একজন নারীর জন্য একই সময়ে একাধিক পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া নাজায়েয কেন

প্রশ্ন: একজন নারীর জন্য একই সময়ে একাধিক পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া নাজায়েয কেন? অথচ একজন পুরুষ একই সময়ে সর্বোচ্চ চারজন স্ত্রী রাখতে পারে।বিস্তারিত জানালে উপকৃত হতাম।
▬▬▬▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬▬▬▬
ভূমিকা: মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে প্রথমে আমাদের একটি বিষয় জানা জরুরি আর তা হচ্ছে মহান আল্লাহ তাআলা “হিকমত” বা প্রজ্ঞার গুণে গুণান্বিত। কেননা আল্লাহর সুন্দর নামগুলোর একটি নাম হলো الحكيم “আল-হাকীম” (বিচারক, নিপুণ ও প্রজ্ঞাবান)। “আল-হাকীম” হচ্ছেন যিনি সবকিছুর অস্তিত্বগত ও আইনগত সিদ্ধান্ত দেন এবং কর্ম ও সৃষ্টির দিক থেকে সবকিছুকে নিপুণভাবে সম্পাদন করেন। ‘হাকীম’ শব্দটা ‘হুকম’ (বিধান দান) এবং ‘হিকমাহ’ (প্রজ্ঞা) শব্দমূল থেকে উদ্ভূত। আল্লাহ তায়ালা একমাত্র বিধানদাতা। তার বিধানসমূহে রয়েছে চূড়ান্ত প্রজ্ঞা, পূর্ণতা ও নিপুনতা। আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিকুলের স্রষ্টা। তিনি জানেন কোন বিধান তাদের জন্য উপযুক্ত; কোন বিধান তাদের জন্য উপযুক্ত নয়। আর আল্লাহ তায়ালা যে বিধানই আরোপ করেন না কেন এর পেছনে রয়েছে সুমহান প্রভূত প্রজ্ঞা। হতে পারে আমরা সে প্রজ্ঞাগুলো জানতে পারব কিংবা আমাদের বিবেক-বুদ্ধি সেগুলোর দিশা পাবে না। আবার হতে পারে আমরা কিছু বিষয় জানতে পারব আর এর অনেকগুলো আমাদের অজানা থেকে যাবে। আর এতে কোন সন্দেহ নাই যে আল্লাহর প্রতিটি বিধান মানুষের কল্যাণের জন্য। তাঁর প্রতিটি বিধানেই রয়েছে সুনিপুণ হেকমত ও সুগভীর প্রজ্ঞা। আর প্রত্যেক মানুষের জন্য তা স্পষ্ট হওয়া জরূরী নয়। এটি এক প্রকার পরীক্ষা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম”।(সূরা মূলক: ৬৭/২)। কোন কোন শারয়ী হুকুমের রহস্য আমরা বুঝতে পারি। আবার কোন কোন শারয়ী হুকুমের রহস্য আমরা বুঝতে পারি না। পুরুষের জন্য একাধিক স্ত্রী গ্রহণ জায়েয হওয়া এবং নারীর জন্য একাধিক স্বামী গ্রহণ নাজায়েয হওয়ার বেশ কিছু কারণ জ্ঞানবান সকলেই জানেন। আল্লাহ তাআলা নারীকে গর্ভ ধারণের জন্য সৃষ্টি করেছেন। পুরুষ গর্ভধারণ করে না। মহান আল্লাহ তাআলা কুরআনে নারীদের সাদৃশ্য দিয়েছেন শস্য খেতের সাথে। আল্লাহ তাআলা বলেন, “তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের শস্যক্ষেত্র সদৃশ। অতএব, তোমরা তোমাদের শস্যখেতে যেভাবে ইচ্ছে গমন করতে পার”।(আল-বাক্বারা: ২/২২৩)
.
