Site icon Tawheed Media

পাক পাঞ্জাতন টুপি পরিধান সম্পর্কে ভ্রান্তি নিরসন

গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে পথভ্রষ্ট বক্তাদের পাক পাঞ্জাতন টুপি পরিধান সম্পর্কে ধান্ত বক্তব্য ঘুরপাক খাচ্ছে,এখন অনেকেরই প্রশ্ন পাক পাঞ্জাতন আসলে কি?
▬▬▬▬▬▬▬▬❖▬▬▬▬▬▬▬▬
পাক পাঞ্জাতন একটি ফারসী শব্দ। এর অর্থ হল, পবিত্র পাঁচ ব্যক্তিত্ব। এটি শিয়াদের একটি ভ্রান্ত আক্বীদা। শিয়ারা আহল বাইতের মধ্য থেকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে আলী, ফাতিমা, হাসান ও হুসাইন (রা)-কে একত্রিত করে পাঁচজনের একত্রিত বিশেষ মর্যাদা জ্ঞাপক পাক-পাঞ্জাতন নাম দিয়ে অনেক বানোয়াট মিথ্যা কাহিনি এবং বাতিল আক্বীদা সৃষ্টি করেছে। পাক পাঞ্জাতন’’ বিষয়ক সমাজে যা কিছু প্রচলিত আছে সবই বানোয়াট ও জঘন্য মিথ্যা কথা।শিয়াদের এই আক্বীদার ভিত্তি কিছু ভ্রান্ত বিষয়ের উপর। তারা একমাত্র এই পাঁচজনকেই নাজাতের উসিলা মনে করে থাকে।শী‘আ’রা পথভ্রষ্ট বাতিল ফের্কা। তারা রাসূল (ﷺ)-এর পরিবার নিয়েই বিভ্রান্তির সূচনা করবে মর্মে রাসূল (ﷺ) ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন (মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৩০২;সহীহ বুখারী, হা/৩৭৫৩; সিলসিলা সহীহাহ, হা/২৪৯৪-এর ব্যাখ্যা)।আর তাদের দ্বারাই এই বাণী যুগ যুগ ধরে বাস্তবায়িত হয়ে আসছে।
.
শী‘আ অর্থ অনুসারী, গোষ্ঠী ইত্যাদি। ইহুদীদের ষড়যন্ত্রের ফসল হিসাবে আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এবং মু‘আবিয়া (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর মধ্যে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তাকে কেন্দ্র করেই এই পথভ্রষ্ট শী‘আ সম্প্রদায়ের জন্ম।শী‘আরা বহু দলে বিভক্ত। তাদের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট হল রাফেযীরা। বর্তমানে ইরানের খোমেনী ও তার সমর্থকরা রাফেযী আক্বীদা পোষণ করে থাকে। এছাড়া সিরিয়ার বাশার আল-আসাদ ও তার অনুসারীরা ‘নুছাইরিয়া’ সম্প্রদায়ের লোক। আর ইয়ামান, ইরাক, উপমহাদেশসহ বিভিন্ন দেশে ‘বাত্বেনী’ ফের্কার লোক যারা আছে, তারা ইসমাঈলী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। এদের কোনটিই মুসলিম নয়, বরং কাফের। তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফেরদের চেয়েও বেশী ভয়ানক (ফাতাওয়া শায়খ বিন বায)।
.
শী‘আ’রা আম্মাজান আয়েশা, হাফসা, হিন্দা ও উম্মুল হেকাম-কে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ মনে করে (হাক্কুল ইয়াক্বীন, পৃ. ৫১৯)। তারা মা আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-কে যেনাকারীণি মহিলা মনে করে। তারা আরো দাবী করে যে, অতিসত্বর তাদের এক ইমাম আত্মপ্রকাশ করবে এবং আয়েশাকে জীবিত করে তার উপর যেনার শাস্তি কার্যকর করবে’ (হাক্কুল ইয়াক্বীন, পৃ. ৩৭৮)। (নাঊযুবিল্লাহ)
.
তারা রাসূল (ﷺ)-এর কোন স্ত্রীগণকে আহলে বায়াত মনে করে না। তারা শুধু পাকপাঞ্জাতন বা রাসূল (ﷺ), ফাতেমা, আলী, হাসান, হুসাইন (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)-কে আহলে বায়াত মনে করে। আর বাকী সন্তান ও নাতী-নাতনীদেরকেও পবিত্র মনে করে না। তাদের আক্বীদা হল, আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) ছিলেন রাসূল (ﷺ)-এর অছী। তাই ক্বিয়ামত পর্যন্ত তাঁর পরিবার থেকেই খলীফা নির্বাচিত হবে। সেজন্য শী‘আরা আবূ বকর, ওমর এবং ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)-কে খলীফা বলে স্বীকার করে না; বরং আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে বাদ দিয়ে যে সমস্ত ছাহাবী তাঁদের হাতে বায়‘আত করেছেন তারা সকলেই কাফের (আল-ফিছাল ফিল মিলাল, ৪/১৩৭ পৃ.)।
