প্রশ্ন: অনুমতি ছাড়া নিজের কিংবা অন্যের ঘরে প্রবেশ করা কি জায়েয? এবিষয়ে কুরআন-সুন্নাহ কি বলে?
▬▬▬▬▬▬▬▬✿▬▬▬▬▬▬▬▬
প্রথমত: পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’র প্রতি। অতঃপর কারো গৃহে প্রবেশের পূর্বে অনুমতি নেয়ার বিধান আলোকপাত করে মহান আল্লাহ বলেন:يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّى تَسْتَأْنِسُوا وَتُسَلِّمُوا عَلَى أَهْلِهَا ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরিচিত না হয়ে এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম না দিয়ে নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য ঘরে প্রবেশ করো না। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম। আশা করা যায় তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে।”(সূরা নূর: ২৭)
.
উক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ মুমিনদেরকে বিনা অনুমতিতে নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারো ঘরে প্রবেশে নিষেধ করেছেন।আর অনুমতি নেয়ার এই বিধান প্রতিটি ঈমানদার নারী, পুরুষ, মাহরাম ও গায়র-মাহরাম সবাই শামিল রয়েছে। অনুমতি গ্রহণের ক্ষেত্রে সুন্নাহ হলো প্রবেশের আগেই সালাম প্রদান করে অনুমতি গ্রহণ করা।মোটকথা আয়াতটির গূঢ়ার্থ হচ্ছে—অনুমতি ছাড়াই কোন ব্যক্তির নিজের ঘরে প্রবেশ করার অধিকার রয়েছে।আয়াতটির তাফসীরে ইবনে জুযাই বলেন:” هذه الآية أمر بالاستئذان في غير بيت الداخل ، فيعم بذلك بيوت الأقارب وغيرهم“উক্ত আয়াতে প্রবেশকারীকে নিজের ঘর ছাড়া অন্য ঘরে প্রবেশে অনুমতি চাওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এ নির্দেশ আত্মীয়-স্বজনদের ঘর ও অন্য মানুষদের ঘরকেও অন্তর্ভুক্ত করবে।”(আত-তাসহীল: পৃষ্ঠা: ১২৩০)
.
তবে জেনে রাখা ভাল যে এখানে অনুমতি ছাড়া প্রবেশের বিষয়টি এ শর্তযুক্ত হবে, যদি ঘরে স্ত্রী বা দাসী ছাড়া অন্য কেউ না থাকে। কারণ স্বামী অথবা দাসীর মনিবের জন্য তার সকল কিছুতে দৃষ্টি প্রদান করা বৈধ; যদি সে বিবস্ত্রও থাকে। আর অনুমতি চাওয়ার বিধান আরোপ করা হয়েছে নজরকে রক্ষা করার জন্য; যাতে করে অপছন্দনীয় কোনো কিছুতে দৃষ্টি না পড়ে অথবা কারো লজ্জাস্থানে নজর না পড়ে যা দেখা জায়েয নেই। যেমন ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেন: সাহল ইবনে সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: (إِنَّمَا جُعِلَ الِاسْتِئْذَانُ مِنْ أَجْلِ الْبَصَرِ )“অনুমতি চাওয়ার বিধান জারী করা হয়েছে চোখের জন্য।”(সহীহ বুখারী হা/৬২৪১;ও মুসলিম হা/২১৫৬)
.
হাদীসটির ব্যাখ্যায় হাফেয ইবনে হাজার (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: ” وَاسْتُدِلَّ بِهِ عَلَى أَنَّ الْمَرْء لَا يَحْتَاج فِي دُخُول مَنْزِله إِلَى الِاسْتِئْذَان لِفَقْدِ الْعِلَّة الَّتِي شُرِعَ لِأَجْلِهَا الِاسْتِئْذَان . نَعَمْ لَوْ اِحْتَمَلَ أَنْ يَتَجَدَّد فِيهِ مَا يَحْتَاج مَعَهُ إِلَيْهِ شُرِعَ لَهُ “এর দ্বারা দলীল প্রদান করা হয়েছে যে, ব্যক্তি নিজ ঘরে প্রবেশের ক্ষেত্রে অনুমতির প্রয়োজন নেই। কেননা অনুমতির বিধান যে কারণে প্রণয়ন করা হয়েছে সেটি এখানে অনুপস্থিত। হ্যাঁ, যদি এমন নতুন কিছু ঘটে যার সাথে অনুমতি চাওয়ার বিষয়টি প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে তাহলে অনুমতি প্রার্থনার বিধান প্রযোজ্য হবে।”[ফাতহুল বারী ইবনে হাজার রহ., খন্ড: ১১ পৃষ্ঠা: ২৫]
[ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১৪৭৬৫২)]
.
