ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে স্ত্রী কর্তৃক স্বামীর নাম ধরে ডাকাকে কীভাবে মূল্যায়ন করা হয়

প্রশ্ন: সন্মানিত শাইখ ড.আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া (হাফিযাহুল্লাহ) স্বামীর নাম ধরে ডাকা ও তুই বলা কে বেয়াদবি বলেছেন, সারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে স্ত্রী কর্তৃক স্বামীর নাম ধরে ডাকাকে কীভাবে মূল্যায়ন করা হয়?
▬▬▬▬▬▬▬▬✿▬▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’র প্রতি। অতঃপর যদিও স্বামীর নাম ধরে ডাকা নিষিদ্ধ মর্মে কুরআন ও সুন্নাহয় কোনো দলিল নেই, তবুও স্ত্রী তার স্বামীর নাম ধরে ডাকতে পারবে কিনা এ বিষয়টি মূলত সামাজিক রীতিনীতি, ভদ্রতা এবং প্রচলিত অভ্যাসের উপর নির্ভরশীল। এদিক থেকে বিষয়টি দুই ভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।
.
(১).যেসব সমাজে স্বামীর নাম ধরে ডাকা অসম্মানজনক মনে করা হয় না এবং যেখানে স্বামী নিজেও এতে কোনো কষ্ট অনুভব করেন না বা সম্মানহানির কিছু মনে করেন না, সেখানে স্বামীর নাম ধরে সম্বোধন করায় কোনো দোষ নেই। বরং আরব দেশসমূহসহ পশ্চিমা অনেক সমাজেই এ রীতির প্রচলন রয়েছে। তাছাড়া প্রয়োজনে মার্জিত ভাষায় স্বামীর নাম ধরে ডাকার প্রমাণ হাদীস থেকেও পাওয়া যায়। যেমন: সহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে, যখন আল্লাহর রাসূল ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম তার স্ত্রী হাজেরা এবং শিশু পুত্র ইসমাইলকে মক্কার জনমানবহীন প্রান্তরে রেখে চলে যাচ্ছিলেন তখন পেছন থেকে তার স্ত্রী তাকে ডাকলেন এভাবে:يَا إِبْرَاهِيمُ أَيْنَ تَذْهَبُ وَتَتْرُكُنَا بِهَذَا الْوَادِي الَّذِي لَيْسَ فِيهِ إِنْسٌ وَلَا شَيْءٌ ؟ “হে ইব্রাহিম, তুমি আমাদেরকে এমন জনমানবহীন উপত্যকায় রেখে কোথায় যাচ্ছ?”(সহীহ বুখারী হা/৩৩৬৪) অপর বর্ননায়,খুওয়ইলাহ বিনতু মালিক ইবনু ইবনু সা‘লাবাহ (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন,ظاهر مني زوجي أوس بن الصامت ، فجئتُ رسول الله صلى الله عليه وسلم أشكو إليه ورسول الله صلى الله عليه وسلم يجادلني فيه ويقول اتقي الله فإنه ابن عمك فما برحت حتى نزل القرآن قد سمع الله قول التي تجادلك في زوجها …”আমার সাথে আমার স্বামী আওস ইবনুস সামিত (রাযি.) যিহার করলেন। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে অভিযোগ করলাম। তিনি আমার স্বামীর পক্ষ থেকে আমার সাথে বিতর্ক করলেন এবং বললেনঃ আল্লাহকে ভয় করো, সে তো তোমার চাচার ছেলে। মহিলাটি বলেন, আমি সেখান থেকে চলে না আসতেই কুরআনের এ আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ ঐ মহিলার কথা শুনতে পেয়েছেন, যে তার স্বামীর ব্যাপারে তোমার সাথে বিতর্ক করছে’’(সূরা আল-মুজাদালা: ১; আবু দাউদ হা/২২১৪) অপর বর্ননায় আমাদের আম্মাজান আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ﷺ) আমাকে বললেন,إِنِّي لأَعْلَمُ إِذَا كُنْتِ عَنِّي رَاضِيَةً، وَإِذَا كُنْتِ عَلَىَّ غَضْبَى ‏”‏‏.‏ قَالَتْ فَقُلْتُ مِنْ أَيْنَ تَعْرِفُ ذَلِكَ فَقَالَ ‏”‏ أَمَّا إِذَا كُنْتِ عَنِّي رَاضِيَةً فَإِنَّكِ تَقُولِينَ لاَ وَرَبِّ مُحَمَّدٍ، وَإِذَا كُنْتِ غَضْبَى قُلْتِ لاَ وَرَبِّ إِبْرَاهِيمَ ‏”‏‏.‏ قَالَتْ قُلْتُ أَجَلْ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا أَهْجُرُ إِلاَّ اسْمَكَ‏.‏ “আমি জানি কখন তুমি আমার প্রতি খুশী থাকো এবং কখন রাগান্বিত হও।’’ আমি বললাম, কী করে আপনি তা বুঝতে সক্ষম হন? তিনি বললেন,”তুমি যখন আমার উপর খুশী থাকো তখন বলো মুহাম্মাদের রব এর কসম! আর যখন অসন্তুষ্ট থাকো তখন বলো ইব্রাহীমের রব এর কসম! আয়েশা (রাঃ) বললেন, জী হ্যাঁ। আল্লাহর কসম! হে আল্লাহর রাসূল! ক্রোধ ব্যতীত আমি কখনই আপনার নাম ছাড়ি না”।(সহীহ বুখারী হা/৫২২৮) আরেক বর্ননায় যয়নব (রাঃ) রাসূল (ﷺ)-এর সামনে তাঁর স্বামী আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর নাম ধরে কথা বলেছিলেন।(সহীহ বুখারী হা/১৪৬২)। এছাড়াও স্বামীর কুনিয়াত তথা উপনাম ধরেও ডাকা জায়েয মর্মে ফাত্বিমাহ বিনতু ক্বায়স থেকে বর্নিত হাদিসে এসেছে।(দেখুন সহিহ মুসলিম, হা/৩৬০৫)। এই হাদিসগুলো থেকে প্রমাণিত হয়, যে সকল সমাজে স্বামীর নাম ধরে ডাকার প্রচলন রয়েছে এবং স্বামী ও তাতে আপত্তি না করেন সেখানে ভদ্রতার সাথে স্বামীর নাম ধরে ডাকাতে শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে কোন আপত্তি নাই ইনশাআল্লাহ।
.
(২).অপরদিকে যে সকল সমাজে স্বামীর নাম ধরে ডাকা অসম্মান বা বেয়াদবি হিসেবে দেখা হয় এবং স্বামী নিজেও তা অপছন্দ করেন, সেখানে স্বামীকে নাম ধরে ডাকা উচিত নয়। বিশেষ করে আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে, এসব দেশে সাধারণত স্বামীর নাম সরাসরি উচ্চারণ করাকে অশোভন ও অনুচিত মনে করা হয়। সুতরাং এই অঞ্চলের সামাজিক রীতিনীতি ও সম্মানবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে স্বামীর নাম ধরে সম্বোধন এড়িয়ে চলাই উত্তম। তাছাড়া আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোনো স্ত্রী-ই কোনো সময় তাঁকে ‘হে মুহাম্মদ’ বলে সম্বোধন করেছেন এমন কোনো প্রমাণ ইতিহাসে পাওয়া যায় না। বরং তাঁরা সর্বদা ‘হে আল্লাহর রাসুল’, ‘হে নবী’, কিংবা এজাতীয় সম্মানসূচক উপাধি ব্যবহার করেই তাঁকে সম্বোধন করতেন। অনুরূপভাবে, সাহাবিদের স্ত্রীদের মধ্য থেকেও কেউ তাঁদের স্বামীদের নাম ধরে যেমন: ‘হে আবু বকর’, ‘হে উমর’, ‘হে আলি’, ‘হে উসমান’ বলে সম্বোধন করেছেন এমন দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় না। তবে প্রয়োজনবশত স্বামীর নাম উল্লেখ করেছেন এমনটি প্রমাণিত হয়েছে। যেমনটি আমি প্রথম অংশে উল্লেখ করেছি।
.