একটা উদাহরণ দিচ্ছি: ধরুন কোনো একটি শস্য খেতে চারজন ব্যক্তি একত্রে শস্যের বীচি ছিটিয়ে দিল। তারপর এই বীচি থেকে যখন চারা অঙ্কুরিত হবে তখন তারা কি বলতে পারবে কার বীচি থেকে চারা উৎপন্ন হয়েছে, আর কার বীচি থেকে হয়নি? যাদের মধ্যে বিবেক-বুদ্ধি রয়েছে তারা সবাই এক বাক্যে স্বীকার করবে, না কখনো পারবে না। কেননা চারজন ব্যক্তি একই সাথে একই খেতে কোনরকম সীমানা নির্ধারণ ছাড়া একই সর্ষের বীচি ছিটিয়ে ছিল। মেয়েদের জরায়ু হলো একটা ঝিনুকের ন্যায়, যে ঝিনুক অধীর আগ্রহ নিয়ে বৃষ্টির অপেক্ষার প্রহর গুণতে থাকে। আর যখনই আল্লাহর হুকুমে আকাশ থেকে রহমতের বৃষ্টি পতিত হয়, তখন ঝিনুক এক ফোঁটা পানি নিয়ে গভীর সমুদ্রে ডুব দেয়। এক ফোঁটা পানি থেকে আবিষ্কৃত হয় মণিমুক্তা, যা আমরা বিপুল অর্থ দিয়ে ক্রয় করে নিয়ে এসে আমাদের প্রিয়জনকে উপহার দিই। ঠিক তেমনি নারীর জরায়ুতে উপযুক্ত সময়ে এক ফোঁটা বীর্য পতিত হওয়ার সাথে সাথে ঝিনুকের ন্যায় জরায়ুর মুখ বন্ধ হয়ে যায়। এখন কথা হলো কোনো নারীর সাথে যদি চারজন পুরুষ একত্রে একই দিনে সহবাস করে তাহলে নারী বুঝবে কীভাবে যে কার বীর্য দ্বারা জরায়ুর মুখ বন্ধ হয়েছে এবং সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে? বিশেষ করে ওই চারজন পুরুষ যদি কপট অর্থাৎ প্রতারক প্রকৃতির হয় তাহলে তারা সবাই বলবে এই সন্তান তার বীর্য দিয়ে জন্মগ্রহণ করেনি। অথবা সবাই বলবে আমার বীর্য থেকে সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে। এভাবে একদিকে যেমন সন্তানের পিতৃ পরিচয় জানা যাবে না। অপরদিকে এতে করে বংশধারায় তালগোল লেগে যাবে। পরবর্তীতে এই সন্তানটি কাকে বাবা হিসেবে পরিচয় দিবে? কে তার দেখভাল করবে? কার কাছে সে মাথা গোঁজার স্থান পাবে? এই সন্তান সকলের নিকট অবহেলার পাত্রে পরিণত হবে। সবাই তাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করবে। সমাজের মধ্যে এই সন্তান মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। কারো সামনে বুক টান করে কথা বলতে পারবে না। কেউ তাকে গ্রহণ করবে না। কারণ তার পিতৃপরিচয় নেই; নেই তার বংশের নাম-নিশানা। বংশ পরিচয় যেন পৃথিবী থেকে বিলীন না হয়ে যায় এজন্য ইসলাম নারীদের একাধিক স্বামী রাখার অনুমতি দেয়নি। এছাড়া আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে সাব্যস্ত হয়েছে, এইডসের মত দুরারোগ্য ব্যাধিগুলোর প্রধান কারণ হচ্ছে- কোন নারীর একাধিক পুরুষের সাথে মিলিত হওয়া। নারীর গর্ভাশয়ে বহু রকমের বীর্য একত্রিত হওয়ার ফলে এ ধরনের দুরারোগ্য রোগের কারণ ঘটে। এ কারণেই তো আল্লাহ তাআলা তালাক প্রাপ্ত নারী বা যে নারীর স্বামী মারা গিয়েছে তার উপর ইদ্দত পালন করা ফরজ করেছেন। যাতে করে কিছুকাল এভাবে (সঙ্গমহীন) থাকার মাধ্যমে তার গর্ভাশয় ও এর আশপাশের স্থানগুলো আগের স্বামীর বীর্য ও সঙ্গমের আলামত থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়ে যায়। ফলে ইসলাম নারীদের অনুমতি দিয়েছে যে, স্বামী তাকে ছেড়ে দিলে অন্যত্র বিয়ে বসতে পারবে।
.
