প্রশ্ন: মহিলারা কি শখ করে বাসা বাড়িতে স্বামীর পাঞ্জাবি-টুপি কিংবা পুরুষদের পোশাক পরিধান করতে পারবে?
▬▬▬▬▬▬▬▬✿▬▬▬▬▬▬▬▬
উত্তরের সারাংশ: শারঈ নির্দেশনা অনুযায়ী পুরুষের জন্য নারীদের এবং নারীর জন্য পুরুষদের (খাস) নিদিষ্ট পোশাক পরিধান করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ যা কবিরা গুনাহ। এমনকি স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সামনেও তা পরিধান করতে পারবে না। কেননা এতে পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বন করা হয় যা নিষিদ্ধ। তবে যা নারী-পুরুষের জন্য স্বতন্ত্র নয়; বরং উভয়ের জন্য সাধারণ হয় যেমন কিছু পোশাক (যেমন টি-শার্ট, চাদর, এক ধরনের শীতের জেকেট) যা পুরুষ ও নারী উভয়েই সমানভাবে পরিধান করে তাহলে শারঈ বিধিবিধান অনুসরণ করে পরিধান করলে এতে কোনো আপত্তি নেই।
.
দলিল সহকরে বিস্তারিত উত্তর: সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। আমাদের নবী মুহাম্মদের প্রতি, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবীগণের প্রতি আল্লাহর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর শরিয়তের প্রতিষ্ঠিত বিধান হচ্ছে পুরুষের জন্য নারীদের পোশাক পরিধান করা এবং নারীদের জন্য পুরুষদের পোশাক পরিধান করা সম্পূর্ণ হারাম ও কবিরা গুনাহ। অতএব, যদি কোনো নারী এমন পোশাক পরিধান করেন যা বিশেষভাবে পুরুষদের জন্য (খাস) নির্ধারিত, যেমন: ট্রাউজার, পায়জামা-পাঞ্জাবি, প্যান্ট-শার্ট, টুপি ইত্যাদি তা ঘরে হোক বা বাইরে, স্বামীকে খুশি করার উদ্দেশ্যে হোক বা ব্যক্তিগত পছন্দের কারণে হোক, বোরকার ভিতরে হোক আর বাহিরে, এমনকি সালাতের ভিতর হোক বা বাইরে যে কোনো অবস্থাতেই তা হারাম ও নাজায়েজ। অনুরূপভাবে ছোট বালিকার জন্য বালকের পোশাক পরিধান করাও নাজায়েয। একই রকম পুত্রের জন্য কন্যার বস্ত্র পরিধান করাও অবৈধ। কেননা এটাও সাদৃশ্যের অন্তর্ভুক্ত। আলেমগণ বলেন পোশাকের ক্ষেত্রে ছোট-বড় সকলের জন্য একই বিধান।(এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে দেখুন: বাহজাতু কুলুবিল আবরার, পৃষ্ঠা: ১৪৫; বিন বায; ফাতাওয়া নূর আলা দারব,খণ্ড: ১১; পৃষ্ঠা: ১৮৮-১৯১)
.
নারীরা পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে না। দলিল হচ্ছে: আবু হুরাইরা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الرَّجُلَ يَلْبَسُ لِبْسَةَ الْمَرْأَةِ وَالْمَرْأَةَ تَلْبَسُ لِبْسَةَ الرَّجُلِ. রাসূল (ﷺ) যে পুরুষ নারীদের বেশভূষা অবলম্বন করে তাদের অভিশাপ করেছেন আবার যে সব নারীরা পুরুষদের বেশভূষা অবলম্বন করে তাদের অভিশাপ করেছেন”।(আবু দাউদ হা/৪০৯৮; মিশকাত হা/৪৪৬৯) অপর বর্ননায় আব্দুল্লাহ্ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন:لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِالرِّجَالِ مِنَ النِّسَاءِ وَلاَ مَنْ تَشَبَّهَ بِالنِّسَاءِ مِنَ الرِّجَالِ ‘যে নারী পুরুষের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করে এবং যেসব পুরুষ নারীর সাদৃশ্য অবলম্বন করে, তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়”।(মুসনাদে আহমাদ হা/৬৮৭৫; সহীহুল জামে হা/৫৪৩৩) অপর বর্ননায় রাসূল (ﷺ) আরও বলেন, ثَلاَثٌ لاَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلاَ يَنْظُرُ اللَّهُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْعَاقُّ وَالِدَيْهِ وَالْمَرْأَةُ الْمُتَرَجِّلَةُ الْمُتَشَبِّهَةُ بِالرِّجَالِ وَالدَّيُّوثُ. وَثَلاَثَةٌ لاَ يَنْظُرُ اللَّهُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْعَاقُّ وَالِدَيْهِ وَالْمُدْمِنُ الْخَمْرَ وَالْمَنَّانُ بِمَا أَعْطَى. ‘তিন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না। ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ রাববুল আলামীন তাদের প্রতি কোনো করুণা করবেন না। এক. যে মাতা-পিতার অবাধ্য হয়, দুই. যে নারী পুরুষের আকৃতি অবলম্বন করে, তিন. দাইয়ূস (এমন ব্যক্তি যার পরিবারের মেয়েরা অশ্লীল কাজে লিপ্ত অথচ সে তাতে বিন্দুমাত্র বাঁধা দেয় না)। আর তিন ব্যক্তির দিকে ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ রাববুল আলামীন ভ্রুক্ষেপ করবেন না। এক. যে মাতা-পিতার অবাধ্য হয়, দুই. মদ্যপ, তিন. খোঁটাদানকারী দাতা”।(মুসনাদে আহমাদ হা/৬১৮০; নাসাঈ হা/২৫৬২)
.
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
لعن النبي صلى الله عليه وسلم المخنثين من الرجال والمترجلات من النساء، وقال: أخرجوهم من بُيُوتِكُمْ ، وقال: فأخرج النبي صلى الله عليه وسلم فلاناً، وأخرج عمر فلاناً”
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীর রূপ ধারণকারী পুরুষ ও পুরুষের রূপ ধারণকারী নারীদেরকে লানত করেছেন”। তিনি আরও বলেছেন: “তাদেরকে তোমাদের গৃহ থেকে বের করে দাও”। ইবনে আব্বাস আরও বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অমুক অমুককে বের করে দিয়েছেন এবং উমর (রাঃ) অমুক অমুককে বের করে দিয়েছেন।”(সহীহ বুখারী হা/৫৮৮৬) ইবনে আবু মুলাইকা (তাঁর নাম হচ্ছে আব্দুল্লাহ্ বিন উবাইদুল্লাহ্) বলেন: আয়েশা (রাঃ) কে বলা হল: কোন নারী কি (পুরুষের) স্যান্ডেল পরতে পারে? তিনি বললেন: “لعن رسول الله صلى الله عليه وسلم الرجلة من النساء “রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুরুষের সাথে সাদৃশ্য-গ্রহণকারী নারীদের উপর লানত করেছেন।”(আবু দাউদ হা/৪০৯৯; ইমাম বায়হাকী “শু’আবুল ঈমান” হা/৭৮০৪)
.
উপরোক্ত হাদীসগুলো উল্লেখ করে সৌদি আরবের প্রখ্যাত ‘আলিমে দ্বীন, শায়খ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন:وفي هذه الأحاديث دلالة واضحة على تحريم تشبه النساء بالرجال، وعلى العكس، وهي عادة تشمل اللباس وغيره إلا الحديث الأول فهو نص في اللباس وحده
“এই হাদিসগুলোতে নারীদের জন্য পুরুষের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করা এবং পুরুষদের জন্য নারীদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করা হারাম হওয়ার স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এই সাদৃশ্য গ্রহণ পোশাক-পরিচ্ছদকে এবং অন্যান্য বিষয়গুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করে; শুধু প্রথম হাদিসটি ছাড়া। সে হাদিসটি এককভাবে পোশাকের ব্যাপারে।”(ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-৬৯৯১)
.
হিজরী ৮ম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭২৮ হি.] বলেছেন: فالفارق بين لباس الرجال والنساء يعود إلى ما يصلح للرجال وما يصلح للنساء، وهو ما يناسب ما يؤمر به الرجال وما تؤمر به النساء، فالنساء مأمورات بالاستتار والاحتجاب دون التبرج والظهور؛ “পুরুষ ও নারীর পোশাকে ব্যবধান সৃষ্টিকারী বস্তু তা-ই যা তাদের প্রত্যেকের সাথে যথাযথ ও সামঞ্জস্য। পুরুষের জন্য শোভনীয় পোশাক পুরুষরা পরিধান করবে এবং নারীদের জন্য শোভনীয় পোশাক নারীরা পরিধান করবে এটিই শরী‘আতের নির্দেশ। নারীদের প্রতি নির্দেশ রয়েছে তারা ঢেকে থাকবে ও পর্দা করবে, প্রকাশ্যে আশা ও সৌন্দর্য প্রকাশ করা তাদের পক্ষে বৈধ নয়।”(ইবনু তাইমিয়্যাহ মাজমুউ ফাতাওয়া, খণ্ড: ২২; পৃষ্ঠা:১৪৮)
.
বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায আন-নাজদী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.]-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যদি কোনো মহিলা তার স্বামীর পোশাক পরিধান করে এবং এরপর সেই পোশাকের উপর নিজের বা অন্য কোনো পোশাক পরে, তবে কি তা বৈধ হবে, নাকি নিষিদ্ধ?
শাইখ উত্তরে বলেন:ليس للمرأة أن تلبس لبسة الرجل لا زوجها ولا غيره، في الحديث الصحيح يقول النبي ﷺ: لعن الله المرأة تلبس لبسة الرجل، ولعن الله الرجل يلبس لبسة المرأة، فالواجب عليها أن تلبس لباسها الخاص والرجل كذلك لباسه الخاص، أما أن تلبس لباسه الخاص ولو تحت ثيابها ما يجوز، وهكذا الرجل ليس له أن يلبس لباس المرأة ولو تحت ثيابه. نعم.المقدم: جزاكم الله خيراً.
“একজন নারীর জন্য পুরুষের পোশাক পরিধান করা বৈধ নয়, তা সে তার স্বামীর হোক বা অন্য কারও হোক। সহীহ হাদিসে নবী ﷺ বলেছেন: “আল্লাহ সেই নারীকে অভিশাপ করেছেন, যে পুরুষের পোশাক পরিধান করে, এবং আল্লাহ সেই পুরুষকেও অভিশাপ করেছেন, যে নারীর পোশাক পরিধান করে।” সুতরাং, একজন নারীর জন্য তার নির্দিষ্ট পোশাক পরিধান করা আবশ্যক, এবং একইভাবে একজন পুরুষের জন্যও তার নির্দিষ্ট পোশাক পরিধান করা আবশ্যক। কোনো নারীর জন্য পুরুষের বিশেষ পোশাক পরিধান করা জায়েজ নয়, এমনকি যদি তা তার নিজস্ব পোশাকের নিচেও হয়। একইভাবে, একজন পুরুষের জন্যও নারীর পোশাক পরিধান করা বৈধ নয়, এমনকি যদি তা তার নিজস্ব পোশাকের নিচেও হয়। উপস্থাপক: আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।”(বিন বায অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ফাতওয়া নং-৮৭৬৭)
.
সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন:الثياب تنقسم إلى ثلاثة أقسام: قسم خاص بالرجال، وقسم خاص بالنساء، ولا يختلف الناس فيه، وقسم مشترك، فأما الأول والثاني فأمرهما ظاهر، يعني: لا يلبس الرجل لبسة المرأة ولا المرأة لبسة الرجل.وأما الثالث فلا بأس إذا كان مشتركًا بين الطرفين مثل بعض الفنايل يلبسها الرجال والنساء على حدٍّ سواء”পোশাক তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত: পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট একটি শ্রেণী, মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট একটি শ্রেণী এবং এটি নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনো মতভেদ নেই। আর একটি হলো উভয়ের জন্য সাধারণ।প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগের ব্যাপারে বিষয়টি স্পষ্ট অর্থাৎ, একজন পুরুষ নারীদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক পরিধান করবে না এবং একজন নারীও পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক পরিধান করবে না। আর তৃতীয় ভাগের ক্ষেত্রে, যদি তা উভয়ের জন্য সাধারণ হয় যেমন কিছু পোশাক (যেমন টি-শার্ট) যা পুরুষ ও নারী উভয়েই সমানভাবে পরিধান করে তাহলে এতে কোনো আপত্তি নেই।”(ইবনু উসাইমিন, ফাতহু জিল জালালি ওয়াল ইকরাম বি শারহি বুলুগিল মারাম: খণ্ড: ৫; পৃষ্ঠা: ৩৬৭)
.
সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম ‘আব্দুল মুহসিন আল-‘আব্বাদ আল-বাদর (রাহিমাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৩ হি./১৯৩৪ খ্রি.]-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল:কিছু দেশে পুরুষ ও নারীদের পোশাকের মধ্যে তেমন পার্থক্য থাকে না; কেবল নারীরা নিজেদের ঢেকে রাখেন, এটাই মূল পার্থক্য। এ বিষয়ে তিনি উত্তরে বলেন:إذا وجد هذا الشيء، وكان هذا هو الواقع فيكون التشبه في الأمور الأخرى، يعني: من ناحية الثوب إذا كان اللون الفلاني من خصائص الرجال أو من خصائص النساء وتعارف عليه أهل البلد؛ فلا يقدم الرجل على أن يلبس شيئاً عرف بأنه من خصائص المرأة أو اشتهر بأنه من خصائص المرأة، وكذلك العكس”যদি বাস্তবিকভাবে এমন কিছু বিদ্যমান থাকে, তবে এটি শুধু পোশাকের সাদৃশ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং অন্যান্য বিষয়েও সাদৃশ্য অন্তর্ভুক্ত হবে। অর্থাৎ, যদি কোনো নির্দিষ্ট রং বা পোশাকের ধরন কোনো জাতির মধ্যে পুরুষদের জন্য বিশেষভাবে স্বতন্ত্র হিসেবে পরিচিত হয়ে থাকে, কিংবা নারীদের জন্য স্বতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃত হয়ে থাকে, এবং সেটি সে অঞ্চলের লোকদের কাছে প্রচলিত হয়ে থাকে তাহলে একজন পুরুষের জন্য জায়েজ নয় এমন কিছু পরিধান করা, যা নারীদের জন্য বিশেষভাবে নির্ধারিত বা নারীদের জন্য প্রসিদ্ধ। একইভাবে একজন নারীরও উচিত নয় এমন কিছু পরিধান করা যা পুরুষদের জন্য নির্ধারিত বা পুরুষদের মধ্যে প্রসিদ্ধ।”(শারহে সুনানে আবি দাউদ, আল-ইবাদ, খণ্ড: ১৩; পৃষ্ঠা: ৪৬০ আল-শামিলাহ সংখ্যা অনুযায়ী)
.
সৌদি ফতোয়া বোর্ড এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য, যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ,শাইখ আব্দুল করিম আল-খুদাইর (হাফিযাহুল্লাহ)[জন্ম:১৩৭৪ হি:] বলেছেন: وفي الملابس التي قد لا يُفرَّق فيها بين كونه للرجال أو للنساء، فمثل هذه الحالة ينبغي أن يحصل التمايز بين الرجال والنساء، لكن هناك أنواع خفيفة بحيث إذا رأيتَ اللابس ما تقول: هذا رجل أو امرأة! فمثل هذا يُتسامح فيه”এমন কিছু পোশাক রয়েছে যেগুলোর মধ্যে পুরুষ এবং মহিলার পোশাকের মাঝে পার্থক্য করা সম্ভব নয়। সুতরাং এ ধরনের অবস্থায় পুরুষ ও মহিলার মধ্যে পার্থক্য করা উচিত। তবে কিছু হালকা ধরনের পোশাক রয়েছে, যা পরিধানকারীকে দেখে আপনি নিশ্চিতভাবে বলতে পারবেন না, এটি একজন পুরুষ নাকি একজন মহিলা! এ রকম বিষয়ে কিছুটা (ছাড়) নমনীয়তা প্রদর্শন করা হয়।”(ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-৪৭১৪২৩)
.
পরিশেষে প্রিয় পাঠক! প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষের উচিত ইসলামী আদর্শ, নৈতিকতা ও চরিত্র গঠনে আগ্রহী হওয়া এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আনন্দ, উৎসব, পোশাক-পরিচ্ছদ, খাদ্য ও পানীয়সহ সকল বিষয়ে ইসলামী রীতি-নীতি অনুসরণ করা। বিশেষ করে নারীদের জন্য এমন পোশাক পরিহার করা আবশ্যক যা পুরুষদের জন্য (খাস) নিদিষ্ট এবং এমন পোশাক যা শরীরের গোপনাঙ্গ স্পষ্ট করে বা কাফিরদের অনুকরণ করে। কারণ এটি শরীয়তসম্মত নয়। আমরা আল্লাহর কাছে দুআ করছি তিনি যেন মুসলমানদের অবস্থা সংশোধন করে দেন। তাদের সকলকে যেন সঠিক পথে পরিচালিত করেন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, নিকটবর্তী ও দুআ কবুলকারী।
____________________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।
মঙ্গলবার।
২৫ই রমাদান ১৪৪৬ হিজরি।
২৫ই মার্চ ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ।