প্রশ্ন: ইলম অর্জনের গুরুত্ব কী? কুরআন শিক্ষা দেওয়া কিংবা ধর্মীয় যে কোন কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা যাবে কি?
▬▬▬▬▬▬▬▬●◈●▬▬▬▬▬▬▬▬
❖ প্রথমত: পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’র প্রতি। অতঃপর ইসলামে দ্বীনি শিক্ষার গুরুত্ব ও ফযীলত অপরিসীম। একজন মুসলিমের প্রতি ইসলামের প্রথম বার্তাই হলো اِقْرَاْ তথা পড়, ইলম অর্জন কর। ইসলাম থেকে শিক্ষাকে আলাদা করা অসম্ভব। কারণ, ইসলামের প্রতিটি অংশের মধ্যেই শিক্ষা বিদ্যমান। জ্ঞান ছাড়া যথাযথভাবে ইসলাম পালন সম্ভব নয়। দ্বীনি শিক্ষা ছাড়া ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন কোন ক্ষেত্রেই সত্যিকার অর্থে ইসলাম পালন সম্ভব নয়।তাছাড়া দুনিয়া ও আখেরাতে ক্ষতি থেকে বাচার জন্য সূরা আসরে মহান আল্লাহ চারটি গুণের কথা বলেছেন। তন্মধ্যে ঈমান তথা ইলম হল প্রথম। মহান আল্লাহ বলেন,وَ الۡعَصۡرِ -اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَفِیۡ خُسۡرٍ-اِلَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ تَوَاصَوۡا بِالۡحَقِّ ۬ۙ وَ تَوَاصَوۡا بِالصَّبۡرِ “নিশ্চয় সকল মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। তারা ব্যতীত যারা (জেনে-বুঝে) ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম সম্পাদন করেছে এবং পরস্পরকে ‘হক’-এর উপদেশ দিয়েছে ও পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে”(সূরা আল-আসর: ২-৩)। মূলত জানার নামই ঈমান। আর ঈমানের পূর্ব শর্ত হল ইলম।কেননা আল্লাহ বলেছেন:فَاعۡلَمۡ اَنَّهٗ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللّٰهُ “অতএব জেনে রাখ,নিঃসন্দেহে আল্লাহ ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই”।(সূরা মুহাম্মাদ: ১৯)। তদুপরি দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের জন্য ইলম অর্জনের প্রয়োজন। ইমাম শাফেঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,من أراد الدنيا فعليه بالعلم ومن أراد الآخرة فعليه بالعلم ومن أرادهما معا فعليه بالعلم أيضا”যে দুনিয়া চায় তার জন্য ইলম অর্জন করা যরূরী, যে আখেরাত চায় তার জন্যও ইলম অর্জন করা যরূরী। আর যে (দুনিয়া ও আখিরাত) উভয়টিই চায় তার জন্যও ইলম অর্জন করা যরূরী”।(নববী,”তাহজিবুল আসমা ওয়াল-লুগাত”খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ৫৪) প্রখ্যাত তাবেঈ উমার ইবনু আব্দুল আযীয (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, من عمل على غير علم كان ما يفسد أكثر مما يصلح “যে ব্যক্তি দ্বীনি শিক্ষা ছাড়া আমল করবে সে সঠিকভাবে যতটুকু করবে না করবে, বরবাদ করবে তার চেয়ে বেশি”।(তারীখে তাবারী,৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৫৭২) ইমাম আহমদ ইবনু হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,الناس إلى العلم أحوج منهم إلى الطعام والشراب، لأن الرجل يحتاج إلى الطعام والشراب في اليوم مرة أو مرتين وحاجته إلى العلم بعدد أنفاسه “মানুষ খাদ্য ও পানীয়ের তুলনায় ইলমের প্রতি অধিক মুখাপেক্ষী। কেননা একজন ব্যক্তির দিনে একবার বা দু’বার খাবারের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু ইলমের প্রতি তার প্রয়োজনীয়তা তার নিঃশ্বাস পরিমাণ”।(মাদারেজিস সালেকিন, খন্ড: ৩ পৃষ্ঠা: ২৮১; ফাতাওয়াউল ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব,ফৎওয়া নং-৪৭২৭৩)
.
❖ দ্বিতীয়ত: কুরআন শিক্ষা দেওয়া কিংবা ধর্মীয় যে কোন কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা যাবে কি?
.
ইসলামী শরীয়তের আলোকে চিন্তা ভাবনা করলে মুমিনদের সব কাজই ধর্মীয়। এমনকি মুমিনের চিন্তা ভাবনা ও ইবাদত হতে পারে। পবিত্র কুরআনের প্রায় একশত আয়াতে মহান আল্লাহ চিন্তার ইবাদতে রত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।যেমন: মহান আল্লাহ বলেন,كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللهُ لَكُمُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَتَفَكَّرُونَ،”এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য নিদর্শন সমূহ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা-গবেষণা করতে পার”(সূরা বাক্বারাহ: ২/২১৯)। তারপরও শরীয়তে এমন কিছু নির্দিষ্ট কাজ রয়েছে যেগুলোর সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিগণ পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে পারবেন।যেমন কুরআন শিক্ষা দিয়ে, ইমামতি করে, আযান দিয়ে, দ্বীনী তা‘লীম দিয়ে বিনিময় গ্রহণ করা এবং অন্যের নিকট দ্বীন প্রচার অর্থাৎ ওয়াজ মাহফিল, ইসলামের দিকে মানুষকে আহ্বান (দাওয়াত), ঝাড়ফুঁক ইত্যাদি কার্যক্রম করে বিনিময়/পারিশ্রমিক নেয়ার ব্যাপারে বিশুদ্ধ কথা হল,এগুলো সবই দ্বীনের কাজ। কারও যদি বিনা পারিশ্রমিকে এ সব দ্বীন ও জনকল্যাণ মূলক কাজ করার সামর্থ্য থাকে তাহলে তা নি:সন্দেহে উত্তম এতে কোন সন্দেহ নাই। তবে যদি কোন পক্ষ অপর পক্ষকে উপরোক্ত কাজ করার জন্য নিয়োগ দেয় তাহলে সে ক্ষেত্রে নিয়োগকৃত ব্যক্তি নিয়োগ দাতার নিকট পারিশ্রমিক দাবি করতে পারে বা এর জন্য তাদের সাথে চুক্তিও করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে উপরোক্ত দ্বীনি কাজগুলো যেন শুধুমাত্র অর্থ গ্রহণ উদ্দেশ্য না হয়। বরং উদ্দেশ্য হতে হবে একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।জুমহুর ওলামাগণ বলেন, মূলত যে কাজ থেকে অন্য মানুষ উপকৃত হয় (তা দ্বীন-দুনিয়া যেক্ষেত্রেই হোক না কেন) তার বিনিময় বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে কোন বাধা নেই। এটা মূলত তার সময়, শ্রম ও কষ্টের বিনিময়। এটাকে কুরআন বা দ্বীন বিক্রয় করা বলা যাবে না।কিন্তু অর্থ সম্পদ, সম্মান, খ্যাতি ইত্যাদি লাভের জন্য দ্বীনকে ব্যবহার করা বৈধ নয়। তবে যে ব্যক্তি উদ্দেশ্য ঠিক রেখে বেতন গ্রহণ করবে, তার জন্য তা দূষণীয় হবে না। মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তার দ্বীনের উপকার হতে হবে। ধর্মীয় কাজের বিনিময়ে অর্থ গ্রহণ করা জায়েজ এই মর্মে কয়েকটি দলিল হচ্ছে:
.
আমাদের আম্মিজান ‘আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) [মৃত: ৫৭/৫৮ হি.] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,যখন আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)-কে খলীফা বানানো হল, তখন তিনি বললেন, আমার জাতি জানে যে, আমার উপার্জন আমার পরিবারের ভরণ পোষণের জন্য অপর্যাপ্ত ছিল না। কিন্তু এখন আমি মুসলিম জনগণের কাজে সার্বক্ষণিক ব্যাপৃত হয়ে গেছি। অতএব আবূ বকরের পরিবার এই রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে খাদ্য গ্রহণ করবে এবং আবূ বকর (রাঃ) মুসলিম জনগণের সম্পদের তত্ত্বাবধান করবেন”।(সহীহ বুখারী হা/২০৭০) অপর বর্ননায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, إِنَّ أَحَقَّ مَا أَخَذْتُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا كِتَابُ اللَّهِ “যে সকল জিনিসের উপর তোমরা বিনিময় গ্রহণ করে থাক, তন্মধ্যে পারিশ্রমিক গ্রহণ করার সবচেয়ে বেশি হক রয়েছে আল্লাহর কিতাবের ক্ষেত্রে”।(সহীহ বুখারী,হা/৫৭৩৭)। রাসূল (ﷺ) আবূ মাহযূরা (রাঃ)-কে আযান শেষে একটি রূপার থলি প্রদান করে তার জন্য বরকত কামনা করে দো‘আ করেন”।(নাসাঈ হা/৬৩২; ইবনু মাজাহ হা/৭০৮) আরেক হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওসমান ইবনু আবিল ‘আস (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে বললেন, أَنْتَ إِمَامُهُمْ وَاقْتَدِ بِأَضْعَفِهِمْ وَاتَّخِذْ مُؤَذِّنًا لَا يَأْخُذُ عَلَى أَذَانِهِ أَجْرًا “যাও তোমাকে তাদের ইমাম নিযুক্ত করা হল। তবে দুর্বল মুক্তাদীদের প্রতি খেয়াল রাখবে এবং এমন একজন মুয়াযযিন নিয়োগ করবে,যে তার আযানের বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করবে না”(আবূ দাঊদ, হা/৫৩১; নাসাঈ, হা/৬৭২; মিশকাত, হা/৬৬৮, সনদ ছহীহ)। উক্ত হাদীসের অর্থ হচ্ছে, যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করার শর্ত দিবে। যেমন বলল এ পরিমাণ টাকা না দিলে আমি ইমামাতি করব না, আযান দিব না, কুরআন পড়াবো না। এভাবে নিদিষ্ট করা শরীয়ত সম্মত নয়।কিন্তু কর্তৃপক্ষ নিজেদের ইচ্ছায় প্রদান করলে তাতে কোন দোষ নেই”।(দেখুন ইমাম শানক্বীত্বী,শারহু যাদুল মুসতাক্বনি‘ ৯/১৪৯) উক্ত হাদীস উল্লেখ করে ইমাম ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,”ঐ মুয়াযযিন উত্তম যে আযানের বিনিময়ে কিছুই চায় না বা শর্ত করে না”।(বিন বায, নূরুন ‘আলাদ দারাব, ‘আযান ও ইক্বামত’ অধ্যায়,আযান দিয়ে বিনিময় গ্রহণ করার বিধান’ অনুচ্ছেদ)। এমনকি বিশেষ ক্ষেত্রে কুরআন শিক্ষাকে রাসূল (ﷺ) বিবাহের মোহর হিসেবে সম্মতি দিয়েছেন। অর্থাৎ বিবাহ ইচ্ছুক ব্যক্তির আর্থিক অসচ্ছলতার ক্ষেত্রে রাসূল আর্থিক মোহরের বিকল্প হিসেবে কুরআন শিক্ষাকে নির্ধারণ করেছেন। যারা কুরআন শিক্ষা দেয় বা নিজের সময় ও শ্রমকে দ্বীনের জন্য বিসর্জন দেয়, আমাদের উচিৎ, তাদেরকে যথাযোগ্য সম্মানী প্রদান করা যাতে তারা উৎসাহিত হয়ে আরও বেশী গুরুত্বের সাথে দ্বীনের কাজ করে। অন্যথায় মানুষ অনুৎসাহিত হয়ে এ কাজ ছেড়ে দিতে পারে। তখন দ্বীন প্রচার হুমকির মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।যারা দ্বীনের কাজ করবে তাদের জন্য আবশ্যক হচ্ছে, আখিরাতে মহান আল্লাহর নিকট সওয়াব অর্জনের গ্রহণের আশা করা। এর মুল উদ্দেশ্য যেন কোনভাবেই দুনিয়া কামানো না হয়। অন্যথায় আখিরাতের সওয়াব থেকে তো বঞ্চিত হতে হবেই আবার এর পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। রাসূল (ﷺ) বলেন:“যে ব্যক্তি আখিরাতের কর্ম দুনিয়া লাভের উদ্দেশে করবে,তার জন্য আখিরাতের কোন ভাগ থাকবে না।”(মুসনাদে আহমদ হা/১৬৮) তিনি (ﷺ) আরও বলেন, “যে ব্যক্তি কোন এমন ইলম অন্বেষণ করে যার দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশা করা হয়, যদি সে তা কেবল মাত্র পার্থিব সম্পদ লাভের উদ্দেশ্যেই অন্বেষণ করে তবে সে কিয়ামতের দিন জান্নাতের সুগন্ধও পাবে না।”(আবু দাউদ হা/৩৬৬৪ ইবনু মাজাহ হা/২৫৩) সুতরাং মূল উদ্দেশ্য তথা আখিরাতে সওয়াব প্রাপ্তির উদ্দেশ্য ঠিক রেখে যদি জীবন চলার জন্য বা নিজের সময় ও শ্রমের বিনিময় হিসেবে দীনি কাজে বেতন বা পারিশ্রমিক গ্রহণ কর হয় তাহলে তা দূষণীয় নয়। ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়ার বিনিময়ে পরিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়েজ নাকি জায়েজ নয়? এই বিষয়ে ইতিহাস বিখ্যাত কয়েকজন আলেমদের ফাতওয়া উল্লেখ করা হল:
.
(১). হিজরী ৮ম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ শাইখুল ইসলাম ইমাম তাক্বিউদ্দীন আবুল ‘আব্বাস আহমাদ বিন ‘আব্দুল হালীম বিন তাইমিয়্যাহ আল-হার্রানী আন-নুমাইরি, (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭২৮ হি.]-কে এমন একজন ব্যক্তির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যিনি হাদিয়া নেওয়া ছাড়া ইসলামী জ্ঞান শেখানো থেকে বিরত ছিল। এমনটি করা কি জায়েয?
উত্তরে ইমাম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন :
الحمد لله ، أما تعليم القرآن والعلم بغير أجرة فهو أفضل الأعمال وأحبها إلى الله ، وهذا مما يعلم بالاضطرار من دين الإسلام ، ليس هذا مما يخفى على أحد ممن نشأ بديار الإسلام ، والصحابة والتابعون وتابعو التابعين وغيرهم من العلماء المشهورين عند الأمة بالقرآن والحديث والفقه إنما كانوا يعلمون بغير أجرة ، ولم يكن فيهم من يعلم بأجرة أصلا .(فإن العلماء ورثة الأنبياء ، وإن الأنبياء لم يورثوا دينارا ولا درهما ، وإنما ورثوا العلم ، فمن أخذه فقد أخذ بحظ وافر) والأنبياء صلوات الله عليهم إنما كانوا يعلمون العلم بغير أجرة ، كما قال نوح عليه السلام : (وما أسألكم عليه من أجر أن أجرى إلا على رب العالمين) وكذلك قال هود وصالح وشعيب ولوط وغيرهم ، وكذلك قال خاتم الرسل : (قُلْ مَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ وَمَا أَنَا مِنْ الْمُتَكَلِّفِينَ) وقال : (قُلْ مَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ إِلاَّ مَنْ شَاءَ أَنْ يَتَّخِذَ إِلَى رَبِّهِ سَبِيلاً) .وتعليم القرآن والحديث والفقه وغير ذلك بغير أجرة لم يتنازع العلماء في أنه عمل صالح ، بل هو من فروض الكفاية ، كما قال النبي في الحديث الصحيح : (بلغوا عنى ولو آية) وقال : (ليبلغ الشاهد الغائب) .
وإنما تنازع العلماء في جواز الاستئجار على تعليم القرآن والحديث والفقه على قولين مشهورين هما روايتان عن أحمد .
إحداهما : وهو مذهب أبى حنيفة وغيره ، أنه لا يجوز الاستئجار على ذلك .
والثانية : وهو قول الشافعي أنه يجوز الاستئجار .
وفيها قول ثالث في مذهب أحمد : أنه يجوز مع الحاجة دون الغنى ، كما قال تعالى في ولي اليتيم : (وَمَنْ كَانَ غَنِيّاً فَلْيَسْتَعْفِفْ وَمَنْ كَانَ فَقِيراً فَلْيَأْكُلْ بِالْمَعْرُوفِ) .
ويجوز أن يعطى هؤلاء من مال المسلمين على التعليم ، كما يعطى الأئمة والمؤذنون والقضاة ، وذلك جائز مع الحاجة .
وهل يجوز الارتزاق مع الغنى؟ على قولين للعلماء …
ومأخذ العلماء في عدم جواز الاستئجار على هذا النفع : أن هذه الأعمال يختص أن يكون فاعلها من أهل القُرَب بتعليم القرآن والحديث والفقه والإمامة والأذان لا يجوز أن يفعله كافر ، ولا يفعله إلا مسلم بخلاف النفع الذي يفعله المسلم والكافر كالبناء والخياط والنسج ونحو ذلك ، وإذا فعل العمل بالأجرة لم يبق عبادة لله ، فإنه يبقى مستحقا بالعوض ، معمولاً لأجله ، والعمل إذا عمل للعوض لم يبق عبادة كالصناعات التي تعمل بالأجرة ، فمن قال : لا يجوز الاستئجار على هذه الأعمال قال : إنه لا يجوز إيقاعها على غير وجه العبادة لله ، كما لا يجوز إيقاع الصلاة والصوم والقراءة على غير وجه العبادة لله ، والاستئجار يخرجها عن ذلك.
ومن جوز ذلك قال : إنه نفع يصل إلى المستأجر فجاز أخذ الأجرة عليه كسائر المنافع .
ومن فَرّق بين المحتاج وغيرهِ وهو أقرب قال : المحتاج إذا اكتسب بها أمكنه أن ينوي عملها لله ، ويأخذ الأجرة ليستعين بها على العبادة ، فإن الكسب على العيال واجب أيضا ، فيؤدي الواجبات بهذا ، بخلاف الغني لأنه لا يحتاج إلى الكسب ، فلا حاجة تدعوه أن يعملها لغير الله ، بل إذا كان الله قد أغناه ، وهذا فرض على الكفاية ، كان هو مخاطبا به ، وإذا لم يقم إلا به كان ذلك واجبا عليه عينا ، والله أعلم”
“আলহামদুলিল্লাহ! কোনো পারিশ্রমিক ছাড়াই কুরআন ও শরঈ জ্ঞান শিক্ষা দেয়া, এটি সর্বোত্তম কাজ এবং আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয়। ইসলাম ধর্মে এমন শিক্ষা দেয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। যারা মুসলিম দেশে জন্মগ্রহণ করেছে, সাহাবী, তাবেঈ, তাবেঈনের সময়কার আলেমগণ, তাঁদের কাছে স্পষ্ট ছিল যে,তিনারা কুরআন হাদিস ও ফিকহের জ্ঞান শিক্ষা দিতেন কোন প্রতিদান নেওয়া ছাড়াই। (আলেমগণ হলেন নবীদের উত্তরাধিকারী)। পয়গম্বররা কখনো সোনার-রূপার একটি মুদ্রাও উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে যাননি, বরং তাঁরা ধর্মীয় জ্ঞান এবং ইলমের উত্তরাধিকার রেখে গেছেন। যে ব্যক্তি এই ইলম গ্রহণ করেছে, সে প্রকৃত উত্তরাধিকারী।নবীগন কোনো পারিশ্রমিক নেওয়া ছাড়াই পাঠদান করতেন। যেমন নুহ আ. বলেছিলেন: (আমি তোমাদের কাছে এর বিনিময়ে কোন প্রতিদান চাই না । এর প্রতিদান একমাত্র সারা বিশ্বের প্রতিপালকের নিকটে চাই) এভাবে হুদ, সলেহ, শুয়াইব, লুত (আলাহিস সালাম) ও অন্যান্যরাও বলেছেন। শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আমি তোমাদের কাছে এর বিনিময়ে কিছু চাই না । আমি একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত মাত্র। প্রতিদান নেওয়া ছাড়াই কোরআন হাদিসে ফিকহের জ্ঞান শিক্ষা দেওয়া যে সৎ আমল এ ব্যাপারে আলেমদের ভিতর কোনদিন দ্বিমত নেই। বরং এটি ফরজে কেফায়া। যেমন নবী (ﷺ) বলেন: (بلغوا عنى ولو آية) অর্থাৎ, “তোমরা যদি এক একটি আয়াতও জান, তবে তা পৌঁছে দাও।”তিনি আরো বলেন:(ليبلغ الشاهد الغائب) “উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যক্তিকে এ সংবাদ পৌঁছে দেয়”। পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কুরআন হাদিস শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে আলিমগণ মতনৈক্য করেছেন এবং ইমাম আহমদ (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে দুইটি প্রসিদ্ধ কথা উল্লেখ হয়েছে:
.
(১). ইমাম আবু হানিফা (রাহিমাহুল্লাহ) ও অন্যান্যদের মত এই যে, প্রতিদানের বিনিময়ে কোরআন শিক্ষা দেওয়া জায়েজ নয়।
(২). ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ) এর মত হচ্ছে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কোরআন শিক্ষা দেওয়া যায়।
(৩). তৃতীয় আরেকটি মত হলো: ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,ধনী হওয়া ছাড়াই প্রয়োজন মাফিক পারিশ্রমিক নেওয়া যাবে। যেমন আল্লাহ তাআলা ইয়াতিমের অভিভাবকের ক্ষেত্রে বলেন: যে ব্যক্তি (অভিভাবক) ধনী হবে সে যেন তা নেওয়া থেকে বিরত থাকে। আর যে ব্যক্তি ধনী নয় (মুখাপেক্ষী, ফকির) সে যেন ন্যায়সঙ্গত ভাবে গ্রহণ করে।শিক্ষার জন্য পারিশ্রমিক ব্যবস্থাটি বায়তুল মাল থেকে নির্ধারণ হওয়া উচিত, যেমন ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং বিচারকদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়, যা ন্যায্যতা পূর্ণ। এটা প্রয়োজন মাফিক জায়েজ।
.
ধনী হয়ে জীবিকা উপার্জন করা কি জায়েজ? এই বিষয়ে দুটি ভিন্ন মত রয়েছে। একটি মত অনুসারে আলেমরা বলেছেন যে, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে কাজগুলো করা হয় যেমন কোরআন এবং হাদিস শোনা, আজান দেওয়া, ইমামতি ইত্যাদি এসব কাজে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা উচিত নয়। কারণ এগুলো ইবাদত এবং এগুলোর জন্য পারিশ্রমিক নেয়া আল্লাহর উদ্দেশ্যে ইবাদত করার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তারা বলেন যে, কাফিররা এটি করতে পারবে না কিন্তু মুসলিমরা কেবল তাদের নিকটবর্তী লোকজনকে ইমামতি বা আজান দেবেন, তাই এই কাজগুলোতে পারিশ্রমিক নেয়া যাবে না। অন্যদিকে, কেউ কেউ বলেন উপকারের উদ্দেশ্যে ইবাদতগুলো করা জায়েজ হতে পারে। যেমন সেলাই করা, কাপড় বানানো, বিল্ডিং তৈরি করা ইত্যাদি কাজ সব মানুষের দ্বারা করা যেতে পারে। এই ধরনের কাজের বিনিময়ে উপার্জন করা বৈধ হতে পারে, যদি উদ্দেশ্য পরিবার পরিচালনা করা বা জীবন-যাপন বজায় রাখা হয়, কিন্তু পবিত্র ইবাদতের ক্ষেত্রে (যেমন সালাত, রোজা, কুরআন পাঠ) অন্য কিছু করতে গেলে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লক্ষ্য রাখতে হবে। আরো পরিস্কারভাবে বলা যায় যে, যদি কাজের মাধ্যমে পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় আয় উপার্জিত হয় তবে সেটা বৈধ, কিন্তু যখন কোনো ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা ভালো অর্থাৎ তার জন্য অতিরিক্ত উপার্জনের প্রয়োজন নেই, তখন তাকে আরো আল্লাহর ইবাদত করার দিকে মনোযোগী হওয়া উচিত” আল্লাহই ভাল জানেন”। (ইবনু তাইমিয়্যাহ মাজমুউ ফাতাওয়া, খণ্ড: ৩০; পৃষ্ঠা: ২০৪)
.
সৌদি আরবের ‘ইলমী গবেষণা ও ফাতাওয়া প্রদানের স্থায়ী কমিটির (আল-লাজনাতুদ দাইমাহ লিল বুহূসিল ‘ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা) আলেমদের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল: শিশুদের কুরআন মুখস্থ করানোর বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণের বিধান কী? যদি এটি বৈধ হয়, তাহলে শিক্ষক কি মাসিক পারিশ্রমিক গ্রহণের পাশাপাশি আল্লাহর কাছে সওয়াবও পাবেন?
স্থায়ী কমিটির আলেমগন উত্তরে বলেছেন:
تعلم القرآن الكريم وتعليمه من أفضل القرب إلى الله جل وعلا، إذا صلحت النية ، وقد حث النبي -صلى الله عليه وسلم- على تعلم القرآن وتعليمه بقوله: ( خيركم من تعلم القرآن وعلمه ) . وأخذ معلمي القرآن الأجرة على تعليمه لا ينافي حصول الثواب والأجر من الله جل وعلا إذا خلصت النية. وبالله التوفيق ، وصلى الله على نبينا محمد وآله وصحبه وسلم
“কুরআন শেখা ও শেখানো আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায় যদি নিয়ত সঠিক হয়। নবী মুহাম্মদ ﷺ) বলেছেন:”তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হল সে যে কুরআন শেখে এবং অন্যকে শেখায়”।’ শিক্ষাদানের জন্য কুরআনের শিক্ষক পারিশ্রমিক গ্রহণ করলেও তা আল্লাহর পক্ষ থেকে সওয়াব লাভে কোনো বাধা সৃষ্টি করে না, যদি তার নিয়ত পরিষ্কার ও পবিত্র থাকে। আল্লাহই উত্তম তাওফিক দাতা।আমাদের নবী মুহাম্মদ এর প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক”।(ফাতাওয়া লাজনাহ দায়িমাহ; খণ্ড: ১৫; পৃষ্ঠা: ৯৯)
.
লাজনা দায়েমা ফতোয়া বিভাগের আলেমগন বলেন:
يجوز لك أن تأخذ أجراً على تعليم القرآن ؛ فإن النبي صلى الله عليه وسلم زوَّج رجلا امرأة بتعليمه إياها ما معه من القرآن ، وكان ذلك صداقها ، وأخذ الصحابي أجرة على شفاء مريض كافر بسبب رقيته إياه بفاتحة الكتاب ، وقال في ذلك النبي صلى الله عليه وسلم : ( إن أحق ما أخذتم عليه أجرا كتاب الله ) أخرجه البخاري ومسلم ، وإنما المحظور : أخذ الأجرة على نفس تلاوة القرآن ، وسؤال الناس بقراءته”
“আপনার জন্য কুরআন শিক্ষার ফি নেওয়া জায়েজ। মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন পুরুষকে একজন মহিলার সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি যেন তাকে কুরআন শিখিয়ে দেন । এটি ছিল তার মোহর। একজন অসুস্থ কাফেরকে আরোগ্য করার জন্য সাহাবী পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন কারণ তিনি তাঁকে সুরা ফাতিহা দ্বারা রুকিয়া করেছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সম্পর্কে বলেছেন, তুমি যে জন্য পারিশ্রমিক নিচ্ছো তার মধ্যে সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে আল্লাহর কিতাব দিয়ে উপার্জন নেওয়া।” নিষেধ হলো শুধু কুরআন তিলাওয়াত করে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা এবং মানুষের কাছে তেলাওয়াতের জন্য কিছু চাওয়া”।(ফাতাওয়া লাজনাহ দায়িমাহ; খণ্ড: ১৫; পৃষ্ঠা: ৯৯)
.
বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায আন-নাজদী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.]-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল:কুরআন শিক্ষার জন্য পারিশ্রমিক নেওয়ার বিধান কী? আমাদের গ্রামে একজন ইমাম আছেন যিনি শিশুদের কুরআন মুখস্থ করানোর বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করেন।
ইমাম (রাহিমাহুল্লাহ) উত্তরে বলেন:
لا حرج في أخذ الأجرة على تعليم القرآن وتعليم العلم؛ لأن الناس في حاجة إلى التعليم، ولأن المعلم قد يشق عليه ذلك ويعطله التعليم عن الكسب، فإذا أخذ أجرة على تعليم القرآن وتحفيظه وتعليم العلم، فالصحيح أنه لا حرج في ذلك، وقد ثبت عن النبي ﷺ أن جماعة من الصحابة نزلوا ببعض العرب فلدغ سيدهم: يعني رئيسهم، وأنهم عالجوه بكل شيء ولم ينفعه ذلك، وطلبوا منهم أن يرقوه، فتقدم أحد الصحابة فرقاه بفاتحة الكتاب، فشفاه الله وعافاه، وكانوا قد اشترطوا عليهم قطيعًا من الغنم، فأوفوا لهم بشرطهم، فتوقفوا عن قسمه بينهم حتى سألوا النبي ﷺ، فقال عليه الصلاة والسلام: أحسنتم واضربوا لي معكم بسهم رواه البخاري في صحيحه، ولم ينكر عليهم ذلك وقال: إن أحق ما أخذتم عليه أجرا كتاب الله رواه البخاري في الصحيح أيضًا، فهذا يدل على أنه لا بأس بأخذ الأجرة على التعليم كما جاز أخذها على الرقية
