Site icon Tawheed Media

ইবাদতে মন বসেনা, অলসতা আসে, এমতাবস্থায় করণীয় কি হবে

প্রশ্ন: ইবাদতে মন বসেনা, অলসতা আসে,,,,,, এমতাবস্থায় করণীয় কি হবে?

=========================

উত্তর: ইবাদতে মন না বসা এবং অলসতা আসা খারাপ অভ্যাস। এর ফলে মানুষ কখনো ইবাদত বিমুখও হয় এবং আল্লাহ বিরোধী কাজে লিপ্ত হয়।
এজন্য জন্য বলব, অলস হয়ে পড়া যার মাধ্যমে ইবাদত বর্জন করবে। গুরুপ্তপূর্ণ ফরজের তোয়াক্তা করবেনা। এমনটি মু’মিনের হবেনা। কেননা তারা সর্বদায় আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর হক্বের কথা স্মরণ রাখে।
তবে, কখনো আন্তরিকভাবে দূর্বল হতে পারে। অলসতাভাব আসতে পারে। এতে ইবাদত বর্জন করবে না। এমনটি হওয়াও স্বাভাবিক কেননা এগুলো মানুষের স্বভাব। কখনো কারণ বষত অলসতা আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে অলসতা দূর করার শরঈ পদ্ধতিও রয়েছে।

♠ ইবাদাতে মন স্থীর করা ও অলসতা দূর করার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়:

♣১. অলসতা থেকে মুক্তি লাভের জন্য আল্লাহর নিকট দুআ বা প্রার্থনা করা। যেমনটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করতেন। আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন:

((اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْكَسَلِ))

‘হে আল্লাহ আমি আপনার নিকট অলসতা থেকে আশ্রয় কামনা করছি’ (বুখারী ও মুসলিম)

♣২. অীধকহারে দুআ বা যিকির-আযকার পড়া।
ঘুমের শুরুতে এবং জাগ্রত হয়ে যিকিরসহ অন্যান্য যিকির।

♣৩. অধিকহারে তাবসীহ-তাহলীল পড়া এবং ইবাদতে মগ্ন হওয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন:

﴿الَّذِينَ آَمَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُمْ بِذِكْرِ اللَّهِ أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ﴾

“যারা ঈমান আনে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ প্রশান্তি পায়” (সূরা রা’দ:২৮)
অলসতা আসবে, ইবাদতে মনোনিবেশ কম হবে। দূর হবে অধিকহারে যিকির-আযকার পড়ার মাধ্যমে।

♣৪. দৃঢ়তার সাথে ইবাদতের মাধ্যমে শয়তানের বিরুদ্ধাচরণ করা:

আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

((يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ عَلَى قَافِيَةِ رَأْسِ أَحَدِكُمْ إِذَا هُوَ نَامَ ثَلَاثَ عُقَدٍ يَضْرِبُ كُلَّ عُقْدَةٍ مَكَانَهَا عَلَيْكَ لَيْلٌ طَوِيلٌ فَارْقُدْ فَإِنْ اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللَّهَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَإِنْ تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَإِنْ صَلَّى انْحَلَّتْ عُقَدُهُ كُلُّهَا فَأَصْبَحَ نَشِيطًا طَيِّبَ النَّفْسِ وَإِلَّا أَصْبَحَ خَبِيثَ النَّفْسِ كَسْلَانَ))
“কোন ব্যক্তি রাতে ঘুমিয়ে পড়লে শয়তান তার ঘাড়ের পিছনের দিকে তিনটি গিরা লাগায়। প্রতিটি গিরায় সে এ বলে ফুঁ দেয়- রাত অনেক দীর্ঘ, কাজেই ঘুমাও। যদি তার চোখ খুলে যায় এবং আল্লাহর যিকির করে তাহলে একটি গিরা খুলে যায়। আর যদি সে অযু করে তবে আরও একটি গিরা খুলে যায়। এরপর যদি সে নামাজ পড়ে তাহলে তৃতীয় গিরাটিও খুলে যায়। এবং সকালে সে হাসিখুশী এ তরতাজা হয়ে উঠে। অন্যথায় তার সকাল হয় মানসিক ক্লেশ ও আলস্যের মধ্য দিয়ে’ । (বুখারী ও মুসলিম)

♣৫. আল্লাহকে সাহায্য করা: আল্লাহ তাঁর মু’মিন বান্দার সাথে ওয়াদা দিয়েছেন:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِنْ تَنْصُرُوا اللَّهَ يَنْصُرْكُمْ وَيُثَبِّتْ أَقْدَامَكُمْ

“হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে সাহায্য করো তাহলে আল্লাহও তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা সুদৃঢ় করে দিবেন” (সূরা মুহাম্মাদ:৭)
সাহায্য করার অর্থ হল; আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা। যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দার দুনিয়া-আখিরাত সুন্দর করে দিবেন এবং দুনিয়া-আখিরাতে সুন্দর জীবন দান করবেন।
ওয়াআল্লাহু তাআলা আলাম

উত্তরপ্রদানে:
—————————-
শাইখ কাসেম বিন আব্বাস।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।

Exit mobile version