.
তারা দাবী করে, ‘আবূ বকর এবং ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) উভয়েই ফেরাউন ও হামান’(হাক্কুন ইয়াক্বীন, পৃ. ৩৬৭)। তারা উভয়ে কাফির ছিল। যে ব্যক্তি তাদেরকে ভালোবাসে, সেও কাফির’(নাঊযুবিল্লাহ)
(হাক্কুন ইয়াক্বীন, পৃ. ৫২২)তাই এই ভ্রান্ত আকীদা পোষণকারী শিয়াদেরকে মুসলিম বলার কোন সুযোগ নেই।কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশের কিছু সুন্নী নামধারী বহু ইসলামপন্থী এদের পক্ষ নিয়ে সালাফী-আহলে হাদীসদেরকে গালমন্দ করে। শী‘আরা যেমন সঊদী আরবের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে, সমালোচনা করে, তেমনি কথিত সুন্নীরাও ইসলামের লেবাস পরে শী‘আদের ভাষায় কথা বলে, মিডিয়ায় মিথ্যাচার করে, সাধারণ জনতাকে ধোঁকা দেয়।এ কারণে,উলামায়ে কেরাম শী’আদের এই আক্বীদাকে বাতিল ও পরিত্যাজ্য বলেছেন। আমরা তাদের এই বিভ্রান্তি থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। উম্মতের শ্রেষ্ঠ বিদ্বানগণ তাদের ব্যাপারে কঠোর মন্তব্য করে গেছেন। যেমন:
.
ত্বালহা বিন মুছাররাফ (মৃ. ১১২ হি.) বলেন, ‘রাফেযী সম্প্রদায়ের মহিলাদেরকে বিয়ে করা যাবে না এবং তাদের যবহেকৃত প্রাণীর গোশত খাওয়া যাবে না। কারণ তারা মুরতাদ বা ধর্মত্যাগী সম্প্রদায়’ (ফাতাওয়া ইসলাম ৯০৭২ নং)।
.
ইমাম আবু হানীফা (৮০-১৫০ হি.)-এর ছাত্র ইমাম আবু ইউসুফ (মৃ. ১৮২) বলেন, ‘আমি কোন জাহমী, রাফেযী শী‘আ ও তাক্বদীর অস্বীকারকারী ক্বাদারিয়াদের পিছনে ছালাত আদায় করি না’ (শারহু উছূলিল ই‘তিক্বাদ, ৪/৭৩৩ পৃ.)।
.
ইমাম বুখারী (১৯৪-২৫৬ হি.) বলেন, ‘আমি কোন পরওয়া করি না, আমি জাহমী ও রাফেযীর পিছনে ছালাত পড়লাম, নাকি ইহুদী ও খ্রীষ্টানের পিছনে ছালাত পড়লাম। তাদেরকে সালাম দেয়া যাবে না, তারা অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া যাবে না, তাদেরকে বিয়ে করা যাবে না, তারা মারা গেলে তাদের জানাযায় শরীক হওয়া যাবে না এবং তাদের যবহেকৃত প্রাণীর গোশত খাওয়া যাবে না’ (খালকু আফ‘আলিল ইবাদ, পৃ. ১২৫)।
.
আব্দুল করীম শহরাস্তানী (৪৭৯-৫৪৮ হি.) বলেন, ‘শী‘আদের দাবীসমূহ কুরআনের উপরও দলীল নির্ভর নয়, মুসলিমদের উপরও নয়। কারণ শী‘আরা মুসলিমদের অন্তর্ভুুক্ত নয়’ (আল-মিলাল ওয়ান নিহাল, ২/৭৮)।
.
শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (৬৬১-৭২৮ হি.) শী‘আ রাফেযীদের সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ‘তাদের কুফরী ইহুদী-খ্রীষ্টানদের চেয়েও ভয়ানক। কারণ ইহুদী-খ্রীষ্টানরা হল সত্ত্বাগত কাফির। পক্ষান্তরে তারা (রাফেযীরা) হল দ্বীন থেকে বের হয়ে যাওয়া মুরতাদ। আর মুরতাদ হওয়ার কুফর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সত্ত্বাগত কুফরের চেয়েও গুরুতর। এ জন্যই তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে (মুসলিম জনপদে গণহত্যা পরিচালনাকারী) তাতার সম্প্রদায়কে সহযোগিতা করছে’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া, ৬/৪২১)।
.
মহান আল্লাহ পথভ্রষ্ট ধান্ত সকল বাতিল বাতিল ফিরকার কুপ্রভাব থেকে মুসলিম উম্মাহকে হেফাযত করুন। আমীন! (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
____________________
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।

Exit mobile version