বর্তমান সমাজের বেশকিছু কুসংস্কার

বর্তমান সমাজে বেশকিছু ধর্মীয়/সামাজিক/রাজনৈতিক কুসংস্কার চালু রয়েছে
▬▬▬▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬▬▬▬
(১) পরীক্ষায় যাওয়ার আগে ডিম খাওয়া যাবে না,
(২) প্রথম কাস্টমারকে বাকী দেয়া যাবে না,
(৩) জোড়া কলা খেলে জমজ বাচ্চা জন্ম হয়,
(৪) কাক ডাকলে বিপদ আসে,
(৫) দোকানের প্রথম কাস্টমারকে ফেরত দেয়া কুলক্ষণ,
(৬) বৃষ্টি না হলে ব্যাঙের বিয়ে দেয়া, পেঁচা অশুভ ইত্যাদি।

(৭) মুসলিম সমাজে ধর্মের নামে অসংখ্য কুসংস্কার চালু আছে।যেমন- কবরপূজা, মাযারপূজা, পীর-ফকীরের পূজা, দরবেশ-বুজুর্গের পূজা, গাছ, পাথর, পুকুর, মাছ, কুমির, কচ্ছপ, কবুতরপূজা, মৃত পীরের অসীলায় সাহায্য চাওয়া, সিজদা করা, দু‘আ করা, কল্যাণ-অকল্যাণের মালিক মনে করা ইত্যাদি সবই ধর্মীয় কুসংস্কার।

(৮) রাজনীতির নামেও অসংখ্য কুসংস্কার চর্চা করা হয়। শহীদ মিনার, বেদী, স্মৃতি সৌধ, প্রতিকৃতি, শিখা চিরন্তন, শিখা অনির্বাণ, পতাকা ও দিবসকে শ্রদ্ধা জানানো, ফুল দিয়ে ভক্তি প্রদর্শন করা, খাম্বার সামনে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা, কুর্নিশ করা ইত্যাদি। ইসলামের সাথে জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, পূঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ইত্যাদি বিজাতীয় মতবাদের সংমিশ্রণও জাহেলী কুসংস্কার এবং ত্বাগূতী চিন্তাধারা।
.
কুসংস্কারের নামে যে সমস্ত প্রথা চালু আছে, সেগুলোর অধিকাংশই শিরক, যা মুমিনের ঈমান ও আমল নষ্ট করে দেয় এবং ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়। ঈমানের সবচেয়ে বড় দুশমন হল, শিরক, কুফর, ত্বাগূত ও নিফাক। অথচ এগুলোর মধ্যেই অধিকাংশ মুসলিম হাবুডুবু খাচ্ছে। কুসংস্কারের পূজা করতে গিয়ে কখন যে একজন ব্যক্তি ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে মুশরিক হয়ে গেছে তা সে টেরই পায়নি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে, তাদের অধিকাংশই মুশরিক’ (সূরা ইউসুফ : ১০৬)। তিনি আরো বলেন, ‘মনে রেখো, আল্লাহর কাছেই রয়েছে তাদের কুলক্ষণসমূহের চাবিকাঠি। কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোকই তা বুঝে না’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ১৩১)। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘যে কোন বিষয়কেই অশুভ ও কুলক্ষণে মনে করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত (আবূ দাঊদ, হা/৩৯১০)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘কুলক্ষণ বা দুর্ভাগ্যের ধারণা যে ব্যক্তিকে তার স্বীয় প্রয়োজন, দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে দূরে রাখল, সে মূলত শিরক করল’ (মুসনাদে আহমাদ, হা/৭০৪৫)।
.
সৌদি ফতোয়া বোর্ড এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য, যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ,আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] বলেছেন,তিনটি জিনিসের মাধ্যমে কুসংস্কার মুকাবিলা করা যেতে পারে।

(১) আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা।

(২) মনবল দৃঢ় রাখা এবং

(৩) আল্লাহ্র কাছে বেশি বেশি দু‘আ করা’ (ই‘য়ানাতুল মুস্তাওফীদ বিশারহি কিতাবিত তাওহীদ, ২য় খ-, পৃ. ১৪)। আল্লাহ তা‘আলা কুসংস্কারের মত ঈমান বিধ্বংসী ক্যান্সার থেকে মুসলিম উম্মাহকে হেফাযত করুন। আমীন!সংকলিত। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_________________________
উপস্থাপনায়,
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।

Share: