***দুই জনের লেবাসতো একই চিনবো কিভাবে?
তাদেরকে হাদীসের কথা বললে হেসে উড়িয়ে দেয়। যেহেতু বিদআতকেই সে আসল দ্বীন মনে করে। যেমন তাদের বলতে শুনি, এতে ক্ষতি কি, ওতে অসুবিধা কি, এটা তো ভালো জিনিস, ওটা তো বিদআতে হাসানাহ’ বলে অনেক বিদআত প্রচলিত করে থাকে। আর তার সঙ্গে মনের খেয়াল-খুশী যোগ হয়। ফলে কোন সহীহ হাদীসের কথা বললে তা আর গ্রহণ করতে মন চায় না। আর তখনই মনের বিরোধী হাদীসের প্রতি বিষ উদ্গারণ করে থাকে। হাদীসপন্থী আলেমকেও নিজের শত্রু মনে করে থাকে। অথচ বিদআতী একজন ভ্রষ্ট লোক।
***আবূ কিহমলাবাহ বলেন, যখন তুমি কোন ব্যক্তিকে কোন হাদীস বর্ণনা করবে এবং সে বলবে, ‘এ কথা ছাড়ুন, কুরআনের কথা বলুন’ তখন জেনে নেবে যে, সে একজন গোমরাহ লোক।(তক্ষাবাকক্ষাতু ইবনে সা’দ ৭/১৮৪)
ইমাম যাহাবী উক্ত কথার টীকায় বলেন, আর যখন বিদআতী বক্তাকে বলতে দেখবে যে, ‘কুরআন ও একক বর্ণনাকারীর বর্ণিত (খবরে ওয়াহেদ) ছাড়ো, তোমার জ্ঞান-বিবেক কি বলছে তাই মানো’ তখন জেনে নেবে যে, সে আবূ জাহেল। যখন কোন তাওহীদী (অদ্বৈতবাদ বা সর্বেশক্ষরবাদ) মতাবলম্বী (সূফী)কে বলতে দেখবে যে, ‘(হাদীস) বর্ণনা ও জ্ঞান-বিবেক ছাড় এবং রুচি ও আবেগ যা বলছে তাই কর’ তাহলে জেনে নেবে যে, ইবলীস মানুষের বেশে আবির্ভূত হয়েছে অথবা সে মানুষের দেহে প্রবেশ করেছে। সুতরাং তাকে দেখে যদি তুমি ভয় পাও, তাহলে সেখান হতে পলায়ন কর। নচেৎ তাকে চিৎ করে ফেলে তার বুকে বসে তার উপর আয়াতুল কুরসী পড় এবং গলা টিপে তাকে (সেই ইবলীসকে) হত্যা কর।(সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’ ৪/৪৭২)
বার্বাহারী বলেন, ‘যখন তুমি কাউকে দেখ যে, সে আল্লাহর রসূল (ﷺ)-এর সাহাবাবর্গের মধ্যে কোন সাহাবীর বিরুদ্ধে কটুক্তি করছে, তখন জেনে নিও সে ব্যক্তি প্রবৃত্তিপূজারী বিদআতী।’(বার্বাহারী ১১৫পৃঃ ১৩৩ নং)
তিনি আরো বলেন, ‘যখন কাউকে শোনো যে, সে হাদীসের বিরুদ্ধে কটুক্তি করছে অথবা হাদীস প্রত্যাখ্যান করছে অথবা হাদীস ছাড়া অন্য কিছু মানতে চাচেছ, তখন তার ইসলামে সন্দেহ করো। আর সে যে একজন প্রবৃত্তিপূজক বিদআতী তাতে কোন সন্দেহই করো না।’(ঐ ১১৫-১১৬পৃঃ, ১৩৪নং, শারহুস সুন্নাহ ৫১পৃঃ)
তিনি বলেন, ‘আর যখন দেখ যে, সে (দেশের মুসলিম) বাদশাহর জন্য বদ্দুআ করছে, তখন জেনে নিও সে ব্যক্তি প্রবৃত্তিপূজারী (বিদআতী)।’(ঐ ১১৬ পৃঃ, ১৩৬নং)
আবূ হাতেম বলেন, ‘আহলে বিদআহর চিহ্ন হল এই যে, সে হাদীসের অনুসারীর ইজ্জতে আঘাত হানে।’(শারহু উসূলি ই’তিকাদি আহলিস সুন্নাাতি অলজামাআহ, লালকাঈ ১/১৭৯)
ইবনুল কাত্তক্ষান বলেন, ‘দুনিয়াতে এমন কোন বিদআতী নেই, যে হাদীসের অনিসারিদের ঘৃণা করে না।’(আকীদাতুস সালাফ অআসহাবিল হাদীস, ইমাম সাবূনী ১০২পৃঃ, ১৬৩নং)
আবূ ইসমাঈল সাবূনী বলেন, ‘বিদআতীর আচরণে বিদআতের চিহ্ন প্রকাশ থাকে। তাদের সব চাইতে অধিক স্পষ্ট চিহ্ন ও নিদর্শন হল, নবী (ﷺ)-এর হাদীসের বাহক (মুহাদ্দেসীন)গণের প্রতি তারা দুশমনি করে, তাঁদেরকে ঘৃণা করে এবং তাঁদেরকে তুচছ জ্ঞান করে। ’(ঐ ১০১পৃঃ, ১৬২নং)
কুতাইবাহ বিন সাঈদ বলেন, ‘যখন তুমি কাউকে দেখবে যে, সে হাদীসের অনুসারীদের ভালবাসছে, তখন (জেনো যে,) সে সুন্নাহপন্থী। আর যে ব্যক্তি এর বিরোধিতা করে, সে ব্যক্তিকে বিদআতী জেনো।’(মুকক্ষাদ্দামাতু মুহাক্কিক্ষকিক্ষ কিতাব শিআরু আসহাবিল হাদীস, হাকেম ৭পৃঃ)
আইয়ূব সাখতিয়ানী বলেন, ‘আজকের বিদআতীদের কাউকে আমি জানি না যে, সে রূপক (দ্ব্যর্থবোধক আয়াত ও হাদীস) ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা তর্ক করছে।’(আল-ইবানাহ আন শরীআতি ফিরাকিন না-জিয়াহ অমুজানাবাতিল ফিরাকিল মাযমূমাহ, ইবনে বাত্তক্ষাহ ২/৫০১, ৬০৫, ৬০৯)
আবুল কাসেম আসবাহানী বলেন, সলফের আহলে সুন্নাহ বলেন যে, ‘মানুষ যখন আসার (হাদীসে)র ব্যাপারে কটুক্তি করবে, তখন তার ইসলামে সন্দেহ হওয়া উচিত।'(আল-হুজ্জাহ ফী বায়ানিল মাহাজ্জাহ ২/৪২৮)
—–
বইঃ হাদীস ও সুন্নাহর মুল্যমান
আবদুল হামীদ ফাইযী আল-মাদানী