পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’র প্রতি। অতঃপর সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন:
نصيحتي لمن أراد الزواج أن يختار من النساء من أوصى النبي ﷺ بتزوجها حيث قال: “تزوجوا الودود الولود” وقال ﷺ: “تنكح المرأة لمالها، وحسبها، وجمالها، ودينها، فأظفر بذات الدين”،
وأن تختار المرأة من كان ذا خلق ودين، لقول النبي ﷺ:
“إذا أتاكم من ترضون دينه وخلقه فزوجوه”
وأن وأن تتحرى غاية التحري ولاتتعجل بقبول الخطبة حتى تبحث عن حال الخاطب لئلا تندم على تسرعها.
“যারা বিবাহ করতে চায় তাদের প্রতি আমার পরামর্শ হলো তারা যেন সেই নারীদের বেছে নেয় যাদের সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিবাহের জন্য উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন:”এমন নারীকে বিয়ে করো যে প্রেমময়ী এবং অধিক সন্তান প্রসবকারী”। (আবু দাউদ হা/২০৫০) এবং আরও বলেছেন: “নারীকে বিবাহ করা হয় চারটি বিষয় দেখে। সেগুলো হলো: তার সম্পদ, তার বংশ, তার সৌন্দর্য ও তার দ্বীনদারি।’’তুমি দ্বীনদারি (বেছে নেওয়া)-র মাধ্যমে সফলতা অর্জন করো”।(সহীহুল বুখারী: ৫০৯০; মুসলিম: ১৪৬৬)
.
এবং নারীদের উচিত এমন একজন পুরুষকে নির্বাচন করা,যে উত্তম চরিত্র ও দ্বীনদারীতার অধিকারী। যেমনটি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: “যদি তোমাদের কাছে এমন কোনো পুরুষ বিয়ের প্রস্তাব দেয়,যার দ্বীনদারী এবং উত্তম আচরণে তোমরা সন্তুষ্ট, তার সাথে বিবাহ দাও’।(তিরমিযী হা/১০৮৪ সনদ হাসান) এছাড়াও বিয়ের প্রস্তাব গ্রহণের ক্ষেত্রে যেন তাড়াহুড়ো না করে বরং পাত্র সম্পর্কে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করা উচিত, যাতে পরে তাড়াহুড়োর জন্য অনুশোচনা করতে না হয়।”(ইবনু উসাইমীন;”মুসলিম নারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নাবলী”- ৯৬)
.
এই উপদেশের মর্ম হলো, বিবাহের ক্ষেত্রে প্রত্যেক নারী পুরুষের জন্য উপযুক্ত এবং সঠিক সঙ্গী নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এটি বিশুদ্ধ ঈমান আক্বীদা ও চরিত্রের ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে নারী প্রেমময়ী এবং সন্তান উৎপাদনে সক্ষম, তাকে বিয়ে করা উচিত। এছাড়া, নারীকে বিবাহের জন্য নির্বাচন করার সময় চারটি বিষয় দেখা হয় তার মধ্যে দ্বীনদারী হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এটি দাম্পত্য জীবনকে সুখী ও স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে।
.
অপরদিকে ইমাম (রাহিমাহুল্লাহ) নারীদেরকে পরামর্শ দিয়েছেন তারা যেন এমন একজন পুরুষকে জীবনসঙ্গী হিসাবে বেছে নেয়,যার উত্তম চরিত্র এবং দ্বীনদারিতা রয়েছে।কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,”যদি তোমাদের কাছে এমন কোনো পুরুষ বিয়ের প্রস্তাব দেয়,যার দ্বীনদারী এবং উত্তম আচরণে তোমরা সন্তুষ্ট, তার সাথে বিবাহ দাও”।পাশাপাশি বিয়ের প্রস্তাব গ্রহণের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেছেন। কেননা বিবাহ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এটি ছোটখাটো কোন বিষয় নয় যে হুট করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম আবার কিছু হলেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলাম। বরং এক্ষেত্রে করণীয় হচ্ছে পাত্র সম্পর্কে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাতে পরে অনুশোচনা করতে না হয়। সুতরাং ইমাম ইবনু উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ)-এর এই পরামর্শগুলো ইসলামী শরীয়তের নির্দেশনা অনুযায়ী বিবাহের ক্ষেত্রে সঠিক সঙ্গী নির্বাচন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্বকে তুলে ধরে, যেখানে ধর্মীয় মূল্যবোধ, চরিত্র এবং সাবধানতার বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আল্লাহ সবাইকে এই বিষয়গুলো অনুধাবন করার তৌফিক দান করুন।(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_____________________________
✍️জুয়েল মাহমুদ সালাফি।