কুরআনের বাংলা অনুবাদ কিংবা তাফসীর পড়ার সময় তিলাওয়াত না করে কোনো সিজদাহর আয়াতের অর্থ পড়লে কি সিজদাহ্ করতে হবে

উত্তর: কুরআনে সিজদাহর আয়াতের অর্থ পড়লে সিজদাহ করার প্রয়োজন হয় না।কারন যখন কুরআন আরবী ভাষার বাইরে অন্য কোনো ভাষায় (বাংলা ইংরেজি, ফারসি) ইত্যাদি অনুবাদ করা হয়,তখন তা মূল মুসহাফ হিসেবে গণ্য হবে না, বরং কুরআন আরবি ভাষায় রাসূল (ﷺ)-এর উপর যে রূপে নাযিল হয়েছে, সেটিই আসল কুরআন। আর কুরআনের যদি কোনো ভাষায় অনুবাদ করা হয়, তাহলে সেটি কুরআনের ব্যাখ্যা বা তাফসির হিসেবে গণ্য হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন:اِنَّاۤ اَنۡزَلۡنٰهُ قُرۡءٰنًا عَرَبِیًّا لَّعَلَّكُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ “নিশ্চয় আমরা এটা নাযিল করেছি,কুরআন হিসেবে আরবী ভাষায় যাতে তোমরা বুঝতে পার”।(সূরা ইউসুফ: আয়াত: ২) যেহেতু কুরআনের অনুবাদ কোনো অন্য ভাষায় করা হলে সেটি কেবল কুরআনের ব্যাখ্যা, তাফসিরই হিসেবে গণ্য হবে, মূল কুরআনের প্রতিস্থাপন নয়, সেজন্য কুরআনের মূল আরবি থেকে সিজদার আয়াত পড়লে বা শুনলে অধিক বিশুদ্ধ মতে সিজদাহ দেওয়া সুন্নত সিজদার আয়াতের অনুবাদ পড়লে বা শুনলে সিজদা আবশ্যক হয় না। যদিও কেউ কেউ বলেছেন কুরআনের অনুবাদ বা তাফসীর পাঠকালেও সিজদা করা উত্তম।
.
শাইখ মনসুর আল-বুহূতী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:

( وتَرْجَمَتُهُ أَيْ : الْقُرْآنَ بِالْفَارِسِيَّةِ أَوْ غَيْرِهَا لَا تُسَمَّى قُرْآنًا ، فَلَا تَحْرُمُ عَلَى الْجُنُبِ ، وَتَكُونُ تِلْكَ التَّرْجَمَةُ عِبَارَةً عَنْ مَعْنَى الْقُرْآنِ , وَتَفْسِيرًا لَهُ بِتِلْكَ اللُّغَةِ لَا قُرْآنًا وَلَا مُعْجِزًا ”

“কুরআনের অনুবাদ যেমন ফারসি বা অন্য যেকোনো ভাষায় যে অনুবাদ করা হয়, তা কুরআন বলে গণ্য হয় না। সুতরাং এটি অপবিত্র (জুনুব) ব্যক্তির জন্য স্পর্শ করা নিষিদ্ধ নয়। এ ধরনের অনুবাদ কুরআনের অর্থের বর্ণনা বা তাফসির হিসেবে বিবেচিত হয়, তবে এটি কুরআন নয় এবং এর মধ্যে কুরআনের মু’জিযা বা অলৌকিক ক্ষমতা নেই।”(কাশশাফুল ক্বিনা, ১/৩৪১)

অতএব যদি আরবি ভাষা ব্যতীত অন্য কোনো ভাষায় সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করা হয়, তবে সেটি কুরআন না হওয়ার কারণে তাতে সিজদার বিধান প্রযোজ্য নয়।(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
_______________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।

Share: