গাযওয়াতুল হিন্দ সংঘটিত হওয়া সম্পর্কে সত্যতা ও বিস্তারিত বিবরণ

প্রশ্ন: (غزوة الهند) গাযওয়াতুল হিন্দ’ বা হিন্দুস্তানের সাথে ভবিষ্যতে মুসলিমদের এক যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার কথা কোনো কোনো বক্তা প্রচার করে থাকেন। উক্ত যুদ্ধের সত্যতা ও বিবরণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।
▬▬▬▬▬▬▬▬▬✿▬▬▬▬▬▬▬▬
ভূমিকা: পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’র প্রতি। অতঃপর: রাসূল ﷺ এর বানী: “একটি আয়াত জানা থাকলেও প্রচার কর”(সহীহ বুখারী হা/৩৪৬১) ।দ্বীন প্রচারে রাসূল (ﷺ)-এর এমন হাদীসের অনুসরণ করা সাহাবীদের নিকট প্রণিধানযোগ্য আমল ছিল।ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) অর্ধ পৃথিবীতে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিয়েও পরিতৃপ্ত হননি।বরং তিনি চেয়েছিলেন গোটা বিশ্বে ইসলামের শান্তির বাণী পৌঁছে দিবেন। প্রাণভরা আশা নিয়ে তাঁর জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। পরবর্তী খলীফা উসমান (রাঃ) সুদূর চীনে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে প্রতিনিধি প্রেরণ করেন। তারা তৎকালীন চীন সম্রাটের নিকট ইসলামের বাণী পৌঁছে দেন। এরপরে ব্যাপক হারে ইসলামের বাণী দুনিয়ার সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে দলে দলে মুসলমানেরা ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। হিন্দ বা ভারতবর্ষে তো রাসূল (ﷺ)-এর যুগেই ইসলাম দাওয়াত পৌঁছে যায়। বিশেষ করে ভারতবর্ষের ব্যাপারে রাসূল (ﷺ)-এর ভবিষ্যৎ বাণী থাকায় আমীরে মু‘আবিয়ার আমলে সাহাবী ও তাদের অনুসারীরা ইসলামের দাওয়াত নিয়ে ভারতবর্ষে ছুটে আসেন। পরবর্তীতে মুহাম্মদ বিন কাসিম ও তৎপরবর্তীতে গযনীর সুলতান মাহমূদ ভারতবর্ষ বা হিন্দুস্থানের উপর বিজয় লাভ করেন। এভাবে হিন্দুস্থান বা ভারতবর্ষে মুসলমানেরা প্রায় ৮০০ বছর শাসন করেন। দূর্ভাগ্যক্রমে মুসলমানদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ১৭৫৭ সালে ইংরেজদের হাতে মুসলিম শাসনের অবসান ঘটে। ইংরেজ শাসনের ২০০ বছর পরে আবার হিন্দুস্তানের বড় অঞ্চলের শাসনভার হিন্দুদের হাতে চলে যায়। এক্ষণে গাযওয়াতুল হিন্দ বা ‘হিন্দুস্থানের যুদ্ধ’ অর্থাৎ ভারত বা হিন্দুস্থানের বিরুদ্ধে মুসলমানদের যুদ্ধ নিয়ে বিভ্রান্তিতে পতিত একদল মানুষ মনে করে,বর্তমান হিন্দুস্থানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে হাদীসে বর্ণিত মর্যাদা লাভ করা যাবে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, তারা এ সম্পর্কে বর্ণিত হাদীসগুলোর বিশুদ্ধতা ও সঠিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ সম্পর্কে পরিজ্ঞাত ও সুবিদিত না হয়ে আবেগপ্রবণ বসত পদস্খলিত হচ্ছে। জিহাদের নামে সন্ত্রাসবাদমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। ফলস্বরূপ তাদের মহামূল্যবান জীবনগুলো অন্ধকার কারাগারে অকারণেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, কলঙ্কিত করছে ইসলামের স্বচ্ছ ও উন্নত ভাবমূর্তিকে। এ সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে ‘হরকাতুল জিহাদ’ ও ‘আনসারু গাযওয়াতুল হিন্দ’ নামক সংগঠনগুলোর তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়। তারা অনেক সময় একজোট হয়ে গাযওয়াতুল হিন্দের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করারও আহ্বান জানায়। এমতাবস্থায় নিজের দ্বীন-ধর্ম বাঁচাতে গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে অবশ্যই সঠিক জ্ঞানার্জন করা উচিত।
.
