Site icon Tawheed Media

রাশিফল গননা করা বা আগ্রহ ভরে তা পড়া বা জানার চেষ্টা করা বা বিশ্বাস করা কি জায়েজ আছে?

প্রশ্নঃ রাশিফল গননা করা বা আগ্রহ ভরে তা পড়া বা জানার চেষ্টা করা বা বিশ্বাস করা কি জায়েজ আছে?
———————
বেশীরভাগ পত্রিকাতে একটা জিনিস থাকেই – রাশিফল। কারণ এর চাহিদা আছে। পাঠকরা রোজ সকালে নিষ্ঠার সাথে রাশিফল পড়েন, বিশ্বাস করেন এবং সারাদিন সে অনুযায়ী আমল করেন! অনেকে বলেন, ‘এগুলো তো এমনিতেই পড়ি, বিশ্বাস করি না!’ আমাদের ধর্মে শুধু জ্যোতিষীশাস্ত্র বিশ্বাস করাই নয়, জ্যোতিষীর কাছে যাওয়া, রাশিফল পড়া – সব হারাম।

রাসুল (সা) বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তি কোনও জ্যোতিষীর কাছে গেলো ও তাকে কিছু জিজ্ঞেস করলো (ভবিষ্যৎ জানতে চাইলো) চল্লিশ দিন ও রাতের জন্য তার সালাত কবুল হবে না।’ [সাহিহ মুসলিম, ভলিউম ৪. পৃষ্ঠা ১২১১. নং ৫৪৪০]

এই হাদিসে কিন্তু নবীজি শুধু জ্যোতিষীর কাছে যাওয়ার শাস্তিই কতো কঠিন বলেছেন, তা সে বিশ্বাস করুক আর নাই করুক। আর যে বিশ্বাস করলো বা তার মনে ক্ষীণ পরিমাণও সন্দেহ উদ্রেক হল যে ‘হতেও তো পারে’, সে সরাসরি শিরকে পতিত হবে।
কারণ আল্লাহ বলেছেনঃ ‘তাঁর (আল্লাহর) কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এ গুলো তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা আছে, তিনিই জানেন। কোন পাতা ঝরে না; কিন্তু তিনি তা জানেন। কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র ও শুস্ক দ্রব্য পতিত হয় না; কিন্তু তা সব প্রকাশ্য গ্রন্থে রয়েছে।’ [আল কোরআন ৬:৫৯]

এবং ‘বলুন, আল্লাহ ব্যতীত নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে কেউ গায়বের খবর জানে না এবং তারা জানে না যে, তারা কখন পুনরুজ্জীবিত হবে।’ [আল কোরআন ২৭:৬৫]

যেখানে আল্লাহ বলেছেন সকল গায়েব ও অজানার সন্ধান শুধু আল্লাহর কাছেই, সেখানে জ্যোতিষীর কাছে ভবিষ্যতের সন্ধান আছে ভাবলে তাকে কি আল্লাহর শরীক করে ফেলা হয় না? নাউজুবিল্লাহ। জ্যোতিষীশাস্ত্র মানা ও রাশিতে বিশ্বাস রাখা সরাসরি ইসলামের আক্কিদার বিপরীত। যার ঈমান দুর্বল সেই শুধু এইসব পথ খোঁজে।

শুধু পত্রিকার রাশিফল নয়, একইভাবে ফেসবুকের বিভিন্ন এপ্লিকেইশন, যেমন – Marriage Prediction, Death Prediction, What will be your future career – এগুলো খেলা থেকে বিরত থাকা দরকার। কারণ যতই অস্বীকার করি, এই application গুলো ‘just fun’ এর নামে আমাদের অবচেতন মনে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলে, ঈমান দুর্বল করে দেয়।

প্রকৃত ঈমানদার ব্যক্তির অবশ্যই রাশিফল পড়া বা শোনা, হাত দেখানো, আংটি ধারণ – ইত্যাদি কুফরি কাজ থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন।
“অনেক মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে”।
[সুরা ইউসুফ : আয়াত ১০৬]

Exit mobile version