তিনটি গোনাহ যা অন্তরকে খুব দ্রুত ধ্বংস করে

১. কু-দৃষ্টি।
২. কু-ধারণা।
৩. গীবত।

কুদৃষ্টিঃ গায়রে মাহরাম কারো দিকে শাহওয়াতের সাথে তাকানো। অথবা শাহওয়াতের খেয়াল ছাড়া শুধু তাকিয়ে থাকা। যার দ্বারা চোখ তৃপ্তি (!) পায়। এই পাপকাজ অনেকে হালকা মনে করে থাকেন। কিন্তু নিঃসন্দেহে তা আত্মাকে ধ্বংস করে।
আমাদের মাঝে সবচে বেশি এই গোনাহ হয়ে থাকে। চাচাতো ভাই-বোন, মামাতো ভাই-বোন ইত্যাদি কারো সাথেই পর্দা যে ফরজ তাও আমাদের জানা নেই।

কিছু ভাই-বোন ওদের সাথে পর্দা মানে, হিজাব পরে পর্দা (!) করেন। অথবা দূর দূর থাকেন। কিন্তু ফোনে কথাবার্তা বলার সময় মিষ্টি মিষ্টি কথা বলা শুরু করেন। এই মিষ্টি কথা বলাও যে পাপের কাজ, সেটা আমাদের ভাই-বোনদের জানা নেই।

গায়রে মাহরামের সামনে যাওয়া, তাদের দিকে তাকানো আর মিষ্টি সূরে কথা বলা সবগুলোই হারাম। এগুলো থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ বাঁচিয়ে রাখা উচিত।

যাক, কুদৃষ্টির মাধ্যমে যা ক্ষতি হয়েছে, তা ইস্তেগফার ও নফল নামাযের মাধ্যমে পুষিয়ে নেয়া চাই। সাথে অনেক দান সদকা করা চাই। এবং সবসময় আল্লাহর কাছে দুয়া করে, তাওফিক চাইতে হবে। এবং নিয়মিত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

কুধারণাঃ কোন মুসলমানের প্রতি কুধারণা রাখা উচিত না। এই কুধারণা মানুষের অন্তর ধ্বংস করে। এবং অনেক রকমের ফাসাদের জন্ম দেয়।

এই কুধারণার রোগ থেকে বাঁচার জন্য, সবসময় নিজেকে তুচ্ছ ভাবা উচিত। এই গোনাহ থেকে সবারই বেঁচে থাকা উচিত। দুনিয়ার সবার থেকে নিজেকে ক্ষুদ্র মনে করাই হলো এর চিকিৎসা।

গীবতঃ কারো অনুপস্থিতিতে এমন সব কথা বলা, যা শুনলে আলোচিত ব্যক্তি কষ্ট পাবে। এই গোনাহও আমাদের মাঝে ব্যাপকতা লাভ করেছে।

মানুষ গীবত করে মূলত, ‘অহংকার’ ও ‘আত্মপ্রিয়তা’ থেকে। কারণ, একমাত্র অহংকারী ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব মানুষকে নিয়ে হাসাহাসি বা দোষত্রুটির আলোচনা করা।

কেউ যদি নিজেকে রোগী মনে করে, কেউ যদি মনে করে এই রোগের কারণে তার মৃত্যু হবে, তা হলে সে অপরের রোগ নিয়ে হাসাহাসি করতে পারতো না।
ঠিক এভাবেই আমাদের নিজের দোষত্রুটিকে আমরা দোষ মনে না করে, আরেকজনের দোষ নিহে হাসাহাসি করি বা আলোচনা করে মজলিস গরম করি।

এই খারাপ ও বদ আমলগুলো থেকে সবার বেঁচে থাকা উচিত। শাহ হাকীম মুহাম্মদ আখতার রাহিমাহুল্লাহ বলেন, এই তিনটি বদ আমল থেকে যদি কেউ বাঁচতে পারে, অন্যান্য খারাপ আমল থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা সহজ হয়ে যাবে। ইনশা আল্লাহ।

তো ভাই! আমরা কি প্রতিজ্ঞা করতে পারিনা, আজ থেকে আমরা ঐসব গোনাহ আর করবো না। এসব অপরাধ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবো।

কারণ আত্মা যদি সুস্থ না থাকে, তাহলে নামায, রোজা, তেলাওয়াত ও যিকির-আযকার সহ কোন আমলেই আপনি শান্তি পাবেন না, বা পরিতৃপ্ত হবেন না।

যারা আমল করে আত্মার শান্তি পেতে চান, অবশ্যই আগে নিজের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করুন। সাফ করুন। পরিষ্কার হৃদয়ে আল্লাহর ভালোবাসা হাসিল হবে। তখন অল্প আমলই নূর হবে। আর এই নূর আপনার হৃদয়কে নুরানি করে দিবে।

আল্লাহ আমাদের সবরকম পাপ থেকে বেঁচে থাকার ও তাঁর নৈকট্য হাসিলের তাওফিক দিন। আমীন।

Share: