Site icon Tawheed Media

প্রতিবেশীর খবর রাখা ও তার সাথে ভাল ব্যবহার করা

প্রতিবেশীর খবর রাখা ও তার সাথে ভাল ব্যবহার করা :

পাড়া-প্রতিবেশীর খোঁজ-খবর নেয়া একজন মুসলিমের কর্তব্য। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন,
وَاعْبُدُوا اللهَ وَلاَ تُشْرِكُوْا بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَبِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِيْنِ وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَى وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْبِ-
‘আল্লাহর ইবাদত কর তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না। পিতা-মাতার সাথে সৎ ব্যবহার কর এবং নিকটাত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীনদের সাথে ভাল ব্যবহার কর। নিকট প্রতিবেশী ও দূর প্রতিবেশী এবং সহকর্মীদের সাথে ভাল ব্যবহার কর’ (নিসা ৩৬)।
প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করা সম্পর্কে বহু হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। যেমন- রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ قَالُوا وَمَا ذَاكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ الْجَارُ لاَ يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ ‘আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়। জিজ্ঞেস করা হ’ল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! কে সেই ব্যক্তি? তিনি বললেন, যার অন্যায় থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না’।[1]

অন্য হাদীছে এসেছে, مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلاَ يُؤْذِ جَارَهُ  ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়’।[2]

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بِالَّذِيْ يَشْبَعُ وَجَارُهُ جَائِعٌ إِلَى جَنْبِهِ ‘যে ব্যক্তি তৃপ্তি সহকারে পেটপুরে খায়, অথচ তার পাশেই তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে সে ঈমানদার নয়’।[3] অন্য হাদীছে এসেছে, لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ لاَ يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ. ‘সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়’।[4]

রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, مَا يُوْصِيْنِي بِالْجَارِ حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ ‘জিবরীল (আঃ) এসে আমাকে প্রতিবেশীর ব্যাপারে অবিরত উপদেশ দিতে থাকতেন। এমনকি মনে হ’ত যে, হয়তো তিনি প্রতিবেশীকে সম্পদের অংশীদার বানিয়ে দিবেন’।[5]

রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, أَوَّلُ خَصْمَيْنِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ جَارَانِ ‘কিবয়ামতের মাঠে প্রথম যে বাদী বিবাদীর বিচার হবে তারা হচ্ছে দুই প্রতিবেশী’।[6]

ইসলাম প্রতিবেশীদের প্রতি কর্তব্য পালনে এবং তাদের খোঁজ-খবর রাখতে মুসলিমকে সদা উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করেছে। যেমন- রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, يَا نِسَاءَ الْمُسْلِمَاتِ لاَ تَحْقِرَنَّ جَارَةٌ لِجَارَتِهَا وَلَوْ فِرْسِنَ شَاةٍ ‘হে মুসলিম মহিলাগণ! কোন প্রতিবেশী যেন তার প্রতিবেশীকে তুচ্ছ মনে না করে, এমনকি ছাগলের পায়ের ক্ষুর হ’লেও প্রতিবেশীর নিকট পাঠাবে’।[7]তিনি আরো বলেন, يَا أَبَا ذَرٍّ إِذَا طَبَخْتَ مَرَقَةً فَأَكْثِرْ مَاءَهَا وَتَعَاهَدْ جِيرَانَكَ ‘হে আবূ যার! যখন তুমি তরকারী রান্না কর, তখন একটু বেশী পানি দিয়ে ঝোল বেশী করো এবং তোমার প্রতিবেশীর হক্ব পৌঁছে দাও’।[8]

প্রতিবেশীর যেন কোন অসুবিধা না হয়, ইসলাম সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলেছে। এমনকি নিজের ক্ষতি হলেও প্রতিবেশীর সুযোগ-সুবিধা করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, لاَ يَمْنَعْ أَحَدُكُمْ جَارَهُ أَنْ يَغْرِزَ خَشَبَةً فِي جِدَارِهِ ‘এক প্রতিবেশী যেন অপর প্রতিবেশীকে দেয়ালের সাথে খুঁটি গাড়তে নিষেধ না করে’।[9]

[1]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৪৯৬২; বাংলা ৯ম খন্ড, হা/৪৭৪৫ ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়।
[2]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪২৪৩; বাংলা ৮ম খন্ড, হা/৪০৬৯ ‘খাদ্য’ অধ্যায়।
[3]. বায়হাক্বী, মিশকাত হা/৪৯৯১, সনদ হাসান।
[4]. মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৬৩।
[5]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৬৪।
[6]. আহমাদ, মিশকাত হা/৫০০০; ছহীহুল জামে‘ হা/২৫৬৩, সনদ হাসান।
[7]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৮৯২; বাংলা ৪র্থ খন্ড, হা/১৭৯৮ ‘যাকাত’ অধ্যায়।
[8]. মুসলিম, মিশকাত হা/১৯৩৭।
[9]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৯৬৪; বাংলা ৬ষ্ঠ খন্ড, হা/২৮৩৫ ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়।

আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক’
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করেআপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। “কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা” [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

Exit mobile version