এই মুহূর্তে আপনি মারা গেলে কত জন মানুষ আপনার জন্য আল্লাহর নিকট দু‘আ করবে

ঠিক এই মুহূর্তে যদি আপনি মারা যান, তবে কত জন মানুষ আপনার জন্য আল্লাহর নিকট হাত তুলে দু‘আ করবে?
▬▬▬▬▬▬▬◖🌻◗▬▬▬▬▬▬▬
উত্তরটিতে অনেক কিছু লুকিয়ে আছে। মানুষের সাক্ষ্যের মাধ্যমেও জান্নাত-জাহান্নামের ফয়সালা হয়।
.
কুরাইব থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে— তিনি বলেন, ইবনে আব্বাস (রা.)-এর সন্তানদের একজন ধারালো ছুরির আঘ|তে অথবা নির্য|তনের কারণে মারা যায়। ইবনে আব্বাস বললেন, ‘হে কুরাইব, দেখো তো, কী পরিমাণ মানুষ তার জন্য জমায়েত হয়েছে?’ কুরাইব বলেন, ‘আমি বের হয়ে দেখলাম, তার জন্য অনেক মানুষ জড়ো হয়েছে। আমি তাকে সংবাদ দিলাম।’
.
তিনি বললেন, ‘(তাহলে) তুমি বলছো—তারা (অন্তত) চল্লিশ জন হবে?’ কুরাইব বলেন, ‘হ্যাঁ।’ ইবনে আব্বাস বললেন—তাকে (মৃত সন্তানকে) বের করো। কারণ, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, “কোনো মুসলিম ব্যক্তি যখন মারা যায়, অতঃপর তার জানাযার জন্য এমন চল্লিশ জন লোক দাঁড়ায়, যারা কেউ আল্লাহর সাথে শির্ক করে না, তবে আল্লাহ তার ব্যাপারে তাদের সুপারিশ অবশ্যই গ্রহণ করবেন।” [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ২০৮৮]।
.
আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকেরা একটি লাশ নিয়ে গেলো, অতঃপর তারা মৃত ব্যক্তির প্রশংসা করলো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘অবধারিত হয়ে গেলো।’’ কিছুক্ষণ পর তারা আরেকটি জানাযা নিয়ে গেলো, এবার তারা মৃত ব্যক্তির দুর্নাম করলো। তিনি (নবিজি) বললেন, ‘‘অবধারিত হয়ে গেলো।’’ উমার (রা.) বললেন, ‘কী অবধারিত হলো?’ তিনি (নবিজি) বললেন, ‘‘এ ব্যক্তির তোমরা প্রশংসা করেছো, তাই তার জন্য জান্নাত অবধারিত হলো। আর ওই ব্যক্তির তোমরা দুর্নাম করেছো, তাই তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত হলো। এ পার্থিব জগতে তোমরা আল্লাহর সাক্ষী।” [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ১৩৬৭; ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ২০৮৯]।
.
👉মানুষের ভালবাসা অর্জনের উপায় দুটো।

▪️(১) আল্লাহর আনুগত্য করা; ফলে, তিনি মানুষের মনকে আল্লাহর আনুগত্যকারীর দিকে ঝুঁকিয়ে দেন। তাই তারা তাকে ভালবাসে। [এ ব্যাপারে সহিহ হাদিস আছে]।
▪️(২) মানুষের সাথে উত্তম আচরণ করা; তাদের কল্যাণ কামনা করা; তাদের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করা ইত্যাদি।
.
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আমি কি তোমাদের জানিয়ে দেবো না, কোন্ ব্যক্তির জন্য জাহান্নাম হারাম এবং জাহান্নামের জন্য কোন্ ব্যক্তি হারাম? (তারা হলো) যে ব্যক্তি মানুষের কাছাকাছি (প্রিয়), সহজ-সরল, নম্রভাষী ও সদাচারী।’’ [ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান: ২৪৮৮; হাদিসটি সহিহ]।
.
শুরুর প্রশ্নটি আবার করি—
ঠিক এই মুহূর্তে যদি আপনি মারা যান, তবে কত জন মানুষ আপনার জন্য আল্লাহর নিকট হাত তুলে দু‘আ করবে?
.
আসুন, আমরা ভাবি। নিজেদের জন্য চিন্তা করি। জান্নাত কিংবা জাহান্নাম—আমার নিজের আমলই আমাকে এ দুটোর কোনো একটিতে নিয়ে যাবে। এজন্য আল্লাহর আনুগত্যের পাশাপাশি মানুষের সাথে সুসম্পর্ক রাখা অনেক বেশি জরুরি। মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করা যাবে না কোনোভাবেই। আল্লাহ্ তাওফিক দান করুন। আমিন। (সংকলিত আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।