প্রশ্ন: কষ্টকর হওয়া সত্ত্বেও বারবার চেষ্টা করে কুরআন পাঠকারী ব্যক্তির ফজিলত বেশি,নাকি কুরআন অধ্যয়নে পারদর্শী ব্যক্তির ফজিলত বেশি?
▬▬▬▬▬▬▬▬✿▬▬▬▬▬▬▬▬
ভূমিকা: পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’র প্রতি। অতঃপর আল-কুরআন সবচেয়ে বড় মর্যাদা হল এটা আল্লাহ তা‘আলা কথা। এ কারণে এর প্রতিটি অক্ষর, শব্দ, আয়াত এবং সূরা রহমত ও বরকত দিয়ে পরিপূর্ণ। যা তেলাওয়াত করলে মুমিনের ঈমান বৃদ্ধি পায়, তার চোখ অশ্রুসিক্ত হয় এবং অন্তর প্রকম্পিত হয়। কুরআন তেলাওয়াতের অন্যতম আদব হল তারতীব তথা ধীরে ধীরে, স্পষ্ট ও সুন্দরভাবে, প্রত্যেক অক্ষরকে তার উৎসস্থল থেকে সঠিকভাবে উচ্চারণ করে, যেখানে টানতে হবে সেখানে টেনে তেলাওয়াত করা। আলেমগণ তারতিলসহ তেলাওয়াত করাকে শরী‘আতের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ দিয়ে বলেন, وَ رَتِّلِ الۡقُرۡاٰنَ تَرۡتِیۡلًا ‘আর কুরআন তেলাওয়াত করুন ধীরে ধীরে (সুন্দরভাবে) (সূরা আল-মুযযাম্মিল: ৪)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ধীরে ধীরে তেলাওয়াত করতেন।(সহীহ বুখারী, হা/৫০৪৬) আল-কুরআনের প্রত্যেকটি আয়াতই মর্যাদাম্পূর্ণ। যা তেলাওয়াত করলে ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং অসংখ্য নেকি অর্জিত হয়। প্রত্যেক আয়াত তেলাওয়াতের যেমন মর্যাদা ও নেকি রয়েছে তেমনি নিদিষ্ট কিছু সূরা তেলাওয়াতের গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত রয়েছে।যারা কুরআনের ক্ষেত্রে দক্ষ,পারদর্শী তারা কেয়ামতের দিন সম্মানিত লেখক ফেরেশতাদের সাথে থাকবেন। আর যে কুরআন পড়ে কিন্তু আটকায় এবং কুরআন পড়া তার পক্ষে খুব কষ্টদায়ক হয়, তাহলে তার জন্য দুইটি নেকী। এই মর্মে হাদীসটি হচ্ছে: আম্মিজান ‘আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) [মৃত: ৫৭/৫৮ হি.] হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:الْمَاهِرُ بِالْقُرْآنِ مَعَ السَّفَرَةِ الْكِرَامِ الْبَرَرَةِ وَالَّذِي يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَيَتَتَعْتَعُ فِيهِ وَهُوَ عَلَيْهِ شاق لَهُ أَجْرَانِ “কুরাআন পাঠে দক্ষ ব্যাক্তি (আখিরাতে) উচ্চ মযাদা সম্পন্ন ফেরেশতাদের সঙ্গী হবে। আর যে ব্যাক্তি কুরাআন পড়ার সময় আটকে যায় এবং কষ্ট করে তিলাওয়াত করে তার জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সওয়াব”।(সহীহ বুখারী হা/ ৪৯৩৭, সহীহ মুসলিম হা/৭৯৮, ইবনু মাজাহ হা/৩৭৭৯) অন্য বর্ণনায় এসেছে,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,وَالَّذِي يَقْرَأُ وَهُوَ يَشْتَدُّ عَلَيْهِ لَهُ أَجْرَانِ ‘আর যে ব্যক্তি কুরআন তেলাওয়াত করে এবং তা তার জন্য কঠিন অনুভূত হয়, তার জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সওয়াব।(সহীহ মুসলিম, হা/৭৯৮)
.