কারো ঘরে প্রবেশের পূর্বে সর্বপ্রথম সালাম প্রদান করা তারপর নিজের পরিচয় দিয়ে অনুমতি চাইতে হবে মর্মে হাদীস থেকে দলিল হচ্ছে: রিব’ঈ ইবনে হিরাশ বর্ণনা করেন: ‘বনু আমেরের এক লোক আমাকে হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, সে একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট (প্রবেশ) অনুমতি চাইল। তখন তিনি এক বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন। সে এভাবে নিবেদন করল: ‘আমি কি প্রবেশ করব?’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর খাদেমকে বললেন: ‘বাইরে গিয়ে এই লোকটিকে অনুমতি গ্রহণের পদ্ধতি শিখিয়ে দাও এবং তাকে বলো: “তুমি বলো: “আসসালামু আলাইকুম, আমি কি প্রবেশ করব?” লোকটি এ কথা শুনতে পেয়ে বলল: ‘আসসালামু আলাইকুম, আমি কি প্রবেশ করব?’ তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি দিলেন এবং সে প্রবেশ করল”।(আবু দাউদ হা/৫১৭৭) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং শাইখ আলবানী সহীহু আবী দাউদে এটিকে সহিহ বলেছেন] আযীমাবাদী ‘আউনুল মাবূদ’ গ্রন্থে বলেন: فِيهِ أَنَّ السُّنَّة أَنْ يَجْمَع بَيْن السَّلَام وَالِاسْتِئْذَان وَأَنْ يُقَدِّم السَّلَام‘উক্ত হাদীস থেকে প্রাপ্ত অন্যতম শিক্ষা: একসাথে সালাম দিয়ে অনুমতি চাওয়া। আর সালামকে অনুমতি চাওয়ার আগে উল্লেখ করা সুন্নাহ।’ অপর এক বর্ননায় রাসূল (ﷺ) ব্যক্তিকে নিজের পরিচয় স্পষ্টভাবে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ বলেন, আমি আমার বাবার ঋণের ব্যাপারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গেলাম এবং দরজায় করাঘাত করলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কে? আমি বললাম, আমি। তিনি দু-তিনবার বললেন, “আমি? আমি?” অর্থাৎ এখানে আমি বললে কে কি বুঝবে যে, তুমি কে? (সহীহ বুখারী/৬২৫০, সহীহ মুসলিম হা/২১৫৫, আবু দাউদ হা/৫১৮৭) এতে বুঝা গেল যে, অনুমতি চাওয়ার সঠিক পদ্ধতি ছিল, মানুষ নিজের নাম বলে অনুমতি চাইবে। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু অনুমতি নেয়ার ক্ষেত্রে বলতেনঃ “আসসালামু আলাইকুম, হে আল্লাহর রসূল! উমর কি ভেতরে যাবে?”(আবু দাউদ হা/ ৫২০১)
.
পাশাপাশি কারো ঘরে প্রবেশের অনুমতি নেওয়ার সময় রাসূল (ﷺ) বড় জোর তিনবার ডাক দেবার সীমা নির্দেশ করেছেন এবং বলেছেন যদি তিনবার ডাক দেবার পরও জবাব না পাওয়া যায় তাহলে ফিরে যাও। আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু একবার উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে আসলেন এবং তিনবার সালাম দিলেন। কিন্তু উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু কোন উত্তর না করায় তিনি ফিরে চললেন। তখন লোকেরা বললঃ আবু মূসা ফিরে যাচ্ছে। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেনঃ তাকে ফিরিয়ে আন, তাকে ফিরিয়ে আন। ফিরে আসার পর উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি ফিরে যাচ্ছিলে কেন? আমরা কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আবু মূসা বললেনঃ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, “অনুমতি তিন বার, যদি তাতে অনুমতি দেয় ভাল, নতুবা ফিরে যাও।(সহীহ বুখারী হা/৬২৪৫, মুসলিম হা/২১৫৪) এমনকি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও এ পদ্ধতি অনুসরণ করতেন। একবার তিনি সা’দ ইবনে উবাদার বাড়ীতে গেলেন এবং আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ বলে দু’বার অনুমতি চাইলেন। কিন্তু ভেতর থেকে জবাব এলো না। তৃতীয় বার জবাব না পেয়ে ফিরে গেলেন। সা’দ ভেতর থেকে দৌড়ে এলেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনার আওয়াজ শুনছিলাম। কিন্তু আমার মন চাচ্ছিল আপনার মুবারক কণ্ঠ থেকে আমার জন্য যতবার সালাম ও রহমতের দোআ বের হয় ততই ভালো, তাই আমি খুব নীচু স্বরে জবাব দিচ্ছিলাম।(আবু দাউদ হা/ ৫১৮৫,আহমাদ হা/ ৩/১৩৭)
.
দ্বিতীয়ত: শুধু অন্যের ঘরে নয় বরং ইসলামি শিষ্টাচার ও উত্তম দাম্পত্যের পরিচায়ক হলো ব্যক্তি নিজ স্ত্রীর কাছেও অনুমতি চাইবে; যাতে তাকে অপরিচ্ছন্ন কিংবা কাজের পোশাকে অথবা এমন অবস্থায় না দেখে ফেলে যে অবস্থায় তাকে দেখতে সে অপছন্দ করে। তাই একাধিক সালাফ ব্যক্তির জন্য তার নিজ ঘরে অবস্থানরত পরিবারের সদস্যদের কাছে অনুমতি চাওয়া মুস্তাহাব বলেছেন। ইবনে জুরাইজ বলেন: আমি আত্বাকে জিজ্ঞাসা করলাম: ব্যক্তি কি তার স্ত্রীর কাছে অনুমতি চাইবে? তিনি বললেন: না।
.
ইমাম ইবনে কাসীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:
” وهذا محمول على عدم الوجوب ، وإلا فالأولى أن يعلمها بدخوله ولا يفاجئها به ، لاحتمال أن تكون على هيئة لا تحب أن يراها عليها.فعن زينب امرأة ابن مسعود رضي الله عنها قالت : ” كان عبد الله إذا جاء من حاجة فانتهى إلى الباب تنحنح وبزق ؛ كراهية أن يهجُم منا على أمر يكرهه ” إسناد صحيح .وعن الإمام أحمد رحمه الله أنه قال : ” إذا دخل الرجل بيته ، استحب له أن يتنحنح ، أو يحرك نعليه ” .ولهذا جاء في الصحيح عن رسول الله صلى الله عليه وسلم : أنه نَهَى أن يطرق الرجل أهلَه طُروقًا – وفي رواية : ليلا – يَتَخوَّنهم ” .
“এই বক্তব্য দ্বারা ওয়াজিব না হওয়ার বিষয়টি বোঝানো হয়েছে। নতুবা স্বামীর জন্য উত্তম হলো তার ঘরে প্রবেশের বিষয়টি স্ত্রীকে জানান দেয়া; স্ত্রীকে চমকে না দেয়া। কারণ স্ত্রী এমন অবস্থায় থাকতে পারে যে অবস্থায় স্বামী তাকে দেখুক এটা সে চায় না। ইবনে মাসউদের স্ত্রী যাইনাব রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন: ‘আব্দুল্লাহ যখন প্রয়োজনীয় কাজ সেরে দরজার সামনে আসতেন, তখন গলা খাঁকারি দিতেন এবং থুতু ফেলতেন; যাতে করে ঘরে ঢুকে আমাদেরকে এমন অবস্থায় না পান যেটি তিনি অপছন্দ করেন।’ ইমাম আহমদ রাহিমাহুল্লাহ বলেন: ‘ব্যক্তি যখন তার ঘরে প্রবেশ করবে, তখন তার জন্য গলা খাঁকারি দেওয়া অথবা জুতা নড়াচড়া (শব্দ করা) করা মুস্তাহাব। এ কারণে সহীহ হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যক্তিকে রাতের বেলা অতর্কিত ঘরে ফিরতে নিষেধ করেছেন।” অন্য বর্ণনায়: “যাতে করে স্ত্রীর দোষ-ত্রুটি অন্বেষণ না করা হয়।”(তাফসীরু ইবনে কাসীর; খণ্ড: ৬; পৃষ্ঠা: ৩৯-৪০)
.
তৃতীয়ত: যদি তার ঘরে স্ত্রী ছাড়া অন্য কোন মাহরাম নারী থাকে যেমন তার মা অথবা মেয়ে অথবা বোন তাহলে বিশুদ্ধ মত অনুসারে তাকে ঘরে প্রবেশের আগে অনুমতি নিতে হবে। হাফেয ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “উক্ত হাদীস থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা হলো: প্রত্যেকের কাছে অনুমতি নেওয়া বৈধ। এমনকি মাহরামদের কাছেও; যাতে করে তাদের কেউ লজ্জাস্থান উন্মুক্ত অবস্থায় না থাকে। বুখারী আল-‘আদাবুল মুফরাদ’ গ্রন্থে [আলবানী হাদীসটি বিশুদ্ধ বলেছেন (৮১২)] নাফে থেকে বর্ণনা করেন: ইবনে উমরের কোনো ছেলে প্রাপ্তবয়স্ক হলে তার কাছে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করত না। অনুরূপভাবে আলক্বামা [আলবানী হাদীসটি বিশুদ্ধ বলেছেন ৮১৩) বলেন: এক ব্যক্তি ইবনে মাসউদের কাছে এসে বললেন: আমি কি আমার মায়ের কাছে প্রবেশে অনুমতি নিব? তিনি বললেন: ‘তুমি সকল অবস্থায় তাকে দেখা পছন্দ করবে না।’ মুসলিম ইবনে নুযাইর থেকে বর্ণিত আলবানী এর সনদকে হাসান বলেছেন হা/৮১৪) তিনি বলেন: এক ব্যক্তি হুযাইফাকে জিজ্ঞাসা করলেন: আমি কি মায়ের কাছে অনুমতি নিব? তিনি বললেন: তুমি যদি অনুমতি না নাও, তাহলে অপছন্দনীয় কিছু দেখে পেলতে পার। মুসা ইবনে তালহা [আলবানী এর সনদকে বিশুদ্ধ বলেছেন (৮১৫)] বলেন: আমি আমার বাবার সাথে মায়ের কাছে প্রবেশ করছিলাম। তিনি প্রবেশ করলেন এবং আমি তাকে অনুসরণ করছিলাম। তখন তিনি আমার বুকে ধাক্কা দিয়ে বললেন: ‘তুমি কি অনুমতি ছাড়া ঢুকে যাচ্ছ?’ আত্বা থেকে বর্ণিত, তিনি ইবনে আব্বাসকে জিজ্ঞেস করলেন: আমি কি আমার বোনের কাছে প্রবেশে অনুমতি নিব? তিনি বললেন: হ্যাঁ। আমি বললাম: সে তো আমার ঘরেই থাকে। ইবনে আব্বাস বললেন: “তুমি কি তাকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে চাও?”
.
শাইখ মুহাম্মাদ আল-আমীন আশ-শাঙ্কীত্বী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:” اعلم أن الأظهر الذي لا ينبغي العدول عنه أن الرجل يلزمه أن يستأذن على أمه وأخته وبنيه وبناته البالغين، لأنه إن دخل على من ذكر بغير استئذان فقد تقع عينه على عورات من ذكر، وذلك لا يحل له ..“জেনে রাখুন যে স্পষ্ট বিষয়টি থেকে সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই সেটি হলো ব্যক্তির জন্য তার মা, বোন এবং প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়েদের কাছে প্রবেশের অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। কারণ ব্যক্তি যদি উল্লিখিত কারো ঘরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে তাহলে তাদের কারো লজ্জাস্থানে তার চোখ পড়ে যেতে পারে। আর এটি তার জন্য হালাল নয়।” শাইখ আল-আমীন রাহিমাহুল্লাহ ইতঃপূর্বে হাফেয ইবনে হাজার থেকে যা উল্লেখ করা হয়েছে সেটুকু উদ্ধৃত করে বলেন:” وهذه الآثار عن هؤلاء الصحابة تؤيد ما ذكرنا من الاستئذان على من ذكرنا ، ويفهم من الحديث الصحيح : ( إنما جعل الاستئذان من أجل البصر ) ؛ فوقوع البصر على عورات من ذُكِر : لا يحل ، كما ترى .. ” ، ثم نقل ـ أيضا ـ عن ابن كثير ما يؤيد ما ذكره ، وسبق نقل بعضه . انظر : ”‘এই সমস্ত সাহাবীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত এই বর্ণনাগুলো আমাদের উল্লিখিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে অনুমতি চাওয়ার বিষয়কে জোরদার করে। ‘অনুমতি প্রার্থনার বিষয়টি আবশ্যক করা হয়েছে দৃষ্টির কারণে’ উক্ত সহীহ হাদীস থেকে এমনটা বোঝা যায়। যেহেতু উল্লিখিত ব্যক্তিদের লজ্জাস্থানে দৃষ্টি পড়া হালাল নয়। যেমনটা আপনি দেখতে পাচ্ছেন। এরপর তিনি তার বক্তব্যের সমর্থনে ইবনে কাসীরের বক্তব্যও তুলে ধরেন যার কিছু অংশ ইতঃপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।[দেখুন: আদওয়াউল বায়ান: ৫/৫০০-৫০২) আরো বিস্তারিত জানতে দেখুন; ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১৪৭৬৫২)
(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
_____________________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।