▪️হাদীসের আলোকে (غزوة الهند) গাযওয়াতুল হিন্দ:
.
গাযওয়াতুল হিন্দ তথা হিন্দুস্থানের সাথে মুসলিমদের যুদ্ধের ভবিষ্যতবাণী সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে দু’জন বিশিষ্ট সাহাবীর বর্ণনা পরিলক্ষিত হয়।আর তাঁরা হলেন, (১). প্রখ্যাত সাহাবী সাওবান (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এবং (২). প্রখ্যাত সাহাবী আবূ হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু)। গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে সাওবান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা মাত্র একটি। আর সংশ্লিষ্ট অধ্যায়ে শুধু এই হাদীসটিই বিশুদ্ধ সূত্রে ও সহীহ সনদে প্রমাণিত। অপরদিকে আবূ হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকেও বর্ণিত হাদীস সংখ্যা মূলত একটিই। কিন্তু উক্ত হাদীসিটি তাঁর থেকে পৃথক তিনটি সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। আর ঐ তিনটি সূত্রই যঈফ বা দুর্বল। যেমন, শাইখ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন,فالخلاصة أن حديث ثوبان هو الذي صح في غزوة الهند ، وأما حديث أبي هريرة فعامة أسانيدها ضعيفة ، فالله أعلم “মোদ্দাকথা গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে সাওবান (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হাদীসটিই সহীহ। পক্ষান্তরে আবূ হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হাদীসগুলোর সনদসমূহ যঈফ বা দুর্বল। আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞাত”।(ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৪৫৬৩৬)
.
গাযওয়াতুল হিন্দ তথা হিন্দুস্থানের সাথে মুসলিমদের যুদ্ধের ভবিষ্যতবাণী সম্পর্কে বর্ণিত হাদীসগুলোর সংক্ষিপ্ত তাখরীজ ও তাহক্বীক্ব নিম্নে উল্লেখ করা হল:
(১) প্রথম হাদীস: সাওবান (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: عِصَابَتَانِ مِنْ أُمَّتِي أَحْرَزَهُمَا اللَّهُ مِنْ النَّارِ : عِصَابَةٌ تَغْزُو الْهِنْدَ ، وَعِصَابَةٌ تَكُونُ مَعَ عِيسَى بْنِ مَرْيَمَ عَلَيْهِمَا السَّلَام “আমার উম্মতের দু’টি দল রয়েছে যাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন। তাদের একটি দল হিন্দুস্থানের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। আরেকটি দল যারা ঈসা ইবনু মারইয়াম (আলাইহিস সালাম)-এর সঙ্গে সম্মিলিতভাবে যুদ্ধে থাকবে”আবার কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে, من أدركه منكم فليقرئه مني السلام ‘যে তোমাদের মধ্যে তাঁকে (ঈসাঃ)-কে পাবে, আমার পক্ষ থেকে সালাম দিবে”(সুনানে নাসাঈ, হা/৩০৭৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৩৯৬, ২২৪৪৯; বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা, হা/১৮৩৮১; ত্বাবারানী, আল-মু‘জামুল আওসাত্ব, ৭ম খণ্ড, পৃ. ২৩; মাজমা‘ঊয যাওয়াইদ, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৮৫; আলবানী, কিসসাতু মাসীহিদ দাজ্জাল ১৪২ পৃ. তাহক্বীক্ব :হাদীসটি সহীহ। ইমাম আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।(মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৩৯৬; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৯৩৪; সহীহুল জামে‘, হা/৪০১২)
.