হাদীসটির সরল অর্থ: প্রিয় রাসূল (ﷺ)-এর এ হাদীসটি একদিকে যেভাবে তিলাওয়াতে পারদর্শী ব্যক্তিদের জন্য সুসংবাদ প্রদানকারী ঠিক তেমনি কুরআন পড়তে যাদের কষ্ট হয়, মুখে আটকে যায়, তাদের জন্যও এ বাণী আশা সঞ্চারক এবং উৎসাহব্যঞ্জক। হাদিসটি প্রমাণ করে যে ব্যক্তি পবিত্র কুরআন মাজীদ দক্ষতা ও নির্ভুলতার সাথে তেলাওয়াত করে সে আখিরাতে সম্মানিত ফেরেশতাদের সঙ্গী হবে। আর যে ব্যক্তি ঠিকমত কুরআন তেলোয়াত করতে পারে না এবং পড়ার সময় চেষ্টা করা সত্ত্বেও বারবার আটকে যায়, দ্বিধাগ্রস্ত হয়, যাকে সাধারণত বলা হয় “কুরআন তেলাওয়াতে দুর্বল”। এ ধরনের ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী দুটি সওয়াব। একটি তিলাওয়াতের সওয়াব এবং অপরটি তার দুর্বলতার কারনে বারবার কষ্ট করে তেলোয়াত করার চেষ্টার পুরস্কার”
.
হাদীসটির ব্যাখ্যায় শাফি‘ঈ মাযহাবের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, ইমাম মুহিউদ্দীন বিন শারফ আন-নববী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬৭৬ হি.] বলেছেন:
” الْمَاهِر : الْحَاذِق الْكَامِل الْحِفْظ الَّذِي لَا يَتَوَقَّف وَلَا يَشُقّ عَلَيْهِ الْقِرَاءَة بِجَوْدَةِ حِفْظه وَإِتْقَانه ، وَأَمَّا الَّذِي يَتَتَعْتَع فِيهِ فَهُوَ الَّذِي يَتَرَدَّد فِي تِلَاوَته لِضَعْفِ حِفْظه فَلَهُ أَجْرَانِ : أَجْر بِالْقِرَاءَةِ , وَأَجْر بِتَتَعْتُعِهِ فِي تِلَاوَته وَمَشَقَّته ،
“মাহির” অর্থ হলো সেই ব্যক্তি, যিনি দক্ষ, পারদর্শী, সম্পূর্ণভাবে (কুরআন) হিফয করার কারনে যার ক্বিরআত আটকে যায় না এবং মুখস্থ ও দক্ষতার কারণে পড়তে অসুবিধা বা কষ্ট হয় না। আর তোতলানো ব্যক্তি হলো যে তার স্মৃতিশক্তির দুর্বলতার কারণে (কুরআন) তেলাওয়াত করতে গিয়ে বারবার চেষ্টা করে আটকে যায়। সুতরাং তার জন্য দুটি পুরস্কার রয়েছে: একটি তেলাওয়াতের পুরস্কার, এবং অপরটি তার সৃতি শক্তি দুর্বলতার কারনে বারবার কষ্ট করে তেলোয়াত করার চেষ্টার পুরস্কার”।(ইমাম নববী,শারহু সহীহ মুসলিম, খণ্ড: ৬; পৃষ্ঠা: ৮৪-৮৪, ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১৮৫৮৪৮)
.
ইমাম কারমানী রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: إذا توقف في الكلمات وعَثَرَ؛ أي: لا يُطيعه لسانه في القراءة] “যদি সে থেমে যায় এবং শব্দে হোঁচট খায়, তখন সে তোতলায় অর্থাৎ: পড়ার সময় তার জিহ্বা তার সাধ্যের আওতায় থাকে না”।(শারহু মাসাবিহিস সুন্নাহ;খন্ড: ৩; পৃষ্ঠা: ১০)
.
ইমাম সুয়ূতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: هو الذي يتَرَدَّد فِي تلاوته؛ لضعف حفظِهِ] “এটা সেই ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে, যে তার স্মৃতিশক্তি দুর্বলতার কারণে তার তেলাওয়াতে বারবার পুনরাবৃত্তি করতে থাকে”।(শারহু মুসলিমে; খন্ড: ২; পৃষ্ঠা:৩৯৭)
.
আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী হানাফি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: [التَّعْتَعَةُ في الكلام التردُّد فيه من حَصْرٍ أو عِيٍّ، يقال: تعتع لسانه إذا توقف في الكلام ولم يُطِعْهُ لسانه] ” কথা বলার ক্ষেত্রে তুতলানো অর্থ হচ্ছে, কোন বাধা বা ত্রুটির কারনে কথা বলতে দ্বিধান্নিত হওয়া। বলা হয় تعتع لسانه অর্থাৎ কথা বলতে বলতে আটকে গেছে এবং সঠিকভাবে উচ্চারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে”।(মিরকাতুল মাফাতীহ; ৪/১৪৫৫)
.