এছাড়াও হানাফি মাজহাবের ফিকহের কিতাব ফাতাওয়া শামিতে বর্ণিত আছে,”ছেলে কর্তৃক তার বাবাকে এবং স্ত্রী কর্তৃক তার স্বামীকে নাম ধরে ডাকা মাকরুহ বা অপছন্দনীয়। ইবনে আবেদিন শামি (রহ.) ওই বক্তব্যের সুস্পষ্ট ব্যখ্যা দিয়ে বলেন, ‘বরং এমন শব্দের মাধ্যমে ডাকা উচিত যেটা সম্মান বোঝাবে। যেমন হে আমার সর্দার, অমুকের বাবা ইত্যাদি অথবা সম্মানসূচক পেশার সঙ্গে সংযুক্ত করে ডাকবে। যেমন ইমাম সাহেব, ডাক্তার সাহেব ইত্যাদি)। কেননা বাবা ও স্বামী তাদের উভয়ের হক একটু বেশি। (দেখুন; রাদ্দুল মুহতার আলাদ দুররিল মুখতার; খণ্ড: ৬; পৃষ্ঠা: ৪১৮) তাছাড়া শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে স্ত্রীর কাছে তার স্বামী সবচেয়ে বেশী মর্যাদা পাওয়ার অধিকার রাখে। রাসূল (ﷺ) বলেছেন:”কোনো মহিলা যদি স্বামীর হক (যথার্থরূপে) জানত, তাহলে তার দুপুর অথবা রাতের খাবার খেয়ে শেষ না করা পর্যন্ত সে (তার পাশে) দাঁড়িয়ে থাকত”।(সহীহুল জামে‘ হা/৫২৫৫)। রাসূল (ﷺ) আরো বলেন,”কোনো মহিলা তার প্রতিপালকের (আল্লাহর) হক ততক্ষণ আদায় করতে পারে না; যতক্ষণ না সে তার স্বামীর হক (অধিকার) আদায় করতে পেরেছে”।(সহীহুত তারগীব হা/১৯৪৩) তিনি ﷺ আরো বলেছেন: “আমি যদি কারো জন্য কাউকে সিজদাহ করার নির্দেশ করতাম, তাহলে প্রত্যেক স্ত্রীকে নির্দেশ করতাম যেন তার স্বামীকে সিজদাহ করে।”(সুনান ইবনু মাজাহ হা/১৮৫৩) আরেক বর্ননায় হুসাইন বিন মিহসানের এক ফুফু নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট কোনো প্রয়োজনে এলেন এবং তা পূরণ হয়ে গেলে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি স্বামী আছে? সে বলল, জী হ্যাঁ। তিনি বললেন, তার কাছে তোমার অবস্থান কি? সে বলল, যথাসাধ্য আমি তার সেবা করি। তিনি বললেন, খেয়াল করো, তার কাছে তোমার অবস্থান কোথায়। কারণ সে তোমার জান্নাত অথবা জাহান্নাম।”(মুসনাদে আহমাদ হা/১৯০২৫, সনদ হাসান)।
.
অতএব, স্ত্রীর উচিত স্বামীর প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান, শ্রদ্ধা ও সদাচরণ বজায় রাখা। তিনি যেন এমন কোনো শব্দ, উপাধি বা ভাষা প্রয়োগ থেকে বিরত থাকেন যা স্বামীর কাছে অপ্রীতিকর, কিংবা সামাজিক রীতিনীতির আলোকে অশোভন মনে হতে পারে। কেননা, এমন আচরণ দাম্পত্য সম্পর্কে অশান্তি ও দূরত্বের সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে আমাদের সমাজে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বামী বয়সে স্ত্রী থেকে বড় হয়ে থাকেন, তাই তার প্রতি সম্বোধনেও এমন ভাষা বেছে নেওয়া উচিত, যা তার সম্মান, মর্যাদা ও শ্রদ্ধাবোধ প্রকাশ করে। মানুষের প্রতি সৌজন্য প্রদর্শনের সাধারণ নীতি হলো তাকে এমনভাবে সম্বোধন করা, যা তার মনে আনন্দ জাগায়। আর দাম্পত্য জীবনে এই নীতি আরও অধিক গুরুত্বপূর্ণ, কেননা এতে ভালোবাসা গভীর হয়, হৃদয় প্রশান্ত হয়। সুতরাং, প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীর উচিত একে অপরকে এমন নাম বা সম্বোধনে ডাকা,যাতে একে অপরের মধ্যে ভালোবাসার উষ্ণতা, হৃদয়ের প্রশান্তি এবং সম্পর্কের স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তাদের মধ্যে সৌহার্দ্য, স্নেহ এবং মমতার বন্ধন আরও গভীর ও সুদৃঢ় হয়। প্রশ্নে উল্লেখিত প্রসঙ্গে সন্মানিত শাইখ ড.আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া (হাফিযাহুল্লাহ) স্বামীর নাম ধরে ডাকা ও ‘তুই’ সম্বোধন করাকে ‘বেয়াদবি’ বলে অভিহিত করেছেন। এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো প্রশ্নটি স্যারকে বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে করা হয়েছে এবং আমাদের সন্মানিত শাইখ নিজেও এই সমাজের একজন অভিজ্ঞ সালাফি আলেম। অতএব, তিনি দেশীয় সংস্কৃতি, সামাজিক রীতিনীতি এবং শালীনতার মাপকাঠি বিবেচনায় রেখেই উত্তর প্রদান করেছেন। বাংলাদেশি সমাজে সাধারণত স্বামীর নাম ধরে ডাকা কিংবা ‘তুই’ সম্বোধন ব্যবহার করাকে ভদ্রতা ও সম্মানবোধের পরিপন্থী মনে করা হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে স্বামীর নাম ধরে ডাকাকে ‘বেয়াদবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করা এবং তা থেকে বিরত থাকার পরামর্শকে আমরা যথার্থ, বাস্তবসম্মত ও প্রজ্ঞাপূর্ণ বলেই মনে করি। বিষয়টি আরও গভীরভাবে অনুধাবন করতে নিচের ফাতওয়াটি লক্ষ করুন।
.
জাইনুদ্দীন মুহাম্মদ আব্দুর রউফ ইবনু তাজুল আরিফীন ইবনু নূরুদ্দীন আলী ইবনে জাইনুল আবিদীন আল-হাদাদী আল-মুনাওয়ী আল-কাহিরী আশ-শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [জন্ম: ৯৫২ হি: মৃত:১০৩১ হি.] ফয়যুল কাদির গ্রন্থে বলেন:
آداب الصحبة ، فمنها :كتمان السرّ ، وستر العيوب ، والسكوت عن تبليغ ما يسوءه من مذمة الناس إياه ، وإبلاغ ما يسره من ثناء الناس عليه ، وحسن الإصغاء عند الحديث ، وترك المراء فيه ، وأن يدعوه بأحب أسمائه إليه ، وأن يثني عليه بما يعرف من محاسنه ، ويشكره على صنيعه في حقه ، ويذب عنه في غيبته ، وينهض معه في حوائجه من غير إحواج إلى التماس ، وينصحه باللطف والتعريض – إن احتيج إلى ذلك- ويعفو عن زلته وهفوته ، ولا يعيبه ، ويدعو له في الخلوة في حياته ومماته ، ويظهر الفرح بما يسرّه ، والحزن بما يضره ، ويبدأه بالسلام عند إقباله ، ويوسع له في المجلس ، ويخرج له من مكانه ، ويشيعه عند قيامه ، ويصمت عند كلامه حتى يفرغ من خطابه ، وبالجملة يعامله بما يحب أن يعامل ب
“সঙ্গী বা সহচরদের সাথে আচরণের শিষ্টাচারসমূহের অন্তর্ভুক্ত হলো গোপন কথাগুলো গোপন রাখা; তার দোষত্রুটি আড়াল করা; মানুষ তার সম্পর্কে যে অপ্রীতিকর মন্তব্য করে তা তার কাছে পৌঁছানো থেকে বিরত থাকা,আর তার সম্পর্কে মানুষের যেসব প্রশংসামূলক কথা রয়েছে তা তার কাছে পৌঁছে দেয়া; যখন সে কথা বলে, মনোযোগ দিয়ে তার কথা শ্রবণ করা; তর্ক-বিতর্ক পরিহার করা; তার প্রিয় নামে তাকে সম্বোধন করা; তার পরিচিত সৎগুণাবলির প্রশংসা করা; তার দ্বারা নিজের প্রতি করা সদাচরণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা; তার অনুপস্থিতিতেও তার সম্মান রক্ষা করা; তার কোনো চাহিদা প্রকাশের আগেই তার প্রয়োজন পূরণের জন্য এগিয়ে আসা; প্রয়োজনে কোমলতা ও ইশারার মাধ্যমে (পরোক্ষভাবে) তাকে উপদেশ দেয়া; তার ভুল-ভ্রান্তি ও হঠকারিতা ক্ষমা করে দেয়া এবং প্রকাশ্যে তার সমালোচনা না করা; তার জীবিত অবস্থায় এবং মৃত্যুর পরেও নির্জনে তার জন্য দোয়া করা; তার কোনো সুখবর পেলে আনন্দিত হওয়া এবং দুঃসংবাদ পেলে দুঃখ প্রকাশ করা; সে যখন আগমন করে, তখন সালাম দিয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানানো; সমাবেশে তার জন্য জায়গা প্রশস্ত করে দেয়া এবং প্রয়োজনে নিজের আসন ছেড়ে দেয়া; যখন সে উঠতে চায়, তাকে বিদায় জানানো; সে কথা বলার সময় নীরব থাকা এবং তার কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে মনোযোগ দিয়ে শোনা।”(মুনাবি ‘ফয়যুল কাদির খণ্ড; ২ পৃষ্ঠা: ৩২) পরিশেষে, উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, সম্মানিত শাইখ ড. শাইখ ড.আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া (হাফিযাহুল্লাহ) বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই বিষয়ে অত্যন্ত যথার্থ ও বাস্তবভিত্তিক উত্তর প্রদান করেছেন। অতএব, এ বিষয়ে অহেতুক বিতর্কে জড়িয়ে পড়া, বিভ্রান্তি ছড়ানো কিংবা ফেতনার সৃষ্টি থেকে সবাইকে সতর্ক ও বিরত থাকার বিনীত আহ্বান জানাচ্ছি।” (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
▬▬▬▬▬✿▬▬▬▬▬
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।
Share: