প্রশ্ন: শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে “দাবা” খেলার বিধান কি? ফেইসবুকে কিছু তরুণ দাবা খেলা জায়েজ প্রমাণে উঠে পড়ে লেগেছে; তাদেরকে সামান্য নসিহত।
▬▬▬▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা এবং তার মধ্যেই নিহিত রয়েছে সকল সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান।শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে খেলা-ধুলা মানুষের জন্মগত স্বভাব। এর উদ্দেশ্য সাময়িক শরীর চর্চা। যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বয়স ভেদে মানুষের শরীর চর্চার ধরনের পরিবর্তন হয়। কিন্তু সাময়িক শরীর চর্চার বদলে যদি তা কেবল সময়ের অপচয় হয়, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়, যদি ঐ ব্যক্তি মহান আল্লাহর আনুগত্য এবং দ্বীন থেকে গাফেল হয়, দায়িত্ব বিস্মৃত হয় বা তাতে জুয়া মিশ্রিত হয়, তখন ঐ খেলা হারামে পরিণত হয়। ‘দাবা’ তেমনি একটি খেলা। এতে দ্বীনি কোন কল্যান নেই। যদিও কিছু লোক দাবি করে যে দাবা খেলা মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধি বৃদ্ধি এবং এটি জিহাদের উপায় শিখতে সহায়তা করে। এই দাবি অযৌক্তিক। বরং গবেষণায় প্রমাণিত বুদ্ধি বা বুদ্ধিমত্তার সাথে দাবার কোনো সম্পর্ক নেই; বরং বুদ্ধিমত্তা এই খেলার দ্বারা বিভ্রান্তির শিকার হয়। দাবা খেলোয়াড় এই খেলায় এতটাই মগ্ন হয়ে যায় যে অন্য কিছু যেমন: যথাসময়ে সালাত আদায় পরিবারকে সময় দেওয়া নিজের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব কর্তব্যের প্রতি তার কোন খেয়াল থাকে না। অথচ মুত্তাকীরা তাদের দায়িত্ব কর্তব্য পালনে সদা সচেতন। মহান আল্লাহ সূরা মুমিনূনে মুত্তাকীদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বলেন- তারা তাদের সালাতে ভীতি-অবনত, আর তারা অনর্থক কর্মকাণ্ড থেকে থাকে বিমুখ। (সূরা মুমিনুন;২৩/৪-৫)। মোটকথা: যেসব কথায় বা কাজে কোন লাভ হয় না, যেগুলোর পরিণাম কল্যাণকর নয়, যেগুলোর আসলে কোন প্রয়োজন নেই, যেগুলোর উদ্দেশ্যও ভালো নয় সেগুলোর সবই ‘বাজে’ কাজের অন্তর্ভুক্ত। যাতে কোন দ্বীনী উপকার নেই বরং ক্ষতি বিদ্যমান। এ থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন; “মানুষ যখন অনর্থক বিষয়াদি ত্যাগ করে,তখন তার ইসলাম সৌন্দর্য মণ্ডিত হতে পারে।” (তিরমিযী হা/২৩১৭, ২৩১৮, ইবনে মাজাহ হা/ ৩৯৭৬)
.
হিজরী অষ্টম শতাব্দীর অন্যতম ইমাম শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া-হার্রানী আল-হাম্বালী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭২৮ হি.] দাবা খেলা সম্পর্কে প্রদত্ত ফাতওয়ায় বলেছেন, যখন দাবা খেলা আমাদেরকে শরীয়তের অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক বিধিবিধান যেমন: যথা সময়ে সালাত আদায়, নিজের অপরিহার্য কাজকর্ম বা নিজের পরিবার, বা সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ করা বা আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখা বা পিতামাতার আনুগত্য করা অথবা নেতৃত্বের সাথে সম্পর্কিত যে কোনও বাধ্যবাধকতা ইত্যাদি কার্যক্রম সম্পাদানে বাধাগ্রস্ত করে বা গাফেল করে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের ঐক্যমত্যে এটি হারাম। যা নিয়ে প্রসিদ্ধ সালাফগণের মধ্যে কোন মতানৈক্য নেই। অনুরূপভাবে,যদি এতে হারাম এমন কিছু থাকে যেমন; মিথ্যা বলা, মিথ্যা শপথ করা, প্রতারণা করা, অন্যায় কাজ করা বা অন্যায় কাজে সাহায্য করা বা অন্যান্য হারাম জিনিস, তাহলে তা মুসলমানদের ঐক্যমত অনুযায়ী হারাম। (মাজমূঊল ফাতাওয়া ইবনু তাইমিয়্যাহ খন্ড:৩২ পৃষ্ঠা:২১৮,২৪০)
.
অপরদিকে দাবা খেলা যদি আমাদেরকে শরীয়তের বিধি-বিধান পালনে বাধাগ্রস্ত না করে বা হারাম কোনো কিছুর সাথে জড়িত না হয়, সরাসরি জুয়া নেই তাহলে এটি হারাম কিনা এ ব্যাপারে কিছুটা মতানৈক্য থাকলেও অধিকাংশ আলেম (আবু হানীফা, মালিক, আহমাদ এবং ইমাম শাফাঈ রাহিমাহুল্লাহ) বেশ কিছু সাহাবী, মহান আল্লাহর কিতাব, রাসূল (ﷺ)-এর হাদীস এবং সাহাবিদের মতামত অনুযায়ী এটাও হারাম। পবিত্র কুরআন থেকে প্রমান হলো: মহান আল্লাহ বলেন, “হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমা-বেদী ও ভাগ্যনির্ধারক তীরসমূহ তো নাপাক শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শক্রতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে এবং তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণে ও সালাতে বাধা দিতে। তবে কি তোমরা বিরত হবে না? (সূরা মায়েদাহ, ৫/৯০-৯১)।
.
উক্ত আয়াতের তাফসিরে ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন: “এই আয়াতটি নির্দেশ করে যে পাশা বা দাবা খেলা হারাম, তাতে জুয়া খেলা হোক বা না হোক। কারণ, আল্লাহ যখন মদ হারাম করেছেন তখন তিনি এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন, যা হলো ‘শয়তানের কর্মকাণ্ড। শয়তান শুধু চায় নেশা (মদ্যপান) ও জুয়া দিয়ে তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও সালাত থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে।’ সুতরাং যে খেলায় সামান্য কিছু অনেক কিছুর দিকে নিয়ে যায় এবং যারা এর প্রতি অনুগত তাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ জাগায় এবং আল্লাহকে স্মরণ করা ও নামাজ পড়তে বাধা দেয়, তা মদ পান করার মতো, যার অর্থ হলো এটি অবশ্যই মদের মতো হারাম।” (আল-জামি‘ঊ লি আহকামিল কুরআন, খন্ড: ৬ পৃষ্ঠা: ২৯১)।
▪️দাবা খেলা সম্পর্কে সাহাবায়ে কেরামের মতামত:
_______________________________________
ইমাম বাইহাকী তার ‘আস্-সুনানুল কুবরা’ গ্রন্থে বলেন: আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি কিছু লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যারা দাবা খেলছিল। তখন তিনি বললেন: এসব মূর্তিগুলোর উপর তোমরা ঝুঁকে আছ কেন? (সূরা আম্বিয়া, ২১/৫২ মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বা হা/২৬৬৮২; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৬০৯৭, সনদ হাসান; ইবনু হাযম, আল মুহাল্লা ৬/৬৩)।
.
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের মহান ইমাম, শাইখুল ইসলাম আবু আব্দুল্লাহ আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাম্বাল আশ-শাইবানী রাহিমাহুল্লাহ (জন্ম ১৬৪ হি./৭৮০ খ্রি. এবং মৃত্যু ২৪১ হি./৮৫৫ খ্রি.) বলেছেন; “দাবা খেলার সবচেয়ে সঠিক মন্তব্য যা ‘আলী (রাঃ) বলেছেন।”
.
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) কে দাবা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, এটা পাশার চেয়েও খারাপ। (ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১৪০৯৫ ইসলাম ওয়েব ফাতওয়া নং-৫৬৭২৭)।
.
আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি দাবা খেলা খেললো, সে আল্লাহ্ ও আল্লাহ্র রাসূলের নাফরমানী করল। (আবু দাঊদ ৪৯৩৮, ইবনু মাজাহ ৩৭৬২, সহীহ আল জামে ৬৫২৯; সনদ হাসান)
.
নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, مَنْ لَعِبَ بِالنَّرْدَشِيْرِ فَكَأَنَّمَا صَبَغَ يَدَهُ فِيْ لَحْمِ خِنْزِيْرٍ وَدَمِهِ ‘যে ব্যক্তি পাশা খেলল, সে যেন তার হাত শূকরের গোশতে ও রক্তে রঙিন করে তুলল।’ (সহীহ মুসলিম, হা/২২৬০; আবু দাঊদ, হা/৪৯৩৯; ইবনু মাজাহ, হা/৩৭৬৩)।শাফি‘ঈ মাযহাবের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, ইমাম মুহিউদ্দীন বিন শারফ আন-নববী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬৭৬ হি.] বলেছেন: “এই হাদীসটি ইমাম শাফেঈ (রাহিমাহুল্লাহ) সহ অধিকাংশ আলেম প্রমাণ হিসাবে উদ্ধৃত করেছেন যে পাশা খেলা হারাম। ‘শূকরের মাংস ও রক্তে তার হাত ডুবিয়েছে’ এই বাক্যাংশটি এটি খাওয়াকে বোঝায় এবং এই উপমাটি প্রমান করে যে এটি হারাম।কারণ এটি খাওয়া হারাম।” (ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১৪০৯৫)
.
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ইমাম আবু হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘দাবা বা পাশা খেলোয়ারকে সালাম দিবে না। কেননা সে প্রকাশ্যে জঘন্য পাপে লিপ্ত।’ (মাজমূঊল ফাতাওয়া, খন্ড: ৩২ পৃষ্ঠা: ২৪৫)।
.
▪️দাবা খেলার নিষেধ সম্পর্কে কয়েকজন সালাফ যা বলেছেন:
_______________________________________
হাম্বালী মাযহাবের প্রখ্যাত ফাক্বীহ, শাইখুল ইসলাম, ইমাম আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন কুদামাহ আল-মাক্বদিসী আল-হাম্বালী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬২০ হি.] বলেছেন; “দাবা খেলা একটি পাশার মত, যে এটি হারাম।” (আল-মুগনী, খন্ড: ১৪ পৃষ্ঠা: ১৫৫)।
.
ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন; “দাবা খেলার মন্দ পরিণতি পাশার খারাপ পরিণতির চেয়েও বড় জঘন্য। যা কিছু পাশা খেলার নিষেধাজ্ঞার দিকে ইঙ্গিত করে তা দাবা খেলার নিষেধাজ্ঞার দিকে ইঙ্গিত করে…এটি ইমাম মালিক ও তাঁর অনুসারীদের, আবু হানীফা ও তাঁর অনুসারিদের, ইমাম আহমদ ও তাঁর অনুসারিদের এবং অধিকাংশ তাবিঈদের দৃষ্টিভঙ্গি। এটা জানা যায় না যে সাহাবায়ে কেরামের কেহ এই খেলার অনুমতি দিয়েছেন বা নিজেরা খেলেছেন। আল্লাহ তায়ালা তাদের তা থেকে হেফাজত করেছেন। সুতরাং, যদি কেউ দাবি করে সাহাবিদের মধ্যে কেউ এই খেলা খেলেছেন যেমন আবু হুরায়রা – এটি সাহাবায়ে কেরামের বিরুদ্ধে একটি বানোয়াট এবং মিথ্যা কথা। যেসব ব্যক্তি জানে সাহাবায়ে কেরাম কেমন ছিলেন এবং যার কাছে সাহাবিদের জীবনী বা কর্মাবলি সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান আছে তিনিই এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন সাহাবিদের সম্পর্কে সমালোচনামূলক জবাবে। রাসূল (ﷺ)-এর পর সর্বোত্তম প্রজন্ম এবং মানবজাতির সর্বোত্তম ব্যক্তিরা কীভাবে এমন কিছু খেলার অনুমতি দিতে পারে যা মানুষকে আল্লাহকে স্মরণ করতে এবং নামায পড়তে বাধা দেয়। যখন কোন ব্যক্তি মাদকে নিমজ্জিত থাকে তখন সেই ব্যক্তিকে মদ পান থেকে বাধা দেওয়ার চেয়ে জিকির এবং সালাত থেকে বাধা প্রদান করা বড় অপরাধ। যা আমরা বাস্তব জীবনে যেমন দেখি? কিভাবে শরীয়ত প্রণেতা পাশা/লুডু খেলাকে হারাম এবং দাবা খেলাকে হালাল বলতে পারে? অথচ এটা সবচেয়ে বেশি ফাসাদ সৃষ্টি করে।(ইবনুল ক্বাইয়্যিম আল-ফুরুসিয়াহ পৃষ্ঠা নং:৩০৩, ৩০৫, ৩১১)।
.
ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৪৮) বলেন; “দাবা সম্পর্কে অধিকাংশ আলেম বলেছেন যে, দাবা খেলা হারাম,তা টাকার বিনিময়ে হোক বা না হোক।এটা যদি টাকার জন্য খেলা হয় তাহলে তা সন্দেহাতীতভাবে জুয়া। জমহুর ওলামাদের মতে অর্থের বিনিময়ে না খেলেও এটা জুয়া এবং হারাম। ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ)-কে দাবা খেলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, এটা কি হারাম নাকি জায়েয? তিনি (রহিমাহুল্লাহ) উত্তরে বললেন, যদি কোন ব্যক্তির যথাসময়ে সালাত পড়তে বাধাগ্রস্ত করে বা সে টাকার জন্য খেলা করে, তবে তা হারাম। অন্যথায় ইমাম শাফেঈ (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মতে এটি মাকরূহ এবং অন্যান্য ইমামদের মতে হারাম…।(ইমাম যাহাবী কিতাবুল কাবাইর পৃষ্ঠা:৮৯-৯০; ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১৪০৯৫)
.
সৌদি ফতোয়া বোর্ডের বর্তমান গ্র্যান্ড মুফতী প্রথিতযশা মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ ও উসূলবিদ আশ-শাইখুল আল্লামাহ ইমাম আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৬২ হি./১৯৪৩ খ্রি.] একটি টেলিভিশন প্রোগ্রামে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন, যেখানে তিনি মানুষের দৈনন্দিন ধর্মীয় বিষয়ে দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন। সেখানে দাবা খেলা জায়েজ কিনা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে উত্তরে শাইখ বলেন; দাবা জায়েজ নয়। এটি নিষিদ্ধ খেলার অন্তর্ভুক্ত যা “জুয়ার অধীনের অন্তর্ভুক্ত।” এবং এটি “সময় এবং অর্থের অপচয় ও খেলোয়াড়দের মধ্যে ঘৃণা ও শত্রুতা সৃষ্টির কারণ।”(ফাতওয়াটি www.theguardiancom/world/2016/jan/21chess-forbidden-in-islam-rules-saudi-arabia-grand-mufti ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহীত)।
.
জেনে রাখা ভালো যে, কুরআন সুন্নাহ এবং সাহাবী তাবেঈ এবং পরবর্তী প্রসিদ্ধ সালাফদের মতামত অনুযায়ী একথা পরিস্কার যে দাবা খেলা জায়েজ নয়। যদিও সপ্তম হিজরির পর থেকে আগত কয়েকজন ইমাম বেশকিছু শর্ত পূরন করে দাবা খেলা জায়েজ বলেছেন। আমরা সেসকল সালাফদের সম্মান করি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ভালবাসি। কিন্তু শরীয়তের বিধি-বিধান পালনের ক্ষেত্রে তাদেরকে তাদেরকে তখনই অনুসরণ করি যখন তাদের বক্তব্য বা ফাতওয়া কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী সঠিক। কিন্তু অন্ধভাবে তাকলীদ বা বিনা দলিলে তাদের ফাতওয়ার অনুসরণ করিনা।
.
পরিশেষে, মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের জন্য হেদায়েতের পথ আলোকিত করে দেন, আমাদেরকে পরহেজগারদের অন্তর্ভুক্ত করেন, আমাদের মাঝে দ্বীনি বিষয়ে যেসকল ভাইয়েরা বিভ্রান্তিতে রয়েছে তাদেরকে তিনি সঠিকতা দান করুন, আর যে গাফিল, তাকে হেদায়েত দান করুন। আমাদেরকে এবং আমাদের সন্তানসন্ততি ও আত্মীয়-স্বজনদেরকে ইসলামের ওপর প্রতিষ্ঠিত রাখুন, পাশাপাশি আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করার তৌফিক দিন। ইয়া আল্লাহ, আমাদের নবি মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর ওপর দয়া ও শান্তির বারিধারা বর্ষণ করুন। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
______________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।