প্রশ্ন: কুরআনে উল্লেখিত “বাহিমাতুল আনআম” দ্বারা উদ্দেশ্য কী এবং মহিষ দ্বারা কুরবানী করার বিধান কী?
▬▬▬▬▬▬▬▬✿▬▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: কুরবানী শুদ্ধ হওয়ার জন্য যেসকল শর্ত রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি শর্ত হচ্ছে, অবশ্যই পশুটি আনআম’ শ্রেণীর চতুষ্পদ জন্তু হওয়া। আর আনআম হচ্ছে- উট, গরু,ভেড়া,ছাগল (নর ও মাদী)। এই পশু গুলোকে কুরআনের ভাষায় বলা হয় ‘বাহীমাতুল আন‘আম।’ যেমন, আল্লাহ বলেন:— وَ لِكُلِّ اُمَّۃٍ جَعَلۡنَا مَنۡسَكًا لِّیَذۡكُرُوا اسۡمَ اللّٰهِ عَلٰی مَا رَزَقَهُمۡ مِّنۡۢ بَهِیۡمَۃِ الۡاَنۡعَامِ ؕ فَاِلٰـهُكُمۡ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ فَلَهٗۤ اَسۡلِمُوۡا ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُخۡبِتِیۡنَ “আর আমরা প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য ‘মানসাক’(কুরবানী) এর নিয়ম করে দিয়েছি; যাতে তিনি তাদেরকে জীবনোপকরণস্বরূপ ‘আনআম’ শ্রেণীর যে চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছেন, সে সবের উপর তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।”[সূরা হাজ্জ, আয়াত: ৩৪] উক্ত আয়াতে بهيمة الأنعام (বাহিমাতুল আনআম) দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে উট, গরু, ভেড়া ও ছাগল। আরবদের কাছে بهيمة الأنعام এর এ অর্থই পরিচিত। এটি হাসান, কাতাদা ও আরও অনেকের অভিমত।(শাইখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উসাইমীন এর ‘আহকামুল উযহিয়্যাহ ও যাকাত’ শীর্ষক পুস্তিকা থেকে। আরো জানতে দেখুন ইবনু কাসীর, ৫/৩৬৬; ফাতহুল কাদীর, ৩/৫৩১)। আর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহীমাতুল আন‘আম ছাড়া অন্য কোনো জন্তু নিজে কুরবানি করেননি এবং কুরবানি করতেও বলেননি। তাই কুরবানি শুধু শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত পশু দিয়েই করতে হবে। এর বিপরীত যেমন ঘোড়া, হাস, মুরগি, কবুতর, হরিণ ইত্যাদি দ্বারা কুরবানী করা জায়েজ নয় কেননা এগুলো দ্বারা কুরবানী দেওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। পাশাপাশি আরো একটি বিষয় জানা উচিত আর তা হচ্ছে কুরবানীর পশুর মধ্যে সবচেয়ে উত্তম হলো উট, তারপর গরু, তারপর ভেড়া, তারপর ছাগল, তারপর উটের সাতভাগের একভাগ, তারপর গরুর সাতভাগের একভাগ। প্রত্যেক প্রকারের মধ্যে সর্বোত্তম হল সবচেয়ে মোটা, সবচেয়ে বেশি মাংসল, পরিপূর্ণ সৃষ্টি, দেখতে সবচেয়ে উত্তম।(আরো বিস্তারিত জানতে দেখুন ফাতাওয়াল লাজনাদ দায়িমা; খন্ড; ১১ পৃষ্ঠা; ৩৯৮; ইবনে উসাইমীন আহকামুল উযহিয়্যাহ; পৃষ্ঠা: ২২৯; ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-৪৫৭৬৭)
.
▪️মহিষ দ্বারা কুরবানী করার বিধান কী?
মহিষ কুরআনে উল্লেখিত আনআম শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত কিনা এবং মহিষ কুরবানী দেওয়া জায়েজ কিনা এই বিষয়ে আলেমদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। একদল আলেম বলেছেন মহিষ দ্বারা কুরবানী দেওয়া বৈধ নয়। কেননা শরীয়তে আন’আম শ্রেণীর পশু নির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখিত যেমন; উট, গরু, ছাগল, ভেড়া, নর ও মাদী। সুতরাং মহিষ কুরবানি করা যাবেনা। কেননা মহিষ উপরিউক্ত আট প্রকার গৃহপালিত জন্তুর অন্তর্ভুক্ত নয়। তাছাড়া রাসূল (ﷺ) কিংবা তার সাহাবীগন মহিষ দ্বারা কুরবানী করেছেন বলে বিশুদ্ধ সূত্র থেকে জানা যায়নি। তাদের এই প্রশ্নের জবাবে অপর পক্ষের আলেমগন বলেছেন, রাসূল ﷺ কিংবা তার সাহাবীদের থেকে মহিষ কুরবানীর দলিল নেই একথা ঠিক তাই বলে মহিষ কুরবানী দেওয়া জায়েজ নয় একথা সঠিক নয় বরং মহিষ ও গরু একই জাতির পশু সে হিসেবে মহিষ কুরবানী দিতে কোন আপত্তি নেই ইনশাআল্লাহ। আর রাসূল (ﷺ) থেকে মহিষ কুরবানীর দলিল না থাকার অন্যতম কারন হচ্ছে তৎকালীন সময়ে আরবদের কাছে এই পশুটি (মহিষ) পরিচিত ছিলনা। তাই মহিষের আলোচনা আসেনি যেমনটি ইমাম ইবনে উসাইমিন (রাহিমাহুল্লাহ) উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া আহালুল আলেমগন এই মর্মে ইজমা করেছেন যে মহিষ ও গরু একই জাতীয় পশু। আর গরুর ন্যায় মহিষেরও যাকাত আদায় করা ফরজ। ইমাম মুনযেরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,”ইজমা রয়েছে যে, মহিষের বিধান গরুর মতো”। (দ্রষ্টব্য; আল ইজমা, কিতাবুয যাকাত, পৃষ্ঠা: ৪৩)
.
শাইখুল ইসলাম হুজ্জাতুল উম্মাহ ইমামু দারিল হিজরাহ আবূ ‘আব্দুল্লাহ মালিক বিন আনাস আল-আসবাহী আল-মাদানী (রাহিমাহুল্লাহ) [জন্ন:৯৩ হি: মৃত: ১৭৯ হি.] বলেছেন:-وَكَذَلِكَ الْبَقَرُ وَالْجَوَامِيسُ تُجْمَعُ فِي الصَّدَقَةِ عَلَى رَبِّهَا وَقَالَ إِنَّمَا هِيَ بَقَرٌ كُلُّهَا فَإِنْ كَانَتْ الْبَقَرُ هِيَ أَكْثَرَ مِنْ الْجَوَامِيسِ وَلَا تَجِبُ عَلَى رَبِّهَا إِلَّا بَقَرَةٌ وَاحِدَةٌ فَلْيَأْخُذْ مِنْ الْبَقَرِ صَدَقَتَهُمَا وَإِنْ كَانَتْ الْجَوَامِيسُ أَكْثَرَ فَلْيَأْخُذْ مِنْهَا فَإِنْ اسْتَوَتْ فَلْيَأْخُذْ مِنْ أَيَّتِهِمَا شَاءَ فَإِذَا وَجَبَتْ فِي ذَلِكَ الصَّدَقَةُ صُدِّقَ الصِّنْفَانِ جَمِيعًا.”অনুরূপভাবে গরু ও মহিষের যাকাতের ক্ষেত্রে তার মালিক উভয়কে এক জায়গায়/একত্রিত করে যাকাত আদায় করবে। এমনকি তিনি বলেন এগুলোর প্রত্যেকটি/সবগুলোই মূলত গরুর অধীনস্থ/অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং গরু যদি মহিষের চেয়ে বেশি হয় এবং তার মালিকের উপর একটি গরুর যাকাত দেওয়া ওয়াজিব হয় তাহলে অবশ্যই সে যেন গরুর মধ্য হতে উভয়ের যাকাত আদায় করে। আর যদি গরুর থেকে মহিষ বেশি হয় তাহলে সে যেন মহিষের মধ্যে হতে উভয়ের যাকাত আদায় করে। অতঃপর যদি উভয়ই সমান হয় তাহলে তার ইচ্ছানুযায়ী উভয়ের মধ্য হতে যাকাত আদায় করবে (এ সময়ে চাই সে যাকাত হিসেবে গরু প্রদান করুক কিংবা মহিষ উভয়ই তার অধীনে)। অতঃপর যদি গরু ও মহিষ উভয়ই যাকাতের হিসাব পরিমাণ হয় তাহলে অবশ্য উভয়ের মধ্য হতে আলাদা আলাদাভাবে যাকাত প্রদান করতে হবে।(মুয়াত্তা মালেক হা/৫৮৪)। সুতরাং মহিষ কুরবানী করা সম্পর্কে আলেমদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও বহু গ্রহণযোগ্য আলেমগণ মহিষকে গরু প্রজাতির অন্তর্ভূক্ত হিসেবে মহিষ দ্বারা কুরবানি করা বৈধ বলেছেন। তবে আমরা বলবো কুরবানীর সর্বোত্তম পশু হিসেবে উট, গরু, ছাগল ইত্যাদি পশু সচরাচর পাওয়া গেলে এবং সেগুলো দ্বারা কুরবানি দেয়ার সামর্থ্য থাকা অবস্থায় এবং মতভেদ থেকে দুরে থাকার জন্য মহিষ দ্বারা কুরবানি না দেয়াই উত্তম। কিন্তু মহিষ দ্বারা কুরবানী হবেনা একথা বলা ঠিক হবেনা। মহিষ কুরবানী বৈধ মর্মে ইতিহাস বিখ্যাত বহু আলেমগণ মতামত দিয়েছেন যেমন:
.
প্রখ্যাত তাবি‘ঈ ইমাম হাসান বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১১০হি.] বলেন,الجواميس بمنزلة البقر “মহিষ গরুর স্থলাভিষিক্ত’।(মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বা হা/১০৮৪৮)
.
বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল
প্রশ্নঃ ফাজিলাতুশ শায়েখকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, মহিষের অনেক গুণাবলী/বৈশিষ্ট্য গরুর হতে ভিন্ন। যেমন ছাগলের অনেক গুণাবলী/বৈশিষ্ট্য মেষ/ভেড়ার অনেক গুনাবলী/বৈশিষ্ট্য হতে ভিন্ন। আর আল্লাহ তাআলা সূরা আনআমের মধ্যে মেষ ও ছাগলের মাঝে পার্থক্য করে দিয়েছে।অপর দিকে তিনি মহিষ ও গরুর মাঝে কোন পার্থক্য করেননি। অতএব মহিষ কি আল্লাহ তাআলার উল্লেখিত আট প্রকারের জোড়ার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। ফলে তার দ্বারা কুরবানী করা কি বৈধ নাকি বৈধ না?
উত্তরে শাইখ যা বলেছেন তার ভাবার্থ হচ্ছে, মহিষ এক ধরনের গরু, আরবরা এই প্রাণীটি চিনতনা বলে তার সম্বন্ধে কোন আলোচনা পাওয়া যায়না। কিন্তু মহিষ গরুরই একটি শ্রেণী বা জাত। কাজেই তার বিধান গরুর মতো। অর্থাৎ মহিষ) গরুর অন্তর্ভুক্ত।(বিস্তারিত জানতে দেখুন: ইবনে উসাইমীন: মাজমুঊ ফাতওয়া: খন্ড: ৩৪, পৃষ্ঠা: ২৫ এবং অডিও ক্লিপ https://www.alathar.net/home/esound/index.php?op=codevi&coid=65630)
.
মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, মাসজিদে নাবাউয়ীর সম্মানিত মুদার্রিস, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ‘আব্দুর রাযযাক্ব বিন ‘আব্দুল মুহসিন আল-‘আব্বাদ আল-বদর (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৮২ হি.] কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল প্রশ্নঃ মহিষ দ্বারা কুরবানী করা কি বৈধ?
উত্তরে তিনি বলেন: মহিষ গরুর অন্তর্ভুক্ত।(অর্থাৎ মহিষ দ্বারা কুরবানী করা জায়েজ)।(দারসে তিরমিজি ১৭২ নং অডিও ক্লিপ: https://youtube.com/shorts/qN8uSQ_tHk8?si=BSofPfPtJj6OmAbd)
.
সৌদি ফতোয়া বোর্ড এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য, যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল প্রশ্নঃ আপনারা উল্লেখ করে থাকেন যে, কুরবানী চতুষ্পদ প্রাণীর মধ্য থেকে হতে হবে। আর তা হল গরু, ছাগল ও উট। তাহলে মহিষ কি চতুষ্পদ প্রাণীর অন্তর্ভুক্ত?
উত্তরে শাইখ বলেন: হ্যাঁ, মহিষ গরুর অন্তর্ভুক্ত। (অর্থাৎ মহিষ দ্বারা কুরবানী বৈধ।(https://youtube.com/watch?v=BrblFuOfU0s&si=RLiE-kfruqTXFkOt)
.