(২) দ্বিতীয় হাদীস: আবূ হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,”وَعَدَنَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ غَزْوَةَ الْهِنْدِ فَإِنْ أَدْرَكْتُهَا أُنْفِقْ فِيْهَا نَفْسِيْ وَمَالِيْ وَإِنْ قُتِلْتُ كُنْتُ أَفْضَلَ الشُّهَدَاءِ وَإِنْ رَجَعْتُ فَأَنَا أَبُوْ هُرَيْرَةَ الْمُحَرَّرُ “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে হিন্দুস্তানের জিহাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদি আমি সে জিহাদ পেয়ে যাই তাহলে আমার জান-মাল সব কিছুই তাতে ব্যয় করব এবং যদি আমি শাহাদত বরণ করি, তবে আমি সর্বশ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাবান শহীদ হিসাবে গণ্য হব। আর যদি আমি ফিরে আসি, তাহলে আমি আবূ হুরায়রা জাহান্নাম হতে মুক্তিপ্রাপ্ত হব”।(মুসনাদে আহমাদ, হা/৭১২৮;সুনানে নাসাঈ, হা/৩১৭৩-৩১৭৪; তাহক্বীক্ব: সনদ জয়ীফ: কারন হাদিসটির সনদে জাবর ইবনু ‘আবীদার একজন মুনকার ও মাজহূল (অপরিচিত) রাবী।হাদীসটির সনদ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীসটি মুনকার, এই সনদে জাবর ইবনু ‘আবীদাহ নামক একজন মুনকার ও মাজহূল (অপরিচিত) রাবী আছে।(মীযানুল ই‘তিদাল, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৮৮, রাবী নং-১৪৩৬) শায়খ শু‘আইব আরনাউত্ব (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীসটিকে যঈফ বলেছেন।(তাখরীজুল মুসনাদ, হা/৭১২৮) বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম ইমাম আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীসটিকে যঈফ বলেছেন।(নাসাঈ, হা/৩১৭৩, ৩১৭৪) শায়খ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, وهذا إسناد ضعيف بسبب جبر بن عبيدة ‘জাবর ইবনু ‘আবীদার কারণে হাদীসটির সনদ দুর্বল।(ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফাৎওয়া নং-১৪৫৬৩৬)
.
(৩) তৃতীয় হাদীস: আবূ হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমার সত্যবাদী বন্ধু রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেন,”يَكُوْنُ فِيْ هَذِهِ الْأُمَّةِ بَعْثٌ إِلَى السِّنْدِ وَالْهِنْدِ “. فَإِنْ أَنَا أَدْرَكْتُهُ، فَاسْتُشْهِدْتُ فَذَاكَ، وَإِنْ أَنَا – فَذَكَرَ كَلِمَةً – رَجَعْتُ وَأَنَا أَبُوْ هُرَيْرَةَ الْمُحَرَّرُ قَدْ أَعْتَقَنِيْ مِنَ النَّارِ “এই উম্মতের মধ্যে একটি দল লড়াই করার জন্য সিন্ধু ও হিন্দুস্তানে প্রেরিত হবে। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি যদি সেই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে শহীদ হয়ে যেতে পারি তাহলে তো ভাল কথা। আর যদি (জীবিত) ফিরে আসি, তাহলেও আমি জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত আবূ হুরায়রা হব। (মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৮২৩ তাহক্বীক: সনদ জয়ীফ কারন সনদে বারা ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনে ইয়াজীদ আল-গানাবী নামক একজন দুর্বল রাবী।শু‘আইব আল-আরনাউত্ব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীসটির সনদ দুর্বল।(
