَ

 

তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের প্রতি পালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য সাথীদের অনুসরণ করো না।

[সুরাহ আরাফ ৭ঃ৩]

 

আল্লাহ আরো বলেনঃ

 

وَأَنَّ هٰذَا صِرٰطِى مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ ۖ وَلَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَن سَبِيلِهِۦ ۚ ذٰلِكُمْ وَصّٰىكُم بِهِۦ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

 

তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। নিশ্চিত এটি আমার সরল পথ। অতএব, এ পথে চল এবং অন্যান্য পথে চলো না। তা হলে সেসব পথ তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে। তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তোমরা সংযত হও।

[সুরাহ আল আনআম ৬ঃ১৫৩]

 

আবার, ইবনে ‘আল্লাল তার বই ‘দালিল আল ফালিহিন ফি শারহি রিয়াদিস সালিহিন-এ একটি হাদিসের ভাষ্য এনেছেনঃ তোমাদের জন্য (সুন্নাহ হলো) আমার সুন্নাহ ও চার খালিফার সুন্নাহ। তোমাদের মাঁড়ির দাঁত দিয়ে তোমরা তা আঁকড়ে ধরো।

(তিরমিযি ২৬৭৬)

 

ইবনে ‘আল্লাল এর পর বলেন, এটি ছিলো চার মাযহাব প্রতিষ্ঠিত হবার আগ পর্যন্ত। কিন্তু মাযহাবগুলো প্রতিষ্ঠিত হবার পর এটি আর বৈধ নয় কেননা মাযহাবগুলোই বেশি পূর্ণাঙ্গ বা যথার্থ।

 

যাহোক, আমি বলবো এখনকার মানুষগুলো হাম্বালি, শাফে’ঈ বা অন্য যেকোনো মাযহাবেরই দাবি করুক না কেন, তারা তার প্রকৃত অনুসারীও নয়। একবার এক ব্যক্তি হারামের ইমাম আবু শামসের কাছে আসলেন ফাতওয়া নিতে। সে ব্যক্তি ছিলো ক্লিনশেভ্‌ড্‌। তিনি আবু শামসকে বললেনঃ “শাইখ আমি একজন শাফে’ঈ। আমি আপনার কাছচে এক বিষয়ে ফাতওয়া চাচ্ছি।” আবু শামস তাকে বললেনঃ “না তুমি শাফে’ঈ নও।” এটি শুনে লোকটি বললো, “শাইখ, আমি শাফে’ঈ” এবং সে আল্লাহর কসম করেও বললেন যে তিনি শাফে’ঈ। তবুও আবু শামস বললেন যে, “না তুমি শাফেয়ী নও। কারণ ইমাম শাফে’ঈ কখনো দাঁড়ি কাটেননি। কিন্তু তুমি কেটেছো।”

 

মাযহাবিরা আমেরিকা ও রাশিয়ান(খ্রিস্টান)-দের মতোই করেছে।(অর্থাৎ তাদের মতো করেই বিভক্ত হয়েছে।)

 

আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ

 

لَتَتَّبِعُنَّ سَنَنَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ شِبْرًا بِشِبْرٍ وَذِرَاعًا بِذِرَاعٍ حَتَّى لَوْ دَخَلُوا فِي جُحْرِ ضَبٍّ لاَتَّبَعْتُمُوهُمْ

“তোমরা তোমাদের পূর্বে আসা জাতি(ইয়াহুদি ও খ্রিস্টান)-দের এমনভাবে অনুসরণ করবে যে, যদি তারা সাপের গর্তে প্রবেশ করে তবে তোমরাও করবে।” (সহীহ মুসলিম ২৬৬৯)

 

ঠিক তেমনি এরাও বিধর্মীদের মতোই বিভক্ত হয়েছে।

অন্ধ অনুসরণ মুসলিম উম্মাহর উপর আসা ভয়াবহ একটি দূর্যোগ। কেন? কেননা, লোকেরা সাহাবাদের ছেড়ে দিয়েছে এবং মাযহাবের চার ইমামদের মত গ্রহণ করেছে। অতঃপর তারা সেই ইমামদের অনুসরণকারীদের মত গ্রহণ করেছে, এরপর তাদের অনুসারীদের মত গ্রহণ করা হয়েছে ও এভাবেই চলেছে। যেমনঃ ‘আল আযহার’ কিতাব লিখেছে আল-মাহদি। সে যথাসম্ভব ষষ্ঠ বা সপ্তম শতকের ছিলো। আবার হাম্বালিদের(ফিক্বহি কিতাব) ‘যা’আদ আল-মুসতাক্বনি’ , এটা কখন রচিত হয়? আহমাদ ইবনে হাম্বাল কিন্তু এটি লেখেন নি। এবং তেমনি শাফে’ঈদের কিতাব ‘আবু শারজা’, এটিও তেমন।

 

রাসুল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

خيركم من تعلّم القرآن وعلّمه

 

তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই উত্তম যে নিজে ক্বুর’আন শিখে ও অপরকে শেখায়।

[বুখারি ৫০২৭]

 

এবং তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেনঃ

 

الماهر بالقرآن مع السفرة الكرام البررة وَالَّذِي يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَيَتَتَعْتَعُ فِيهِ وَهُوَ عَلَيْهِ شَاقٌّ لَهُ أَجْرَانِ

 

“যে ব্যক্তি ক্বুর’আনে দক্ষ তার মর্যাদা ফেরেশতাদের ন্যায়। আর যারা তা নয়, কিন্তু চেষ্টা করে, কষ্ট করে পড়ে তাদের জন্য রয়েছে দ্বিগুণ প্রতিদান। ”

[মুসলিম ৭৯৮]

 

তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবাদের ক্বুর’আন পড়তে এবং তা হিফ্‌জ্‌ করতে অনুপ্রাণিত করছেন।

 

তিনি আরো বলেনঃ

 

نضر الله امرأً سمع مقالتي فوعاها فحفظها وأداها كما سمعها

আল্লাহ সে লোককে সুন্দর করুক(মর্যাদাবান করুক) যে আমার কোনো কথা শোনে, অতঃপর তা বোঝে, তা মুখস্থ করে ও তা প্রচার করে।

[তিরমিযি ২৬৫৮]

 

কিন্তু মাযহাবিরা প্রায় সর্বক্ষণ উযুর মাস’আলা, উমুক তুমুক মাসয়ালা নিয়ে আছেন। আবার উযু ভঙ্গের মাস’আলা ও ইত্যাদি ইত্যাদি মাস’আলা নিয়ে তারা সর্বক্ষণ ব্যস্ত।

 

বন্ধুগণ! একজন ব্যক্তির খারাপভাবে সালাত আদায় করার হাদিসটি সালাতের স্তম্ভসমূহ নিয়ে, একইভাবে, উসমান ও আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ এর হাদিসগুলোও উদু নিয়ে। তো সে হাদিসগুলোই মুখস্ত করুন। (অর্থাৎ হাদিস থাকতে অন্য কোনো কিছুতে ব্যস্ততা কেন? )

 

আমরা ফুক্বাহাদের কিতাব পড়তে বারন করছি এমনটি নয়। আমরা বলছি যে তাদের কিতাব কেনা উচিত, শেলফে রাখা উচিত এবং যখন কারো কোনো গূরুত্বপূর্ণ বিষয় রিভাইজ দিতে হবে তখন সে সে কিতাবগুলো খুলবে ও তা থেকে যতটুকু সম্ভব জ্ঞান আহরণ করবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। সে প্রথমে কামনা করবে আল্লাহর সাহায্য ও অতঃপর তাদের সঠিক বুঝ।

 

আমরা এটা বলছি যে আমরা মানুষ ও তাঁরাও মানুষ। কিন্তু এর সাথে সাথে আমরা এটাও বলছি যে যদিও আমরা সকলে মানুষ, কিন্তু আমাদের ও আল শাফেঈ বা আমাদের ও আহমাদ ইবনে হাম্বালের মাঝে পার্থক্য পৃথিবী ও জান্নাতের পার্থক্যের মতো। এবং ফলে আমরা আমাদের অবস্থাও বুঝি।

 

কিন্তু আমাদের ভাবতে হবে, ক্বুর’আনে এমন কোনো আয়াত নেই যেখানে আল্লাহ বলছেন “ও বিশ্বাসীগণ, তোমরা হাম্বালি হও।” বা “ও বিশ্বাসীগণ, তোমরা শাফেই হও বা মালেকি হও!”

 

আবার আমরা আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন ইসমাইল আলহারুঈর মতোও বলবো নাঃ

أنا حنبليّ ما حييت وإن أمت ********فوصّتي للنّاس أن يتحنبلوا

 

আমি যতদিন আমি বেঁচে আছি আমি হাম্বালি। এবং মানুষদের জন্য আমার এটাই আশা যে তারাও হাম্বালি হবে।

আমি,(মুক্ববিল) সাধারণ লোকদের আল্লাহর কিতাব ও তার রাসুলের সুন্নাহ অনুসারেই উপদেশ দিয়ে থাকি(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ‘আলা ‘আলিহি ওয়া সাল্লাম)।

 

আমি মুহাম্মাদ বিন ইবরাহিম আল বুশানজির মতোও বলি নাঃ

 

ومن شعب الإيمان حب ابن شافع ******وفرض أكيد حبه لا تطوع

أنا شافعي ما حييت وإن أمت ***** فتوصيتي للناس أن يتشفعوا

 

ইমানের শাখার মধ্যে একটি হলো শাফে’ঈর ছেলেকে ভালোবাসা। তাকে ভালোবাসা এটি কোনো ঔচিত্য নয় বরং বাধ্যতামূলক। যতদিন আমি বেঁচে আছি, আমার মৃত্যু পর্যন্ত আমি শাফে’ঈ। সাধারণ মানুষরা শাফে’ঈ হবে এটাই আমার ইচ্ছা।

 

আবার আমরা এটাও বলবো না যে, “যদি মালিক না থাকতো, ইসলাম বিলুপ্ত হয়ে যেতো। ” এর বদলে আমরা বলবো, “আল্লাহ তার দ্বীনকে বাঁচিয়েছেন।”

 

আমরা বলবো, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল, ইমাম শাফে’ঈ, ইমাম মালিক, ইমাম আবু হানিফা (রহিমাহুমুল্লাহ) ইমাম ছিলেন তবে তাঁরা দ্বীনের স্তম্ভ নন। তারা আমাদের আদর্শ। আমরা কখনোই তাদের ফায়দা থেকে মুখ ফিরাতে পারবো না, অস্বীকার করতে পারবো না। আল্লাহ তাদের সর্বোচ্চ প্রতিদান দিক তাঁদের খিদমাতের।

 

শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব তাঁর বই, জামি’ আল ফারিদে, বলেছেন, “তাক্বলিদ(অন্ধানুসরণ) হলো কুফরের মূলনীতিগুলোর ভিত্তি।” তিনি দালিল দিয়েছেন, ক্বুর’আনে আল্লাহ মুশরিকদের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,

 

إِنَّا وَجَدْنَآ ءَابَآءَنَا عَلٰىٓ أُمَّةٍ وَإِنَّا عَلٰىٓ ءَاثٰرِهِم مُّقْتَدُونَ

 

‘নিশ্চয় আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এক মতাদর্শের উপর পেয়েছি এবং নিশ্চয় আমরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করব’।

[সুরাহ কাহাফ ৪৩ঃ২৩]

 

আল্লাহ আহলুল কিতাবদের সম্পর্কে বলেছেনঃ

 

اتَّخَذُوٓا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبٰنَهُمْ أَرْبَابًا مِّن دُونِ اللَّهِ

 

“তারা আল্লাহকে ছেড়ে তাদের পন্ডিত ও সংসার-বিরাগীদের রব হিসেবে গ্রহণ করেছে…”

[সুরাহ তাওবাহ ৯ঃ৩১]

 

আমাদের ক্ষেত্রে, আমরা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর কিতাবকে আঁকড়ে ধরবো, তাঁর কিতাব ও রাসুলের সুন্নাহ শিখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া ‘আলা আলিহি ওয়া সাল্লাম।

 

—————

আল ওয়াদি’ঈ, মুক্ববিল বিন হাদি ||  هل المسلم ملزم بإتباع مذهب معين نرجو التوضيح مع الدليل ؟ ||  ১৪ সফর ১৪৩৩[৯ জানুয়ারি ২০১২]

মূল আরবীঃ http://www.muqbel.net/fatwa.php?fatwa_id=931&fbclid=IwAR0RmReSJMr42G4f-0lnMYLgWWmpf9bfTV4KWl_O0je-lbBo17qi_TDSSJM

 

স্বত্বাধিকারী © www.darhadith.com।