ভারতবর্ষে হাদীসশাস্ত্রের আরেক দিকপাল, মিশকাতুল মাসাবীহ’র বিখ্যাত ভাষ্যগ্রন্থ মির‘আতুল মাফাতীহ’র সম্মানিত মুসান্নিফ, ফাদ্বীলাতুশ শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, ইমাম ‘উবাইদুল্লাহ বিন ‘আব্দুস সালাম মুবারকপুরী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪১৪ হি./১৯৯৪ খ্রি.] মহিষের কুরবানী সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বলেন-
” কোন ধরনের সংশয় এবং সন্দেহ ব্যাতিরেকে মহিষ কুরবানী করা মুবাহ তথা জায়েজ।আর যারা মহিষ কুরবানী করবে তারা সাওয়াবও পাবেন। কুরআনুল কারীমে সূরা হজ্জের আয়াতের মধ্যে “بهيمة الأنعام”
(বাহিমাতুল আনআম) আল্লাহর নামে যবেহ করার এবং তার গোস্ত খাওয়ার ও খাওয়ানোর বর্ণনার উল্লেখ রয়েছে। আর “بهيمة الأنعام” অর্থ হল ঐ প্রকার সকল হালাল পশু যা গৃহপালিত ও গবাদি।অর্থাৎ যেগুলিকে মানুষের দুধ ও গোস্ত খাওয়ার জন্যে নিজ গৃহে লালন পালন করে থাকে। যার মধ্যে উট, গরু, মহিষ, বকরী ভেড়া দুম্বা ইত্যাদি সবই শামিল রয়েছে। জংলী জানোয়ার যেমনটি হরিন, জংলী গাধা কিংবা জেব্রা, নীল গাই ইত্যাদি বিল ইত্তেফাক এই শব্দের আওতা থেকে বহির্ভুত। কিছু সংখ্যক ফুকাহার নিকটে “البُدن” এর মধ্যে গরু শামিল রয়েছে, আর মহিষ গরুরই একটা প্রকরণ বা শ্রেনী। যেমনটি অভিধান বিদ্বগন লিখেছেন।এদিক থেকেও মহিষের কুরবানীর উপরে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকছেনা। অবশ্য উট অথবা গরু কিংবা বকরী বা ভেড়া ও দুম্বা থাকা সত্ত্বেও মহিষের কুরবানী দেওয়া আফযালের খিলাফ। নাবী (ﷺ) ও সাহাবায়ে কেরামদের যামানায় আরব দেশে মহিষ বিদ্যমান ছিলনা বিধায় তাদের থেকে মহিষ কুরবানীর নেপথ্যে কোনো বর্ণনা পাওয়া যায়না যেমনটি মহিষের যাকাতের ব্যাপারেও নিদানের কোনো বর্ণনা পাওয়া যায়না। কিন্ত এটা দ্বারা এই কথা সাব্যস্ত হয়না যে মহিষের কুরবানী দেওয়া না জায়েয হবে কিংবা এর যাকাত দেওয়া লাগবে না।সর্বাবস্থাতেই মহিষের কুরবানী করা নিঃসন্দিগ্ধভাবে জায়েয।”(গ্রন্থসুত্রঃ ফাতাওয়া উবাইদুল্লাহ রহামানী মুবারকপুরী পৃষ্ঠা: ১৮৯ ফাতওয়াটি আবুল্লাহ ডালটন ভাই থেকে সংগৃহীত)
.
বর্তমান সময়ের অন্যতম আলেম শাইখ ড.আব্দুল আজিজ বিন রাইস আর-রাইস (হাফিজাহুল্লাহ)-কে প্রশ্নঃ করা হয়েছিল মহিষ দ্বারা কুরবানী করা কি বৈধ রয়েছে?
উত্তরে শাইখ বলেন: চার মাযহাবের আলেমগণ একমত যে, মহিষ দ্বারা কুরবানী করা শুদ্ধ/সহিহ হবে। কারণ মহিষের বিধান মূলত গরুর বিধানের মতই। এমনকি ইবনুল মুনযির এর উপর ইজমা বর্ণনা করেছেন যে, মহিষের যাকাত হলো গরুর যাকাতের মত এবং এটি প্রমাণ করে যে, উভয়ের হুকুম/বিধান একই। (শাইখের বক্তব্য লিংক: https://youtube.com/watch?v=lf46soW45NY&si=sDwPaAur9UkOHEJv)
পরিশেষে প্রিয় পাঠক উপরোক্ত আলোচনা থেকে একথা পরিস্কার যে, মহিষ( بهيمة الانعام “বাহীমাতুল আন‘আম” শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত প্রানী। সুতরাং গৃহ পালিত পশু হিসেবে মহিষ কুরবানী দিতে আপত্তি নেই তবে সর্বোত্তম পশু উট গরু, ছাগল ভেড়া পাওয়া গেলে সেগুলো দিয়েই কুরবানী করা উত্তম। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার সুস্পট দলিল প্রমান ছাড়া যারা বলেন মহিষের কুরবানী হবেনা একথা সঠিক নয়। বড়জোড় এটা বলা যেতে পারে মহিষের চেয়ে উট, গরু, ছাগল কুরবানী করা উত্তম। কিন্তু সেটা না বলে সরাসরি মহিষ কুরবানী করা জায়েজ নয় বলা শরীয়তের বিধি বিধান সম্পর্কে এক প্রকার বাড়াবাড়ি। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_______________________________
আপনাদের দ্বীনি ভাই:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।