তাখরীজুল মুসনাদ, হা/৮৮২৩) হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ), ইয়াহ্ইয়া ইবনু মা‘ঈন (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম নাসাঈ তাঁকে যঈফ বলেছেন।(লিসানুল মীযান, ৯ম খণ্ড,পৃ. ২৬৬, রাবী নং-২৫৮) হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী অন্যত্র বলেন, বারা ইবনু আব্দুল্লাহ যঈফ বা দুর্বল রাবী।(তাহযীবুত তাহযীব, ১৪তম খণ্ড, পৃ. ৪১৯; তাক্বরীবুত তাহযীব, পৃ. ১২১, রাবী নং-৬৪৯; তাহযীবুল কামাল, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৩২, রাবী নং-৬৪০) হাসান বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ) ও আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর মাঝে ইনকিতা‘ বা বিচ্ছিন্নতা আছে। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে হাসান বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর শ্রবণ প্রমাণিত নয়। যদিও শায়খ আহমাদ শাকির, বিশিষ্ট মুহাদ্দিস আলাউদ্দীন মুগলতাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) ও হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে হাসান বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর শ্রবণ প্রমাণিত।(মুসনাদে আহমাদ, ১২তম খণ্ড, পৃ. ১০৭-১২২, হা/৭১৩৮; ইকমালু তাহযীবিল কামাল, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৮৪, রাবী নং-১২৮৮; তাহযীবুত তাহযীব, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৪৭, রাবী নং-১২৯৬)।
.
.
(৪) চতুর্থ হাদীস: আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, يَغْزُوْ قَوْمٌ مِنْ أُمَّتِيْ الْهِنْدَ ، فَيَفْتَحُ اللهُ عَلَيْهِمْ حَتَّى يُلْقُوْا بِمُلُوْكِ الْهِنْدِ مَغْلُوْلِيْنَ فِي السِّلَاسِلِ ، يَغْفِرُ اللهُ لَهُمْ ذُنُوْبَهُمْ ، فَيَنْصَرِفُوْنَ إِلَى الشَّامِ فَيَجِدُوْنَ عِيْسَى ابْنَ مَرْيَمَ بِالشَّامِ”. وَفِيْ رِوَايَةٍ أُخْرَىْ-” فَلَأَحْرِصَنَّ أَنْ أَدْنُوَ مِنْهُ فَأُخْبِرُهُ أَنِّيْ قَدْ صَحَبْتُكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ ، قَالَ فَتَبَسَّمَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ وَضَحِكَ، ثُمَّ قَالَ: هَيْهَاتَ هَيْهَاتَ “আমার উম্মতের একটি দল হিন্দুস্তানে যুদ্ধ করবে। আল্লাহ তা‘আলা তাঁদেরকে বিজয় দান করবেন, অতঃপর তাঁরা হিন্দুস্তানের রাজাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করে নিয়ে আসবে। আল্লাহ তাঁদের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। তারপর তাঁরা সিরিয়া ফিরে যাবে এবং সেখানে ‘ঈসা ইবনু মারয়্যাম (আলাইহিস সালাম)-কে পাবে। অন্য বর্ণনায় এসেছে, আবূ হুরায়রা (রাদয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি তখন নবী (ﷺ)-কে বলেছিলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমার খুব আকাঙ্ক্ষা যে, আমি ‘ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর নিকটবর্তী হয়ে তাঁকে সংবাদ দেব যে, আমি আপনার সংশ্রবপ্রাপ্ত একজন সাহাবী। তিনি বলেন, এতে রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুচকি হেসে বললেন, সে (যুদ্ধ) তো অনেক দেরি! অনেক দেরি!(নাঈম ইবনু হাম্মাদ, আল-ফিতান, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪০৯-৪১০ ও ৩৯৯, হা/১২৩৬, ১২৩৯) তাহক্বীক:হাদীসটি জয়ীফ। হাদীসটি সম্পর্কে শাইখ সলিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, বাকিয়াহ্ ইবনু ওয়ালিদ মুদাল্লিস রাবী এবং তিনি আন্ (عن) শব্দ দ্বারা হাদীস বর্ণনা করেছেন। সাফওয়ান ইবনু আমরের শিক্ষক মাজহূল (অপরিচিত)।(ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফাৎওয়া নং-১৪৫৬৩৬)
.
