আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট

  • আল  অকীল

 

এ নামের অর্থ উকীল, কর্মবিধায়ক, তত্ত্বাবধায়ক। মহান আল্লাহ সবকিছুর সবারই উকীল। তিনি বলেন, আল্লাহ সর্বকিছুর স্রষ্টা এবং তিনি সবকিছুর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।[সূরা আয যুমার: ৬২] তিনি বলেন, অন্য কোন উকীল লাগবে না। কারণ তিনিই উকীল হিসাবে যথেষ্ট। আর আল্লাহরই জন্যে সে সবকিছু যা কিছু রয়েছে আসমান সমূহে যমীনে। আল্লাহই যথেষ্ট কর্মবিধায়ক। [সূরা আন নিসা :১৩২]

 

  • অর্থাৎআপনি কাফের মুনাফিকদের আনুগত্য করবেন না এবং তাদের উৎপীড়ন উপেক্ষা করুন আল্লাহর উপর ভরসা করুন। আল্লাহ কার্যনিবার্হীরূপে যথেষ্ট [সূরা আল আহযাব :৪৮]

 

যত কঠিন ও যত বড়ই কাজ হোক, সেই কাজ মহান আল্লাহ বান্দার পক্ষ থেকে সমাধা করে দেন।
বিপদ যত বড়ই হোক, সে বিপদ থেকে তিনি বান্দাকে উদ্ধার করেন।
তিনি বলেন, যাদেরকে লোকেরা বলেছে যে, তোমাদের সাথে মোকাবেলা করার জন্য লোকেরা সমাবেশ করেছে বহু সাজসরঞ্জাম; তাদের ভয় কর। তখন তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর হয়ে যায় এবং তারা বলে, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট; কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক। অতঃপর ফিরে এল মুসলমানরা আল্লাহর অনুগ্রহ নিয়ে, তদের কিছুই অনিষ্ট হলো না। তারপর তারা আল্লাহর ইচ্ছার অনুগত হল। বস্তুতঃ আল্লাহর অনুগ্রহ অতি বিরাট [সূরা আলে ইমরান: ১৭৩-১৭৪]

ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু বলেন যে, ‘’হাসবুনাল্লাহ অনি’মাল অকীল’’ কথাটি ইব্রাহীম (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বলেছিলেন, যখন তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এবং মুহাম্মাদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটি তখন বলেছিলেন , যখন লোকেরা বলেছিল যে, (কাফের) লোকেরা তোমাদের মুকাবিলার জন্য সমবেত হয়েছে; ফলে তোমরা তাদেরকে ভয় কর। কিন্তু এ কথা তাদের ঈমানকে বাড়িয়ে দিল এবং তারা বলল, ‘’ হাসবুনাল্লাহ অনি’মাল অকীল।’’ অর্থাৎ, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক। [বুখারী]

 

  • ওরা বলে,‘উকীল ধর, উকীল ছাড়া পার পাবে না।’ তিনি বলেন, তাঁকে ছাড়া অন্য কাউকে উকীল ধরো না।

 

অর্থাৎ, ‘আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছি এবং সেটিকে বনী-ইসরাঈলের জন্যে হেদায়েতে পরিণত করেছি যে, তোমরা আমাকে ছাড়া কাউকে কার্যনিবাহী স্থির করো না’। [সূরা বনী ইসরাঈল: ০২]

তিনি বলেন, সকল কর্তৃত্ব তাঁরই , কারো ওকালতি চলবে না কিয়ামত কোর্টে। কিয়ামতের আদালতে তিনিই হাকীম, তিনিই উকীল এবং তিনিই সাক্ষী। তিনি বলেছেন, ‘নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর অধিষ্টিত হয়েছেন। তিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে রাতের পিছনে আসে। তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র দৌড় স্বীয় আদেশের অনুগামী। শুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহ, বরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক’। [সূরা আরা’ফ:৫৪]

 

  • যেদিন কেউ কারও কোন উপকার করতে পারবে না এবং সেদিন সবকর্তৃত্ব হবে আল্লাহর [সূরা ইনফিতার: ১৯]

 

উকীল মানে জামিনদারও বলা হয়েছে। 
অর্থাৎ, তিনি সৃষ্টির রুযীর জমানত নিয়েছেন। অবশ্য উকোল মানে সাক্ষীও এসেছে আল-কুরআনে । মহান আল্লাহ তাঁর নবী মূসা (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর শ্বশুরের ঘটনায় বিবাহে দেনমোহর-চুক্তির ব্যাপারে বলেন, ‘মূসা বললেন, আমার ও আপনার মধ্যে এই চুক্তি স্থির হল। দু’টি মেয়াদের মধ্য থেকে যে কোন একটি পূর্ণ করলে আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকবে না। আমরা যা বলছি, তাতে আল্লাহর উপর ভরসা’। [সূরা আল-কাসাস ; ২৮]

 

মূলঃ মহান আল্লাহর নাম ও গুণাবলী
আব্দুল হামিদ ফাইযী।।