প্রশ্ন: নির্দিষ্ট করে কাউকে জান্নাতি বা জাহান্নামী বলা যাবে কি? এই বিষয়ে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আক্বীদা কি?
▬▬▬▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬▬▬▬
ভূমিকা: পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। আমাদের নবী মুহাম্মদের প্রতি, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবীগণের প্রতি আল্লাহর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর নিদিষ্ট করে কাউকে জান্নাতী বা জাহান্নামী বলার ক্ষেত্রে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের বক্তব্য বা মূলনীতি হলো, মহান আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল (ﷺ) যাদের সম্পর্কে জান্নাতী অথবা জাহান্নামী হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত ঘোষণা করেছেন শুধু তাদেরকেই জান্নাতী অথবা জাহান্নামী বলা যাবে, এর বাহিরে অন্য কাউকে নয়। কারন এগুলো আক্বীদার বিষয় যা কুরআন সুন্নাহর দলিল নির্ভর হতে হবে, এ ব্যাপারে কোনো যুক্তি বা ইজতিহাদের অবকাশ নেই। তাছাড়া কেউ জান্নাতের কাজ করলেই তাকে জান্নাতী এবং জাহান্নামের কাজ করলেই তাকে জাহান্নামী মনে করা ঠিক নয়। হতে পারে সে মরণের পূর্বে অথবা আল্লাহর কাছে তার বিপরীত হতে পারে যার একাধিক প্রমাণ হাদিসে রয়েছে। সুতরাং ইসলামি শরীয়তের (কুরআন ও সুন্নাহ) দলিলের ভিত্তিতে যাদের জান্নাতী বা জাহান্নামী বলে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয়েছে, আমরা কেবল তাদের ক্ষেত্রেই সে রকম সিদ্ধান্ত দিতে পারি। এর বাইরে সাধারণ মানুষ সম্পর্কে নিশ্চিত করে জান্নাতী বা জাহান্নামী বলা আমাদের জন্য জায়েজ নয়। বরং যারা ঈমান ও সৎকর্মে জীবনযাপন করে তাদের জন্য আমরা আল্লাহর কাছে জান্নাতের আশা রাখি ইন শাহ্ আল্লাহ। আর যারা পাপে নিমগ্ন তাদের ব্যাপারে আল্লাহর শাস্তির ভয় করি। কেননা সকল মানুষের শেষ পরিণতি সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ তাআলারই রয়েছে।”(বিস্তারিত জানতে দেখুন: বিন বায: মাজমূঊ ফাতাওয়া: খণ্ড: ২৫; পৃষ্ঠা: ১২১; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব,ফাতওয়া নং-৭৩১)।
.
শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে কাউকে জান্নাতী বা জাহান্নামী বলে ঘোষণা করা দু-ধরনের হয়ে থাকে।
(১) সাধারণ গুণ বা কর্মের ভিত্তিতে সাধারণভাবে জান্নাতি কিংবা জাহান্নামী বলা: এ ধরনের বর্ণনায় নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য না করে সাধারণভাবে বলা হয়ে থাকে। যেমন “যে ব্যক্তি ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে,সে জান্নাতের অধিকারী হবে” অথবা “যে ব্যক্তি কুফরি বা শিরক করে, তার পরিণতি জাহান্নাম” অর্থাৎ যে ব্যক্তি বড় শিরকে জড়িয়ে পড়ে, সে নিঃসন্দেহে ইসলাম থেকে বিচ্যুত হয়ে কাফের হিসেবে গণ্য হয়। ফলে তওবা ব্যতীত মৃত্যুবরণ করলে কুরআন ও সুন্নাহের অকাট্য প্রমাণ অনুযায়ী তার গন্তব্যস্থল হবে জাহান্নাম। অনুরূপভাবে আমরা জানি যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় রমাদান মাসে রোযা রাখে তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয়। আবার যে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হজ্জ সম্পাদন করে তার জন্য প্রতিদান হলো জান্নাত। সুতরাং নির্দিষ্ট কিছু বিশ্বাস ও কর্মের উপর ভিত্তি করে কুরআন ও সুন্নাহয় এমন বহু প্রমাণ রয়েছে, যা জান্নাত ও জাহান্নামের ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করে।
উদাহরণস্বরূপ: যদি কেউ প্রশ্ন করে এক ব্যক্তি আল্লাহকে ছেড়ে অন্য কারো নিকট দোয়া করে, সাহায্য চায়, তাহলে সে জান্নাতী নাকি জাহান্নামী? উত্তরে বলা হবে কেউ যদি আল্লাহকে ছেড়ে অন্য কারো নিকট দোয়া করে বা সাহায্য প্রার্থনা করে তাহলে সে এক মহাপাপে লিপ্ত হয়েছে, যা তাওহীদের স্পষ্ট বিরোধিতা। যদি সে এই শিরক থেকে তাওবা না করে মৃত্যুবরণ করে, তবে সে কুফরীর অবস্থায় মারা যাবে এবং তার পরিণাম ভয়াবহ জাহান্নাম। কারণ, সে আল্লাহর একত্ববাদের পরিপন্থী এক গুরুতর গোনাহে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত অটল ছিল। অন্যদিকে, যদি কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হজ্ব পালন করে এবং হজের সময় নিজেকে অশ্লীলতা, গুনাহ ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে, অতঃপর সে মৃত্যু বরণ করে ইন শাহ্ আল্লাহ তাহলে আমরা আমভাবে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আল্লাহর কাছে জান্নাতের আশা করতে পারি এবং তাদের জন্য জান্নাত লাভের দোয়া করতে পারি। অথবা যে ব্যক্তি মৃত্যুর সময় “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” উচ্চারণ করে তাওহীদের সাক্ষ্য দিয়ে বিদায় নেয়, তার জন্যেও জান্নাতের সুসংবাদ রয়েছে। এসব বক্তব্য ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়, বরং তাদের কর্ম, আকীদা ও শেষ অবস্থার ভিত্তিতে সাধারণ নীতির আলোকে বলা হয়। কেবল আল্লাহই নির্ধারিত ভাবে জানেন কে জান্নাতী আর কে জাহান্নামী।
.
(২) নির্দিষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে জান্নাতী বা জাহান্নামী বলা: এই ধরণের ঘোষণা কেবলমাত্র যাদের ব্যাপারে কুরআন বা সহীহ হাদীসে স্পষ্টভাবে জান্নাতী বা জাহান্নামী বলা হয়েছে, শুধু তাদের ক্ষেত্রেই করা যায়। যেমন কুরআন সুন্নাহের বিভিন্ন বর্ননায় রাসূল (ﷺ) যাদেরকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন তাদেরকে “জান্নাতী” বলা যাবে। আবার যেসব কাফিরদের সম্পর্কে কুরআনে কিংবা সহীহ হাদিসে জান্নাত থেকে বঞ্চিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাদেরকে “জাহান্নামী” বলা যাবে।
.
উদাহরণস্বরূপ: দুনিয়াতেই যারা জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছেন, তাঁদেরকে জান্নাতী বলে সম্বোধন করতে কোন সমস্যা নেই। রাসূল (ﷺ), একটি হাদীসে আবূ বকর, উমার, উসমান, আলী, ত্বালহা, যুবায়র ইবনুল আওয়াম, সা‘দ ইবনু মালিক, আব্দুর রাহমান ইবনু আওফ (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) তাঁরা সকলেই জান্নাতী বলে ঘোষণা দিয়েছেন (আবূ দাঊদ, হা/৪৬৪৯; তিরমিযী, হা/৩৭৪৭, ৩৭৪৮, ৩৭৫৭; ইবনু মাজাহ, হা/১৩৩ সহীহুল জামি‘, হা/৫০, ৪০১০)। এছাড়াও বিভিন্ন হাদীসে আরো বহু সাহাবীকে রাসূল ﷺ দুনিয়াতেই জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। তাদের মাঝে আছেন (১) উক্কাশাহ বিন মিহশান (রা.) (বু. মু. মিশকাত হা/৫২৯৬)। (২) ইয়াসির (৩) ‘আম্মার (৪) সুমাইয়া (হাকেম হা/৫৬৬৬) (৫) বেলাল বিন রাবাহ (তিরমিযী হা/৩৬৮৯) (৬) উসায়রিম ‘আমর বিন সাবেত (আহমাদ হা/২৩৬৮৪) (৭) সাবেত বিন ক্বায়েস (মুসলিম হা/১১৯) (৮) হারেসাহ বিন সুরাক্বাহ (বুখারী হা/২৮০৯) (৯) হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (মুসলিম হা/১৭৮৮) (১০) যায়েদ বিন হারেসাহ (১১) আব্দুল্লাহ বিন রওয়াহা (আহমাদ হা/২২৬০৪; ইবনু হিববান হা/৭০৪৮) (১২) সা‘দ বিন মু‘আয (মুসলিম হা/২৪৬৮) (১৩) সালমান ফারেসী (তিরমিযী হা/৩৭৯৭) (১৪) আব্দুল্লাহ বিন সালাম (বুখারী হা/৩৮১২) (১৫) জাবের (রা.)-এর পিতা আব্দুল্লাহ বিন ‘আমর (তিরমিযী হা/৩০১০) (১৬) আবুদ্দাহদাহ আনসারী (মুসলিম হা/৯৬৫) (১৭) রুমায়সা বিনতে মিলহান (বুখারী হা/৩৬৭৯) (১৮) উম্মে যুমার হাবাশীয়া (বুখারী হা/৫৬৫২; মুসলিম হা/২৫৭৬) প্রমুখ।
.
পক্ষান্তরে যারা দুনিয়াতেই জাহান্নামের দুঃসংবাদ পেয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে যেমন: (১) ফিরআউন। মহান আল্লাহ তার সম্বন্ধে বলেছেন,يَقْدُمُ قَوْمَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَأَوْرَدَهُمُ النَّارَ ۖ وَبِئْسَ الْوِرْدُ الْمَوْرُودُ অর্থাৎ, কিয়ামতের দিন সে নিজ সম্প্রদায়ের অগ্রভাগে থাকবে, অতঃপর তাদেরকে উপনীত করবে দোযখে। আর তা অতি নিকৃষ্ট স্থান যাতে তারা উপনীত হবে। (সূরা হূদ ৯৮) (২) নূহ ও লূত (আলাইহিমাস সালাম)-এর স্ত্রী ও মহান আল্লাহ তাদের সম্বন্ধে বলেন, আর আল্লাহ অবিশ্বাসীদের জন্য নূহ ও লুতের স্ত্রীর দৃষ্টান্ত উপস্থিত করেছেন। তারা ছিল আমার দাসদের মধ্যে দুই সৎকর্মপরায়ণ দাসের অধীন। কিন্তু তারা তাদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, ফলে তারা (নূহ ও লূত) তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি হতে রক্ষা করতে পারল না এবং তাদেরকে বলা হল, ‘জাহান্নামে প্রবেশকারীদের সাথে তোমরাও তাতে প্রবেশ কর। (সূরা তাহরীম ১০) এখানে খিয়ানত বা বিশ্বাসঘাতকতা বলতে দাম্পত্যের খিয়ানত বা বিশ্বাসঘাতকতা উদ্দেশ্য নয়। কেননা, এ ব্যাপারে সকলে একমত যে, কোনো নবীর স্ত্রী ব্যভিচারিণী ছিলেন না। (ফাতহুল কাদীর) খিয়ানত বলতে বুঝানো হয়েছে, এরা তাদের স্বামীদের উপর ঈমান আনেনি। তারা মুনাফিক্বী ও কপটতায় লিপ্ত ছিল এবং নিজেদের কাফের জাতির প্রতি তারা সমবেদনা পোষণ করত। যেমন, নূহ (আ.)-এর স্ত্রী নূহ (আ.)-এর ব্যাপারে লোকদেরকে বলে বেড়াত যে, এ একজন পাগল। আর লূত (আ.)-এর স্ত্রী তার গোত্রের লোকদেরকে নিজ বাড়ীতে আগত অতিথির সংবাদ পৌছে দিত। কেউ কেউ বলেন, এরা উভয়ই তাদের জাতির লোকদের মাঝে নিজ নিজ স্বামীর চুগলি করে বেড়াত। নূহ (আ.) এবং লূত (আ.) তাঁরা উভয়েই ছিলেন আল্লাহর পয়গম্বর, আর পয়গম্বররা আল্লাহর অতি নিকটতম বান্দাদের মধ্যে গণ্য হন, তা সত্ত্বেও তাঁরা তাঁদের স্ত্রীদেরকে আল্লাহর আযাব থেকে বাঁচাতে পারবেন না।
(৩) আবূ লাহাব ও তার স্ত্রী। মহান আল্লাহ বলেন, ধ্বংস হোক আবু লাহাবের হস্তদ্বয় এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। তার ধন-সম্পদ ও তার উপার্জন তার কোন উপকারে আসবে না। অচিরেই সে শিখা বিশিষ্ট (জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করবে এবং তার স্ত্রীও; যে ইন্ধন বহন করে। তার গলদেশে থাকবে খেজুর আঁশের পাকানো রশি (সূরা আল-লাহাব ৩-৪)।
(৪) আমর বিন আমের আল-খুযায়ী। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি ‘আম্র ইব্নু ‘আমির খুয‘আইকে তার বহির্গত নাড়ি-ভুঁড়ি নিয়ে জাহান্নামের আগুনে চলাফেলা করতে দেখেছি। সেই প্রথম ব্যক্তি যে সাইবা উৎসর্গ করার প্রথা প্রচলন করে। (বুখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ৯ হাদীস নং ৩৫২১; মুসলিম ২৮৫৬ আর লুলু ওয়াল মারজান হা/১৮১৬)
(৫) আবূ ত্বালিব, আব্বাস ইবনু আব্দুল মুত্তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত:‘আব্বাস ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রা.) বলেন, আমি একদিন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি আপনার চাচা আবূ ত্বালিবের কী উপকার করলেন অথচ তিনি আপনাকে দুশমনের সকল আক্রমণ ও ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে তিনি খুব ক্ষুব্ধ হতেন। তিনি বললেন, সে জাহান্নামে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত আগুনে আছে। যদি আমি না হতাম তাহলে সে জাহান্নামের একেবারে নিম্ন স্তরে থাকত। (সহীহ বুখারী পর্ব ৬৩ /৪০ হা. ৩৮৮৩, মুসলিম ১/৯০, হা. নং ২০৯ আল লু’লু ওয়াল মারজান,হা/ ১২৫) (৬) আম্মার (রা.)-এর ঘাতক ও তার ব্যাপারে মহানবী (ﷺ) বলেছেন,“সে জাহান্নামী।”(সহীহুল জামে’ ৪১৭০) কিন্তু যাদের ব্যাপারে ঘোষণা নেই, তাদেরকে নিশ্চিতরূপে জান্নাতী অথবা জাহান্নামী বলা জায়েয নয় (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনু বায, ২৫/১২১ পৃ. ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৭৩১)। যেমন, সাহ্ল ইবনু সা‘দ আস্ সা‘ইদী (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: কোনো ব্যক্তি জনসাধারণের সামনে প্রকাশিত ‘আমলের বিবেচনায় জান্নাতীদের ‘আমলের ন্যায় ‘আমল করবে; অথচ সে জাহান্নামীদের অন্তর্ভূক্ত। আর কোনো ব্যক্তি জনসাধারণের সামনে প্রকাশিত ‘আমলের বিবেচনায় জাহান্নামীদের ‘আমলের ন্যায় ‘আমল করবে, অথচ সে জান্নাতীদের অন্তর্ভূক্ত। (সহিহ মুসলিম হা/ ৬৬৩৪ ই.ফা হা/ ৬৫০০)।
.
অতএব কুরআন-সুন্নাহ সুস্পষ্ট দলিলের বাহিরে কোনো ব্যক্তিকে জান্নাতী কিংবা জাহান্নামী বলে সার্টিফিকেট দেওয়া যাবে না, এমন কি কোনো মুসলিম ব্যাক্তি মারা গেলেও তার ক্ষেত্রে রহমতপ্রাপ্ত বেহেশতবাসী’ উদ্দেশ্য করে মরহুম শব্দ ব্যবহার করাও জায়েয নয়। এবার একজন মুসলিম সে যত সৎকর্মই করুক না কেন তাকে যেমন জান্নাতী বলে ঘোষণা দিতে পারি না। অনুরূপভাবে কোন মুসলিম যত মন্দ কাজই করুক না কেন তাকে জাহান্নামী বলেও ঘোষণা দিতে পারি না। কারণ কাউকে জান্নাতী বা জাহান্নামী সাব্যস্ত করা একমাত্র আল্লাহরই কর্তৃত্বাধীন।আমরা যদি কয়েকটি উদাহরণ লক্ষ করি তাহলে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ। যেমন:
(১) আম্মিজান ‘আয়েশা (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) [মৃত: ৫৭/৫৮ হি.] থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন, একদা একজন আনসারীর বাচ্চার জানাযার সলাত আদায়ের জন্য রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ডাকা হল। আমি (‘আয়েশা) বললাম, হে আল্লাহর রসূল! এ বাচ্চার কি সৌভাগ্য, সে তো জান্নাতের চড়ুই পাখিদের মধ্যে একটি চড়ুই। সে তো কোন গুনাহ করেনি বা গুনাহ করার বয়সও পায়নি। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এছাড়া অন্য কিছু কি হতে পারে না হে ‘আয়েশা! আল্লাহ তা’আলা একদল লোককে জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করে রেখেছেন, যখন তারা তাদের পিতার মেরুদণ্ডে ছিল। এভাবে জাহান্নামের জন্যেও একদল লোক সৃষ্টি করে রেখেছেন অথচ তখন তারা তাদের পিতার মেরুদণ্ডে ছিল।(সহীহ মুসলিম ২৬৬২, নাসায়ী ১৯৪৭,ইবনু মাজাহ ৮২,আহমাদ ২৫৭৪২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৬১৭৩)। রাসূল (ﷺ) বলেন, ‘যদি কেউ কাউকে কাফের বলে, আর সে যদি কাফের না হয়, তাহ’লে কথাটি তার উপরেই ফিরে আসবে।(সহীহ বুখারী হা/৬০৪৫; মিশকাত হা/৪৮১৬)। অপর আরেকটি বর্ননায় এসেছে খারিজাহ ইবনু যায়দ ইবনু সাবিত (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত,…উম্মুল ‘আলা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, অতঃপর উসমান ইবনু মায‘উন (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আমাদের এখানে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমি তাঁর সেবা শুশ্রাষা করলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু হয়ে গেল। আমরা কাফনের কাপড় পরিয়ে দিলাম। তারপর নবী (ﷺ) আমাদের এখানে আসলেন। ঐ সময় আমি ‘উসমান ইবনু মাযউন (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে লক্ষ্য করে বলছিলাম। হে আবূ সায়িব! তোমার উপর আল্লাহ রহম করুন। তোমার সম্পর্কে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ নিশ্চয় তোমাকে সম্মানিত করেছেন। তখন নবী (ﷺ) আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তুমি কেমন করে জানলে যে, আল্লাহ তাকে সম্মানিত করেছেন? আমি বললাম, আমার মাতা-পিতা আপনার উপর কুরবান হোক হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমি তো জানি না। তাহলে আপনি বলে দিন কাকে আল্লাহ সম্মানিত করবেন? নবী (ﷺ) বললেন, আল্লাহর শপথ! ‘উসমানের মৃত্যু হয়ে গেছে। আল্লাহর কসম! আমি তার সম্পর্কে কল্যাণের আশা পোষণ করছি। আল্লাহর কসম, আমি আল্লাহর রাসূল হওয়া সত্ত্বেও জানি না আল্লাহ আমার সাথে কী ব্যবহার করবেন। উম্মুল ‘আলা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, আল্লাহর শপথ, আমি এ কথা শুনার পর আর কাউকে পূত-পবিত্র বলব না…(সহীহ বুখারী, হা/১২৪৩)।
.
কাউকে জাহান্নামী সাব্যস্ত করার শাস্তি কতটা ভয়াবহ হ’তে পারে নিম্নোক্ত হাদীসটি তার বাস্তব উদাহরণ। আবূ হুরায়রা (রা.) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, বনী ইসরাঈলের মধ্যে দু’জন ব্যক্তি ছিল। তাদের একজন পাপ কাজ করত এবং অন্যজন সর্বদা ইবাদতে লিপ্ত থাকত। যখনই ইবাদতরত ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে দেখত, তখনই তাকে খারাপ কাজ পরিহার করতে বলত। একদিন সে তাকে পাপ কাজে লিপ্ত দেখে বলল, তুমি এমন কাজ থেকে বিরত থাক। পাপী ব্যক্তি বলল, আমাকে আমার রবের উপর ছেড়ে দাও! তোমাকে কি আমার উপর পাহারাদার করে পাঠানো হয়েছে? সে বলল, আল্লাহর কসম! আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন না, অথবা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না।অতঃপর দু’জনকেই মৃত্যু দিয়ে আল্লাহর নিকট উপস্থিত করা হ’ল। আল্লাহ ইবাদতগুযার ব্যক্তিকে প্রশ্ন করলেন, তুমি কি আমার সম্পর্কে জানতে? অথবা তুমি কি আমার হাতে যা আছে তার উপর ক্ষমতাবান ছিলে? আর পাপীকে বললেন, তুমি চলে যাও এবং আমার রহমতে জান্নাতে প্রবেশ কর। আর অপর ব্যক্তির ব্যাপারে তিনি বললেন, তোমরা একে জাহান্নামে নিয়ে যাও। আবূ হুরায়রাহ (রা.) বলেন, সেই মহান সত্তার কসম! যার হাতে আমার জীবন! সে (ইবাদতগুযার ব্যক্তি) এমন উক্তি করেছে, যার ফলে তার দুনিয়া ও আখেরাত উভয়েই বরবাদ হয়ে গেছে’ (আবূ দাঊদ হা/৪৯০১; সহীহুল জামে‘ হা/৪৪৫৫; সনদ সহীহ)। এই হাদীসটি প্রমাণ করে যে, কাউকে সরাসরি জান্নাতী বা জাহান্নামী বলা যাবে না। কেননা কে জান্নাতে যাবে, আর কে জাহান্নামে যাবে, আল্লাহ কাকে ক্ষমা করবেন এবং কাকে ক্ষমা করবেন না- সেটা কেবল আল্লাহই জানেন। কেননা তিনিই কেবল অদৃশ্যের খবর রাখেন। তিনিই ‘আলিমুল গায়েব। সুতরাং ইলমুল গায়েবের দাবী করা সীমালংঘন ও কুফরী। এজন্য আল্লাহ সেই ইবাদতগুযার বান্দাকে বলেছেন, তুমি কি আমার হাতে যা আছে তার উপর ক্ষমতাবান ছিলে? আল্লাহ বলেন, ‘আর গায়েবের চাবিকাঠি তাঁর কাছেই রয়েছে। তিনি ব্যতীত কেউই তা জানে না। স্থলভাগে ও সমুদ্রভাগে যা কিছু আছে, সবই তিনি জানেন। গাছের একটি পাতা ঝরলেও সেটা তিনি জানেন। মাটিতে লুক্কায়িত এমন কোন শস্যদানা নেই বা সেখানে পতিত এমন কোন সরস বা শুষ্ক ফল নেই, যা (আল্লাহর) সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ নেই’ (সূরা আন‘আম ৬/৫৯)। আল্লাহ মহা ক্ষমাশীল। তিনি অনেক বড় পাপীকেও ক্ষমা করে জান্নাত প্রদান করতে পারেন। আবার তিনি শাস্তিদানে অত্যন্ত কঠোর। ফলে ইবাদতগুযারকেও কঠিন শাস্তির সম্মুখীন করতে পারেন।
.
সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন:كل إنسان يشهد له النبي صلى الله عليه وسلم بأنه في الجنة فهو في الجنة، وكل إنسان يشهد أنه في النار فهو في النار، وأما من لم يشهد له الرسول فنشهد له بالعموم، نقول: كل مؤمن في الجنة، وكل كافر في النار، ولا نشهد لشخص معين بأنه من أهل النار، أو من أهل الجنة، إلا بما شهد له الله ورسوله”যেসব ব্যক্তিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাতী বলেছেন, তারা জান্নাতী। আর যাদের সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে তারা জাহান্নামী, তারা হবে জাহান্নামী। তবে যাদের সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট দলিল নেই, তাদের ব্যাপারে আমরা বলি—সকল ঈমানদার জান্নাতের অধিকারী এবং সকল কাফির জাহান্নামের অধিবাসী। কিন্তু কাউকে নির্দিষ্ট করে জান্নাতী বা জাহান্নামী বলবো না, যতক্ষণ না আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তাদের ব্যাপারে তা নির্ধারণ করে দেন।”(ইবনু উসাইমীন,তাফসীর সূরা আল-হুজরাত; পৃষ্ঠা: ১৮)।
.
অপর ফাতওয়ায় সৌদি আরবের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতী, যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ ও মুহাদ্দিস, শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল প্রশ্ন:মৃতদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত শব্দাবলির বিশুদ্ধতা কী? যেমন আমরা এরকম কথা শুনে থাকি যে, অমুক ‘মাগফূর লাহু’ অথবা ‘মরহুম’। এই পরিভাষাগুলো কি বিশুদ্ধ? আপনি এ ব্যাপারে মানুষকে কীভাবে দিকনির্দেশনা দিবেন?”
উত্তরে শাইখ বলেন:
الواجب في هذا أن يقال: غفر الله له، رحمه الله، ولا يجزم بالمغفور له والمرحوم، هذا هو الذي ذكره أهل العلم، وكان أهل السنة والجماعة يقولون: لا يجوز الشهادة لمعين بجنة أو نار، إلا من شهد له الرسول ﷺ، أو شهد الله له في كتابه وإلا فلا، فممن شهد الله له في الكتاب العزيز بالنار أبو لهب ، شهد الله له بالنار، وهكذا من شهد له الرسول ﷺ بالجنة كـأبي بكر الصديق وعمر وعثمان وعلي وبقية العشرة وغيرهم ممن شهد لهم الرسول ﷺ، أو بالنار، هذا يشهد له.أما من لم يشهد له الله ولا رسوله لا بجنة ولا بنار فإنا لا نشهد له بذلك لا هذا ولا هذا، ولكن أهل السنة يرجون للمحسن ويخافون على المسيء.
والذي يظهر أن قول القائل: المرحوم فلان، والمغفور له فلان في معنى الشهادة، في معنى الشهادة بالجنة والنار؛ لأن المرحوم والمغفور له معناه أنه في الجنة؛ لأن كل إنسان مرحوم ومغفور له فهو من أهل الجنة، هذا فيه جرأة وعدم تورع، فالذي ينبغي في مثل هذا أن يقول: رحمه الله، غفر الله له، هذا هو الذي ينبغي في هذا المقام. نعم.
“এই বিষয়ে যা করণীয় তা হলো ‘গাফারাল্লাহু লাহু (আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন)’, ‘রাহিমাহুল্লাহ (আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন)’ প্রভৃতি বলা জরুরি। দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে ‘মাগফূর লাহু (ক্ষমাপ্রাপ্ত)’, ‘মরহুম (রহমতপ্রাপ্ত)’ প্রভৃতি বলা যাবে না। ‘আলিমগণ এমনটিই বলেছেন।আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ বলে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির ব্যাপারে জান্নাতি বা জাহান্নামী হওয়ার সাক্ষ্য দেওয়া বৈধ নয়, শুধুমাত্র যাদের ব্যাপারে রাসূল ﷺ সাক্ষ্য দিয়েছেন, অথবা যাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাঁর কিতাবে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাদের ব্যাপারে করা যাবে। যেমন আল্লাহ যাকে কুরআনে জাহান্নামী বলে সাক্ষ্য দিয়েছেন তাদের একজন হলো আবূ লাহাব। আল্লাহ তাকে জাহান্নামী বলেই সাক্ষ্য দিয়েছেন। একইভাবে যাদের ব্যাপারে রাসূল ﷺ জান্নাতি বলে সাক্ষ্য দিয়েছেন, যেমন আবূ বকর আস-সিদ্দীক, ‘উমার, ‘উসমান, ‘আলী এবং আশারায়ে মুবাশশারাহ-র অন্যান্য সাহাবীগণ, অথবা যাদেরকে রাসূল ﷺ জাহান্নামী বলেছেন তাদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেওয়া যাবে। কিন্তু যাদের ব্যাপারে না আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন, না রাসূল ﷺ, তাদের ব্যাপারে আমরা জান্নাতি বা জাহান্নামী বলে কোনো সাক্ষ্য দেব না।কিন্তু আহলুস সুন্নাহ সৎকর্মশীল বান্দার জন্য কল্যাণের আশা করে, আর পাপী বান্দার ব্যাপারে অকল্যাণের আশঙ্কা করে।আর মানুষের বলা অমুক ‘মরহুম’, অমুক ‘মাগফূর লাহু’ এই কথাগুলো জান্নাত ও জাহান্নামের সার্টিফিকেট দেওয়ার নামান্তর। কেননা মরহুম (রহমতপ্রাপ্ত), মাগফূর লাহু (ক্ষমাপ্রাপ্ত) কথা দুটির অর্থ হলো, উক্ত ব্যক্তি জান্নাতে রয়েছে। কেননা প্রত্যেক মরহুম ও মাগফূর লাহু ব্যক্তি জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত। এই কথার মধ্যে রয়েছে স্পর্ধা ও তাক্বওয়া-শূন্যতা। তাই এসব ক্ষেত্রে ‘রাহিমাহুল্লাহ’, ‘গাফারাল্লাহু লাহু’ প্রভৃতি বলাই বাঞ্ছনীয়। এক্ষেত্রে এটাই বাঞ্ছনীয়। না‘আম।”(ইমাম ইবনু বাযের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এর আর্টিকেল নং-৬৪৭১) তবে হা!কেউ যদি মরহুম বলার মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির জন্য রহমতের দু‘আ উদ্দেশ্য করে, তাহলে মরহুম বলা জায়েজ। উল্লেখ্য যে, ‘রহমতপ্রাপ্ত’ হলো মরহুম শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ। কিন্তু মরহুম শব্দের আরেকটি প্রসিদ্ধ অর্থ আছে। আর তা হলো মৃত, প্রয়াত, লোকান্তরিত, পরলোকগত প্রভৃতি। যেমনটি বিভিন্ন আরবি অভিধানে এসেছে।
.
পরিশেষে উপরোক্ত আলোচনা থেকে এ কথাই পরিষ্কার যে, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আতের আকিদা হলো তারা কোনো ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট করে জান্নাতী বা জাহান্নামী ঘোষণা করে না, যতক্ষণ না তার সম্পর্কে স্পষ্টভাবে কুরআন বা হাদীসে সুস্পষ্ট দলিল থাকে। নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদের জান্নাতী বা জাহান্নামী ঘোষণা করেছেন, তারা তা-ই। তবে এ ছাড়া অন্যদের ব্যাপারে তারা নির্দিষ্ট করে কিছু বলেন না। তবে তারা নেককার ও আনুগত্যশীল ব্যক্তিদের জন্য জান্নাতের আশা পোষণ করে এবং গোনাহগার ও অবাধ্য ব্যক্তিদের জন্য জাহান্নামের আশঙ্কা করে। এভাবে তারা সাধারণভাবে বলে আল্লাহর আনুগত্যশীলরা জান্নাতের উপযুক্ত এবং তাঁর অবাধ্যরা জাহান্নামের উপযুক্ত, কিন্তু কোনো ব্যক্তিকে নাম ধরে নির্দিষ্ট করে জান্নাতী বা জাহান্নামী বলে না।(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
▬▬▬▬▬▬▬💠💠▬▬▬▬▬▬▬
উপস্থাপনায়: জুয়েল মাহমুদ সালাফি।
সম্পাদনায়: ইব্রাহিম বিন হাসান (হাফিযাহুল্লাহ)
অধ্যয়নরত, কিং খালিদ ইউনিভার্সিটি, সৌদি আরব।