আল্লাহ কোথায় আছেন…..?
বুখারী (তাঁর সহীহ গ্রন্থে) কিতাবুত তাওহীদে আবুল আলিয়াহ ও মুজাহিদ হতে এই আয়াতের ব্যাখ্যা বর্ণনা করেছেন
ثم استوى إلى السماء ) (অত:পর তিনি আকাশের প্রতি আরোহণ করেন ) অর্থাৎ উপরে উছেন .
বিদায়ী হজ্জের আরাফার দিনে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তাঁর ভাষণে বলেন ” শুনো ! আমি কি পৌছে দিলাম? ” সকলে বললো হা ‘
(অতপর ) তিনি আকাশের দিকে অঙ্গুলি উঠিয়ে বললেন হে আল্লাহ সাক্ষী থাকুন (মুসলিম )
তোমরা আমাকে বিশ্বাস করনা কি ? অথচ আমি তাঁর নিকট বিশ্বস্ত যিনি আকাশের উপর আছেন …. আমার নিকট সকাল সন্ধ্যা আকাশের খবর আসে (বুখারী ও মুসলিম )
ইমাম আবু হানিফাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি বলে যে,
‘জানি না আমার প্রতিপালক আকাশে আছেন
নাকি পৃথিবীতে’ সে অবশ্যই কাফের হয়ে যায়।
যেহেতু আল্লাহ বলেন, “দয়াময় আল্লাহ
আরশে আরোহণ করলেন।” আর তাঁর আরশ
সপ্তাকাশের উপরে। আবার সে যদি বলে,
‘তিনি আরশের উপরেই আছেন’, কিন্তু বলে,
‘জানি না যে, আরশ
আকাশে আছে নাকি পৃথিবীতে’-তাহলেও
সে কাফের। কারণ সে একথা অস্বীকার করে যে,
তিনি আকাশে আছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি তাঁর
আরশে থাকার কথা অস্বীকার করে, সে অবশ্যই
কাফের হয়ে যায়। যেহেতু আল্লাহ সকল সৃষ্টির
ঊর্ধে আছেন এবং উপর দিকে মুখ
করে তাঁকে ডাকা হয়(দু’আ করা হয়), নিচের
দিকে মুখ করে নয়’। (শারহুল আক্বীদাতিত্ব
ত্বাহাবিয়াহ ৩২২ পৃ, আল ফিকহুল আবসাত্ব ৪৬ পৃ,
ইতিক্বাদু আইম্মাতিল আরবাআহ ১/৬)
আল্লাহ কিভাবে আরশে সমারূঢ় ? এ বিষয়ে ইমাম মালেক জিজ্ঞাসিত হলে তিনি বলেছিলেন , ” আরোহণ করা বিদিত, এবং কেমনত্ব অবিদিত, এর প্রতি ঈমান (বিশ্বাস)রাখা ওয়াজেব এবং এর কেমনত্ব প্রসঙ্গে প্রশ্ন তলা বিদআত . এই (প্রশ্ন কারী )বিদআতিক ( আমার মজলিস থেকে বের করে দাও !
ইমাম শাফীঈ(রাহিমাহুল্লাহ)জোরালো অভিমত
ব্যক্ত করেন এ প্রসঙ্গেঃ
“আল্লাহ্তালার আরশে অধিষ্ঠিত
হওয়া এবং আল্লাহ্র হাত,পা ইত্যাদি যা তাঁর
সিফাত বলে বিবেচ্য আর তা কোরআন ও সহীহ
সূত্রে সুন্নাহ দ্বারা প্রমানিত হওয়ার পরও
যদি কোন ব্যক্তি বিরোধিতা করে,অস্বীকার
করে ,নিষ্ক্রিয় করে তবে সে অবশ্যই কাফের
বলে গন্য হবে।
তিনি আরও বলেনঃ
“আমরা আল্লাহ্র গুণাবলী স্বীকার করি ও বিশ্বাস
করি তবে সৃষ্টির কোন কিছুর সাথে আল্লাহ্র
গুনাবলীর কোন আকার সাব্যস্ত করিনা,সাদৃশ্য
(তুলনা)করিনা। কেননা আল্লাহ্ নিজেই তাঁর
সাদৃশ্যের বিষয়টি বাতিল করে দিয়েছেন এ
বলে-
“(সৃষ্টি জগতের) কোন কিছুই তাঁর সদৃশ
নয়।” (সূরা-শুরা,আয়াত-১১)
-সিয়ারে আলামিন নুবালা-১০ম
খণ্ড,পৃষ্ঠা নং,-৮০;আর দেখুন আইনুল মাবুদ-১৩তম
খণ্ড পৃষ্ঠা নং-৪১;তাবাকতে হানাবিল ১ম খণ্ড
পৃষ্ঠা নং-২৮৩-
ইমাম আওয়াজী বলেন , বহু সংখ্যক তাবেইন বর্তমান থাকা কালীন সময়ে-ও আমরা বলতাম “আল্লাহ জাল্লা যিকরূহ আরশের উপর আছেন . তার যে সমস্ত সিফাত (গুনাবলী )র বর্ণনা (হাদীসে) এসেছে আমরা তাতেই ঈমান (বিশ্বাস ) রাখি ” . ( এটাকে বাইহাকী সহীহ সনদ দ্বারা বর্ণনা করেছেন , দেখুন ফতহুল বাড়ি )
ইনমে কাইয়েম আল -যাওযিযাহ বলেন, আল্লাহ ইয়াহুদকে حطة ‘হিত্ত্বাহ ‘ বলতে আদেশ করেছিলেন কিন্তু ইয়াহুদ তা বিকৃত করে حنطة ‘হিনত্বাহ’ বলেছিলো . আল্লাহ আমাদের জানিয়েছেন যে তিনি استوي علي العرش ‘ ইসতাওয়া আলাল আরশ ‘ (আরশে আরহন করেন )কিন্তু অপব্যাখাকারী বলে استولي ইসতাওলা ( ক্ষমতা ও আধিপত্য বিস্তার করেন) সুতুরাং লক্ষ্য করুন এদের বর্ণিত ل এর সহিত ইয়াহুদীদের বর্ধিত ن এর কী মিল রয়েছে !!! ( আতিক মুহাম্মদ আল আমীন শানক্বিত্বী ইবনে কাযেম আল – জাওযিযাহ থেকে বর্ণনা করেছেন )
আল্লাহর আকার না নিরাকার ?
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের জন্য। দরূদ ও সালাম অবতীর্ণ হোক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উপর।
►►►►►►মহান আল্লাহ্ আকাশে এবং আরশে আছেন◄◄◄◄◄◄
►আল্লাহ বলেন,
أَمْ أَمِنتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ
“তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ যে, যিনি আকাশে আছেন তিনি তোমাদের উপর প্রস্তর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন না, অতঃপর তোমরা জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী।” (সূরা মুলকঃ ১৭)
►নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোগীকে ঝাড়-ফুঁক করার হাদীছে বলেনঃ
رَبُّنَا اللَّهُ الَّذِي فِي السَّمَاءِ
“আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। যিনি আকাশে আছেন।” [- আবু দাঊদ, অধ্যায়ঃ কিতাবুত্ তিব্ব]
►তিনি আরো বলেন,
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا مِنْ رَجُلٍ يَدْعُو امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهَا فَتَأْبَى عَلَيْهِ إِلَّا كَانَ الَّذِي فِي السَّمَاءِ سَاخِطًا عَلَيْهَا حَتَّى يَرْضَى عَنْهَا
“ঐ সত্বার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে, কোন পুরুষ তার স্ত্রীকে বিছানায় আসার জন্য ডাক দিলে স্ত্রী যদি বিছানায় যেতে অস্বীকার করে তাহলে যিনি আকাশে আছেন, স্বামী সন্তুষ্ট হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি অসন্তুষ্ট থাকেন।” [-মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুন নিকাহ]
►আল্লাহ আকাশের উপরে আছেনঃ
وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ
“তিনিই মহা প্রতাপশালী স্বীয় বান্দাদের উপরে আছেন।” (সূরা আনআ’মঃ ১৮)
تَعْرُجُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ إِلَيْهِ
“ফেরেশতাগণ এবং রূহ আল্লাহ তাআ’লার দিকে উর্ধ্বগামী হয়।” (সূরা মা’আরিজঃ ৪)
يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مِنْ السَّمَاءِ إِلَى الْأَرْضِ ثُمَّ يَعْرُجُ إِلَيْهِ
“তিনি আকাশে থেকেই জমিনে সকল কর্ম পরিচালনা করেন।” (সূরা সেজদাঃ ৫) আল্লাহর বাণী,
►নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরাফার মাঠে ভাষণ দেয়ার সময় আল্লাহকে স্বাক্ষী রেখে আকাশের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তিনি উপস্থিত সাহাবীদেরকে লক্ষ্য করে বলেছেন, ((ألا هل بلغت؟ আমি কি তোমাদের কাছে দাওয়াত পৌঁছিয়ে দিয়েছি? উপস্থিত জনতা এক বাক্যে স্বীকার করল, হ্যাঁ আপনি আপনার দায়িত্ব যথাযথভাবে পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, (أللهم اشهد) হে আল্লাহ! আপনি স্বাক্ষী থাকুন। এ কথা বলতে বলতে তিনি উপরের দিকে আঙ্গুল উঠিয়ে ইশারা করতে লাগলেন এবং মানুষের দিকে তা নামাতে লাগলেন। এ হাদীছটি মুসলিম শরীফে যাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীছটিতে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ আকাশে। তা নাহলে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপরের দিকে হাত উঠিয়ে ইশারা করা অনর্থক বলে সাব্যস্ত হবে।
►নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জনৈক দাসীকে প্রশ্ন করেছেন, আল্লাহ কোথায়? দাসী বলল, আকাশে। এ কথা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
أَعْتِقْهَا فَإِنَّهَا مُؤْمِنَةٌ
“তাকে মুক্ত করে দাও। কেননা সে ঈমানদার।”[মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল মাসাজিদ]
হাদীছটি সহীহ্ মুসলিমে বর্ণিত মুআবীয়া বিন হাকাম আস্ সুলামী (রাঃ) এর দীর্ঘ হাদীছের অংশ বিশেষ।
এটি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন স্বীয় সত্বায় উপরে হওয়ার ব্যাপারে আরো সুস্পষ্ট দলীল। কেননা (أين) শব্দটি দিয়ে কোন বস্তুর অবস্থান সম্পর্কেই জিজ্ঞাসা করা হয়ে থাকে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মহিলাটিকে আল্লাহ কোথায়- এ কথা জিজ্ঞাসা করলেন, তখন মহিলাটি বললঃ তিনি আকাশে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার এ কথাকে মেনে নিলেন এবং বললেনঃ এটাই ঈমানের পরিচয়। তাকে মুক্ত করে দাও। কারণ সে ঈমানদার। সুতরাং যতক্ষণ কোন মানুষ আল্লাহ উপরে হওয়ার বিশ্বাস না করবে এবং এ কথার ঘোষণা না দিবে ততক্ষণ সে ঈমানদার হতে পারবে না।
►►►►►►আল্লাহ তাআ’লা সুউচ্চ আরশের উপরে আছেন◄◄◄◄◄◄
আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান- একথা ঠিক নয়, বরং পবিত্র কুরআন বলছে, আল্লাহ আরশে সমাসীন।
►এ মর্মে বর্ণিত দলীলগুলো নিম্নরূপ-
إِنَّ رَبَّكُمُ اللهُ الَّذِيْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِيْ سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ.
‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক হচ্ছেন সেই আল্লাহ যিনি আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন’ (আ‘রাফ ৭/৫৪)
►اللَّهُ الَّذِي رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ۖ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ
‘আল্লাহই ঊর্ধ্বদেশে আকাশমন্ডলী স্থাপন করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত- তোমরা এটা দেখছ। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হ’লেন’(রা’দঃ ১৩/২)
►আরো দেখুন মহান আল্লাহ আরশে সমাসীনঃ (ইউনুস ১০/৩),(ত্ব-হা ২০/৫),(ফুরক্বান ২৫/৫৯),(সাজদাহ ৩২/৪),(হাদীদ ৫৭/৪)
►►►►►►আল্লাহর আরো অনান্য আকার বিষয়ে বর্ণনা◄◄◄◄◄◄
►রাসুল (সাঃ) এর হাদীসে আছে, “তিনি (মহান আল্লাহ) দর্শন হতে পর্দাবৃত্ত। যদি তিনি তার মুখমণ্ডলের প্রকাশ করতেন, তাহলে তার মুখমণ্ডলের সৌন্দর্য, মহত্ব ও আলোকবর্তিকা সৃষ্টির প্রতি যতদুর তার দৃষ্টি নিবন্ধ হয়-সকল সৃষ্টিকে জালিয়ে দিত।” (সহীহ মুসলিম)
►আল্লাহর চেহারা, হাত, চোখ, পায়ের গোড়ালী,হাতের মুষ্টি রয়েছে দেখুনঃ-
সূরাঃ আর-রহমান ২৬-২৭, কিয়ামা ২২-২৩, আল ক্বাসাসঃ ৮৮, ত্বহা ৩৯ ,ক্বলাম ৪২ ও যুমার ৬৭ ইত্যাদি আয়াত নং এ দেখুন।
►ইমাম আবু হানীফা (রঃ) বলেনঃ
আল্লাহ্র আকার সম্পর্কে ইমাম আবূ হানিফার (রহঃ) বলেনঃ আল্লাহর চেহারা ও নাফস আছে, যেমনটা আল্লাহ কুরাআনে বর্ননা করেছেন। কুরাআনের বর্ণনায় আল্লাহর চেহারা,হাত,নাফসের যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে তা তাঁর সিফাত (বৈশিষ্ট)। আমরা তারঁ ঐ সকল বৈশিষ্ট্যের বিস্তারিত জানি না। তবে কেউ যেন আল্লাহর হাতকে কুদরতি হাত বা তাঁর নিয়ামত না বলে, কেননা তাঁর সিফাত কে অস্বীকার করা হয়।
(দেখুনঃ ইমাম আবূ হানিফার, ফিকহুল আকবার পৃঃ ৫৪৮-৫৯,ইবনু আবিল ইজ্জ্ব, মুআসসাতুর রিসালাহ-বাইরুত/২৬৪ পৃঃ)
এরকম আরো অনেক কুরাআনের আয়াত ও সহীহ হাদিস আছে।প্রয়োজনে চাইলে আরো দেয়া হবে ইনশাল্লাহ।
►►আর অবশ্যই আমরা এই বিশ্বাস রাখবো যে আল্লাহর আকার রয়েছে। কেমন রয়েছেন তিনি আল্লাহই ভালই জানেন। যেহেতু সুরাঃ ইখলাসে আল্লাহ্ বলছেন তার সাদৃশ্য কোন কিছুই নেই। তাই ঐসব জিনিস তারই মতই রয়েছে।যা কোন কিছুর সাথে মিলবে না। কেমন রয়েছে আল্লাহ্ই ভাল জানেন।
►►►►তাই আপনাদের বলছি যাদের আকীদায় এখনো গলদ এখনো সময় আছে তওবা করেন এবং ঐ কুরাআন ও সহীহ হাদিসের উল্টা বর্ণনা বাদ দিয়ে বিভিন্ন ফিতনা প্রচার বাদ দিয়ে শুধু মাত্র আল্লাহর ও রাসূল (সাঃ) এর দেখাণো পথে ফিরে আসুন।
“কিন্তু না তোমার রবের কসম, তারা মুমিন হবে না যতক্ষন না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক নির্ধারন করে, তারপর তুমি যে ফায়সালা দেবে সে ব্যাপারে নিজেদের অন্তরে কোন সংকীর্নতা অনুভব না করে এবং পূর্ণ সম্মতিতে মেনে নেয়”। (সূরাঃ আন-নিসা ৪/৬৫)
وَمَن يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءتْ مَصِيرًا
“যে ব্যক্তি সঠিক পথ প্রকাশিত হওয়ার পরও রাসুলের বিরোধিতা করে এবং মুমিনদের পথ বাদ দিয়ে ভিন্ন পথ অনুসরণ করে,আমি তাকে সে পথেই ফিরাব যে,সে ফিরে যায়,আর তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করব,কত মন্দই না সে আবাসস্থল”। (সূরাঃ আন-নিসা ৪/১১৫)।
=======================
=======================
=======================
প্রশ্ন :-আল্লাহ কি নিরাকার ?উত্তর : “যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে, অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান”। (জুমার ১৮)কোরআন ও সহীহ হাদীস থেকে আল্লাহ্ সুবাহানাহুয়াতালার আকার রয়েছে তা প্রমানিতকোরআন মাজিদের বিভিন্ন আয়াত ও রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর হাদিসে আল্লাহ্ সুবাহানাহুয়াতালার চেহারা,হাত,পা,চক্ষু,যাত বা সত্তা, সুরাত বা আকারের উল্লেখ হয়েছে যার অর্থ স্পষ্ট । এর মাধ্যমে আল্লাহ্র নির্দিষ্ট আকার আকৃতি আছে বলে পাওয়া যায়। যারা বলে আল্লাহ্ নিরাকার তারা মূলত কোরআনের এসব আয়াতকে অস্বীকার করার মত স্পর্ধা প্রদর্শন করে থাকে। কারন যিনি নিরাকার তাঁর এসব কিছু থাকার কথা নয়। আল্লাহতাআলা বলেনঃ
“তারা আল্লাহ্র যথার্থ মর্যাদা নিরুপন করতে পারেনি। কিয়ামতের দিন সমগ্র পৃথিবী তাঁর হাতের মুঠোতে থাকবে।”[সূরা-যুমার,আয়াত-৬৭]আল্লাহ্ রব্বুল আলামিন বলেনঃ
(কিয়ামতের দিন) ভূপৃষ্ঠের সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে । (হে রাসুল) আপনার মহিমাময় ও মহানুভব রবের চেহারা অর্থাৎ সত্ত্বাই একমাত্র বাকি থাকবে। [আর-রাহমান-২৬-২৭]আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
“হে ইবলিস , তোমাকে কোন জিনিসটি তাকে সেজদা করা থেকে বিরত রাখল যাকে আমি স্বয়ং নিজের হাত দিয়ে বানিয়েছি,তুমি কি এমনি ওদ্ধত্ত প্রকাশ করলে,না তুমি উচ্চমর্যাদা সম্পূর্ণ কেউ” [সূরা-সদ,আয়াত-৭৫]
আল্লাহ্ সুবাহানাহুয়াতালা বলেনঃ
“বরং তাঁর দু হাতই প্রসারিত,যেভাবে ইচ্ছা তিনি দান করেন।” [সূরা-সদ-৬৪]
আল্লাহ্ সুবাহানাহুয়াতালা আরও বলেনঃ
“বল -অনুগ্রহ আল্লাহ্রই হাতে” [সূরা-আলে ইমরান-৭৩]
অথচ আল্লাহ্ সুবাহানাহুয়াতাআলা কোরআনে
“সেদিন কোন কোন মুখ খুব উজ্জল হবে । তারাই হবে তাদের প্রতিপালকের দর্শনকারী” [সুরা-আল-কিয়ামাহ, আয়াত-২৩]
আল্লাহ্ সুবাহানাহুয়াতাআলা বলেনঃ
“দৃষ্টি শক্তি তাকে প্রত্যক্ষ করতে পারে না বরং তিনিই দৃষ্টি শক্তিকে প্রত্যক্ষ করেন এবং তিনিই দৃষ্টি শক্তিকে প্রত্যক্ষ করেন এবং তিনি সুক্ষদরশি,সম্যকপরিজ্ঞাত ।” [সূরা-আনআম,আয়াত-১০৩]
আল্লাহ্ সুবাহানাহুয়াতাআলা বলেনঃ
“আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, তাঁর মুখমণ্ডল ব্যতীত সব কিছুই ধ্বংসশীল ।” [সূরা-আল কাসাস, আয়াত-৮৮]
আল্লাহ্ সুবাহানাহুয়াতাআলা নবী মূসা(আঃ)কে লক্ষ্য করে বলছেনঃ
“আমি আমার নিকট থেকে তোমার উপর ভালবাসা ঢেলে দিয়েছিলাম যাতে তুমি আমার চোখের সামনে প্রতিপালিত হও।” [সূরা-ত্বহা, আয়াত-৩৯]
এমনিভাবে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে স্বান্তনা দিতে গিয়ে বলেনঃ
“আপনি আপনার রবের নির্দেশের অপেক্ষায় ধৈর্যধারন করুন আপনি আমার চোখের সামনেই রয়েছেন।” [সূরা-আত-তূর, আয়াত-৪৮]
আল্লাহ্ বলেনঃ
“নিশ্চয়ই আল্লাহ্ শ্রবণ করেন ও দেখেন ।” [সূরা-মুজাদালাহ, আয়াত-১]
আল্লাহ্ সুবাহানাহুয়াতালা বলেনঃ
আল্লাহ্র সাদৃশ্য কোন বস্তুই নেই এবং তিনি শুনেন ও দেখেন ।” [সূরা-আশ-শুরা, আয়াত-১১]
“কিয়ামতের দিনে আল্লাহর হাঁটুর নিম্নাংশ উন্মোচিত করা হবে এবং সাজদা করার জন্য সকলকে আহবান করা হবে, কিন্তু তারা তা করতে সমর্থ হবে না ।” [সুরা-কালাম,আয়াত-৪২]
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্র রসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর হাদীসে বর্ণিত হয়েছেঃ
উমর(রাঃ)হতে বর্ণিত, রসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বলেছেনঃ
“কিয়ামতের দিন আল্লাহপাক সমস্ত আকাশমণ্ডলীকে ভাঁজ করবেন অতঃপর সেগুলোকে ডান হাতে নিয়ে বলবেন,আমি হচ্ছি শাহানশাহ(মহারাজা)অত্যাচারী আর যালিমরা কোথায় ?অহংকারীরা কোথায় ? [মুসলিম]
রসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বলেন,
“পাহাড়-পর্বত এবং বৃক্ষরাজি এক আঙ্গুলে থাকবে,তারপর এগুলোকে ঝাঁকুনি দিয়ে তিনি বললেন,আমিই রাজাধিরাজ আমিই আল্লাহ্।” [মুসলিম]
অপর এক বর্ণনায় রসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বলেন-
“আল্লাহ্ সমস্ত আকাশমণ্ডলীকে এক আঙ্গুলে রাখবেন,পানি এবং ভু-তলে যা কিছু তা এক আঙ্গুলে রাখবেন।”[বুখারী ও মুসলিম]
আবু সাইয়ীদ আল-খুদরী(রাঃ)বলেন,যে আমি রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে বলতে শুনেছিঃ
আমাদের প্রতিপালক (আল্লাহ্) কিয়ামতের দিনে তাঁর হাঁটুর নিম্নাংশ প্রকাশ করে দেবেন, প্রত্যেক মুমিন, মুমিনা তাতে সাজদা করবেন এবং যে ব্যক্তি দুনিয়াতে লোক-দেখান ও সম্মানের জন্য তা করত সে সাজদা করতে গেলে তাঁর পিঠ সমান হয়ে ফিরে আসবে(বা সিজদা করতে সমর্থ হবেনা)। [বুখারী,মুসলিম,তিরমিযী,আহমদ]
এ সকল কোরআনের আয়াত ও হাদীস আল্লাহ্ রব্বুল আলামীন যে নিরাকার নন
তার অকাট্য প্রমান করে বর্ণনা করে । আল্লাহর সিফাতকে তাঁর কোন মাখলুকের সাথে সাদৃশ্য না করে তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে । সর্বপরি নিরাকার কথাটি কোরআন ও সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত নয় । বরং হিন্দু সংস্কৃতি থেকে আমদানীকৃত বটে । কোন কল্পনার আশ্রয় না নিয়ে কিংবা প্রকৃত স্বরূপ জানতে না চেয়ে এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে ।
• এ প্রসঙ্গে ইবনে কাসীর(রহঃ) বলেছেনঃ
“আল্লাহ্ তা’আলা আরশের উপর সমাসীন,
কোন অবস্থা ও সাদৃশ্য স্থাপন ছাড়াই তার উপর বিশ্বাস রাখতে হবে । কোন জল্পনা কল্পনা করা চলবে না,
যার দ্বারা সাদৃশ্যের চিন্তা মস্তিস্কে এসে যায় ; কারন এটা আল্লাহ্র গুনাবলী হতে বহুদুরে। মোটকথা, যা কিছু আল্লাহতাআলা বলেছেন ওটাকে কোন খেয়াল ও সন্দেহ ছাড়াই মেনে নিতে হবে কোন চুল চেরা করা চলবে না । কেননা মহান আল্লাহ্ রব্বুল আলামীন কোন কিছুর সাথে সাদৃশ্য যুক্ত নন । [তাফসীর ইবনে কাসীর]
এ প্রসঙ্গে ইমাম আবু হানিফা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ
“ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্র যে সমস্ত সিফাত (গুন)বর্ণিত হয়েছে যেমন-আল্লাহ্র হাত,পা,চেহারা,নফস ইত্যাদি আমরা তা দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি। স্বীকার করি এগুলো হচ্ছে তাঁর সিফাত বা গুণাবলী।
আমরা যেমন কখনও আল্লাহ্র সিফাত সম্পর্কে এ প্রশ্ন করিনা বা করবোনা যে,এ সিফাতগুলো (হাত,পা,চেহারা,চোখ ইত্যাদি) কেমন,কিরুপ বা কিভাবে,কেমন অবস্থায় আছে,তেমনি আল্লাহ্র সিফাতের কোন নিজস্ব ব্যাখ্যা বা বর্ণনা দিতে যাইনা। কেননা তিনি তা বর্ণনা করেন নাই।
যেমন-আমরা একথা কখনো বলিনা যে,
আল্লাহ্র হাত হচ্ছে তাঁর কুদরতি হাত,শক্তিপ্রদ পা বা তাঁর নিয়ামত।
এ ধরনের কোন ব্যাখ্যা দেয়ার অর্থ হল আল্লাহ্র প্রকৃত সিফাতকে অকার্যকর করা বা বাতিল করে দেয়া বা অর্থহীন করা । আল্লাহ্র হাতকে আমরা হাতই জানবো এর কোন বিশেষণ ব্যবহার করবো না। কুদরতি হাত রূপে বর্ণনা করবোনা । কোন রকম প্রশ্ন করা ছাড়াই যেরূপ কোরআনে বর্ণিত হয়েছে হুবুহু সে রকমই দ্বিধাহীনে বিশ্বাস করি”। [আল ফিকহুল আকবার]
• আবু মুতি আল হাকাম ইবনে আব্দুল্লাহ আল বালাখি বলেনঃ
আমি ইমাম আবু হানিফা (রাহিমাহুল্লাহ)কে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে কেউ যদি বলে যে, আমি জানিনা আল্লাহ্ কোথায় -আসমানে না পৃথিবীতে, তাহলে তার সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? প্রত্যুত্তরে তিনি বলেছেন-সে কাফের,কেননা আল্লাহ্ বলেছেন,
“পরম করুণাময় (রাহমান)আরশের উপর সমাসীন। (সুরা-ত্ব হা-৫)
• আবু মুতি বলেছেন, অতঃপর আমি তাঁকে(ইমাম আবু হানিফাকে)জিজ্ঞেস করেছিলাম যে কেউ যদি বলে যে,আল্লাহ্ উপরে অধিষ্ঠিত,কিন্তু আমি জানিনা আরশ কোথায় অবস্থিত আকাশে না পৃথিবীতে তাহলে তার সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? প্রত্যুত্তরে তিনি বলেছেন- যদি সে ব্যক্তি “আল্লাহ্ আকাশের উপরে “এ কথা অস্বীকার করে তা হলে সে কাফের। (শারহুল আকিদাহ আত তাহাওইয়াহ লি ইবনে আবিল ইজ আল হানাফি পৃষ্ঠা নং-২২৮)
• ইমাম মালিক(রাহিমাহুল্লাহ)বলেনঃ
“ “আল্লাহ্র হাত”বলতে আল্লাহ্র হাতই বুঝতে হবে,এর কোন রুপক(মাজাযী)অর্থ করা যাবেনা,মাজাযী(রুপক)বর্ণনা দেয়া যাবে না। আল্লাহ কেমন,কিসের মত এরকম প্রশ্ন করা বিদআত এমনকি তাঁর হাত বিশেষণে ভূষিত করে,কুদরতি হাত বলাও যাবেনা কেননা কোরআনে ও সহীহ হাদীসে এভাবে বর্ণনা নাই ”। (আল আসমা ওয়াস সিফাত পৃষ্ঠা নং-৫২৬)
আল্লাহ্র আরশে অধিষ্ঠিত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেনঃ
“আল্লাহ্ আরশে অধিষ্ঠিত একথা জানি, কিভাবে অধিষ্ঠিত তা জানিনা।
এর উপর দৃঢ় ঈমান পোষণ করা ওয়াজিব
এবং এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা বিদআত।”
ইমাম মালিক(রাহিমাহুল্লাহ)আরও বলেনঃ
“আল্লাহ্ তাঁর আরশে অধিষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে যতটুকু বর্ণনা দিয়েছেন তার বাইরে কোন প্রশ্ন করা নিষিদ্ধ ।আল্লাহ্ আরশে কিভাবে,কেমন করে সমাসীন বা উপবিষ্ট আছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ্তাআলা আমাদেরকে অবহিত করেননি। তাই এ বিষয়টির কাইফিয়াত আমাদের কাছে সম্পূর্ণ অজ্ঞাত।”
-আল্লামা ইবনে হাজর(রাহিমাহুল্লাহ)ফাতহ গ্রন্থে(১৩তম খণ্ড পৃষ্ঠা নং ৪০৬) বলেছেন,উপরক্ত বর্ণনার সনদ বিশুদ্ধ-
ইমাম শাফীঈ(রাহিমাহুল্লাহ)জোরালো অভিমত ব্যক্ত করেন এ প্রসঙ্গেঃ
“আল্লাহ্তালার আরশে অধিষ্ঠিত হওয়া এবং আল্লাহ্র হাত,পা ইত্যাদি যা তাঁর সিফাত বলে বিবেচ্য আর তা কোরআন ও সহীহ সূত্রে সুন্নাহ দ্বারা প্রমানিত হওয়ার পরও যদি কোন ব্যক্তি বিরোধিতা করে,অস্বীকার করে ,নিষ্ক্রিয় করে তবে সে অবশ্যই কাফের বলে গন্য হবে।
তিনি আরও বলেনঃ
“আমরা আল্লাহ্র গুণাবলী স্বীকার করি ও বিশ্বাস করি তবে সৃষ্টির কোন কিছুর সাথে আল্লাহ্র গুনাবলীর কোন আকার সাব্যস্ত করিনা,সাদৃশ্য(তুলনা)করিনা। কেননা আল্লাহ্ নিজেই তাঁর সাদৃশ্যের বিষয়টি বাতিল করে দিয়েছেন এ বলে-
“(সৃষ্টি জগতের) কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়।” (সূরা-শুরা,আয়াত-১১)
-সিয়ারে আলামিন নুবালা-১০ম খণ্ড,পৃষ্ঠা নং,-৮০;আর দেখুন আইনুল মাবুদ-১৩তম খণ্ড পৃষ্ঠা নং-৪১;তাবাকতে হানাবিল ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা নং-২৮৩-
• ইমাম আহমদ বিন হাম্বল(রহঃ)বলেছেনঃ
“আল্লাহ্র আসমা ও সিফাতগুলো সম্পর্কে কোরআন ও সহীহ হাদীসগুলোতে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে এগুলোকে ঠিক সেভাবে সে পর্যায়েই রাখা উচিৎ । আমরা এগুলো স্বীকার করি ও বিশ্বাস করি এবং আল্লাহ্র সিফাতের কোন সাদৃশ্য করি না । আর এটাই হচ্ছে বিচক্ষন ও বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামের অনুসৃত নীতি ”। [-ইবনুল জাওযী প্রনীত মুনাক্বীবে ইমাম আহমদ , পৃষ্ঠা নং-১৫৫-১৫৬]
ইমাম আহমদ (রহঃ)আরও বলেনঃ
“কোরআন ও হাদীসে আল্লাহ্র সিফাতগুলোর বর্ণনা যেমনভাবে এসেছে তার বাহ্যিক ও আসল অর্থ স্বীকার করতে হবে,মেনে নিতে হবে, এর প্রকৃত তথা আসল অর্থকে বাদ দেয়া যাবে না। নিস্ক্রিয় করা যাবে না, খারিজ করা যাবে না ।
আল্লাহ্র সিফাতগুলো যথা আল্লাহ্র আরশের উপর অধিষ্ঠিত হওয়া আল্লাহ্র হাত, পা দেখা শোনা ইত্যাদি সম্পর্কে যেরুপ বর্ণিত আছে তার বাহ্যিক ও আসল অর্থ ছাড়া রূপক , অতিরঞ্জিত অথবা অন্তর্নিহিত কোন পৃথক অর্থ বা ব্যাখ্যা বা বর্ণনা রসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক দেওয়া হয়েছে এমন প্রমান নেই।
আমরা যদি এ সত্য উপলব্ধি করি যে, সালফে সালেহীন আল্লাহ্র গুনাবলী সঠিক অর্থ বুঝেছেন । তাহলে আমাদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় হলো তারা এগুলোর যে অর্থ বুঝেছেন,আমাদেরকে ঠিক সেই অর্থই বুঝতে হবে । [-মাজমুআতুররাসায়িলিল মুনীরিয়্যাহ পৃষ্ঠা নং(১৭৬-১৮৩]
অতএব, সার কথা হল,
আল্লাহ্র অবয়ব বিশিষ্ট অস্তিত্বকে, সত্ত্বাকে গুনাবলীকে অস্বীকার করে (অর্থাৎ নিরাকার করে) সন্যাসী,সুফী, পীর সাহেবেরা অলীক সাধনা বলে তাদের ক্বলবে বসিয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমান করার জন্যই আল্লাহ্কে নিরাকার বানিয়ে ধর্মীয় সমাজে প্রচার করেছেন। এটি ‘তাওহীদ আল আসমা ওয়াস সিফাত’ এর সুস্পষ্ট খেলাফ।
অবয়ব বিশিষ্ট তথা অস্তিত্বময় আল্লাহ্কে নিরাকার না করলে তো তাঁকে (আল্লাহ্কে) তাদের ক্বলবে বসানো যাবে না । নিরাকার আল্লাহ্কে অলীক সাধনায়,কল্পনায় ক্বলবে বসিয়ে এই মুসলিম রূপধারী পুরোহিতরা নিজেদেরকে দেবতার মর্যাদায় ভূষিত হয়ে সমাজে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে চলেছেন । আসলে এ সবই ভণ্ডামির বেসাতি, স্বার্থোদ্ধারের ধান্দা ।
আল্লাহ আমাদের তাওহীদ বুঝার ও মানার তাওফিক দান করুন, সকল প্রকার শিরক থেকে রক্ষা করুন, আমিন।
=======================
=======================
=======================
১৭. প্রশ্নঃ ‘মুমিনের কলব আল্লাহর আরশ’ এটা কার কথা?