তবে জেনে রাখা ভাল যে কষ্টকর হওয়া সত্ত্বেও কুরআন তেলোয়াতে চেষ্টা করা ব্যক্তি দু’টি পুরস্কার পাওয়ার অর্থ এই নয় যে কুরআন অধ্যয়নে পারদর্শী (সর্ববিষয়ে পণ্ডিত) ব্যক্তির চেয়ে তিনি উত্তম। বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মানুষকে কুরআন শিখতে এবং তেলাওয়াত করতে উৎসাহিত করা। চার মাযহাবের ফকীহদের বক্তব্যে এই অর্থই প্রকাশ পায়। সুতরাং কুরআন অধ্যয়নে পারদর্শী ব্যক্তিদের চেয়ে কষ্ট করে অশুদ্ধ কুরআন তেলাওয়াতকারী ব্যক্তি কোনক্রমেই উত্তম নয়। কেননা কুরআনে সর্ববিষয়ে পণ্ডিত ব্যক্তি এবং তেলাওয়াতে দক্ষ ব্যক্তিদের অবস্থান হবে অতীব উন্নত ও সম্মানিত ফেরেশতাদের সাথে এবং তাদের সাওয়াব হবে বহু গুণে উন্নীত। ইবনুত তীন সহ অনেকে বলেন, কোরআন তেলাওয়াতে পারদর্শী ব্যক্তিদের মর্যাদা এত বেশি গুণে উন্নীত যে তা গুণে শেষ করা যাবে না। ‘আল্লামা কুসতুলানী বলেন, কুরআনের দক্ষ ব্যক্তির দক্ষতা অর্জন করতেও অনেক কষ্ট পোহাতে হয়েছে। সুতরাং তার মর্যাদা বেশিই হওয়া স্বাভাবিক। যেমন:
.
কাযী ইয়ায (রাহিমাহুল্লাহ) ও অন্যান্য আলেমগণ বলেছেন:
، قَالَ الْقَاضِي وَغَيْره مِنْ الْعُلَمَاء : وَلَيْسَ مَعْنَاهُ الَّذِي يَتَتَعْتَع عَلَيْهِ لَهُ مِنْ الْأَجْر أَكْثَر مِنْ الْمَاهِر بِهِ , بَلْ الْمَاهِر أَفْضَل وَأَكْثَر أَجْرًا ; لِأَنَّهُ مَعَ السَّفَرَة وَلَهُ أُجُور كَثِيرَة , وَلَمْ يَذْكُر هَذِهِ الْمَنْزِلَة لِغَيْرِهِ , وَكَيْف يَلْحَق بِهِ مَنْ لَمْ يَعْتَنِ بِكِتَابِ اللَّه تَعَالَى وَحِفْظه وَإِتْقَانه وَكَثْرَة تِلَاوَته وَرِوَايَته كَاعْتِنَائِهِ حَتَّى مَهَرَ فِيهِ ؟
“এই হাদিসের অর্থ এই নয় যে, যে ব্যক্তি কুরআন পড়ার সময় বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং তাতে কষ্ট অনুভব করে সে কুরআন তেলোয়াতে পারদর্শী (সর্ববিষয়ে পণ্ডিত) ব্যক্তির তুলনায় বেশি সওয়াব পাবে। বরং পারদর্শী (মাহির) কুরআন পাঠকের মর্যাদা এবং সওয়াব বেশি। কারণ, সে “সাফারা” সম্মানিত ফেরেশতাদের সাথে থাকবেন এবং তার বহুগুণ সওয়াব রয়েছে।অন্য কারো জন্য এই মর্যাদা উল্লেখ করা হয়নি।”যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার কিতাব (কুরআন) অধ্যয়ন, সংরক্ষণ, দক্ষতা অর্জন, বারবার তিলাওয়াত এবং বর্ণনা করার প্রতি যত্নবান নয়, সে কীভাবে তার (কুরআনের প্রকৃত অভিজ্ঞ এবং পারদর্শী ব্যক্তির) সমপর্যায়ে পৌঁছতে পারে, যে এ বিষয়ে অত্যন্ত যত্নবান এবং এতে দক্ষতা অর্জন করেছে?”((ইমাম নববী,শারহু সহীহ মুসলিম, খণ্ড: ৬; পৃষ্ঠা:৮৪-৮৪, ইসলামি সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১৮৫৮৪৮)
.
ইমাম ইবনু মালাক কারমানী হানাফী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: [هذا تحريضٌ على القراءة، وليس معناه أن أجرَه أكثرُ من أجر الماهر، فكيف ذلك وهو مع السَّفَرة الكِرَام البَرَرَة؟!] “এটি তেলাওয়াত করার জন্য একটি উৎসাহমূলক কথা। এর অর্থ এই নয় যে তার পুরষ্কার দক্ষ (কুরআনের সর্ববিষয়ে পণ্ডিত) ব্যক্তির পুরষ্কারের চেয়ে বেশি।এটা কিভাবে সম্ভব! কেননা সে তো থাকবে পুত পবিত্র সন্মানিত ফেরেস্তাদের সাথে”।(শারহুল মাসাবিহ ৩/১১)
.
ইমাম আবুল আব্বাস কুরতুবী মালেকী (রাহিমাহুল্লাহ) “আল মুফহাম” এ বলেন:ودرجاتُ الماهر فوق ذلك كله؛ لأنه قد كان القرآن مُتعتعًا عليه، ثم ترقَّى عن ذلك إلى أن شُبِّه بالملائكة] “দক্ষ ব্যক্তির স্তর সব কিছুর ঊর্ধ্বে, কারণ কুরআন তেলাওয়াত তার জন্য কঠিন ছিল অতঃপর সে অবস্থা থেকে উন্নতি হয়েছে অবশেষে তাকে ফেরেশতাদের সাথে তুলনা করা হয়েছে”।(আল মুফহাম: খন্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৪২৪)
.
ইমাম মুহিউদ্দীন বিন শারফ আন-নববী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬৭৬ হি.] বলেছেন: [ليس معناه الذي يتتعتع عليه -له من الأجر أكثرُ من الماهر به، بل الماهر أفضل وأكثر أجرًا؛ لأنه مع السفرة وله أجور كثيرة] “এর মানে এই নয় যে, তোতলানো ব্যক্তি (কুরআন তেলাওয়াতে) পারদর্শী ব্যক্তির চেয়ে বেশি পুরষ্কার পায়। বরং যে পারদর্শী সে উত্তম এবং তার পুরস্কারও বেশি। কেননা সে সন্মানিত ফোরেস্তাদের সাথে থাকবে এবং তার জন্য অনেক পুরস্কার”।(ইমাম নববী, শারহু সহীহ মুসলিম, খণ্ড: ৬; পৃষ্ঠা: ৮৫)
.
ইমাম আবুল ফারাজ ইবনুল জাওযী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:ربَّما تخايل السامع في قوله: «لَهُ أَجْرَانِ» أنه يزيد على الماهر، وليس كذلك؛ لأن المضاعفة للماهر لا تُحصر، فإن الحسنة قد تضاعف إلى سبعمائة وأكثر، فإنما الأجر شيء مقدر، فالحسنة لها ثوابٌ معلوم، وفاعلها يعطى ذلك الثواب مضاعفًا إلى عشر مرات، ولهذا المقصر منه أجران]”সম্ভবত শ্রোতা যখন শুনে “তার জন্য দ্বিগুণ প্রতিদান” তখন মনে হতে পারে যে এটি দক্ষ পাঠকের তুলনায় বেশি, কিন্তু বিষয়টি এমন নয়। কারণ দক্ষ পাঠকের জন্য রয়েছে বহুগুন বেশি পুরস্কার যার কোন সীমা নেই। কেননা একটি নেকি সাতশো গুণ বা তার বেশি হতে পারে। পক্ষান্তরে, “নিদিষ্ট প্রতিদান” হলো নির্দিষ্ট একটি বিষয়। একটি সৎকর্মের নির্দিষ্ট প্রতিদান রয়েছে, আর সেই সৎকর্ম সম্পাদনকারীর জন্য এটি দশ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়। তাই, দক্ষ পাঠকের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম দক্ষ পাঠকের জন্য এখানে দ্বিগুণ প্রতিদান দেওয়া মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে”।(ইবনুল জাওযী “কাশফুল মুশকিল; খন্ড: ৪; পৃষ্ঠা: ৩৬৫)
.
পরিশেষে প্রিয় পাঠক! উপরোক্ত আলোচনা থেকে এ কথাই পরিষ্কার যে মহাগ্রন্থ আল কুরআন আসমানের নিচে সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদাবান কিতাব এবং কুরআন তেলাওয়াত করা অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ ইবাদাত। সুতরাং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অধিক পরিমাণে কুরআন তেলোয়াতকারী, মুখস্থকারী, সংরক্ষণকারী, কুরআনের প্রতি যত্নশীল ব্যাক্তি পরকালে উচ্চ মর্যাদার অধিকারী হবেন। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত কুরআন শিক্ষা করা, কুরআন তিলাওয়াতে মনোযোগী হওয়া, কষ্টকর হওয়া শর্তেও বারবার তিলাওয়াতের চেষ্টা করা এবং কুরআনের বিধিবিধান অনুযায়ী আমল করা।মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে কুরআন শিক্ষা করা, কুরআনের হক আদায় করা, সেই সাথে আমাদের সন্তান-সন্ততিকে কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করা ও কুরআনের ধারক ও বাহক হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন! (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
▬▬▬▬▬▬✿▬▬▬▬▬▬
উপস্থাপনায়: জুয়েল মাহমুদ সালাফি
সম্পাদনায়: আব্দুল্লাহিল হাদি বিন আব্দুল জলিল আল মাদানী (হাফিজাহুল্লাহ)।
লিসান্স, মদীনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।