“কুরআন ও ইসলামী জ্ঞান শিক্ষার বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা ইসলামে বৈধ। কারণ এ ধরনের শিক্ষা মানব জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং যদি কোনো শিক্ষক তার শ্রম ও সময় এ কাজে ব্যয় করেন, তবে পারিশ্রমিক গ্রহণ তার জন্য সম্পূর্ণ অনুমোদিত। এতে শিক্ষকের জীবিকা অর্জন বাধাগ্রস্ত হয় না, বরং এটি একটি সমর্থন হিসাবে কাজ করে। নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে এর ভিত্তিতে কিছু উদাহরণ রয়েছে। যেমন একবার কিছু সাহাবি এক আরব সম্প্রদায়ে গিয়েছিলেন যেখানে তাদের নেতা সাপের কামড়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। সেই সময় নানা চিকিৎসা প্রয়োগ করেও কোনো ফলাফল হয়নি। সাহাবিদের কাছে সাহায্য চাইলে, একজন সাহাবি সূরা ফাতিহা পাঠ করে রুকইয়া করেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় সেই ব্যক্তি আরোগ্য লাভ করেন। এর পরিবর্তে সেই সম্প্রদায় তাদের ছাগলের একটি পাল উপহার হিসেবে প্রদান করে। সাহাবিরা সেটি গ্রহণ করার আগে নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পরামর্শ নেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের অনুমোদন দেন এবং বলেন, “আমার জন্যও একটি অংশ রেখে দাও।” (সহীহ বুখারি) এ ছাড়াও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,”তোমরা যদি কোনো কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ কর, তবে কুরআন থেকে লাভকরা সবচেয়ে উপযুক্ত।”(সহীহ বুখারি) এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, যেমন রুকইয়ার জন্য পারিশ্রমিক গ্রহণ বৈধ, তেমনি কুরআন শেখানোর জন্যও এটি বৈধ। সুতরাং, কুরআন শেখানোর বিনিময়ে কোনো ইমাম বা শিক্ষক পারিশ্রমিক নিলে এতে কোনো সমস্যা নেই”।(মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাতুম মুতানাওয়্যা‘আহ, খণ্ড/৫; পৃষ্ঠা: ৩৫৫)। সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন:
“وضع الراتب للأئمة والمؤذنين والمعلمين والمدرسين والدارسين : فهذا من باب التشجيع على الخير، ولا بأس به، وكان النبي عليه الصلاة والسلام في غزواته يجعل جعلاً ينشط الغزاة على القتال، حتى قال: (من قتل قتيلاً فله سلبه) ، أي: ما عليه من الثياب والرحل وما أشبه ذلك مما يعد سلباً، كل هذا من باب التشجيع على الخير، ولا حرج على الإنسان أن يأخذ بدون طلب، المشكل أن يطلب زيادة على وظيفة دينية… بعض الناس يقول: إن أخذه الراتب على الإمامة ينقص من إخلاصه، وهذا غير صحيح، ينقص من إخلاصه إذا كان لا يصلي إلا لأجله، أما إذا كان يصلي لله عز وجل ، ويستعين بما يأخذه على نوائب الدنيا فلا بأس بذلك
“ইমাম, মুয়াজ্জিন, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বেতন নির্ধারণ করাটা মূলত ভালো কাজের প্রতি উৎসাহ প্রদানের অংশ। এতে কোনো সমস্যা নেই। নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ্ধক্ষেত্রেও এমন কিছু করতেন,যা যোদ্ধাদেরকে জিহাদের জন্য উৎসাহিত করতো। যেমন তিনি বলেছেন: ‘যে ব্যক্তি কোনো (কাফের) শত্রুকে হত্যা করবে, তার কাছে যা কিছু আছে তা তার জন্য প্রাপ্য হবে।’ অর্থাৎ, শত্রুর পোশাক, সরঞ্জাম এবং এর মতো যা কিছু গনিমত হিসেবে গণ্য হবে। এগুলো ভালো কাজে উৎসাহ প্রদানের উপায়। মানুষ চেয়ে না নিলে (তাদের দিক থেকে চাহিদা প্রকাশ না হলে) এটি গ্রহণে কোনো সমস্যা নেই। তবে সমস্যা তখনই হয়, যখন কেউ ধর্মীয় কোনো কাজ করে অতিরিক্ত কিছু দাবি করে। কিছু লোক মনে করেন যে, ইমামতি করে বেতন নেওয়া ইখলাস (আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠতা) নষ্ট করে দেয়। কিন্তু এটি সঠিক নয়। ইখলাস তখনই কমবে, যখন ইমামতিটি শুধুমাত্র বেতনের জন্য করা হবে। পক্ষান্তরে, যদি কেউ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সালাত আদায় করেন এবং এর মাধ্যমে দুনিয়াবি প্রয়োজনে বেতন ব্যবহার করেন তাহলে এতে কোনো দোষ নেই।”(ইবনু উসাইমীন আল-লিক্বাউশ শাহরী, লিক্বা নং-৩৮)
.
উল্লেখ্য যে, একদল আহলুল আলিমগন কুরআন ও দ্বীন শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে পারিশ্রমিক নেওয়া নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে কুরআন সুন্নাহ থেকে বেশ কিছু দলিল প্রমাণ হিসাবে উদ্ধৃত করেছেন। আমরা সেগুলোকে অস্বীকার করিনা কিন্তু তাদের জন্য এ দলিলের মাধ্যমে নিরাপদ মনে করছি না। তার কয়েকটি ব্যাখা নিচে উল্লেখ করা হলো: আল্লাহ তাআলা বলেন;وَ لَا تَشۡتَرُوۡا بِاٰیٰتِیۡ ثَمَنًا قَلِیۡلًا ۫”আর আমার আয়াতসমূহের বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করো না” (সূরা বাকারা ৪১) আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তা’আলার আয়াতসমূহের বিনিময়ে মূল্য গ্রহণ নিষিদ্ধ হওয়ার অর্থ হলো, মানুষের মর্জি ও স্বার্থের বিনিময়ে আয়াতসমূহের মর্ম বিকৃত বা ভুলভাবে প্রকাশ করে তা গোপন রেখে টাকা-পয়সা, অর্থ-সম্পদ গ্রহণ করা। এ কাজটি সর্বসম্মতিক্রমে হারাম।অপর আয়াতে আল্লাহ আরো বলেছেন:فَوَیۡلٌ لِّلَّذِیۡنَ یَكۡتُبُوۡنَ الۡكِتٰبَ بِاَیۡدِیۡهِمۡ ٭ ثُمَّ یَقُوۡلُوۡنَ هٰذَا مِنۡ عِنۡدِ اللّٰهِ لِیَشۡتَرُوۡا بِهٖ ثَمَنًا قَلِیۡلًا ؕ فَوَیۡلٌ لَّهُمۡ مِّمَّا كَتَبَتۡ اَیۡدِیۡهِمۡ وَ وَیۡلٌ لَّهُمۡ مِّمَّا یَكۡسِبُوۡنَ “কাজেই দুর্ভোগ! তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে অতঃপর সামান্য মূল্য পাওয়ার জন্য বলে, “এটা আল্লাহর কাছ থেকে। অতএব, তাদের হাত যা রচনা করেছে তার জন্য তাদের ধ্বংস এবং যা তারা উপার্জন করেছে তার জন্য তাদের ধ্বংস” (সূরা বাকারাহ: ৭৯)
.
ত্বহের ইবনু আশুর (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর তাফসীরে উল্লেখ করেছেন:
“وقوله : (لِيَشْتَرُوا بِهِ ثَمَناً قَلِيلاً) البقرة/79 : هو كقوله : (وَلا تَشْتَرُوا بِآيَاتِي ثَمَناً قَلِيلاً) البقرة/41 ، والثمن المقصود هنا هو : إرضاء العامة ، بأن غيّروا لهم أحكام الدين على ما يوافق أهواءهم ، أو انتحال العلم لأنفسهم مع أنهم جاهلون ، فوضعوا كتباً تافهة من القصص ، والمعلومات البسيطة ليتفيهقوا بها في المجامع ؛ لأنهم لما لم تصل عقولهم إلى العلم الصحيح ، وكانوا قد طمعوا في التصدر والرئاسة الكاذبة : لفقوا نتفاً سطحية ، وجمعوا موضوعات ، وفراغات لا تثبت على محك العلم الصحيح ، ثم أشاعوها ، ونسبوها إلى الله ، ودينه ، وهذه شنشنة الجهلة ، المتطلعين إلى الرئاسة عن غير أهلية ، ليظهروا في صور العلماء لدى أنظار العامة ، ومن لا يميز بين الشحم والورَم”
“আল্লাহ তাআলার বাণী “তারা যেন এর (কিতাবের) বিনিময়ে সামান্য মূল্য গ্রহণ করতে পারে” (সূরা বাকারা: ৭৯) এর অর্থ একই রকম, যেমন আল্লাহ বলেন: “আমার আয়াতের বিনিময়ে সামান্য মূল্য গ্রহণ করো না” (সূরা বাকারা: ৪১)। এখানে “সামান্য মূল্য” বলতে বোঝানো হয়েছে জনসাধারণের সন্তুষ্টি অর্জন করা। তারা আল্লাহর দ্বীনের বিধানকে নিজেদের কামনা-বাসনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য পরিবর্তন করত, যাতে সাধারণ মানুষ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়। এছাড়া, তারা নিজেদের জ্ঞানী বলে দাবী করত, যদিও তারা প্রকৃতপক্ষে ছিল সম্পূর্ণ অজ্ঞ। তারা তুচ্ছ এবং নিরর্থক কিছু বই লিখত, যেগুলো কেবলমাত্র মিথ্যা গল্প এবং নগণ্য তথ্যের সমন্বয়ে গঠিত ছিল। এসব বই নিয়ে তারা জনগণের সামনে আত্মগরিমায় কথা বলত। কারণ, তারা প্রকৃত জ্ঞান অর্জনে ব্যর্থ হয়েছিল; কিন্তু তারা মিথ্যা নেতৃত্বের আশায় এসব প্রচার করত। তারা এমন কিছু বিষয় রচনা করেছিল, যা প্রকৃত জ্ঞানের মানদণ্ডে গ্রহণযোগ্য ছিল না। তারপর সেগুলোকে আল্লাহর দিকে এবং তাঁর দ্বীনের দিকে মিথ্যাভাবে সম্বন্ধ করেছিল।এটি মূর্খ ও অযোগ্য ব্যক্তিদের একটি পরিচয়, যারা নেতৃত্বের লোভে বিভোর থাকে। তারা চায় সাধারণ মানুষের দৃষ্টিতে নিজেদের জ্ঞানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে। কিন্তু সাধারণ মানুষ সত্য ও মিথ্যার মাঝে পার্থক্য করার সামর্থ্য রাখে না”।(আত্ব তাহবীর ওয়াত তানবীর ১/৫৭৭)
.
ইমাম আবু ‘আব্দুল্লা-হ্ মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আল ক্বুরত্বুবী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬৭১ হি.] বলেন,
وقد اختلف العلماء في أخذ الأجرة على تعليم القرآن ، والعلم ؛ لهذه الآية ، وما كان في معناها ، فمنع ذلك الزهري ، وأصحاب الرأي [الأحناف] ، وقالوا : لا يجوز أخذ الأجرة على تعليم القرآن ؛ لأن تعليمه واجب من الواجبات التي يحتاج فيها إلى نية التقرب والإخلاص ، فلا يؤخذ عليها أجرة ، كالصلاة ، والصيام ، وقد قال تعالى : (وَلا تَشْتَرُوا بِآيَاتِي ثَمَناً قَلِيلاً) . وأجاز أخذ الأجرة على تعليم القرآن : مالك ، والشافعي ، وأحمد ، وأبو ثور ، وأكثر العلماء ؛ لقوله عليه السلام في حديث ابن عباس حديث الرقية : (إِنَّ أحقَّ مَا أَخَذْتُم عَلَيْهِ أَجْراً كِتَابُ الله) أخرجه البخاري ، وهو نص يرفع الخلاف ، فينبغي أن يعوَّل عليه
“এই আয়াতের উপর ভিত্তি করে কুরআন ও জ্ঞান শিক্ষা দেওয়ার জন্য পারিশ্রমিক নেওয়া বিষয়ে আলেমদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। ইমাম যুহরি এবং হানাফী আলেমগণ এটিকে নিষেধ করে বলেছেন: কুরআন শিক্ষার জন্য অর্থ গ্রহণ করা জায়েজ নয়। তাঁদের যুক্তি হলো, কুরআন শেখানো একটি ওয়াজিব কাজ, যা খাঁটি নিয়ত ও ইখলাস সহকারে সম্পাদন করতে হয়। এতে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা যায় না, যেমন নামাজ ও রোজার জন্য পারিশ্রমিক নেওয়া যায় না। আল্লাহ তা’আলা বলেন: (তোমরা আমার আয়াতের বিনিময়ে সামান্য পরিমাণমূল্য গ্রহণ করিও না) অন্যদিকে,ইমাম মালিক,শাফিয়ি, আহমাদ ইবনু হাম্বল, আবু সাওর এবং অধিকাংশ ফকিহ কুরআন শেখানোর বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণকে বৈধ বলেছেন। তাদের দলিল হলো, ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি হাদিস। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: “তোমরা যার বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করবে, তার মধ্যে সর্বাধিক হকবান হলো আল্লাহর কিতাব” (সহীহ বুখারি)। এই হাদিস দ্বিমত নিরসনের পক্ষে দৃঢ় প্রমাণস্বরূপ। এর আলোকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত”।(তাফসির কুরতুবী খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ৩৩৫, ৩৩৬)
.
❖ তৃতীয়ত: সবশেষে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের জন্য চুক্তি করা বৈধ কিনা:
.
এই বিষয়ে মূলনীতি হচ্ছে যে সকল কাজ করার জন্য পারিশ্রমিক বা আর্থিক বিনিময় গ্রহণ করা বৈধ সে কাজের জন্য চুক্তি করাও বৈধ। চুক্তি না করলে বরং পরবর্তীতে মন কশাকশি ও ঝগড়াঝাটি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বেতন-ভাতা বা পারিশ্রমিক দেয়ার বিষয়টি মানুষের ইচ্ছার উপর ছেড়ে দিলে অনেক ক্ষেত্রে যথার্থ হক আদায় করা হয় না। সুতরাং পরবর্তীতে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে মুক্তি পেতে অগ্রিম উভয় পক্ষ সম্মতির ভিত্তিতে যুক্তি করা জায়েয। আর যুক্তি সম্পন্ন হলে উভয় পক্ষের জন্য চুক্তি পূরণ করা অপরিহার্য। যেহেতু চুক্তি ও অঙ্গীকারসমূহের শর্ত পূরণ করতে মুসলমানেরা বাধ্য। আল্লাহ্ তাআলা বলেন:يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَوْفُوا بِالْعُقُودِ “হে মুমিনগণ, তোমরা অঙ্গীকার/চুক্তি সমূহ পূর্ণ কর।” (সূরা মায়িদাহ: ১) এবং আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:“মুসলমানেরা তাদের শর্তের উপর বলবৎ”।(আবু দাউদ হা/৩৫৯৪), আলবানী ‘সহিহ আবু দাউদ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন] কোন এক পক্ষ চুক্তি ভঙ্গ করলে তারা গুনাহগার হবে।
.
বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন:
الأصل في الشروط : الحل ، والصحة ، سواءً في النكاح ، أو في البيع ، أو في الإجارة ، أو في الرهن ، أو في الوقف ، وحكم الشروط المشروطة في العقود إذا كانت صحيحة : أنه يجب الوفاء بها ، في النكاح ، وغيره ؛ لعموم قوله تعالى : ( يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَوْفُوا بِالْعُقُودِ ) المائدة/ 1 ، فإن الوفاء بالعقد يتضمن : الوفاء به ، وبما تضمنه من شروط ، وصفات ؛ لأنه كله داخل في العقد
“শর্ত বিষয়ক অধ্যায়ের মূলনীতি হলো- যে কোন শর্ত আরোপ করা জায়েয এবং শুদ্ধ। সেটা বিয়ের ক্ষেত্রে হোক, বেচাকেনার ক্ষেত্রে হোক, ভাড়ার ক্ষেত্রে হোক, বন্ধকের ক্ষেত্রে হোক, অথবা ওয়াকফের ক্ষেত্রে হোক। যে কোন প্রকার চুক্তির শর্তের বিধান হলো- শর্ত শুদ্ধ হলে সেটি পূর্ণ করা ওয়াজিব (অপরিহার্য)। সেটি বিয়ের চুক্তি হোক অথবা অন্য কোন চুক্তি হোক। যেহেতু চুক্তি সংক্রান্ত আল্লাহর বাণীটির বিধান সাধারণ- “হে ঈমানদারগণ, তোমরা তোমাদের চুক্তির প্রতিশ্রুতি পূর্ণ কর।”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ১]। আর চুক্তি পূর্ণ করা মানে চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত শর্ত ও বৈশিষ্ট্যসহ তা পূর্ণ করা। যেহেতু চুক্তির শর্তও চুক্তি হিসেবে গণ্য”।(ইবনু উসাইমীন;আল-শারহুল মুমতি’ আলা যাদিল মুসতানকি’, পৃষ্ঠা: ১২/১৬৪) তবে হা! পারিশ্রমিক বা সম্মানী কত হবে তা নির্ভর করছে উভয় পক্ষের সম্মতির উপর। কম-বেশি যাই হোক যুক্তি অনুযায়ী তা পরিশোধ করা অপরিহার্য। চুক্তি করার পর তা লঙ্ঘন করলে প্রয়োজনে যে কোন পক্ষ অপর অক্ষের উপর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও অধিকার রাখে। আল্লাহ আমাদেরকে সহীহ বুঝ দান করুন।(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
উপস্থাপনায়: জুয়েল মাহমুদ সালাফি।
সম্পাদনায়: উস্তায ইব্রাহিম বিন হাসান হাফি.
অধ্যয়নরত, কিং খালেদ ইউনিভার্সিটি আবহা, সৌদি আরব।