Site icon Tawheed Media

বিভিন্ন যানবাহনে নামায

মহানবী (সাঃ) সওয়ারীর উপর ফরয নামায পড়তেন না। ফরয নামাযের সময় হলে তিনি উট থেকে নেমে মাটিতে দাঁড়াতেন।
সুতরাং সফরে (মোটর গাড়ি, গরুর গাড়ি, উট,হাতি, ঘোড়া প্রভৃতি) যানবাহনে নামাযের সময় হলে যানবাহন থামিয়ে নামায পড়তে হবে। কিন্তু যে যানবাহনে থামার বা নামার সুযোগ নেই, অথচ সেখানে যথানিয়মে পূর্ণরুপে নামায আদায় সম্ভব, সে যানবাহনে যথা সময়ে নামায পড়তে হবে। পরন্তু সেখানে যদি যথানিয়মে পূর্ণরুপে নামায আদায় করার সুযোগ না থাকে, তাহলে গন্তব্যস্থল পৌঁছনোর আগেই নামাযের সময় অতিবাহিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে সে যানবাহনের উপরেই যথাসময়ে নামায পড়ে নেওয়া জরুরী।
(আহ্কামুল ইমামাতি অল-ই’তিমামি ফিস সালাত, আব্দুল মুহ্সিন আল-মুনীফ ৪০১নং)
অতএব প্লেন, ট্রেন, বাস প্রভৃতি যানবাহনের ভিতরে জামাআত সহকারে নামায সম্ভব হলে জামাআত সহকারেই পড়তে হবে। [1]
নচেৎ একাকী নিজ নিজ সিটে বসে সময় পার হওয়ার আগে আগেই নামায পড়ে নিতে হবে। না পড়লে এবং পরে কাযা পড়লেও গুনাহগার হতে হবে।
যথাসম্ভব কিবলামুখ হতে হবে। বিশেষ করে নামায শুরু করার পূর্বে কিবলামুখ হয়ে দাঁড়িয়ে পরে যানবাহন অন্যমুখ হলে যথাসম্ভব কিবলামুখে ঘুরে নামায পড়তে হবে। সম্ভব না হলে যে কোন মুখেই নামায হয়ে যাবে।
সাধ্যমত নামাযের রুক্ন ও ওয়াজেব আদায় করতে হবে। জমার নামায হলে এবং দ্বিতীয় সময় অতিবাহিত হওয়ার আগে গাড়ি গন্তব্যস্থলে পৌঁছবে না আশঙ্কা হলে প্লেন বা গাড়িতেই নামায আদায় অপরিহার্য। (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্ ৫/১৯০)
নৌকা, পানি-জাহাজ বা স্টিমার প্রভৃতি জলযানেও নামায আদায় করা জরুরী। (কিয়ামের সময়) দাঁড়িয়ে পড়তে অসুবিধা হলে বসে বসে পড়ে নিতে হবে। ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) নৌকায় নামায পড়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হলে তিনি বললেন, “ডুবে যাওয়ার ভয় না থাকলে তাতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নামায পড়।” (বাযয়ীফ, দারাক্বুত্বনী, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক, সিফাতু স্বালাতিন নাবী (সাঃ), আলবানী ৭৯পৃ:)
আব্দুল্লাহ বিন আবী উতবাহ্ বলেন, ‘একদা আমি জাবের বিন আব্দুল্লাহ, আবূ সাঈদ খুদরী ও আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সাথে নৌকার সঙ্গী ছিলাম। তাঁরা সকলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জামাআত সহকারে নামায পড়লেন। তাঁদের একজন ইমামতি করলেন। আর তাঁরা তীরে আসতে সক্ষমও ছিলেন।’
(সুনান সাঈদ বিন মানসূর, আব্দুর রাযযাক, মুসান্নাফ, ইবনে আবী শাইবা, বায়হাকী ৩/১৫৫)
মহানবী (সাঃ) সফরে নিজের সওয়ারীতেই নফল ও বিত্র নামায পড়তেন। উটনী কেবলামুখে দাঁড় করিয়ে তকবীর দিয়ে নামায শুরু করতেন। অতঃপর পূর্ব-পশ্চিম যে মুখে পথ ও উটনী যেত, সে মুখেই তিনি নামায পড়তেন। আর এ ব্যাপারেই অবতীর্ণ হয়েছে মহান আল্লাহর এই বাণী :-
‏( ﻓَﺄَﻳْﻨَﻤَﺎ ﺗُﻮَﻟُّﻮْﺍ ﻓَﺜَﻢَّ ﻭَﺟْﻪُ ﺍﻟﻠﻪ ‏)
অর্থাৎ, তোমরা যেদিকেই মুখ ফিরাও, সেদিকই আল্লাহর চেহারা (দিক বা কিবলাহ্)। (কুরআন মাজীদ ২/১১৫) (মুসলিম, সহীহ ৭০০নং, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান)

ফুটনোটঃ([1])প্রকাশ থাকে যে, বিশেষ করে প্লেনে একাধিক ফাঁকা জায়গা আছে; যেখানে জামাআত করে নামায পড়া সম্ভব। খাকসার নিজে বহুবার সেসব জায়গায় জামাআত সহকারে যথানিয়মে পূর্ণরুপে নামায আদায করেছে।

বই:
 স্বালাতে মুবাশ্শির
 যানবাহনে নামায
  আবদুল হামীদ ফাইযী      
   

Exit mobile version