বিক্ষোভ আন্দোলন সমাবেশ সম্পর্কে ইবনু উসাইমীন রাহিমাহুল্লাহ এর ফাতওয়া

উত্তর: পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। আমাদের নবী মুহাম্মদের প্রতি, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবীগণের প্রতি আল্লাহর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর:- প্রিয় পাঠক! সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] জিজ্ঞেস করা হয়েছিল প্রশ্নকর্তা: সম্মানিত শায়খ! আমাদের দেশে এমন কিছু মানুষ আছে যারা বিশ্বাস করে যে, খারাপ কাজের প্রতিবাদ হিসেবে আন্দোলন করা বৈধ। যখন তারা কোন মন্দ কাজ দেখে, তখন তারা একত্রিত হয়ে আন্দোলন করে। তাদের দাবি শাসক এই ধরনের কাজের অনুমতি দিয়েছেন।

শাইখ জবাবে বলেন :

أولًا : إن المظاهرات لا تفيد بلا شك بل هي فتح باب للشر والفوضى، والمظاهرات تمر هذه الأفواج وربما تمر على الدكاكين وعلى الأشياء التي تسرق وتسرق، وربما يكون فيها اختلاط بين الشباب المردان والكهل وربما يكون فيها نساء أحيانًا، فهي منكر ولا خير فيها، لكن ذكروا لي أن بعض البلاد النصرانية الغربية لا يمكن الحصول على الحق إلا بالمظاهرات، وهم أعني النصارى والغربيون إذا أرادوا أن يفحموا الخصومة تظاهروا فإذا كان مستعملًا وهذه بلاد كفار ولا يرون بها بأسًا ولا يصل المسلم إلى حقه أو المسلمون إلى حقهم إلا بهذا فأرجو ألا يكون به بأس، أما في البلاد الإسلامية فأرى أنها حرام ولا تجوز، وأتعجب من بعض الحكام إن كان كما قلت حقًّا أن يأذن فيها مع ما فيها من الفوضى إيش الفائدة منها؟ نعم ربما يكون بعض الحكام يريد أمرًا إذا فعله انتقده الغرب مثلًا وهو يداهن الغرب ويحابي الغرب فيأذن للشعب أن يتظاهر حتى يقول للغربيين : انظروا إلى الشعب تظاهروا يريدون كذا أو تظاهروا لا يريدون كذا، فهذه ربما تكون وسيلة لغيرها ينظر فيها هل مصالحها أكثر أو مفاسدها أكثر ؟
السائل : … .
الشيخ : إيش ؟
السائل : كذا منكر حصل فعملت المظاهرة فنفع .
الشيخ : لكنها تضر أكثر إن نفعت هذه المرة ضرت المرة الثانية، يسار نعم

প্রথমত:নিঃসন্দেহে আন্দোলন, বিক্ষোভ মিছিল কোন (ফায়দা) উপকারে আসে না।বরং এগুলি মন্দ এবং বিশৃঙ্খলার দরজা খুলে দেয়। এই আন্দোলন যখন পাড়া-মহল্লা দিয়ে অতিবাহিত হয়, তখন মাঝে-মধ্যে দোকানপাটে লুটপাট, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি হয়। কখনো কখনো যুবক ও বয়স্কদের মধ্যে সংমিশ্রণ ঘটে এমনকি মহিলারাও এতে শরিক হয়। এটি ঘৃণিত, এর মধ্যে কোন উপকারিতা নেই। তবে আমি (শুনেছি) অবগত হয়েছি যে, পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের কিছু খ্রীষ্টান দেশ মনে করে যে, ন্যায়বিচার পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে (বিক্ষোভ) আন্দোলন। তারা অর্থাৎ খ্রিষ্টানরা ও পশ্চিমারা যদি তাদের প্রতিপক্ষদের চুপ করাতে চায় এবং নিজেদের অধিকার আদায় ও সরকারকে যথাযোগ্য জবাব দেয়ার জন্য আন্দোলন করে। যদি এটি অমুসলিম দেশগুলিতে হয় এবং তারা এতে কোন সমস্যা না দেখে আর মুসলিমরা সেখানে এ কাজ (আন্দোলন) না করা পর্যন্ত নিজেদের অধিকার আদায় করতে সক্ষম না হয়, তবে আমি আশা করি এটি সমস্যা হিসেবে দেখা হবে না (অর্থাৎ অমুসলিমদের দেশে মুসলিমদের অধিকার পাওয়ার জন্য এটি করাতে কোন সমস্যা নেই)।

কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্রে আমি মনে করি এটি জায়েজ নয় বরং হারাম। আমি অবাক (আশ্চর্য) হই ঐ সমস্ত মুসলিম দেশের কথা শুনে, আপনি যেমনটি বলেছেন যদি তা সত্য হয় যে তিনি (এই ধরনের বিক্ষোভে) অনুমতি দেন, যদিও এতে বিশৃঙ্খলা রয়েছে। এতে কি কোন উপকারিতা আছে? হ্যাঁ ! হতে পারে, কিছু শাসক এমন কিছু করতে চান যা করলে পশ্চিমারা তার সমালোচনা করবে, অথচ তিনি পশ্চিমাদের সন্তুষ্ট রাখতে চান। সুতরাং, তারা জনগণকে আন্দোলন করার অনুমতি দেয় যাতে পশ্চিমাদের বলতে পারেন: ‘দেখো, জনগণ তো নিজেরাই বিক্ষোভ করছে; তারাই এটা চায়’ কিংবা ‘তারা এটা চায় না’। এটি হয়তো কোনো অন্য (কৌশল) উদ্দেশ্যের অংশও হতে পারে। তবে, এটাতে লাভ বেশি হচ্ছে নাকি ক্ষতি বেশি হচ্ছে? (এটা খেয়াল করতে হবে যে, এতে কতটুকু উপকারীতা বয়ে আনছে আর কতটুকু (ক্ষতি) অপকারিতা বয়ে আনছে)
প্রশ্নকর্তা: …………
শাইখ: কি?
প্রশ্নকর্তা: যদি অন্যায় কাজের জন্য আন্দোলন করা হয় আর এর ফলে উপকার সাধন হয়?
শাইখ: কিন্তু এটা (বিক্ষোভ আন্দোলন) উপকার করলেও অধিকাংশ সময় ক্ষতিই বেশি করে। এমনকি যদি এইবার উপকারী হয়, পরের বার এটি ক্ষতি করবে। আর এটা একটি বামপন্থী মনোভাব। হা!”( ইবনু উসাইমীন; লিক্বাউল বাব আল-মাফতূহ, লিক্বা নং-২০৩)। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)

Share: