অধিকাংশের কাছে অবহেলিত বিষয় হচ্ছে ক্বদর বা তাকদিরে বিশ্বাস

আপনি হয়ত জানেন মুসলিম হয় ছয়টি বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপনে!
আল্লাহ, ফিরিশতা, কিতাব, রাসূল, আখিরাত ও ক্বদর -এ বিশ্বাস।
মৃত্যুর পর পুনরুত্থানেও বিশ্বাস করতে হয় যা আখিরাতের অংশ।

কিন্তু! আফসোস!! চারদিকে যারাই নিজেকে মুসলিম বলছে তাদের অধিকাংশের কাছে অবহেলিত বিষয় হচ্ছে ক্বদর বা তাকদিরে বিশ্বাস।
প্রত্যেকটি বিষয়েই কিছু ভুল ধারণা থাকলেও অধিকাংশেরই ক্বদর বিষয়ে কোন ধারণাই নেই!! তারা বুঝেনা যে সালাতের অর্থ যেমন প্রার্থনা করলেই যথেষ্ট হয়না তেমনি ক্বদর এর অর্থ কোনভাবেই ভাগ্য নয়। হিন্দুদের নসিবে বা কপালে লেখার মত ক্বদর বা তাকদিরের লিখার ধারণা নয়! যদিও অধিকাংশই তাই মনে করে…

“বুঝতে পারিনা তাই মেনে নিলাম”, “সবাই বিশ্বাস করে তাই আমিও করি”, “বাপ-দাদা বিশ্বাস করে বা করতে বলছে তাই আমিও করি”, “বুঝিনা-জানা সম্ভব না তাই বিশ্বাস করি” এ ফ্রেজগুলোকে ঈমান বলেনা বলে সংশয়!

অন্ধ বিশ্বাসের নাম ঈমান নয়; ঈমান মানে দৃঢ় বিশ্বাসের নাম। তাই বিশ্বাস বা ঈমানের ক্ষেত্রে জ্ঞান মূলত ওহীর জ্ঞানের প্রয়োজন। জ্ঞানছাড়া ঈমান হয়না; আর ঈমান ছাড়া আমল হয়না!!
যখন ব্যক্তি তার জ্ঞানে মানুষের নানা মত ও পথ, ধারণা ও অন্ধ বিশ্বাস এসে যুক্ত করে তখন সে মানুষের ঈমান দূর্বল হয়; সংশয়-সন্দেহে পতিত হয়। তাই উপরোল্লিখিত ৬টি বিষয়েই স্পষ্ট ধারণা ও দৃঢ় বিশ্বাস আনলেই কেউ মুসলিম হতে পারে….

>>>>নিচের লেখাটি সংশয়গ্রস্থ ও কাফিরদের একটি সন্দেহমূলক প্রশ্ন ও সে বিষয় ধারণা লাভের জন্য লেখা হয়েছে যা আপনার তাকদিরে বিশ্বাসের বিষয় কিছু ভুল ধারণা দূর করবে বলে আশা রাখি >>>>>

অনেকে প্রশ্ন করেন:
মানুষ ভাল-মন্দ যত কাজ করে তা আল্লাহর ইচ্ছায় ও তাকদীরের লিপিবদ্ধ থাকার কারণে করে। তাই মানুষের কি দোষ?
.
কেন আল্লাহ তাকে মন্দ কাজের জন্য শাস্তি দেবেন?
.
আবার অনেকের প্রশ্নের ভাষা এ রকম যে,
আমি জান্নাতে যাবো না জাহান্নামে যাবো তাতো অনেক আগেই লেখা হয়েছে। তাই কষ্ট করে নেক আমল করে লাভ কী? তাকদীরে জান্নাত লেখা থাকলে কোন আমল না করেও জান্নাতে যাওয়া যাবে। আর কপালে জাহান্নাম লেখা থাকলে হাজার ভাল কাজ করেও জান্নাতে যাওয়া যাবে না।
.
আবার অনেকে বলেন, আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া যখন কিছুই হয় না। তাই আমি যদি কোন খারাপ কাজ করে থাকি তবে তা আল্লাহর ইচ্ছায় করেছি। আল্লাহ ইচ্ছে করলে আমাকে ফিরিয়ে রাখতে পারতেন।
প্রশ্নের ভাষার ধরণ যাই হোকনা কেন, কথা হল সব কিছু যখন আল্লাহর ইচ্ছায় হয় তখন মানুষের কী দোষ?
.
এ সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে যেয়ে অনেক বিজ্ঞজন হিমশিম খেয়েছেন। এক পর্যায়ে বলতে বাধ্য হয়েছেন, তাকদীর সম্পর্কে বেশী আলোচনা বা প্রশ্ন করা ঠিক নয়। এ ব্যাপারে যুক্তি-তর্ক করতে যেয়ে অনেকে হয়েছে গোমরাহ । উদ্ভব হয়েছে জাবরিয়া, কদরিয়া ইত্যাদি বাতিল ফেরকার।
তাই আমি এ বিষয়টি সম্পর্কে অতি সংক্ষেপে একটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো আমার এ প্রবন্ধে।
.
প্রথম কথা হল, এ ধরনের প্রশ্ন কোন মুসলিম করতে পারে কিনা?
আল-কুরআনুল কারীমে যা দেখা যায় তাতে প্রমাণিত হয় যে, এ ধরনের প্রশ্ন কাফির মুশরিকরা করত।
.
যেমন ইরশাদ হচ্ছে : ﺳَﻴَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺃَﺷْﺮَﻛُﻮﺍ ﻟَﻮْ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻣَﺎ ﺃَﺷْﺮَﻛْﻨَﺎ ﻭَﻟَﺎ ﺁَﺑَﺎﺅُﻧَﺎ ﻭَﻟَﺎ ﺣَﺮَّﻣْﻨَﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻲْﺀٍ ﻛَﺬَﻟِﻚَ ﻛَﺬَّﺏَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻣِﻦْ ﻗَﺒْﻠِﻬِﻢْ ﺣَﺘَّﻰ ﺫَﺍﻗُﻮﺍ ﺑَﺄْﺳَﻨَﺎ ﻗُﻞْ ﻫَﻞْ ﻋِﻨْﺪَﻛُﻢْ ﻣِﻦْ ﻋِﻠْﻢٍ ﻓَﺘُﺨْﺮِﺟُﻮﻩُ ﻟَﻨَﺎ ﺇِﻥْ ﺗَﺘَّﺒِﻌُﻮﻥَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻈَّﻦَّ ﻭَﺇِﻥْ ﺃَﻧْﺘُﻢْ ﺇِﻟَّﺎ ﺗَﺨْﺮُﺻُﻮﻥَ
অচিরেই মুশরিকরা বলবে, আল্লাহ যদি চাইতেন, আমরা শিরক করতাম না এবং আমাদের পিতৃপুরুষরাও না এবং আমরা কোন কিছু হারাম করতাম না। এভাবেই তাদের পূর্ববর্তীরা মিথ্যারোপ করেছে, যে পর্যন্ত না তারা আমার আযাব আস্বাদন করেছে। বল, তোমাদের কাছে কি কোন জ্ঞান আছে, যা তোমরা আমাদের জন্য প্রকাশ করবে? তোমরা তো শুধু ধারণার অনুসরণ করছ এবং তোমরা তো কেবল অনুমান করছ। (সূরা আল আনআম : ১৪৮)
.
দেখুন ! মুশরিকরা তাদের শিরকের ব্যাপারে আল্লাহর ইচ্ছার কথা বলে রেহাই পাবার প্রয়াস পেয়েছে। এবং তাদের এ কথা দ্বারা তারা ইসলামকে প্রত্যাখ্যান করেছে। অতএব যারা আল্লাহর ইচ্ছার দোহাই দিয়ে সত্যকে প্রত্যাখ্যান ও সৎকর্ম থেকে দূরে থাকতে চায় তারা মূলত: মুশরিকদের মতই কাজ করল ও তাদের অনুস্বরণ করল।
.
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরো বলেন: ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺃَﺷْﺮَﻛُﻮﺍ ﻟَﻮْ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻣَﺎ ﻋَﺒَﺪْﻧَﺎ ﻣِﻦْ ﺩُﻭﻧِﻪِ ﻣِﻦْ ﺷَﻲْﺀٍ ﻧَﺤْﻦُ ﻭَﻟَﺎ ﺁَﺑَﺎﺅُﻧَﺎ ﻭَﻟَﺎ ﺣَﺮَّﻣْﻨَﺎ ﻣِﻦْ ﺩُﻭﻧِﻪِ ﻣِﻦْ ﺷَﻲْﺀٍ ﻛَﺬَﻟِﻚَ ﻓَﻌَﻞَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻣِﻦْ ﻗَﺒْﻠِﻬِﻢْ ﻓَﻬَﻞْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺮُّﺳُﻞِ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﺒَﻠَﺎﻍُ ﺍﻟْﻤُﺒِﻴﻦُ
{আর যারা শির্‌ক করেছে, তারা বলল, যদি আল্লাহ চাইতেন তবে আমরা তাকে ছাড়া কোন কিছুর ইবাদাত করতাম না এবং আমাদের পিতৃপুরুষরাও না। আর তার বিপরীতে আমরা কোন কিছু হারাম করতাম না। এমনিই করেছে, যারা তাদের পূর্বে ছিল। সুতরাং স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া ছাড়া রাসূলদের কি কোন কর্তব্য আছে?} [সূরা আন নাহল: ৩৫]
.
তিনি আরো বলেন: ﻭَﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻟَﻮْ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦُ ﻣَﺎ ﻋَﺒَﺪْﻧَﺎﻫُﻢْ ﻣَﺎ ﻟَﻬُﻢْ ﺑِﺬَﻟِﻚَ ﻣِﻦْ ﻋِﻠْﻢٍ ﺇِﻥْ ﻫُﻢْ ﺇِﻟَّﺎ ﻳَﺨْﺮُﺻُﻮﻥَ
{আর তারা (মুশরিকরা) বলে, পরম করুণাময় আল্লাহ ইচ্ছা করলে আমরা এদের ইবাদাত করতাম না, এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই। তারা শুধু মনগড়া কথা বলছে। } [ সূরা যখরুফ: ২০]
.
উল্লিখিত তিনটি আয়াতে কারীমা পাঠ করে কয়েকটি বিষয় স্পষ্টভাবে জানা গেল:-

(এক) মুশরিকরা আল্লাহর ইচ্ছার দোহাই দিয়ে শিরক করত। তাদের শিরকের প্রমাণ হিসাবে তারা আল্লাহর ইচ্ছাকে পেশ করত।

(দুই) তারা বিশ্বাস করত সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছায় হয়। এ বিশ্বাস পোষণ করার পরও তারা কাফির ও মুশরিক রয়ে গেছে।

(তিন) তারা আল্লাহর গুণাবলিতে বিশ্বাস করত (যেমন সূরা যুখরুফের আলোচ্য আয়াতে রহমান গুণ) তারপরেও তারা মুশরিক থেকেছে।

(চার) তারা তাদের শিরকের সমর্থনে আল্লাহর ইচ্ছাকে প্রমাণ হিসাবে পেশ করে বলেছে যে, তারা এসব আল্লাহর ইচ্ছায়ই করছে। আল্লাহ তাদের মিথ্যাবাদী বলেছেন। কারণ, তারা বলেছে তাদের শিরকি কাজগুলো আল্লাহর ইচ্ছায় করা হচ্ছে।

(পাঁচ) তাদের এ সকল বক্তব্য নতুন কিছু নয়। তাদের পূর্ব-পুরুষরাও এ রকম বক্তব্য দিয়েছে।
.
>>>>>
এরপরও যদি কোন মুসলিম ব্যক্তি কাফির- মুশরিকদের মত অনুরূপ প্রশ্ন করে তাকে আমরা কয়েকটি উত্তর দিতে পারি।
.
#এক. যে ব্যক্তি এ ধরনের প্রশ্ন করবে তাকে বলা হবে আপনি জান্নাতে যেতে চান না জাহান্নামে? উত্তরে সে হয়তো বলবে আমি জান্নাতে যেতে চাই। তারপর তাকে জিজ্ঞেস করুন, আচ্ছা আপনার তাকদীরে কী লেখা আছে জান্নাত না জহান্নাম, আপনি কি তা জানেন? সে বলবে, না আমি জানি না। আচ্ছা, তাহলে বিষয়টি আপনার কাছে অজ্ঞাত। আর অজ্ঞাত বিষয়ের উপর নির্ভর করে কোন ভাল কাজ ছেড়ে দেয়া কি কোন বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে? পরীক্ষায় পাশ করবে না ফেল করবে, এটা অজানা থাকার পরও মানুষ অনেক কষ্ট করে পরীক্ষা দেয় পাশ করার আশায়। অপারেশন সাকসেস হবে কি হবে না, তা অজ্ঞাত থাকা সত্বেও মানুষ অপারেশন করায় রোগ-মুক্তির আশায়। ফলাফল অজ্ঞাত থাকার অজুহাতে কোন কাজ ছেড়ে দিয়ে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকা সুস্থ মস্তিস্কের কাজ হতে পারে না। আপনার তাকদীরে জান্নাত লেখা আছে না জাহান্নাম তা আপনার জানা নেই। কিন্তু আপনার লক্ষ্য যখন জান্নাত তখন লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য অবশ্যই কাজ করতে হবে। যেমন দুনিয়াবি-পার্থিব সকল কাজ-কর্ম ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অর্জন করার বেলায় আমরা করে থাকি। আর জান্নাত ও জাহান্নামের স্রষ্টা যখন বলে দিয়েছেন এটা জান্নাতের পথ আর ওটা জাহান্নামের পথ তখন তা বিশ্বাস করে আমল করতে অসুবিধা কোথায়?
.
#দুই. যার তাকদীরে জান্নাত লেখা আছে সাথে সাথে এটাও লেখা আছে যে, সে জান্নাত লাভের জন্য নেক আমল করবে তাই জান্নাতে যাবে। আর যার তাকদীরে জাহান্নাম লেখা আছে সাথে সাথে এটাও লেখা আছে যে, সে জাহান্নামের কাজ করবে ফলে সে জাহান্নামে যাবে।
.
#তিন. সব কিছু আল্লাহর ইচ্ছায় হয়। মানুষ সকল কাজই আল্লাহর ইচ্ছায় করে ঠিকই কিন্তু আল্লাহর সন্তুষ্টি মোতাবেক করে না। আল্লাহর সন্তুষ্টি মোতাবেক কাজ করার জন্য সে জান্নাতে যাবে আর সন্তুষ্টি মোতাবেক কাজ না করার জন্য সে জাহান্নামে যাবে। প্রশ্ন হতে পারে ইচ্ছা (ইরাদা বা মাশিয়্যত) ও সন্তুষ্টি (রেজা) এ দুয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে কি? হ্যাঁ অবশ্যই আছে। ইচ্ছা ও সন্তুষ্টির মধ্যে পার্থক্য আছে অবশ্যই। ছোট একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টা সহজে বুঝানো যেতে পারে। যেমন এক ব্যক্তির ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়ল। চিকিৎসক বললেন তার পেটে অপারেশন করতে হবে। অপারেশন ছাড়া অন্য কোন পথ নেই। এখন বেচারা অপারেশন করাতে রাজী নয়। এ কাজে সে সন্তুষ্ট নয়, তবুও সে অপারেশন করিয়ে থাকে। এমন কি এ কাজের জন্য ডাক্তারকে টাকা পয়সা দেয়। অতএব, দেখা গেল এ অপারেশনে তার ইচ্ছা পাওয়া গেল, কিন্তু তার সন্তুষ্টি পাওয়া যায়নি। অপারেশন করাতে সে ইচ্ছুক কিন্তু রাজী নয়। দেখা গেল ইচ্ছা ও সন্তুষ্টি দুটো আলাদা বিষয়। অনেক সময় ইচ্ছা পাওয়া যায়, কিন্তু সেখানে সন্তুষ্টি পাওয়া যায় না। কিন্তু যেখানে সন্তুষ্টি পাওয়া যায় সেখানে ইচ্ছা অবশ্যই থাকে। তাই সকল কাজ মানুষ আল্লাহর ইচ্ছায় করে ঠিকই কিন্তু তার সন্তুষ্টি ও রেজামন্দি অনুযায়ী করে না। বিভ্রান্তি তখনই দেখা দেয় যখন ইচ্ছা দ্বারা সন্তুষ্টি বুঝানো হয়। তাই জান্নাতে যেতে হলে তাঁর ইচ্ছায় কাজ করলে হবে না। তাঁর সন্তুষ্টি অনুযায়ী কাজ করতে হবে। যে কাজে তিনি সন্তুষ্ট হন বলে প্রমাণ আছে সে সকল কাজ করতে হবে। আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টি কিভাবে বুঝার উপায় কোন কাজে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন, আর কোন কাজে তিনি অসন্তুষ্ট হন তা বুঝা যাবে কুরআন ও সহীহ হাদীস দ্বারা। কোন কাজ সংঘটিত হয়ে গেলেই সাধারণভাবে বুঝে নেয়া হবে যে এটা আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় হয়েছে। তা অবশ্যই বলতে হবে। কিন্তু তা আল্লাহর সন্তুষ্টিতে হয়েছে কিনা তা বুঝা যাবে না কুরআন বা হাদীসের মাধ্যম ব্যতীত। কুরআন বা হাদীসে উক্ত বিষয়টির সমর্থন থাকলে বুঝা যাবে সেটা আল্লাহর সন্তুষ্টিতে সম্পন্ন হয়েছে। আর যদি কাজটি কুরআন বা হাদীসের পরিপন্থী হয় তাহলে ধরে নেয়া হবে কাজটি আল্লাহর সমন্তুষ্টির খেলাফ হয়েছে। তাই আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুযায়ী কাজ করলে জান্নাতের অধিকারী হওয়া যাবে। আর তার সন্তুষ্টি অনুযায়ী কাজ না করলে জাহান্নামে যেতে হবে। ভাল করে মনে রাখতে হবে সব কাজ আল্লাহর ইচ্ছায় হয় ঠিকই কিন্তু সব কাজ তার সন্তুষ্টি মোতাবেক হয় না। আরো মনে রাখতে হবে ইচ্ছা ও সন্তুষ্টি এক বিষয় নয়। দুটো আলাদা বিষয়।
.
#চার. আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তার ইচ্ছায় সবকিছু হয়। তাই তিনি ইচ্ছা করেই মানুষকে ইচ্ছা শক্তি দিয়েছেন। যাতে মানুষ নিজ ইচ্ছায় ও স্বাধীনতায় ভাল ও মন্দ পথ অবলম্বন ও বর্জন করতে পারে।
.
যেমন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :
ﻭَﻗُﻞِ ﺍﻟْﺤَﻖُّ ﻣِﻦْ ﺭَﺑِّﻜُﻢْ ﻓَﻤَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﻓَﻠْﻴُﺆْﻣِﻦْ ﻭَﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﻓَﻠْﻴَﻜْﻔُﺮْ
{বল, সত্য তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে ; সুতরাং যার ইচ্ছা বিশ্বাস করুক ও যার ইচ্ছা সত্য প্রত্যাখ্যান করুক।} [সূরা আল কাহাফ: ২৯]
.
তাই_বলা_যায় আল্লাহর দেয়া ইচ্ছাশক্তিতেই মানুষ ভাল-মন্দ কাজ করে। তবে আল্লাহ ইচ্ছা করলে মানুষের ইচ্ছাশক্তি রহিত করে ভাল বা মন্দ কাজ করতে বাধ্য করতে পারেন।
.
মানুষ কোন খারাপ কাজ করলে এ কথা বলা যাবে না যে, এ ক্ষেত্রে মানুষের কোন ইচ্ছা ছিল না। এ কথাও বলা যাবে না যে আল্লাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজটি হয়েছে। কাজটা আল্লাহর ইচ্ছায় হয়েছে এটা যেমন সত্য, তেমনি মানুষের ইচ্ছাও কাজটা করার ব্যাপারে ভূমিকা রেখেছে, এটাও সত্য। কিভাবে এটা সম্ভব? একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা পরিস্কার হয