উত্তরঃ এটা মানুষের বানানো কথা। আল্লাহ বা রাসূলের কথা নয়। (জাল হাদীস)
১৮. প্রশ্নঃ আল্লাহ কি নিরাকার?
উত্তরঃ না। কেননা তাঁর অসি-ত্ব ও সত্তা আছে। যার সত্তা ও অসি-ত্ব থাকে তাকে নিরাকার বলা যায় না।
১৯. প্রশ্নঃ “আল্লাহ সর্বস্থানে বিরাজমান নন, তিনি সপ্তকাশের উপর আরশে থাকেন।” একটি যুক্তি দিয়ে কথাটি বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ “আল্লাহ্ কোথায় আছেন?” এ প্রশ্নটি ছোট্ট একটি শিশুকে জিজ্ঞেস করলে, তার নিষ্পাপ মুখ থেকে জবাব আসবে ‘তিনি উপরে বা আকাশে আছেন’- সে কখনোই বলবে না ‘আল্লাহ্ সবজায়গায় আছেন’।
২০. প্রশ্নঃ আল্লাহ যদি নিরাকার না হন, তবে তাঁকে কি দেখা সম্ভব?
উত্তরঃ হ্যাঁ, তাঁকে দেখা সম্ভব। তবে এ দুনিয়ায় চর্ম চোখে সম্ভব নয়। আখেরাতে জান্নাতীগণ আল্লাহকে দেখবেন। (সূরা ক্বিয়ামাহ্: ২২-২৩, বুখারী, মুসলিম, নাসাঈ)
২১. প্রশ্নঃ ঈমান কাকে বলে?
উত্তরঃ ঈমান মানে বিশ্বাস। পরিভাষায়ঃ অন-রে বিশ্বাস, মুখে স্বীকার ও কর্মে বাস-বায়নকে ঈমান বলে।
২২. প্রশ্নঃ ঈমান কি কমে ও বাড়ে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, ঈমান কমে ও বাড়ে।
২৩. প্রশ্নঃ কিভাবে ঈমান কমে বাড়ে?
উত্তরঃ সৎকাজের মাধ্যমে ঈমান বাড়ে, আর অসৎ কাজ করলে ঈমান কমে।
২৪. প্রশ্নঃ ঈমানের শাখা কতটি?
উত্তরঃ সত্তরের অধিক।
২৫. প্রশ্নঃ ঈমানের সর্বোচ্চ স-র কি?
উত্তরঃ কালেমা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ পাঠ করা।
২৬. প্রশ্নঃ ঈমানের সর্বনিম্ন শাখা কি?
উত্তরঃ রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা।
২৭. প্রশ্নঃ ঈমানের স্তম্ভ কয়টি? কি কি?
উত্তরঃ ঈমানের স্তম্ভ ৬টি। সেগুলো হচ্ছেঃ
(১) আল্লাহ
(২) ফেরেশতাকুল
(৩) আসমানী কিতাব
(৪) নবী-রাসূল
(৫) শেষ দিবস ও
(৬) তক্বদীরের ভাল-মন্দের প্রতি ঈমান
=======================
=======================
=======================
১) আল্লাহ কি নিরাকার?
?২) আল্লাহ কি সর্বত্র বিরাজমান ? আল্লাহ কি মুমিনের সাথে বা কলবে থাকেন ?
?উত্তরঃ
?নিরাকার অর্থ যার কোন আকার বা আকৃতি নেই।
আল্লাহ নিরাকার কথাটি আল্লাহর সিফাত বা গুণাবলী সম্পর্কে একটি ভ্রান্ত মতবাদ, পবিত্র কোরআন ও হাদিসের কোথাও কথাটির উল্লেখ নেই। কোরআন মাজিদের বিভিন্ন আয়াত ও রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর হাদিসে আল্লাহ্ সুবাহানাহুয়াতালার চেহারা,হাত,পা,চক্ষু,যাত বা সত্তা, সুরাত বা আকারের উল্লেখ হয়েছে যার অর্থ স্পষ্ট ।
?আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান নন, তিনি মুমিনের সাথে বা কলবে কলবে থাকেন না, তিনি আরশের উপরে সমুন্নত। আরশের উপরে থাকা আল্লাহ তাআলার একটি অন্যন্য সিফাত, আল কোরআন ও সহিহ হাদীসে এ বিষয়ে স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে ।
⏩সালাফে সালেহীনদের আকিদা আর মুক্তিপ্রাপ্ত দল বা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত এ আকিদাই পোষণ করেন কোনোরূপ পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সৃষ্টির সাথে তুলনা ব্যতীত।
কারণ,
?আল্লাহ তাআলা বলেন:
তাঁর মত কিছু নেই আর তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।(সূরা শুরা,৪২: ১১ আয়াত)।
?ইমাম বুখারীর রহ. এর উস্তাদ নাইম ইবনে হাম্মাদ রহ. বলেছেন: যে ব্যক্তি আল্লাহকে তাঁর সৃষ্টির সাথে তুলনা করল সে যেন কুফরী করল। আর আল্লাহ তাআলা নিজের সম্বন্ধে যা বলেছেন তা যে ব্যক্তি অস্বীকার করল সে যেন কুফরী করল। আর আল্লাহ তাআলা তাঁর নিজের সম্বন্ধে কিংবা তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সম্বন্ধে যা বলেছেন তাতে কোন তুলনা নেই। (শরহে আকিদাহ্ তাহাবিয়া)।
?যারা আল্লাহর সিফাত বা গুনাবলীর ক্ষেত্রে ভ্রান্ত ধারনা রাখে তাদের সম্পর্কে আল্লহ বলেনঃ
“এবং মুনাফিক পুরুষ মুনাফিক নারী ও মুশরিক পুরুষ মুশরিক নারী যারা আল্লাহ্ সম্বধে মন্দ ধারণা রাখে তাদেরকে আল্লাহ্ শাস্তি দিবেন।” [সুরা-ফাতহ, আয়াত-৬]
?আল্লাহর সিফাত সম্পর্কে সঠিক ও নির্ভুল বিশ্বাস পোষন করা ঈমানের পুর্বশর্ত। আল্লাহ বলেনঃ
“সুতরাং জান সেই আল্লাহ্কে যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই ।” [সূরা-মুহাম্মদ,আয়াত-১৯]
?১) আল্লাহর আকার আছেঃ
?পবিত্র কোরআন ও হাদিস থেকে প্রমানঃ
আল্লাহ্ রব্বুল আলামিন বলেনঃ
?১। “তারা আল্লাহ্র যথার্থ মর্যাদা নিরুপন করতে পারেনি। কিয়ামতের দিন সমগ্র পৃথিবী তাঁর হাতের মুঠোতে থাকবে।”[সূরা-যুমার,আয়াত-৬৭]
?২। (কিয়ামতের দিন) ভূপৃষ্ঠের সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে । (হে রাসুল) আপনার মহিমাময় ও মহানুভব রবের চেহারা অর্থাৎ সত্ত্বাই একমাত্র বাকি থাকবে। [আর-রাহমান-২৬-২৭]
?৩। “হে ইবলিস , তোমাকে কোন জিনিসটি তাকে সেজদা করা থেকে বিরত রাখল যাকে আমি স্বয়ং নিজের হাত দিয়ে বানিয়েছি,তুমি কি এমনি ওদ্ধত্ত প্রকাশ করলে,না তুমি উচ্চমর্যাদা সম্পূর্ণ কেউ” [সূরা-সদ,আয়াত-৭৫]
?৪। “বরং তাঁর দু হাতই প্রসারিত,যেভাবে ইচ্ছা তিনি দান করেন।” [সূরা-সদ-৬৪]
?৫।”বল -অনুগ্রহ আল্লাহ্রই হাতে” [সূরা-আলে ইমরান-৭৩]
?৬। “সেদিন কোন কোন মুখ খুব উজ্জল হবে । তারাই হবে তাদের প্রতিপালকের দর্শনকারী” [সুরা-আল-কিয়ামাহ, আয়াত-২৩]
?৭।”দৃষ্টি শক্তি তাকে প্রত্যক্ষ করতে পারে না বরং তিনিই দৃষ্টি শক্তিকে প্রত্যক্ষ করেন এবং তিনিই দৃষ্টি শক্তিকে প্রত্যক্ষ করেন এবং তিনি সুক্ষদরশি,সম্যকপরিজ্ঞাত ।” [সূরা-আনআম,আয়াত-১০৩]
?৮। “আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, তাঁর মুখমণ্ডল ব্যতীত সব কিছুই ধ্বংসশীল ।” [সূরা-আল কাসাস, আয়াত-৮৮]
?৯। আল্লাহ্ সুবাহানাহুয়াতাআলা নবী মূসা(আঃ)কে লক্ষ্য করে বলছেনঃ
“আমি আমার নিকট থেকে তোমার উপর ভালবাসা ঢেলে দিয়েছিলাম যাতে তুমি আমার চোখের সামনে প্রতিপালিত হও।” [সূরা-ত্বহা, আয়াত-৩৯]
?১০। এমনিভাবে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে স্বান্তনা দিতে গিয়ে বলেনঃ
“আপনি আপনার রবের নির্দেশের অপেক্ষায় ধৈর্যধারন করুন আপনি আমার চোখের সামনেই রয়েছেন।” [সূরা-আত-তূর, আয়াত-৪৮]
?১১। আল্লাহ্ বলেনঃ
“নিশ্চয়ই আল্লাহ্ শ্রবণ করেন ও দেখেন ।” [সূরা-মুজাদালাহ, আয়াত-১]
?১২। আল্লাহ্ বলেনঃ
“কিয়ামতের দিনে আল্লাহর হাঁটুর নিম্নাংশ উন্মোচিত করা হবে এবং সাজদা করার জন্য সকলকে আহবান করা হবে, কিন্তু তারা তা করতে সমর্থ হবে না ।” [সুরা-কালাম,আয়াত-৪২]
?১৩। উমর(রাঃ)হতে বর্ণিত, রসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বলেছেনঃ
“কিয়ামতের দিন আল্লাহপাক সমস্ত আকাশমণ্ডলীকে ভাঁজ করবেন অতঃপর সেগুলোকে ডান হাতে নিয়ে বলবেন,আমি হচ্ছি শাহানশাহ(মহারাজা)অত্যাচারী আর যালিমরা কোথায় ?অহংকারীরা কোথায় ? [মুসলিম]
?১৪।রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বলেন,
“পাহাড়-পর্বত এবং বৃক্ষরাজি এক আঙ্গুলে থাকবে,তারপর এগুলোকে ঝাঁকুনি দিয়ে তিনি বললেন,আমিই রাজাধিরাজ আমিই আল্লাহ্।” [মুসলিম]
?১৫।অপর এক বর্ণনায় রসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বলেন-
“আল্লাহ্ সমস্ত আকাশমণ্ডলীকে এক আঙ্গুলে রাখবেন,পানি এবং ভু-তলে যা কিছু তা এক আঙ্গুলে রাখবেন।”[বুখারী ও মুসলিম]
?১৬।আবু সাইয়ীদ আল-খুদরী(রাঃ)বলেন,যে আমি রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে বলতে শুনেছিঃ
আমাদের প্রতিপালক (আল্লাহ্) কিয়ামতের দিনে তাঁর হাঁটুর নিম্নাংশ প্রকাশ করে দেবেন, প্রত্যেক মুমিন, মুমিনা তাতে সাজদা করবেন এবং যে ব্যক্তি দুনিয়াতে লোক-দেখান ও সম্মানের জন্য তা করত সে সাজদা করতে গেলে তাঁর পিঠ সমান হয়ে ফিরে আসবে(বা সিজদা করতে সমর্থ হবেনা)। [বুখারী,মুসলিম,তিরমিযী,আহমদ]
?১৭।রাসূল (ছাঃ) বলেন, “জাহান্নামে (জাহান্নামীদের) নিক্ষেপ করা হ’তে থাকবে আর সে (জাহান্নাম) বলবে, আরো আছে কি? শেষ পর্যন্ত বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক তাতে পা রাখবেন। তাতে জাহান্নামের একাংশের সাথে আরেকাংশ মিশে যাবে। অতঃপর জাহান্নাম বলবে, তোমার প্রতিপত্তি ও মর্যাদার শপথ! যথেষ্ট হয়েছে, যথেষ্ট হয়েছে”।[বুখারী হা/৭৩৮৪ ‘তাওহীদ’ অধ্যায়।]
?১৮।জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাতে আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে ছিলাম। হঠাৎ তিনি পূর্নিমার রাতের চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন,
“শোন! নিশ্চয় তোমরা তোমাদের প্রতিপালকে তেমনি স্পষ্ট দেখতে পাবে, যেমন স্পষ্ট ঐ চাঁদকে দেখতে পাচ্ছ। তাঁকে দেখতে তোমরা কোন ভিড়ের সম্মুখহীন হবে না।”
[সহীহ বুখারী ৫৫৪, ৫৭৩, ৪৮৫১, সহিহ মুসলিম ৬৩৩]
?১৯।সুহাইব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “জান্নাতীরা যখন জান্নাতে প্রবেশ করে যাবে, তখন মহান বরকতময় আল্লাহ বলবেন, ‘তোমরা কি চাও যে, আমি তোমাদের জন্য আরো কিছু বেশি দেই?’ তারা বলবে, ‘তুমি কি আমাদের মুখমণ্ডল উজ্জ্বল করে দাওনি? আমাদেরকে তুমি জান্নাতে প্রবিষ্ট করনি এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দাওনি?’ তারপর আল্লাহ (হঠাৎ) পর্দা সরিয়ে দেবেন (এবং তারা তাঁর চেহারা দর্শন লাভ করবে) ।. সুতরাং জান্নাতের লব্ধ যাবতীয় সুখ-সামগ্রীর মধ্যে জান্নাতীদের নিকট তাদের প্রভুর দর্শন (দীদার)ই হবে সবচেয়ে বেশী প্রিয়।”
[সহিহ মুসলিম ১৮১]
?২০। আল্লাহ তা‘আলার আনন্দ প্রকাশ ও হাসি সম্পর্কিত বর্ণনা হাদীছে এসেছে। আল্লাহর আনন্দ সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেন,
‘আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দার তওবার কারণে ঐ ব্যক্তির চেয়ে অধিক আনন্দিত হন, যে মরুভূমিতে রয়েছে, তার বাহনের উপরে তার খাদ্য-পানীয় রয়েছে, এসবসহ তার বাহনটি পালিয়ে গেল। সে নিরাশ হয়ে একটি গাছের ছায়ায় এসে শুয়ে পড়ল। এভাবে সময় কাটতে লাগল। এমন সময় সে তার পাশেই তাকে দন্ডায়মান দেখে তার লাগাম ধরে ফেলল। অতঃপর অত্যধিক আনন্দে বলে ফেলল, হে আল্লাহ! তুমি আমার বান্দা, আমি তোমার রব। সে আনন্দের আতিশয্যে ভুল করে ফেলে’।[মুসলিম, হা/২৭৪৭ ‘তওবা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১।]
?ইমামগণ থেকে প্রমাণঃ
?ক) এ প্রসঙ্গে ইমাম আবু হানিফা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ
“ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্র যে সমস্ত সিফাত (গুন)বর্ণিত হয়েছে যেমন-আল্লাহ্র হাত,পা,চেহারা,নফস ইত্যাদি আমরা তা দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি। স্বীকার করি এগুলো হচ্ছে তাঁর সিফাত বা গুণাবলী।
আমরা যেমন কখনও আল্লাহ্র সিফাত সম্পর্কে এ প্রশ্ন করিনা বা করবোনা যে,এ সিফাতগুলো (হাত,পা,চেহারা,চোখ ইত্যাদি) কেমন,কিরুপ বা কিভাবে,কেমন অবস্থায় আছে,তেমনি আল্লাহ্র সিফাতের কোন নিজস্ব ব্যাখ্যা বা বর্ণনা দিতে যাইনা। কেননা তিনি তা বর্ণনা করেন নাই।
যেমন-আমরা একথা কখনো বলিনা যে,
আল্লাহ্র হাত হচ্ছে তাঁর কুদরতি হাত,শক্তিপ্রদ পা বা তাঁর নিয়ামত।
এ ধরনের কোন ব্যাখ্যা দেয়ার অর্থ হল আল্লাহ্র প্রকৃত সিফাতকে অকার্যকর করা বা বাতিল করে দেয়া বা অর্থহীন করা । আল্লাহ্র হাতকে আমরা হাতই জানবো এর কোন বিশেষণ ব্যবহার করবো না। কুদরতি হাত রূপে বর্ণনা করবোনা । কোন রকম প্রশ্ন করা ছাড়াই যেরূপ কোরআনে বর্ণিত হয়েছে হুবুহু সে রকমই দ্বিধাহীনে বিশ্বাস করি”। [আল ফিকহুল আকবার]
?খ)ইমাম শাফীঈ(রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ
“আমরা আল্লাহ্র গুণাবলী স্বীকার করি ও বিশ্বাস করি তবে সৃষ্টির কোন কিছুর সাথে আল্লাহ্র গুনাবলীর কোন আকার সাব্যস্ত করিনা,সাদৃশ্য(তুলনা)করিনা। কেননা আল্লাহ্ নিজেই তাঁর সাদৃশ্যের বিষয়টি বাতিল করে দিয়েছেন এ বলে-
“(সৃষ্টি জগতের) কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়।” (সূরা-শুরা,আয়াত-১১)
(সিয়ারে আলামিন নুবালা-১০ম খণ্ড,পৃষ্ঠা নং,-৮০;আর দেখুন আইনুল মাবুদ-১৩তম খণ্ড পৃষ্ঠা নং-৪১;তাবাকতে হানাবিল ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা নং-২৮৩)
?এ সকল কোরআনের আয়াত ও হাদীস এবং ইমামগণের মতামত, আল্লাহ্ রব্বুল আলামীন যে নিরাকার নন তার অকাট্য প্রমান করে বর্ণনা করে । আল্লাহর সিফাতকে তাঁর কোন মাখলুকের সাথে সাদৃশ্য না করে তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে । সর্বপরি নিরাকার কথাটি কোরআন ও সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত নয় ।
?২) আল্লাহ আরশের উপর সমুন্নতঃ
?কোরআন, সহীহ হাদীস, সৎ বুদ্ধি, সহীহ অনুভূতি সমস্ত কিছুই আল্লাহ আরশে সমুন্নত কথাকে সমর্থন করেঃ
?১। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা বলেন:
দয়াময় (আল্লাহ) আরশের উপর উঠেছেন। (সূরা তাহা, ২০: ৫ আয়াত।)
?২। অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন:
তোমরা তার থেকে নির্ভয় হয়ে গেলে যিনি আসমানে আছেন, আর তিনি তোমাদের সহকারে জমিনকে ধ্বসিয়ে দিবেন না?।(সূরা মূলক ৬৭: ১৬ আয়াত)।
ইবনে আব্বাস রা. এই আয়াতের তাফসীরে বলেন: তিনি হলেন আল্লাহ। (তাফসীরে ইবনুল জাওযি)।
?৩। আল্লাহ তাআলা আরও বলেন:
তারা তাদের উপরস্থ রবকে ভয় করে। (সূরা নাহল,১৬: ৫০ আয়াত)।
?৪। আল্লাহ তাআলা ইসা আ. সম্বন্ধে বলেন:
বরং আল্লাহ তাকে তাঁর নিকটে উত্তলন করে নিয়েছেন। (সূরা নিসা, ৪: ১৫৮ আয়াত)।
?৫। তিনি আরও বলেন:
আর তিনিই আল্লাহ যিনি আসমানে আছেন। (সূরা আনআম ৬: ৩ আয়াত)।
?এ সমস্ত আয়াতের তাফসীরে ইবনে কাসীর রহ: বলেন: তাফসীরকারকগণ এ ব্যপারে একমত পোষণ করেন যে, “তারা আল্লাহ সম্বন্ধে ঐভাবে বর্ণনা করবেন না যেভাবে জাহমীয়ারা (একটি ভ্রষ্ট দল) বলে যে, আল্লাহ সর্বত্র আছেন। আল্লাহ তাআলা তাদের এ জাতীয় কথা হতে পাক পবিত্র ও অনেক ঊর্ধ্বে।”
?আল্লাহ তাআলার বাণী:
তোমরা যেখানেই থাক না কেন, তিনি তোমাদের সাথেই আছেন। (সূরা হাদীদ, ৫৭: ৪ আয়াত)।
অত্র আয়াতের ব্যখ্যা হল; নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা আমাদের সাথে আছেন দেখার দ্বারা, শ্রবনের দ্বারা, যা বর্ণিত আছে তফসীরে জালালাইন ও ইবনে কাসীরে। এই আয়াতের পূর্বের ও শেষের অংশ এ কথারই ব্যখ্যা প্রদান করে। সুতারাং অত্র আয়াত দ্বারা গায়ে গায়ে লেগে থাকা বূঝায় না ।
?৬। “ফেরাঊন বলল, হে হামান! তুমি আমার জন্য এক সুউচ্চ প্রাসাদ তৈরী কর| যাতে আমি অবলম্বন পাই আসমানে আরোহনের, যেন আমি দেখতে পাই মুসা (আ:)এর মা’বুদকে|”
(সুরা মুমিন ৪০:৩৬-৩৭)
?৭। “ফেরেশতাগণ তাঁর (আল্লাহর) পার্শ্বে পার্শ্বে থাকবে এবং সেদিন (কিয়ামতের দিন) আটজন ফেরেশতা তোমার প্রতিপালকের আরশকে নিজেদের উপরে বহন করবে|” (সুরা হাক্কাহ ৬৯:১৭:)
?৮। “যদি তাতে তথা আসমান ও জমিনে আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য উপাস্য থাকত, তবে উভয় ধ্বংস হয়ে যেত। অতএব তারা যা বলে, তা থেকে আরশের অধিপতি আল্লাহ পবিত্র।” (সূরা আম্বিয়া ২১, আয়াত: ২২)
?৯। “এ সত্ত্বেও যদি তারা বিমুখ হয়ে থাকে, তবে বলে দাও, আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত (সত্য) কোন উপাস্য নেই। আমি তাঁরই উপর ভরসা করি এবং তিনিই মহান আরশের অধিপতি।” (সূরা তাওবা ৯, আয়াত: ১২৯)
?১০।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
তোমরা কি আমাকে আমিন (বিশ্বাসী) বলে স্বীকার কর না? আমি তো ঐ সত্ত্বার নিকট আমিন বলে পরিগণিত যিনি আসমানের উপর আছেন। (আর তিনি হলেন আল্লাহ)। (বুখারী ও মুসলিম)।
?১১। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন:
যারা জমিনে আছে তাদের প্রতি দয়া কর, তবেই যিনি আসমানে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। (তিরমিযী হাসান সহীহ)।
?১২। অন্য হাদীসে এসেছে:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্রীতদাসীকে জিজ্ঞেস করলেন: বলতো আল্লাহ কোথায়? সে বলল, আসমানে। তারপর তিনি বললেন: বলতো আমি কে? সে বলল: আপনি আল্লাহর রাসূল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, একে মুক্ত করে দাও, কারণ সে মুমিনা। (মুসলিম)।
?১৩। অন্যত্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
আরশ পানির উপর আর আল্লাহ আরশের উপর। তৎসত্তেও, তোমরা কি কর বা না কর তিনি তা জ্ঞাত আছেন। (আবু দাউদ হাসান)।
?১৪। আবু বকর রা. বলেছেন:
যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত করে (সে জেনে রাখুক) নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা আসমানের উপর জীবিত আছেন, কখনোই মৃত্যুমুখে পতিত হবেন না। (সুনানে দারেমী সহীহ সনদ) জাহমীয়াদের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
?১৫। আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ ”মহামহিম আল্লাহ তায়ালা প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে অবতরন করে ঘোষণা করতে থাকেনঃ ‘কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে? আমি তার দাকে সাড়া দিব। কে আছে এমন, যে আমার নিকট চাইবে? আমি তাকে তা দিব। কে আছে এমন, যে আমার নিকট ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব’’ [বুখারী; ১১৪৫, ৬৩২১, ৭৪৯৪; মুসলিম ৭৫৮,১২৬১; আহমাদ ৭৫৯৫ আবু দাউদ ১৩১৫; তিরমিযি ৪৪৬, ৩৪৯৮; মুওয়াত্তা মালিক ৩০ মিশকাত ১২২৩]
?ইমামগণ থেকে প্রমাণঃ
চার ইমামগণই এ ব্যাপারে একমত যে, তিনি আরশের উপর আছেন, তিনি তাঁর কোন সৃষ্টির সাথে তুলনীয় ননঃ
চার ইমামগণের মতামতঃ
?(ক) ইমাম আবু হানিফা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বলে যে, ‘জানি না আমার প্রতিপালক আরশে আছেন নাকি পৃথিবীতে’ সে অবশ্যই কাফের হয়ে যায়। যেহেতু আল্লাহ বলেন, “দয়াময় আল্লাহ আরশে আরোহণ করলেন।”[সূরা তা-হা,আয়াত৫] আর তাঁর আরশ সপ্তাকাশের উপরে। আবার সে যদি বলে, ‘তিনি আরশের উপরেই আছেন’, কিন্তু বলে, ‘জানি না যে, আরশ আকাশে আছে নাকি পৃথিবীতে’-তাহলেও সে কাফের। কারণ সে একথা অস্বীকার করে যে, তিনি আকাশে আছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি তাঁর আরশে থাকার কথা অস্বীকার করে, সে অবশ্যই কাফের হয়ে যায়। যেহেতু আল্লাহ সকল সৃষ্টির ঊর্ধে আছেন এবং উপর দিকে মুখ করে তাঁকে ডাকা হয়(দু’আ করা হয়), নিচের দিকে মুখ করে নয়’। (শারহুল আক্বীদাতিত্ব ত্বাহাবিয়াহ ৩২২ পৃ, আল ফিকহুল আবসাত্ব ৪৬ পৃ, ইতিক্বাদু আইম্মাতিল আরবাআহ ১/৬)
?ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-কে আল্লাহ তা‘আলার অবতরণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলা যে রাত্রের তৃতীয় অংশে সপ্ত আকাশে নেমে আসেন, এ নেমে আসাটা কেমন, কিভাবে নামেন, এটা বলার ক্ষমতা কাউকে দেওয়া হয়নি। কেমন করে নামেন এটা আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন।[আক্বীদাতুস সালাফ আছহাবুল হাদীছ, পৃঃ ৪২; শারহুল ফিক্বহুল আকবার, পৃঃ ৬০।]
?(খ) ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন,‘আল্লাহ আকাশের উপর এবং তাঁর জ্ঞানের পরিধি সর্বব্যাপী বিস্তৃত। কোন স্থানই তাঁর জ্ঞানের আওতার বহির্ভূত নয়’। (ইজতিমাউল জুয়ূশিল ইসলামিয়্যাহ,পৃঃ ১০১)
?(গ) ইমাম শাফীঈ(রাহিমাহুল্লাহ)জোরালো অভিমত ব্যক্ত করেন এ প্রসঙ্গেঃ
“আল্লাহ্তালার আরশে অধিষ্ঠিত হওয়া এবং আল্লাহ্র হাত,পা ইত্যাদি যা তাঁর সিফাত বলে বিবেচ্য আর তা কোরআন ও সহীহ সূত্রে সুন্নাহ দ্বারা প্রমানিত হওয়ার পরও যদি কোন ব্যক্তি বিরোধিতা করে,অস্বীকার করে ,নিষ্ক্রিয় করে তবে সে অবশ্যই কাফের বলে গন্য হবে।”(সিয়ারে আলামিন নুবালা-১০ম খণ্ড,পৃষ্ঠা নং,-৮০;আর দেখুন আইনুল মাবুদ-১৩তম খণ্ড পৃষ্ঠা নং-৪১;তাবাকতে হানাবিল ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা নং-২৮৩)
?(ঘ) ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এর পুত্র আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমার বাবাকে জিজ্ঞেস করা হ’ল যে, আল্লাহ তাঁর সৃষ্টি থেকে দূরে সপ্তম আকাশের উপরে তাঁর আরশে সমুন্নত। তাঁর ক্ষমতা ও জ্ঞানের পরিধি সর্বত্র বিস্তৃত । এর উত্তরে তিনি (ইমাম আহমাদ) বলেন, হ্যাঁ! তিনি (আল্লাহ) আরশের উপর সমুন্নত এবং তাঁর জ্ঞানের বহির্ভূত কিছুই নেই। (ইজতিমাউল জুয়ূশিল ইসলামিয়্যাহ,পৃঃ ১৫২-১৫৩)
?(ঙ)এ প্রসঙ্গে ইবনে কাসীর(রহঃ) বলেছেনঃ
“আল্লাহ্ তা’আলা আরশের উপর সমাসীন,
কোন অবস্থা ও সাদৃশ্য স্থাপন ছাড়াই তার উপর বিশ্বাস রাখতে হবে । কোন জল্পনা কল্পনা করা চলবে না,
যার দ্বারা সাদৃশ্যের চিন্তা মস্তিস্কে এসে যায় ; কারন এটা আল্লাহ্র গুনাবলী হতে বহুদুরে। মোটকথা, যা কিছু আল্লাহতাআলা বলেছেন ওটাকে কোন খেয়াল ও সন্দেহ ছাড়াই মেনে নিতে হবে কোন চুল চেরা করা চলবে না । কেননা মহান আল্লাহ্ রব্বুল আলামীন কোন কিছুর সাথে সাদৃশ্য যুক্ত নন ।” [তাফসীর ইবনে কাসীর]
?সুতরাং আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামা’আহ এর আকীদা হলো আল্লাহ আরশের উপর সমুন্নত।
তিনি আরশের উপর সমুন্নত থেকে তাঁর সৃষ্টি জীবের সাথে আছেন- এর অর্থ হলোঃ তিনি সৃষ্টি জীবের অবস্থাসমূহ জানেন, তাদের কথাসমূহ শুনেন, তাদের কর্মসমূহ দেখেন, তাদের বিষয় সমুহ পরিচালনা করেন, দরিদ্রকে রুজি দান করেন, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ করে দেন, যাকে ইচ্ছা রাজত্ব দান করেন, যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজত্ব কেড়ে নেন, যাকে ইচ্ছা সম্মান দান করেন, যাকে ইচ্ছা অপমান করেন, তাঁরই হাতে সকল কল্যাণ এবং তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
—————————–
Post by-Mohammad Abu Hanif