সালাত কবুল হওয়ার জন্য যেমন বিশুদ্ধ ঈমান এবং হৃদয়কে শিরক, কুফরী ধারণা ও বিশ্বাস থেকে পবিত্র রাখা জরুরী শর্ত ঠিক তেমনি সালাত আদায়কারীর বাহ্যিক দেহ ও পোশাক-আশাককে পবিত্র রাখাও জরুরী শর্ত। যেহেতু সালাতের চাবিকাঠিই হল পবিত্রতা।(আবু দাঊদ হা/ ৬১৮, তিরমিযী হা/ ৩, মিশকাত ৩১২) সুতরাং কেউ যদি ইচ্ছাকৃত কিংবা ভুলবশত ওযু ছাড়া সালাত আদায় করে তাহলে পুনরায় ওযু করে সেই ওয়াক্তের সালাতটি আদায় করা তার উপর ওয়াজিব। আর আলেমগণ এ অভিমতের উপর ইজমা (ঐক্যমত) করেছেন। কারণ পবিত্রতা হচ্ছে সালাত শুদ্ধ হওয়ার শর্ত। এর দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী:(لا يَقْبَلُ اللَّهُ صَلاةَ أَحَدِكُمْ إِذَا أَحْدَثَ حَتَّى يَتَوَضَّأَ ) “তোমাদের কারো যদি ওযু ভেঙ্গে যায় তাহলে ওযু করার আগ পর্যন্ত আল্লাহ্ তার সালাত কবুল করেন না।”(সহিহ বুখারী হা/৬৯৫৪) ও সহিহ মুসলিম হা/২২৫)। অপর বর্ননায় আব্দুল্লাহ্ বিন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন: ( لا تُقْبَلُ صَلاةٌ بِغَيْرِ طُهُورٍ ) “পবিত্রতা ছাড়া কোন সালাত কবুল করা হয় না।”(সহিহ মুসলিম হা/২২৪)
.
শাফি‘ঈ মাযহাবের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, ইমাম মুহিউদ্দীন বিন শারফ আন-নববী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬৭৬ হি.] বলেছেন:
أَجْمَعَ الْمُسْلِمُونَ عَلَى تَحْرِيمِ الصَّلاةِ عَلَى الْمُحْدِثِ ، وَأَجْمَعُوا عَلَى أَنَّهَا لا تَصِحُّ مِنْهُ سَوَاءٌ إنْ كَانَ عَالِمًا بِحَدَثِهِ أَوْ جَاهِلا أَوْ نَاسِيًا لَكِنَّهُ إنْ صَلَّى جَاهِلا أَوْ نَاسِيًا فَلا إثْمَ عَلَيْهِ وَإِنْ كَانَ عَالِمًا بِالْحَدَثِ وَتَحْرِيمِ الصَّلاةِ مَعَ الْحَدَثِ فَقَدْ ارْتَكَبَ مَعْصِيَةً عَظِيمَةً اهـ
“ওযু নাই এমন ব্যক্তির জন্য সালাত পড়া হারাম মর্মে আলেমগণ ইজমা (মতৈক্য) করেছেন। তারা এ মর্মেও ইজমা করেছেন যে, এমন ব্যক্তির সালাত শুদ্ধ হবে না; চাই সে তার ওযু না থাকা সম্পর্কে অবগত থাকুক কিংবা অজ্ঞ হোক কিংবা ভুলে গিয়ে থাকুক। তবে সে যদি অজ্ঞ হয় কিংবা ভুলে গিয়ে থাকে তাহলে তার কোন গুনাহ হবে না। আর যদি তার ওযু না থাকার বিষয়টি এবং ওযু ছাড়া সালাত পড়া হারাম হওয়ার বিষয়টি জেনেও তা করে তাহলে সে জঘন্য গুনাহে লিপ্ত হল।”(নববী ‘আল-মাজমু’ খন্ড: ২, পৃষ্ঠা: ৭৯) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_____________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।