পুরুষরা হলো স্বয়ংক্রিয় মেশিনের মতো। যেখানে ইচ্ছে তারা তাদের উৎপাদিত জিনিস ফেলতে পারে কিন্তু নারী তা পারে না। প্রশ্ন আসতে পারে এই ক্ষমতা আল্লাহ তাআলা তাদের অর্থাৎ নারীদের দেননি কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে নিম্নের দুটি আয়াত দেখুন: আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা ওসবের আকাঙ্ক্ষা করো না যার দ্বারা আল্লাহ তোমাদের কাউকে অন্যের উপর প্রাধান্য দান করেছেন। পুরুষরা যা উপার্জন করেছে তাতে তাদের অংশ রয়েছে এবং নারীরা যা উপার্জন করেছে তাতে তাদের অংশ আছে এবং তোমরা আল্লাহরই নিকট তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী।’ (আন-নিসা; ৪/৩২)। একই সূরাতে একটি আয়াত পরে মহান আল্লাহ বলেন,‘পুরুষগণ নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল, যেহেতু আল্লাহ তাদের মধ্যে একের উপর অপরকে প্রাধান্য দান করেছেন এজন্য যে, তারা স্বীয় ধনসম্পদ হতে ব্যয় করে থাকে।’ (আন–নিসা; ৪/৩৪)। আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন, আর তাদের উপর (স্ত্রীদের) রয়েছে পুরুষের প্রাধান্য।’ (আল-বাক্বারা; ২/২২৮)। আল্লাহ তাআলা মানুষ সৃষ্টি করেছেন। আর তিনি বুঝেন মানুষের চাহিদা বা প্রয়োজনের কথা। একটা নারী প্রতি মাসে ৭/৮ দিন অসুস্থ থাকে। অসুস্থ থাকাবস্থায় স্বামী তার মনোবাসনা পূরণ করতে পারে না। কারণ আল্লাহ তায়ালা নিষেধ কর বলেছেন, ঋতুস্রাবাস্থায় নারীদের থেকে দূরে থাকো। পবিত্র হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না। পবিত্র হলে আল্লাহ যেভাবে আদেশ করেছেন সেভাবে আসো (সহবাস করো)।’ (আল-বাক্বারা: ২/২২২)
.
এখন কথা হলো স্ত্রীর অসুস্থাবস্থায় যদি স্বামীর কামবাসনা জাগ্রত হয় তাহলে স্বামী কী করবে? যেনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হবে না-কি বৈধ পন্থায় দ্বিতীয় বিয়ে করে মনোবাসনা পূরণ করবে? একটি মহিলার উদরে সন্তান চলে আসলে একটা সময় তার সাথে আর সহবাস করা যায় না। এই অবস্থা চলতে থাকে সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত। সন্তান প্রসব করার পর আরও ৪০ দিন স্বামীকে অপেক্ষা করতে হয়। আল্লাহ তাআলা এজন্য চারটি পর্যন্ত বিয়ে বৈধ করেছেন যেন তাঁর বান্দারা অবৈধ কর্মে লিপ্ত না হয়। ইসলাম মানুষের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখেছে। মানুষের অন্তর্নিহিত কথা মহান আল্লাহ বুঝেন। আর এজন্যই তার প্রণীত প্রত্যেকটি বিধি-বিধান মানুষের জন্য কল্যাণকর ও হৃদয়ঙ্গম। কিন্তু আমরা মানুষরা আমাদের অপ্রতুল জ্ঞান দিয়ে তা অনুধাবন করতে পারি না। পারলেও নিজ স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় বিধায় কখনো কখনো মানতে নারাজ হই। প্রশ্নবিদ্ধ করি ইসলামকে। সমালোচনার তীক্ষ্ম তীর ছুড়ি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এর দিকে। অনেক বিষয় আছে যা আমাদের চর্মচোখে চিত্তাকর্ষক মনে হয় অথচ আল্লাহর নিকট তা বিদঘুটে। আল্লাহর তাআলা এরশাদ করেছেন, তোমরা অনেক বিষয় অপছন্দ মনে কর অথচ এতে রয়েছে প্রভূত কল্যাণ। আবার অনেক বিষয় পছন্দ করো, অথচ এতে রয়েছে ক্ষতি।’ (আল-বাক্বারা: ২/২১৬)। বর্তমানে তরুণীদের স্বচ্ছ নির্মল হৃদয়ে বিষবাষ্প ঢুকিয়ে দিচ্ছে কিছু ইসলাম বিদ্বেষী মহল। নারী স্বাধীনতার নামে তাদের পশ্চিমাদের অনুসরণে রাস্তায় নামাচ্ছে। নিরাপদ দুর্গ থেকে নিয়ে যাচ্ছে উন্মুক্ত মাঠে-প্রান্তরে। অযাচিত অনর্থক প্রশ্ন উত্থাপন করে নারীদের মগজ ধোলাই করে দিচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নারী ভোগ করা। নারীদের বেহায়া বেলেল্লাপনার দিকে ঠেলে দেওয়া। সুকৌশলে শ্লীলতাহানি করছে। নারীরা আজ শ্লোগান দিচ্ছে ‘আমার দেহ, আমার মন, যাকে ইচ্ছা তাকে দেব’। অথচ তার এই দেহটা হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে আমানত। একমাত্র এটা ভোগ করবে তার স্বামী। এই বিপথগামী নারীদের কে বুঝাবে? কে তাদের ফিরিয়ে আনবে প্রখর রোদ থেকে ছায়াতলে? যত দিন যাচ্ছে তত বিপথগামী হচ্ছে নারীরা। এখন নারীরা হরহামেশা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে, ইতোপূর্বে যার সংখ্যা ছিল একেবারেই নগণ্য।(কিছু নোট আল ইতিসাম পত্রিকা থেকে নেয়া)।
.
শায়খ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) কে প্রশ্ন করা হয়েছিল একজন নারীর জন্য একই সময়ে তিন বা চারজন পুরুষকে বিয়ে করা নাজায়েয কেন? অথচ একজন পুরুষ তিন বা চারজন নারীকে বিয়ে করতে পারে। জবাবে শাইখ বলেন,

هذا مربوط أولا بالإيمان بالله سبحانه ، فجميع الديانات متفقة على أنه لا يجوز للمرأة أن يطأها غير زوجها ومن هذه الديانات ما هو سماوي بلا شك كالإسلام وأصل اليهودية والنصرانية . فالإيمان بالله يقتضي التسليم لأحكامه وشرعه ، فهو سبحانه الحكيم العليم بما يصلح البشر ، فقد ندرك الحكمة من الحكم الشرعي وقد لا ندركها .وبالنسبة لمشروعية التعدد للرجل ومنعه في حق المرأة هناك أمور لا تخفى على كل ذي عقل ، فالله سبحانه جعل المرأة هي الوعاء ، والرجل ليس كذلك ، فلو حملت المرأة بجنين ( وقد وطئها عدة رجال في وقت واحد ) لما عرف أبوه ، واختلطت أنساب الناس ولتهدمت البيوت وتشرد الأطفال ، ولأصبحت المرأة مثقلة بالذرية الذين لا تستطيع القيام بتربيتهم والنفقة عليهم ولربما اضطرت النساء إلى تعقيم أنفسهن ، وهذا يؤدي إلى انقراض الجنس البشري . ثم إن الثابت الآن – طبيا – أن الأمراض الخطيرة التي انتشرت كالإيدز وغيره من أهم أسبابها كون المرأة يطأها أكثر من رجل ، فاختلاط السوائل المنوية في رحم المرأة يسبب هذه الأمراض الفتاكة ، ولذلك شرع الله العدّة للمرأة المطلقة أو المتوفى عنها زوجها حتى تمكث مدة لتطهير رحمها ومسالكها من آثار الزوج السابق وللطمث الذي يعتريها دور أيضا في هذه العملية . ولعل في هذا إشارة تغني عن إطالة العبارة فإن كان المقصود من السؤال البحث العلمي لمرحلة جامعية أو غيرها فعلى السائل الرجوع إلى الكتب التي ألفت حول موضوع تعدد الزوجات والحكمة منه ، والله الموفق

প্রথমতঃ এ বিষয়টি আল্লাহর প্রতি ঈমানের সাথে সম্পৃক্ত। পৃথিবীর সকল ধর্মমতেশকোন নারীর জন্য স্বামী ছাড়া অন্য কারো সাথে যৌন মিলনে লিপ্ত হওয়া জায়েয নেই। এই ধর্মগুলোর মধ্যে কোন কোনটি আসমানী ধর্ম। যেমন: ইসলাম ধর্ম, অবিকৃত ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্ম। আল্লাহর প্রতি ঈমানের দাবী হচ্ছে তাঁর বিধিবিধান ও শরিয়তকে মেনে নেওয়া। কারণ আল্লাহ তাআলা ভাল জানেন কোনটি মানুষের জন্য কল্যাণকর। কোন কোন শরয়ি হুকুমের রহস্য আমরা বুঝতে পারি। আবার কোন কোন শরয়ি হুকুমের রহস্য আমরা বুঝতে পারি না। পুরুষের জন্য একাধিক স্ত্রী গ্রহণ জায়েয হওয়া এবং নারীর জন্য একাধিক স্বামী গ্রহণ নাজায়েয হওয়ার বেশ কিছু কারণ জ্ঞানবান সকলেই জানেন। আল্লাহ তাআলা নারীকে গর্ভ ধারণের জন্য সৃষ্টি করেছেন। পুরুষ গর্ভধারণ করে না। সুতরাং কোন নারী যদি (একাধিক পুরুষের সহবাসের পর) গর্ভধারণ করে তাহলে সন্তানের পিতৃ পরিচয় জানা যাবে না। এতে করে বংশধারায় তালগোল লেগে যাবে, পরিবারগুলো ভেঙ্গে পড়বে, শিশুরা বাস্তুহারা হয়ে পড়বে এবং নারী তার সন্তানাদি লালনপালন ও ভরণপোষণের ভার বইতে না পেরে ভেঙ্গে পড়বে। এভাবে এক পর্যায়ে নারীরা স্থায়ী বন্ধ্যাত্বও গ্রহণ করতে পারে। যার ফলে মানব বংশ বিলীন হয়ে যাবে। এছাড়া আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে সাব্যস্ত হয়েছে, এইডসের মত দুরারোগ্য ব্যাধিগুলোর প্রধান কারণ হচ্ছে কোন নারীর একাধিক পুরুষের সাথে মিলিত হওয়া। নারীর গর্ভাশয়ে বহু রকমের বীর্য একত্রিত হওয়ার ফলে এ ধরনের দুরারোগ্য রোগের কারণ ঘটে। এ কারণেই তো আল্লাহ তাআলা তালাক প্রাপ্ত নারী বা যে নারীর স্বামী মারা গিয়েছে তার উপর ইদ্দত পালন করা ফরজ করেছেন। যাতে করে কিছুকাল এভাবে (সঙ্গমহীন) থাকার মাধ্যমে তার গর্ভাশয় ও এর আশপাশের স্থানগুলো আগের স্বামীর বীর্য ও সঙ্গমের আলামত থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়ে যায়। আশা করছি আলোচনা লম্বা না করে এতটুকু ইশারাই যথেষ্ট। আর যদি প্রশ্নের উদ্দেশ্য হয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় বা তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কোন গবেষণা তাহলে প্রশ্নকর্তার উচিত একাধিক স্ত্রী গ্রহণ ও এর রহস্য বিষয়ে রচিত গ্রন্থগুলো অধ্যয়ন করা। আল্লাহই তাওফিক দাতা।(ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১০০০৯)
.
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে তার দ্বীনের
সঠিক জ্ঞান অর্জনের তৌফিক দান করুন। আমীন। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_______________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।

Share: