(১). শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীম (রাহিমাহুল্লাহ)-কে তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,‘আমি আপনাদের সমীপে উপস্থাপন করছি যে, উক্ত সংগঠনটির মাঝে কোন কল্যাণ নেই। কেননা ইহা একটি বিদ‘আত ও ভ্রষ্ট সংগঠন। আমরা তাদের বক্তৃতা সংযুক্ত বইগুলো পড়েছি। তাতে পেয়েছি যে, সেই বইগুলো ভ্রান্তি ও বিদ‘আতী বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করছে। তাছাড়াও তাতে কবর পূজা ও শিরকের দিকে আহ্বান করার বিষয়ও রয়েছে। ইহা এমন ব্যাপার যে, তার ব্যাপারে নীরব থাকার কোন সুযোগ নেই। এই কারণে ইনশাআল্লাহ আমরা অচিরেই এমনভাবে তার প্রতিবাদ করব যে, তার গোমরাহী ফাঁস করে দিবে এবং তার মিথ্যাকে প্রতিহত করব। আল্লাহর নিকট তাঁর দ্বীনকে সাহায্য করা ও তার কালেমাকে সমুন্নত করার জন্য প্রার্থনা করছি। ওয়াস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’(ফাতাওয়া ওয়া রাসায়েল সামাহাতুশ শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীম, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৬৮)
.
(২). বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.]-কে তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,
.
তাবলীগ জামা‘আতের মাঝে অজ্ঞতা রয়েছে, বুদ্ধিমত্তা নেই। তবে তারা অনেক উৎসাহী। তিনি বলেন, আক্বীদা সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই। সুতরাং তাদের নিকট সত্য প্রকাশের জন্য বা বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেয়ার জন্য শুধু জ্ঞানী ব্যক্তিই তাদের সাথে মিলিত হতে পারবেন। নতুবা আম সাধারণ তাদের সাথে মিলিত হওয়া উচিত নয়। তিনি আরো বলেন,তাদের দাওয়াতী কাজে বেশ আগ্রহ ও ধৈর্য রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা অনেক কিছুতে তাদের মাধ্যমে কল্যাণ সাধন করেছেন। তাদের হাতে অনেক মানুষ ইসলাম গ্রহণও করেছেন। তবে সমস্যা হল তাদের নিকট আক্বীদা সম্পর্কে জ্ঞান নেই। অতঃপর তিনি নির্ভরযোগ্য আলেমগণের ইলম শিক্ষার জন্য নির্দেশ দেন। যেমন ইবনু কাছীর, ইবনু তাইমিয়াহ, ইবনুল ক্বাইয়িম, ইবনু রজব এবং অন্যান্য দা‘ওয়াত দানে বিজ্ঞ ইমামগণের কাছ থেকে। সাথে সাথে আদ্-দুরারুস সানিয়্যা ও ফাৎহুল মাজীদ কিতাবদ্বয় পড়ার কথা উল্লেখ করেন এবং তিনি তাবলীগ জামা‘আত ও ইখওয়ানুল মুসলিমীন এই দু’টি দলের সদস্য হওয়া থেকে নিষেধ করেন। অতঃপর তিনি আরো একটি তথ্য উল্লেখ করেছেন যে, তাবলীগ জামা‘আত আক্বীদার দাওয়াত না দেয়ার কারণেই তাদের অনুসারী বেশী হয়’।।তিনি আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, তাবলীগ জামা‘আত ও ইখওয়ানুল মুসলিমদের পক্ষাবলম্বন করা বা দল গঠন করা সঠিক নয়। নিজেকে তাদের দিকে সম্বন্ধ করাও উচিত নয়। তবে বিবাদ-মিমাংসা, তাদেরকে কল্যাণের দিক-নির্দেশনা দেয়া এবং দা‘ওয়াত ও নছীহাতের উদ্দেশ্যে তাদের সাথে সাক্ষাৎ করাই কোন দোষ নেই’।রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণী, سَتَفْتَرِقُ أُمَّتِىْ عَلَى ثَلَاثٍ وَسَبْعِيْنَ فِرْقَةً كُلُّهَا فِى النَّارِ إِلَّا وَاحِدَةً ‘আমার উম্মত অচিরেই তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে তাদের সবগুলোই জাহান্নামে যাবে। তবে একটি দল নয়’ (ইবনু মাজাহ, হা/৩৯৯৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৯৭৯; মুসতাদরাক হাকিম, হা/৪৪৩) এই হাদীসের আলোকে উম্মতের বিভক্তির ব্যাপারে শাইখ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ)-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, তাবলীগ জামা‘আতের মাঝে অনেক শিরক ও বিদ‘আত বিদ্যমান আছে এবং ইখওয়ানুল মুসলিমীন দলটির মাঝে দলীয়করণ, শাসকদের মধ্যে বিভেদ তৈরি ও তাদের আনুগত্য না করার নীতি বিদ্যমান আছে। সুতরাং এই দু’টি দল কি ধ্বংসপ্রাপ্ত সেই ফের্ক্বার অন্তর্ভুক্ত হবে? তিনি উত্তরে বলেন,তারা বায়াত্তর ফের্ক্বার মাঝে অন্তর্ভুক্ত হবে। যে কেউ আহলুস সুন্নাহ এর আক্বীদার বিরোধিতা করবে সেই বায়াত্তর ফের্ক্বার অন্তর্ভুক্ত হবে। হাদীছের মাঝে (أُمَّتِىْ) শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য হল- তার ডাকে সাড়া দিয়েছে এবং নিজেদেরকে তার অনুসারী হিসাবে প্রকাশ করে তারাই তিয়াত্তরটি দল হবে। তার মধ্যে মুক্তিপ্রাপ্ত সঠিক দলটি হল যা রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসরণ করে ও তাঁর দ্বীনের উপর অবিচল থাকে। পক্ষান্তরে বায়াত্তর দল তাদের মাঝে কাফের, অবাধ্য, বিদ‘আতপন্থী ও আরো বহু প্রকার রয়েছে’। অতঃপর প্রশ্নকারী বললেন, তবে কি এই দু’টি দল বায়াত্তর দলের আওতাভুক্ত? তখন তিনি উত্তরে বললেন, হ্যাঁ বায়াত্তর দলের অন্তর্ভুক্ত। মুরজিয়া, খারিজিয়া ও আরো অনেকেই। কোন কোন বিদ্যান মনে করলেও বায়াত্তর দলের মাঝে অন্তর্ভুক্ত মনে করে।(মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাতি মুতানাব্বিয়া লিশ শাইখ আব্দুল আযীয, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৩৩১)
.
(৩). ফিকহ বিশারদ ও নীতিমালাবিধ শায়খ আব্দুর রাযযাক আফীফী (রাহিমাহুল্লাহ) : আল্লাহ তা‘আলার বড়ত্ব, সম্মান ও মর্যাদার বিষয়ে মানুষকে উপদেশ দেয়ার উদ্দেশ্যে তাবলীগ জামা‘আতের বহিরগমণ সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, প্রকৃত অবস্থা এই যে, তারা মূলত বিদ‘আতপন্থী শরী‘আত বিকৃতকারী ক্বাদিরিয়া ও অন্যান্যদের অনুসারী। দা‘ওয়াতের জন্য তাদের বের হওয়া আল্লাহর পথে নয় বরং তা (তাবলীগ জামা‘আতের প্রতিষ্ঠাতা) ইলিয়াসের পথে। তারা কিতাব ও সুন্নার দিকে আহ্বান করে না বরং তাদের মুরুব্বী ইলিয়াসের দিকে আহ্বান করে। তবে ইসলামের দিকে আহ্বান করার উদ্দেশ্যে বের হওয়া মানে আল্লাহর পথে জিহাদ করার শামীল। কিন্তু তাবলীগ জামা‘আতের বের হওয়া এরূপ নয়। আমি তাবলীগ জামা‘আতকে আগে থেকেই চিনি। তারা মিসর, ইজরাঈল, আমেরিকা, ও সঊদী আরব তথা পৃথিবীর যেখানেই থাক না কেন তারা বিদ‘আতের অনুসারী এবং তারা সকলেই তাদের মুরুব্বী ইলিয়াসের মাধ্যমে সম্পর্ক যুক্ত’ (ফাতাওয়া ও রাসায়েল শাইখ আব্দুর রাজ্জাক আফিফী, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৪)
.
(৪). বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, তীক্ষ্ম বুদ্ধিসম্পন্ন হাদীসবিশারদ ফাদ্বীলাতুশ শাইখ, ইমাম মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি যে, তাবলীগী দা‘ওয়াত উহা একটি আধুনিক ছূফীবাদ যা আল্লাহর কিতাব ও রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাতের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। অতঃপর তিনি বলেন আমি আশ্চর্যবোধ করি যে, তারা দা‘ওয়াত ও তাবলীগের জন্য বের হয়। অথচ তারা নিজেই স্বীকার করে যে, তারা মুলত তাবলীগের উপযুক্ত নয়। আর দা‘ওয়াত ও তাবলীগের কাজ তো শুধু ‘আলেমগণই করতে পারেন। যেমনভাবে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন তাঁর ছাহাবীগণের মধ্য হতে কাউকে দূত হিসাবে পাঠাতেন, তখন তাঁর ছাহাবীগণের মধ্যে যারা আলেম ও বুদ্ধিমান তাদেরকেই পাঠাতেন। যাতে করে তারা মানুষদেরকে দ্বীন ইসলাম শিক্ষা দিতে পারেন’। (আল কাউলুল বালীগ, পৃ. ৭, ৩০)
.
(৫). প্রখ্যাত হাদীছ বিশারদ আল্লামা শায়খ হাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ আল-আনছারী (রাহিমাহুল্লাহ): তিনি বলেন, তাবলীগ জামা‘আতের মাঝে ভালো ও মন্দ উভয়টিই আছে। তারা আক্বীদার ক্ষেত্রে বিদ‘আতপন্থী মাতুরীদী এবং গোড়া হানাফী’। তিনি আরো বলেন, ‘এই দলটি ইলম অর্জন করার ইচ্ছা করে না ও তালাশও করে না। সুতরাং তারা এই পদ্ধতির মাধ্যমে যতটা সংশোধন করে তার চাইতে নষ্ট করে বেশি। আমি ‘তাবলীগ জামা‘আত’ কে ভালো করেই চিনি। তারা আক্বীদার ক্ষেত্রে মাতুরীদী চিশতিয়া এবং মাযহাবের ক্ষেত্রে গোড়া হানাফী’। তিনি আরো বলেন, সালাফিয়্যা, তারা হল আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত। কারণ সালাফিয়্যার অর্থই হল- অতীতে সৎ ব্যক্তিগণ যে নীতির উপর ছিলেন সেটাকে আঁকড়ে ধরা। অতঃপর তিনি বলেন, যে কেউ আহলুস সুন্নাহ বিরোধী মতবাদের উপর থাকবে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। সুতরাং জামা‘আতুল ইখওয়ান ও জামা‘আতুত তাবলীগ ‘আহলুস সুন্নাহ’-এর অন্তর্ভুক্ত নয়। কারণ তারা তাদের বিরোধী মতবাদের উপর বিদ্যমান’(আল-মাজমূঊ ফী তারজমাতিল আল্লামা আল-মুহাদ্দিছ আশ-শায়খ হাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ আল-আনছারী, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪৮১, ৫৮৭, ৭৬২, ৭৬৩।)
.
(৬). বিজ্ঞ ওলামা পরিষদ ও ফাতাওয়া লাজনাহ আদ দায়েমার অন্যতম সদস্য আল্লামা শায়খ ছালেহ ইবনু ফাওযান আল-ফাওযান (রাহিমাহুল্লাহ) : তিনি জামা‘আতুত তাবলীগ ফী শিবহি… এবং হাক্বীক্বাতুদ দা‘ওয়াত…. (পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে) বইয়ের ভূমিকায় লিখেছেন, তাওহীদের দা‘ওয়াতের শত্রুরা (তাওহীদের) দা‘ওয়াতকে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে শেষ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সফল হয়নি। তারা সন্দেহ, বিভ্রান্তি ও বিভিন্ন সংশয় তৈরি করে দেয়ার মাধ্যমেও তার বিরোধিতা করার চেষ্টা করেছিল। এই দা‘ওয়াতকে কিছু বিরক্তিকর গুণে গুণান্বিত করেছিল। তবে এই অপচেষ্টা উক্ত দা‘ওয়াতের উজ্জ্বলতা, স্পষ্টতা, গ্রহণীয়তা ও তার প্রতি আগ্রহকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে’। এবং তার শেষ পর্যায়ে বর্তমান আমরা যে সময়ে বসবাস করছি সেখানে কিছু দল দা‘ওয়াতের নামে বিভিন্ন নাম গ্রহণের মাধ্যমে আমাদের দেশে সন্দেহজন অদ্ভুত কিছু চিন্তাধারা নিয়ে আগমন করছে। যেমন জামা‘আতুল ইখওয়ানিল মুসলিমীন, জামা‘আতুত তাবলীগ ও এরকম অনেক জামা‘আত। তাদের উদ্দেশ্য একটি। আর তাহল, তাওহীদের দা‘ওয়াতকে অপসারিত করা এবং এগুলো তার স্থলাভিষিক্ত হওয়া। এই বরকতময় দা‘ওয়াতের যে সকল শত্রু পূর্বে ছিল তাদের উদ্দেশ্য এবং এই সমস্ত জামা‘আতগুলোর উদ্দেশ্যের মাঝে বাস্তবতায় কোন পার্থক্য নেই। তারা সকলেই এই দা‘ওয়াতকে নিঃশেষ করে দিতে চায়। তবে শুধু তাদের পরিকল্পনার ভিন্নতার পার্থক্য রয়েছে। এই দলগুলো আল্লাহর দিকে আহ্বান করার ইচ্ছায় বাস্তবেই যদি সত্য হত। তাহলে কেন এই দলগুলো ঐ সব দেশকে ডিংঙ্গিয়ে অন্যত্র যায়? অথচ সেই সব দেশ দা‘ওয়াত ও সংস্কারের বেশী প্রয়োজনবোধ করে এবং সেখান থেকে আমাদের নিকট প্রতিনিধি দল আগমন করে তাকে ডিংঙ্গিয়ে তাওহীদের দেশে যাওয়ার মনস্থ করে। উদ্দেশ্য হল তার সঠিক সংস্কারমূলক পথকে পরিবর্তন করে বক্র পথে রূপান্তর করা এবং সেখানকার যুবকদরকে বিপথগামী করা ও তাদের মাঝে ফেতনা ও শত্রুতা তৈরি করা। অতঃপর তিনি বলেন, ‘যখন এই দলগুলো আমাদের কিছু যুবকদের সাথে প্রতারণা করছে, তখনি তারা তাদের মতাদর্শের মাধ্যমে অবজ্ঞা করছে, তাদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ও আলেমগণের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করছে এবং তাদের মাঝে আক্বীদার প্রতি আগ্রহ নিভিয়ে দিচ্ছে। ফলে তারা আক্বীদার প্রতি গুরুত্ব বর্জন করছে এবং না জেনেই বকবক করা ও শুনা ইলম দ্বারা দা‘ওয়াত দেয়া শুরু করছে। আল্লাহর অসংখ্য প্রশংসা যে, এই দেশগুলোতে বেশ কিছু লোক বিদ্যমান আছেন যারা তাদের দ্বীনের জন্য আত্মসম্মানবোধ ও আক্বীদার ব্যাপারে প্রতিরোধ করেন এবং শত্রুদের চক্রান্তকে কঠিনভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। তারা চকচকে আকর্ষণীয় নাম দ্বারা ধোঁকা খায় না এবং অসত্য আগ্রহ দ্বারাও প্রভাবিত হয় না। (হাক্বীক্বাতুদ দা‘ওয়া ইলাল্লাহ, পৃ. ৩-৪)
.