প্রিয় পাঠক! গাযওয়াতুল হিন্দু’ সর্ম্পকিত উপরোক্ত চারটি বর্ণনার মধ্যে তিনটিরই সনদ যঈফ। তবে প্রথম তথা সাওবান (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর হাদীসটি সহীহ। যাতে বলা হয়েছে,”আমার উম্মতের দু’টি দলকে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন। তার একটি হচ্ছে যারা হিন্দুস্থানবাসীদের সাথে যুদ্ধ করবে। আর একটি হচ্ছে যারা ঈসা (আঃ)-এর সাথে থাকবে”। হিন্দুস্থানবাসীদের সাথে যুদ্ধকারী দলটি জাহান্নাম থেকে নাজাতপ্রাপ্ত। এক্ষণে প্রশ্ন হচ্ছে গাযওয়াতুল হিন্দ কখন সংঘটিত হবে? সেটা কি সংঘটিত হয়েছে নাকি শেষ যামানায় হবে?
.
এ বিষয়ে প্রথম কথা হচ্ছে  সাওবান (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর হাদীসটি সহীহ হলেও হাদীসটিতে গাযওয়াতুল হিন্দের নির্ধারিত সময়কাল উল্লেখ করা হয়নি। তা কখন সংঘটিত হবে, তা কি যে কোন যুগে সংঘটিত হতে পারে? না-কি শেষ যুগে বা মাহদীর যুগেই হবে? এ সম্পর্কে কোন আলোচনা করা হয়নি। যেহেতু যুদ্ধটি কখন সংঘটিত হবে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি ফলে আহালুল ইমামগন এ বিষয়ে কিছুটা মতানৈক্য করেছেন। তবে দলিলের আলোকে অধিক বিশুদ্ধ মত হচ্ছে গাযওয়াতুল হিন্দু ইতিপূর্বে সংঘটিত হয়ে গেছে, যেমন:ইমাম ইবনু কাসীর,মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহহাব বুহাইরী, সিদ্দীক হাসান খান কান্নৌজী (রাহিমাহুমুল্লাহ) ও শাইখ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ)-এর মতে এ যুদ্ধ বহু পূর্বেই সংঘটিত হয়েছে। মুহাম্মাদ ইবনু ক্বাসিম, সুলতান মাহমুদ গাজনাবী বা মাহমুদ ইবনু সুবুক্তগীনের বিজয়ের মাধ্যমে (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব,ফৎওয়া নং-১৪৮৫২৯)।
.
তাছাড়া ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে,মুসলিমরা ইতিমধ্যেই ভারতবর্ষে একাধিকবার যুদ্ধাভিযান চালিয়ে জয়লাভ করেছেন। যেমন সর্বপ্রথম খলিফা উমার ফারুক্ব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর খিলাফাতকালে ১৫ হিজরীতে উসমান ইবনু আবুল আস (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর নেতৃত্বে একটি সামরিক বাহিনী প্রেরণ করা হয়। যারা স্তর থানা, ব্রূস ও দেবল বন্দরে সফল অভিযান পরিচালনা করেন। থানাকে বর্তমানে মুম্বাই, ব্রূসকে গুজরাট এবং দেবলকে করাচী বলা হয়। তাঁরা এ সময় ‘সরনদীব’ জয় করেন। যাকে বর্তমানে শ্রীলঙ্কা বলা হয় (আতহার মুবারকপুরী, আল-ইক্বদুছ ছামীন ফী ফুতুহিল হিন্দ, কায়রো: দারুল আনছার, ২য় সংস্করণ, ১৩৯৯ হি./১৯৭৯ খ্রি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ২৬, ৪০, ৪২, ৪৪)।ইমাম ইবনু কাসীর (রাহিমাহুল্লাহ) إِشَارَةٌ نَبَوِيَّةٌ إِلَى أَنَّ الْجَيْشَ الْمُسْلِمَ سَيَصِلُ إِلَى الْهِنْدِ وَالسِّنْدِ (‘অচিরেই হিন্দে এবং সিন্ধুতে মুসলিম সেনাবাহিনীর প্রবেশের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ভবিষ্যদ্বাণী’) শিরোনামের অধীনে বলেন,وَقَدْ غَزَا الْمُسْلِمُوْنَ الْهِنْدَ فِيْ سَنَةِ أَرْبَعِ وَأَرْبَعِيْنَ فِيْ إِمَارَةِ مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِيْ سُفْيَانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَجَرَتْ هُنَاكَ أُمُوْرٌ فَذَكَرْنَاهَا مَبْسُوْطَةً، وَقَدْ غَزَاهَا الْمَلِكُ الْكَبِيْرُ السَّعِيْدُ مَحْمُودُ بْنُ سُبُكْتُكِينْ صَاحِبُ بِلَادِ غَزْنَةَ وَمَا وَالَاهَا فِي حُدُوْدِ أَرْبَعِ مِائَةٍ فَفَعَلَ هُنَالِكَ أَفْعَالًا مَشْهُوْرَةً وَأُمُوْرًا مَشْكُوْرَةً وَكَسَرَ الصَّنَمَ الْأَعْظَمَ الْمُسَمَّى بِسُومْنَاتْ . . . وَرَجَعَ إِلَى بِلَادِهِ سَالِمًا غَانِمًا
“৪৪ হিজরীতে মু‘আবিয়াহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর শাসনামলে মুসলিমরা সর্বপ্রথম হিন্দুস্তান আক্রমণ করেন। সে সময়ের ঘটনাপ্রবাহের বিবরণ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। চারশ’ (৪০০) হিজরী সনের দিকে গাজনী ও তার নিকটবর্তী অঞ্চলের মহান অধিপতি সুলতান মাহমূদ সুবুক্তগীনের হিন্দুস্তান-অভিযান ও তাঁর বহুবিধ বীরত্বের কাহিনী সর্বজনবিদিত এবং প্রশংসিত। তিনি সেখানের সোমনাথ নামক মন্দিরের সর্ববৃহৎ মূর্তিটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন। এরপর তিনি গানিমাতের মাল হিসাবে প্রচুর যুদ্ধলব্ধ সম্পদ নিয়ে নিরাপদে স্বদেশে ফিরে যান’।(আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ ফিল ফিতান ওয়াল মালাহিম, ১২তম খণ্ড, পৃ. ৩০ ও ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা: ২২৩)
.
ইমাম ইবনু কাসীর (রাহিমাহুল্লাহ) অন্যত্রে اَلْاَخْبَارُ عَنْ غَزْوَةِ الْهِنْدِ ‘গাযওয়াতুল হিন্দ সংক্রান্ত হাদীসসমূহ’ শিরোনামের অধীনে বলেন,وَقَدْ غَزَا الْمُسْلِمُوْنَ الْهِنْدَ فِيْ أَيَّامِ مُعَاوِيَةَ سَنَةَ أَرْبَعِ وَّأَرْبَعِيْنَ، وَكَانَتْ هُنَالِكَ أُمُوْرٌ سَيَأْتِيْ بَسْطُهَا فِيْ مَوْضِعِهَا، وَقَدْ غَزَا الْمَلِكُ الْكَبِيْرُ الْجَلِيْلُ مَحْمُوْدُ بْنُ سُبُكْتُكِينْ، صَاحِبُ غَزْنَةَ، فِيْ حُدُوْدِ أَرْبَعِمِائَةٍ، بِلَادَ الْهِنْدِ فَدَخَلَ فِيْهَا وَقَتَلَ وَأَسَرَ وَسَبَى وَغَنِمَ وَدَخَلَ السُّومْنَاتْ وَكَسَرَ النّدَّ الْاَعْظَمَ الَّذِيْ يَعْبُدُوْنَهُ … ثُمَّ رَجَعَ سَالِمًا مُؤَيَّدًا مَنْصُوْرًا “৪৪ হিজরীতে মু‘আবিয়াহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর শাসনামলে মুসলিমরা সর্বপ্রথম হিন্দুস্তানে যুদ্ধাভিযান পরিচালনা করেন। সে সময়ের ঘটনাপ্রবাহের বিস্তারিত বিবরণ সামনে আলোচনা করা হবে। চারশ’ (৪০০) হিজরী সনের দিকে গাজনীর সুলতান মাহমূদ সুবুক্তগীনও হিন্দুস্তানে যুদ্ধাভিযান পরিচালনা করেন। সে সকল যুদ্ধে তিনি অনেক মুশরিককে হত্যা ও বন্দি করেন এবং গানিমাতের মাল হিসাবে প্রচুর ধন-সম্পদ লাভ করেন। তিনি সোমনাথ মন্দিরে প্রবেশ করে মূর্তি পূজকদের সবচেয়ে বড় মূর্তিটি ভেঙ্গে ফেলেন। এরপর তিনি বিজয়বেশে নিরাপদে হিন্দুস্তান থেকে গাজনিতে ফিরে আসেন’।(আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ, ৪থ খণ্ড, পৃ. ৬৩১ ও ১১তম খণ্ড, পৃ. ৩৫৮) আল্লামা সিদ্দীক হাসান খান কান্নৌজী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,”আর স্তর বিষয় হল ৯২-৯৩ হিজরী সালে উমাইয়াহ খলীফা ওয়ালিদ ইবনু আব্দুল মালিকের শাসনামলে মুহাম্মাদ ইবনু ক্বাসীম শাক্বাফীর নেতৃত্বে হিন্দুস্তান বিজয় লাভ করে। ৯৫ হিজরীতে সিন্ধু থেকে কানৌজের শেষসীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় মুসলিমদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর স্তর ক্ষমতায় রদবদল হলেও সিন্ধুতে ধারাবাহিকভাবে উমাইয়াহ এবং আব্বাসী খলীফাদের প্রতিনিধিগণ দাপটের সাথে রাজত্ব করেছেন। ৪র্থ হিজরীর শেষ দিকে সুলতান মাহমুদ গাজনাবী হিন্দুস্তানে আক্রমণ করেন। দফায় দফায় হামলা চালিয়ে তিনি বিজয়লাভ করেন এবং প্রচুর গনীমতের মাল প্রাপ্ত হন।… তখন থেকে ১২০০ হিজরী পর্যন্ত স্তর ক্ষমতা মুসলিম সুলতানদের অধীনেই ছিল (আবজাদুল উলূম, ৩/২১৪ ও ১/৩৪৪-৩৪৫ পৃ.; আল-বিদায়াহ্ ওয়ান-নিহায়াহ, ৯/৭৭, ৯৫, ১১৩; আল-ইক্বদুছ সামীন, ১/১৪১-১৪২ পৃ.) শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল ওয়াহ্হাব বুহাইরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, সাওবান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল (ﷺ) যে, গাযওয়াতুল হিন্দ ও সিন্ধের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন তা উমাইয়্যাদের শাসনামলেই সংঘটিত হয়ে গিয়েছে। অতঃপর তিনি বিভিন্ন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেন (বুলূগুল আমানী মিন আসরারীল ফাতহির রাব্বানী, খণ্ড: ২২; পৃষ্ঠ: ৪১১)।
.
পরিশেষে প্রিয় পাঠক! উপরোক্ত আলোচনা থেকে কথাই পরিষ্কার যে, হাদীসে যে যুদ্ধের ভবিষ্যদ্বাণী দেয়া হয়েছে তা ইতেপূর্বে বাস্তবায়িত হয়ে গেছে যা ইমামগনের ব্যাখ্যায় সুপ্রমাণিত। তবে রাসূল (ﷺ)- এর ভাবিষ্যতবাণী অনুযায়ী গাযওয়াতুল হিন্দ বাস্তবায়িত হলেও সেটাই চূড়ান্ত কিংবা কিয়ামতের পূর্বে আবারও গাযওয়াতুল হিন্দ হবে না তা বলার সুযোগ নেই। কেননা কিয়ামতের পূর্বে আবারও তা সংঘটিত হতে পারে (আল্লাহু আলাম)। আর হলেও ইনশাআল্লাহ সে যুদ্ধে আল্লাহ তাআলা মুসলিমদেরকে বিজয় দান করবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে আশা করি যেভাবে ইতোপূর্বে ভারতের ভীতু হিন্দুদের উপর বীর মুসলিমদেরকে বিজয় দান করেছিলেন। কিন্তু এখন যে সকল বক্তা, বুদ্ধিজীবীরা নিশ্চিত ভাবে মনে করেন যে ‘গাযওয়াতুল হিন্দ এখনো সংঘটিত হয়নি’ বরং কেয়ামতের পূর্বে সংঘটিত হবে। তাদের উদ্দেশ্যে আমাদের জিজ্ঞাসা ঠিক কোন সময় এটি সংঘটিত হবে বা কার নেতৃত্বে হবে? আর ইতিপূর্বে ভারতবর্ষে যতগুলো যুদ্ধে মুসলিম সেনাবাহিনীরা জয়লাভ করেছেন সেগুলো কি গাযওয়াতুল হিন্দের অন্তর্ভুক্ত নয়? যদি না হয় তাহলে কেন নয়? কোন দলীলের ভিত্তিতে রাসূল (ﷺ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী থেকে এগুলোকে পৃথক করা হচ্ছে?’। যেহেতু আবূ হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হাদীস ‘হিন্দুস্তানের নেতাদেরকে মুসলিম সেনারা শৃঙ্খলাবদ্ধ অবস্থায় শাম দেশে নিয়ে যাবে। অতঃপর ‘ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর সাথে সাক্ষাৎ করবে’ যঈফ ও দুর্বল। যার তাহক্বীক্ব ও তাখরীজ পূর্বে আলোচিত হয়েছে। আর এ কথা বহুজন বিদিত যে যঈফ হাদীসের আলোকে শরী‘আতের কোন বিধান প্রতিষ্ঠিত হয় না বা কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় না। এরপরেও আমরা কিভাবে বলছি যে গাযওয়াতুল হিন্দ এখনো সংঘটিত হয়নি বরং তা ‘ঈসা (আলাইহিস সালাম) অবতরণ কালে সংঘটিত হবে? সুতরাং গাযওয়াতুল হিন্দ নিয়ে কতিপয় যুবসমাজের অতিশয়োক্তি, মাতামাতি কিংবা রঙিন স্বপ্ন দেখানো একেবারেই অর্থহীন কর্ম। শুধু তাই নয় এর মাধ্যমে জান্নাতের শর্টকাট রাস্তা খুঁজে পাওয়ার নামে একশ্রেণীর মুসলিম যুবক উগ্রবাদ ও চরমপন্থার দিকে ঝুঁকে পড়ছে যা খুবই ভয়ংকর। এই চরমপন্থীদের কারণে মুসলিম উম্মাহ ভেতরে ও বাইরে থেকে চরম অনিরাপদ ও কোনঠাঁসা হয়ে পড়ছে। বিশ্বব্যাপী নষ্ট হচ্ছে দাওয়াতের উর্বর ক্ষেত্রসমূহ। আমরা আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলার নিকট দু‘আ করি তিনি যেন আমাদের সকলকে সঠিক বিষয় বুঝার এবং সঠিক মত গ্রহণ করার তাওফীক্ব দান করেন। আমীন!!(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
____________________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।
Share: