Site icon Tawheed Media

অহংকারীদের ভয়াবহ পরিনতি

অহংকারের সূচনা হয় যখন মানুষ নিজেকে অনেক বড় মনে করে, নিজের সম্পর্কে অতি উচ্চ ধারনা পোষণ করে, নিজেকে অন্য সবার চাইতে উত্তম মনে করে।
কোনও ব্যাক্তির জ্ঞান, সম্পদ, সৌন্দর্য অনেক বেশি হলেও কোনও কিছু কাজে আসবে না, যদি সে তার জন্য অহংকার করে।
আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা) বলেছেন: “যার অন্তরে অণু পরিমান অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা।” এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলঃ যদি কেউ সুন্দর জামা আর সুন্দর জুতা পরিধান করতে ভালবাসে? তখন নবী করীম (সা) বললেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। অহংকার মানে হল সত্য প্রত্যাখ্যান করা এবং মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা।” [সহীহ্ মুসলিম; কিতাবুল ঈমান, অধ্যায়: ১, হাদীস নম্বর: ১৬৪]

অর্থাৎ অহংকার করা হয় তখনি যখন –
১ কেউ সত্যকে গ্রহণ করে না এবং তার বিরুদ্ধে মিথ্যা তর্ক সাজায়।
২ কেউ নিজেই নিজের প্রশংসায় মগ্ন হয়, অথবা এমনভাবে গর্ব বোধ করে, ও বড়াই করে যে সে নিজেকে অন্য মানুষের থেকে উৎকৃষ্ট মনে করে।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন: “ভূ-পৃষ্ঠে দম্ভভরে বিচরণ করো না। তুমিতো কখনোই পদাভরে ভূ-পৃষ্ঠকে বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনোই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না।” [সূরা বানী ইসরাইল : আয়াত ৩৭]
এবং “(অহংকারবশে) তুমি মানুষ হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না এবং পৃথিবীতে উদ্ধতভাবে বিচরণ করো না; কারণ আল্লাহ্ কোন উদ্ধত, অহংকারীকে পছন্দ করেন না।” [সূরা লোকমান : আয়াত ১৮]

অহংকারীর ঠিকানা হবে জাহান্নাম। তারা যেভাবে মানুষকে অবজ্ঞা ও অপমান করেছে, আল্লাহও তাদের সেভাবে অপমানিত করবেন একেবারে তুচ্ছদের মাঝে তুচ্ছতম ও অপদস্ত করে।

আমর ইবন শুয়াইব ,তার পিতা ও দাদা থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ(স) বলেন, “হাশরের ময়দানে, অহংকারী লোকগুলো পিঁপড়ার মত করে জড়ো হবে। অপমান তাদের চারদিক হতে ঘিরে ধরবে । তাদেরকে জাহান্নামের এমন একটি কয়েদে নিয়ে যাওয়া হবে যার নাম বা’লাস, তার মধ্য থেকে সবচেয়ে উত্তপ্ত অগ্নিশিখা নির্গত হবে, এবং তাদেরকে জাহান্নামিদের পুঁজ রক্ত পান করতে দেয়া হবে, যার নাম তিনাত আল খাবাল”। [তিরমিযি ২৪৯২]

আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন: “সুতরাং,তোমরা দ্বারগুলি দিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ কর, সেখানে স্থায়ী হবার জন্যে; দেখ অহংকারীদের আবাসস্থল কত নিকৃষ্ট।”[সূরা নাহল : আয়াত ২৯]

অহংকার থেকে বেঁচে থাকার একটি উপায় হল, নিজেকে অন্য সবার মতই মনে করা এবং একইসাথে তাদেরকেও আমার মতই মনে করা। অন্যকে ছোট মনে করার বদলে নিজের ভুলগুলো স্বীকার করে সংশোধন করা।
আমরা আল্লাহর কাছে অহংকার হতে মুক্তি চাই ও চাই তিনি আমাদের বিনীত করুন। আর আল্লাহর কাছে প্রকৃত শ্রেষ্ঠ তারাই যারা তাকওয়া অবলম্বন করে।

“নিশ্চয়ই, সেই তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা সম্মানিত যার তাক্বওয়া অধিক” । [সূরা হুজুরাত : আয়াত ১৩]

Exit mobile version