(৭). ‘আল-জামি‘আহ ইসলামিয়া মদীনা নাবূবিয়্যাহ’ এর সম্মানিত (সাবেক) অধ্যক্ষ শায়খ ছালেহ ইবনু আব্দুল্লাহ আল-‘আবূদ (হাফিযাহুল্লাহ): তিনি (হাক্বীক্বাতুদ দা‘ওয়াহ ইলাল্লাহ) কিতাবের ভূমিকায় বলেছেন যে,তাবলীগ জামা‘আত এবং ইখওয়ানুল মুসলিমীনের কর্মপন্থার মাঝে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কর্মপন্থা বিরোধী বেশ কিছু মারাত্মক বিষয় বিদ্যমান আছে, যা ঐ ব্যক্তির জন্য স্পষ্ট হয়ে যাবে যে ব্যক্তি ইনছাফের সাথে গভীরভাবে চিন্তা করবে এবং জেনে বুঝে বুদ্ধিমত্তার সাথে পরীক্ষা করবে। হতে পারে তা আক্বীদা ও তাওহীদ বিষয়ে অথবা চাল-চলন ও চারিত্রিক বিষয়ে। এই উপকারী পুস্তিকাটি এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিককে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করে দিয়েছে। তেমনিভাবে সম্মানিত শাইখ সা‘দ তিনি আল্লাহ, তাঁর কিতাব, তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও মুসলিম জনসাধারণের কল্যাণ কামনায় একটি উপকারী প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা করেছেন এবং বিরোধীদের বিপক্ষে যুক্তি পেশ করেছেন তাদেরই মুরব্বী ও আলেমদের কথার দ্বারা। অহিয়ে নববীর প্রমাণের মাধ্যমে যার মিথ্যাকে আলাদা করে দেয়া হয়েছে। তবে তিনি সমালোচনার ক্ষেত্রে সত্য সঠিককে অতিক্রম করেননি। বরং আল্লাহর প্রশংসা করি যে, তাকে যথাযথভাবে তাওফীক্ব দেয়া হয়েছে। সুতরাং আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন এবং আমাদের ও তার পক্ষ থেকে কবুল করুন’।(হাক্বীক্বাতুদ দা‘ওয়া ইলাল্লাহ, পৃ. ১৮)
.
পরিশেষ, তাবলীগ অনুসারীদের ব্যাপারে আলেমগণের উপরোক্ত উক্তিগুলোর সারাংশ হল, নিশ্চয় তাবলীগ জামা‘আত একটি বিদ‘আতী দল। তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণের রেখে যাওয়া প্রথম নীতির উপর বিদ্যমান নেই। মিসর, সঊদী আরব বা পৃথিবীর অন্য যে কোন স্থানে থাক না কেন তারা একটি ভ্রান্ত দল। তারা আধুনিক ছূফীবাদী এবং পাশাপাশি তারা অজ্ঞ। শরী‘আতের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তথা সহীহ আক্বীদা সম্পর্কে তাদের কোন দূরদর্শিতা নেই। তারা তাওহীদ ও সহীহ আক্বীদার দা‘ওয়াত না দেয়ার কারণেই তাদের অনুসারীর সংখ্যা বেশি। তাদের একটি আশ্চর্য ব্যাপার হল যে, তারা নিজেদের অজ্ঞতার কথা স্বীকার করে। অথচ আবার অন্যকে দা‘ওয়াত দেয়। কোন ব্যক্তি যে বস্তু তার নিজের কাছেই নেই সে উহা অন্যকে কেমন করে দিতে সক্ষম হবে? এই কারণে তাদের সাথে মিলিত হওয়া ও তাদের সাথে দা‘ওয়াতী কাজে বের হওয়া জায়েয না।(মাসিক আল ইখলাস থেকে সংকলিত)। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
_________________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।